শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৩

সাক্ষাৎকারে গণেশ চন্দ্র সাহা // আমি সত্যিকথা কমু এজন্য আমারে আনেনাই

 ২/১১/২০১২
মেহেদী হাসান
আমাকে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে আনার জন্য যে কতবার সরকারী লোকজন বাড়িতে গেছে তার কোন গোনাবাছা নেই। ডিসি  অফিস, থানার ওসি, স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন বারবার বাড়িতে লোক পাঠাইছে  আমাকে যাওয়ার জন্য। অনেকবার পুলিশ গেছে। কোর্টের লোকজন গেছে ঢাকা থেকে। একবার দারোগা এসে হোন্ডায় করে পিরোজপুর থানায় নিয়ে গেল। তাদের সবার কথা একটাই। আমাকে বলতে হবে আমার মাকে সাঈদী সাহেব মারছে। আমি তাতে রাজি হইনি।  সে কারনে আমি সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আসি নাই। আমি সত্যিকথা কমু এজন্য তারা আমাকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আনেনাই।

গনেশ চন্দ্র  সাহা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ছিলেন। গত ২৩ অক্টোবর তিনি  আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (১)  হাজির হয়ে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেন।

মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে না আসার কারণ সম্পর্কে গণেশ  চন্দ্র দৈনিক নয়া দিগন্তের সাথে  সাক্ষাৎকারে উপরোক্ত কথা বলেন। গনেশ চন্দ্র বলেন,  সরকার পক্ষের লোকজনের কথামত সাক্ষ্য দিতে রাজি না হওয়ায় বারবার তাদের বাড়িতে লোক পাঠানো হয়েছে।  থানায় নিয়ে তাকে টাকা সাধা হয়েছে তাদের কথামত সাক্ষ্য দেয়ার জন্য। একবার  রাতে তাকে   স্থানীয় সরকার সমর্থক লোকজন ধরে নিয়ে যায়।  কিন্তু তিনি তার মায়ের নামে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি হননি। গণেশ জানান সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে না আসায়  তাকে  এলাকার আওয়ামী লীগের লোকজন রাজাকার ডাকে।

গনেশ বলেন, “একদিন পিরোজপুরের এক দারোগা  মটর সাইকেলে  করে থানায় নিয়ে গেল।  দারোগার নাম আমি জানি না। অনেক দূর নিয়া তিন তলায় উঠাইছে। কিছুক্ষণ পর  লোকজন আইসা আমার চারপাশে বইছে । তারা ঢাকার লোক। হেগো কতা আমি ভাল বুঝিনা।  উচা উচা লোক। এরপর জনাচারেক  পুলিশ আইছে ।  চারপাশে পুলিশ বইছে।  কতগুলা মেশিন পত্র ফিট করছে।  ফিট কইরা তারপর নানান কথা কইছে । আমার মায়ের  ঘটনাগুলো কইতে কইছে। পরে কওয়া ধরছি। পরে ঢাকার লোক  কয় না, তোমার মায়রে  মারছে সাঈদী সাহেব।  আমারে কইতে কইল তুমি কবা তোমার মায়রে সাঈদী সাহেব মারছে।  আমি কইলাম, না সাঈদী সাহেব মারে নাই। তার নামে মিথ্যা কথা কইতে পারমু না। তারা বলছে হ তুমি কও, তোমারে পয়সা-পাতি দেব। আমি কইলাম কোন পয়সা পাতিতে কাজ হবেনা। তখন আমার সামনে  দুইটা ব্রিফকেস খুইল্লা টাহা দেখাইছে । এই টাকা নিয়া চইল্লা যাবা, তুমি নাম কও। মেলা সময় তোহাই মোহাইয়া কয়, তুমি বোঝ। আমি কইলাম আমার বোঝা হইয়া গেছে, আমি পারমু না। আপনার যা খুশি করতে পারেন। আমি  আমার মরা মায়রে বেচতে পারমু না। মরা মায়রে বেইচ্যা আমি খাবনা । আমি পারলাম না। এইটা বছর দেড় আগের ঘটনা।”
ঢাকা থেকে কোর্টের পরিচয়ে  বাড়িতে লোকজন যাওয়া প্রসেঙ্গ গণেশ চন্দ্র বলেন, “গত ফালগুনের আগের ফালগুনে ছয়জন আমার কাছে গেছে। গিয়ে খুব জোরাজুরি  করেছে। তারা কইল  তোমার মায় যে মারা গেছে তোমরা কি জান? আমি কইলাম   জানি  খাতা মাতা বই পুস্তকে সবতায় আছে, আর্মিতে মাইররা হালাইছে, মিলিটারীতে মারছে সব কিছুই আছে। তারা বলতেছে না সাঈদী সাহেব মারছে, আমি মায়ের কথা বলতে পারমুনা, মরা মায়ের নামে মিথ্যা কথা বলতে পারমুনা। এই লইয়া বেশ তোহাই মোহাই কইররা তহন কইছে তয় কেডা মারছে? আমি কইলাম মারছে পাক সৈন্যতে। তারা কয়  তুমি এখন বিচার চাও? আমি কইলাম হ আমি বিচার চাই। পরে তারা বলছে তয় কও বিচার চাই বিচার চাই, বার বার কবা। পরে আমি বিচার চাই বিচার চাই, বার বার কইছি । ”

-    গণেশ চন্দ্র বলেন, “এইর মধ্যে এক রাইতে  স্থানীয় আর পিরোজপুরের আওয়ামী লীগের লোকজন আমারে ধইর‌্যা নিয়া গেছে। মটর সাইকেলে কইরা নিয়া গেল পিরোজপুর পর্যন্ত। রাস্তায় আমি কইলাম আমারে  ছাড় নাইলে চিক মারমু (চিৎকার করব) । তারপর আমি ঐ জায়গা থেকে দৌড়াইয়া এক বাড়িতে গিয়া উঠছি।  সে আমারে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে নিয়া  গেল ভোরে।  উপজেলা চেয়ারম্যান মতি সরদাররে জানাইলাম যে, এই এই ঘটনা। মতি সরদার একজন মুক্তিযোদ্ধা। সে মোবাইল করল কাকে কাকে যেন। মোবাইলে কইল  তোরা গনেশের সাথে এসব  কি শুরু করছ।  ওকে কি তোরা এলাকায় থাকতে দিবিনা? ১৯৭১ সালে সাঈদীরে তো আমিই চিনতামনা, দেখিনাই।  ও   চেনবে  ক্যামনে?”
-  
“এর মাঝে একদিন পুলিশ আইছে আমাগো বাড়ী। আইসা আমারে ডাকাইয়া আনছে। আমি বাড়ী ছিলাম না বাইরে ছিলাম। পুলিশ কইছে, তোমার সাথে কিছু কতা আছে, আমি কইছি কোন কেস আছে নিহি? কয়, না কেস নাই। আমি কইলাম, তয় কন কি কতা? কয়, না এহন কবনা পরে এক সময় কব। ওসি সাহেব কতা হোনতে কয়। পরে  আর যাই নাই।”

-    গনেশ বলেন, “বহুবার লোক গেছে আমাকে আনার জন্য গেছে। ওর কোন গোনা-বাছা নাই। তাদের বক্তব্য একটাই যে, তারা যা বলবে তা বলতে হবে, তাদের এই কথায় আমি রাজী হইনাই। যার কারনে আমি আসি নাই।  ডিসি ও ওসি দিয়াও খবর দেওয়াইছে কিন্তু আমি রাজী হইনাই।  সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে না আসায় এলাকার আওয়ামী লীগের লোকজন আমারে কয় তুই রাজাকার। তোর সাঈদী তোরে বাঁচাইতে পারবেনা। সে যাইতে পারবেনা ইলেকশনে।  সে বের হইতে পারবেনা। আমরাই থাকব এলাকায়। তুই কয়দিন পলাইয়া থাকবি।   সাঈদী সাহেবের রেহাই নাই। ”

কে এই গণেশ?
১৯৭১ সালে পিরোজপুরে  বর্বরোচিত  এবং নিমর্ম হত্যার  শিকার শহীদ ভাগীরথীর ছেলে   গণেশ চন্দ্র সাহা। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ভাগীরথীকে হত্যায় সহযোগিতার  অভিযোগ এনেছে রাষ্ট্রপক্ষ। যে ভাগীরথীকে   হত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সেই ভাগিরথীর ছেলে এসে  সাক্ষ্য দিলেন মাওলানা সাঈদীর পক্ষে। তিনি বললেন,  মাওলানা সাঈদী তার মাকে মারেননি। পাকিস্তান আর্মিরাই তার মাকে মেরেছে।
গণেশ চন্দ্র সাহা শুধু যে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ছিলেন তাই নয়। যে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনাল মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন সেই ১৫ জনেরও একজন এই   গণেশ চন্দ্র  সাহা।

গত ২০ মার্চ  রাষ্ট্রপক্ষ থেকে  মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে   ৪৬ জন সাক্ষীর বিষয়ে একটি দরখাস্ত দাখিল করা হয়  ট্রাইব্যুনালে । দরখাস্তে নিবেদন করা হয়  ৪৬ জন সাক্ষীকে  ট্রাইব্যুনালে হাজির করা তাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। তাই এসব সাক্ষী  তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছে তা তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হোক।
৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জন সম্পর্কে দরখাস্তে রাষ্ট্রপক্ষ উল্লেখ করেছিল  আসামীর (মাওলানা সাঈদী) পক্ষ অবলম্বনকারী পিরোজপুরের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ কর্তৃক সাক্ষীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকির  প্রেক্ষিতে ভয়ে ভীত হয়ে তারা আত্মপোগন করেছে। তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই তাদের হাজির করা সম্ভব নয়।

যে ১৪ জন সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষ এ দাবি করেছিল সেই ১৪ জনের একজন হলেন এই গণেশ চন্দ্র ।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের  প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল গত ২৯ মার্চ ১৫ জন সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী প্রদান করেন তা তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে আদেশ দেন।  গণেশ চন্দ্রের নাম সেই ১৫ জনের তালিকায়ও রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষ যে সাক্ষীর বিষয়ে বলেছিল মাওলানা সাঈদীর  পক্ষাবলম্বনকারী অস্ত্রধারী  সন্ত্রাসীদের ভয়ে আত গোপন করেছে, তাদের খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা এবং আদৌ হাজির করা  not possible.
 সম্ভব নয় সেই গণেশ মাওলানা সাঈদীর পক্ষে হাজির হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলেন। 

ভাগীরথী হত্যাকান্ড এবং  স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্র :
ভাগীরথীর হত্যাকান্ড বিষয়ে স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় একটি রিপোর্ট ছাপা হয় “বর্বরতার রেকর্ড” শিরোনামে । সে রিপোর্টটি  কবি হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র নামক মুক্তিযুদ্ধের ওপর প্রমান্য   গ্রন্থে  হুবহু  স্থান পায়। রিপোর্টটি নিচে তুলে ধরা হল হেডলাইনসহ।

বর্বরতার রেকর্ড

॥ রহিম আজাদ প্রদত্ত ॥
বরিশাল :  ‘মহাদেবের জটা থেকে ‘নয় বাংলা মায়ের নাড়ী ছিঁড়ে জন্ম দিয়েছিলেন যে সোনার মেয়ে সে ভাগীরথীকে ওরা জ্যান্ত জীপে বেঁধে শহরের রাস্তায় টেনে টেনে হত্যা করেছে। খান দস্যুরা হয়তো পরখ করতে চেয়েছিল ওরা কতখানি নৃশংস হতে পারে। বলতে হয় সেক্ষেত্রে ওরা শুধু সফলই হয়নি, বর্বরতার সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অষ্টাদশী ভাগীরথী ছিল বরিশাল জেলার পিরোজপুর থানার বাঘমারা কদতলীর এক বিধবা পল্লীবালা। বিয়ের এক পর পর একটি পুত্র সন্তান কোলে নিয়েই তাকে বরণ করে নিতে হয় সুকঠিন বৈধব্য।
স্বাীর বিয়োগব্যথা তাঁর তখনও কাটেনি। এরই মধ্যে দেশে নেমে এল ইয়াহিয়ার ঝটিকা বাহিনী। গত মে মাসের এক বিকেলে ওরা চড়াও হলো ভাগীরথীদের গ্রামে। হত্যা করলো অনেককে যাকে সেখানে যেভাবে পেলো। এ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের মধ্যেও ভাগীরথীকে ওরা মারতে পাররো না। ওর দেহলাবণ্য দস্যুদের মনে যে লালসা জাগিয়েছিল তাতেই হার মানল তাদের রক্তপিপাসা। ওকে ট্রাকে তুলে নিয়ে এল পিরোজপুরে। তারপর ক্যাম্পে তার উপর চালানো হলো হিংস্র পাশবিক অত্যাচার।
সথী নারী ভাগীরথী। এ পরিস্থিতিতে মৃত্যকে তিনি একমাত্র পরিত্রাণের উপায় বলে ভাবতে লাগলেন। ভাবতে ভাবতেই এক সময় এল নতুন চিন্তাÑ হ্যাঁ মৃত্যুই যদি বরণ করতে হয় ওদেরইবা রেহাই দেবো কেনো? ভাগীরথী কৌশলের আশ্রয় নিল এবার। এখন আর অবাধ্য মেয়ে নয় দম্ভরমত খানদের খুশী করতে শুরু করলো, ওদের আস্থা অর্জনের আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে লাগলো।
বেশি দিন লাগলো না অল্প ক’দিনেই নারীলোলুপ ইয়াহিয়া বাহিনৗ ওর প্রতি দারুণ আকর্ষণ অনুভব করলো। আর এই সুযোগে ভাগীরথী ওদের কাছ থেকে জেনে নিতে শুরু করলো পাক বাহিনীর সব গোপন তথ্য। এক পর্যায়ৈ বিশ্বাসভাজন ভাগীরথীকে ওরা নিজের ঘরেও যেতে দিলো। আর কোনো বাধা নেই। ভাগীরথী এখন নিয়মিত সামরিক ক্যাম্পে যায় আবার ফিরে আসে নিজ গ্রামে।
এরই মধ্যে চতুরা ভাগীরথী তার মূল লক্ষ্য অর্জনের পথেও এগিয়ে গেল অনেকখানি। গোপনে মুক্তিবাহিনীর সাথে গড়ে তুলল ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ।
এরপরই এল আলস সুযোগ। জুন মাসের একদিন ভাগীরথী খান সেনাদের নিমন্ত্রণ করলো তার নিজ গ্রামে। এদিকে মুক্তিবাহিনীকেও তৈরি রাখা হলো  যথারীতি। ৪৫ জন খান সেনা সেদিন হাসতে হাসতে বাগমারা কদমতলা এসেছিল কিন্তু তার মধ্যে ৪/৫ জন ক্যাম্পে ফিরতে পেরেছে বুলেটের ক্ষত নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে। বাকিরা ভাগীরথীর গ্রামেই শিয়াল কুকুর শকুনের খোরাক হয়েছে। এরপর আর ভাগীরথী ওদের ক্যাম্পে যায়নি। ওরা বুঝেছে, এটা তারই কীর্তি। কীর্তিমানরা তাই হুকুম দিল জীবিত অথবা মৃত ভাগীরথীকে যে ধরিয়ে দিতে পারবে তাকে নগদ এক হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।
কিন্তু ভাগীরথী তখনও জানতো না ওর জন্য আরো দুঃসহ ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। একদিন হাটবারে তাকে শহরের রাস্তায় এনে দাঁড় করানো হলো জনবহুল চৌমাখায়। সেখানে প্রকাশ্যে তার অঙ্গাবরণ খুলে ফেলল কয়েকজন খান সেনা। তারপর দু’গাছি দড়ি ওর দু’পায়ে বেঁধে একটি জীপে বেঁধে জ্যান্তে শহরের রাস্তায় টেনে বেড়াল ওরা মহাউৎসবে। ঘণ্টাখানেক রাজপথ পরিক্রমার পর আবার যখন ফিরে এল সেই চৌমাথায় তখনও রর দেহে প্রাণের স্পন্দন রয়েছে।
এবার তারা দু’টি পা দু’টি জীপের সাথে বেঁধে নিল এবং জী দু’টিকে চালিয়ে দিল বিপরীত দিকে। ভাগীরথী দু’ভাগ হয়ে গেল। সেই দু’ভাগে দু’জীপে আবার শহর পরিক্রমা শেষ করে জল্লাদ খানরা আবার ফিরে এল সেই চৌমাথায় এবং এখানেই ফেরে রেখে গেল ওর বিকৃত মাংশগুলো।
একদিন দু’দিন পরে মাংসগুলো ঐ রাস্তার মাটির সাথেই একাকার হয়ে গেল এক সময়। বাংলামায়ের ভাগীরথী এমনিভাবে আবার মিশে গেল বাংলার ধূলিকণার সাথে। কেবল ভাগীরথী নয়, আরো দু’জন মুক্তিযোদ্ধাকেও রা এমনি করে পিরোজপুর শহরে হত্যা করে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন