শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৩

আমি এখনো সন্তুষ্ট নই-স্টিফেন জে র‌্যাপ

১৫/৫/২০১৩,

মেহেদী হাসান
বাংলাদেশে বানবতা বিরোধী অপরাধ বিচার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন জে র‌্যাপ বলেছেন, আমি  এখনো সন্তুষ্ট নই।  বিচার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে (আই এ্যাম নট ইয়েট স্যাটিসফাইড। আই ডু হ্যাব কনসার্ন)। তবে বিচার প্রকৃয়া বিষয়ে তার পুর্বের দেয়া সুপারিশ এবং আরো কিছু প্রসঙ্গে  তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে।

দু’দিনের ঢাকা সফর শেষে স্টিফেন যে র‌্যাপ আজ আমেরিকান সেন্টারে  সাংবাদিকদের কাছে তার মতামত ব্যক্ত করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, আপনি মঙ্গলবার রাতে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে আসামী পক্ষ আপনার বরাত দিয়ে বলেছেন আপনি বিচার নিয়ে তাদের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আবার বুধবার আপনি আইনমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আপনার বরাত দিয়ে বলেছেন আপনি বিচার নিয়ে সন্তুষ্ট।  এ প্রেক্ষিতে আমরা আপনার মুখ থেকে  নির্দিষ্ট করে শুনতে চাই বিচার বিষয়ে আপনি সন্তুষ্ট না অসন্তুষ্ট। খুসী না অখুসী।
এ প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন জে র‌্যাপ  বিচার নিয়ে সার্বিক অবস্থা বর্ননা করে বলেন, আমি  এখনো সন্তুষ্ট নই।  বিচার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে (আই এ্যাম নট ইয়েট স্যাটিসফাইড। আই ডু হ্যাব কনসার্ন)।

সংবাদ ব্রিফিয়ের সময় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিযুক্ত যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন জে র‌্যাপ গত মঙ্গলবার দুদিনের সফরে ঢাকা আসেন। ঢাকা সফরকালে যুদ্ধাপরাধ বিচার বিষয়ে আসামী পক্ষ, রাষ্ট্রপক্ষ এবং আইনমন্ত্রীর সাথে মতবিনিময় করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালও সফর করেন গতকাল। এর আগেও যুদ্ধাপরাধ বিচার পর্যবেক্ষনের জন্য তিনি তিন দফা ঢাকায় আসেন এবং  বিচারকে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য  তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুপারিশ পেশ করেন বাংলাদেশ সরকারের কাছে।

দুদিনের সফর শেষে সাংবাদিকদের কাছে তার অবস্থান তুলে ধরে স্টিফেন জে র‌্যাপ গতকাল তার ব্রিফিংয়ের  শুরতে বলেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কাউকে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সন্দোহীতভাবে অপরাধ প্রমান করতে হবে। বাংলাদেশে প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় সংবিধানের আলোকে যেসব  বিষয় কার্যকর আছে তার  অনেক কিছু ট্রাইব্যুনালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় ।
বিচারকে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহনযোগ্য, স্বচ্ছ এবং আসামীর অধিকার রক্ষা বিষয়ে স্টিফেন জে র‌্যাপ ইতোপূর্বে যেসব অভিমত, সুপারিশ পেশ করেন তা পুনর্ব্যক্ত করেন গতকাল।
বাংলাদেশে যে বিচার হচ্ছে তা স্থানীয় আইনে, স্থানীয় বিচারকদের দিয়ে হচ্ছে। কিন্তু অপরাধটা আন্তর্জাতিক। এ বিষয়ে নানা সমালোচনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা স্টিফেন জে র‌্যাপের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক এসব অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইন রয়েছে। তাই নতুন করে এ বিষয়ে কোন কিছু সংযোজনের সুযোগ  নেই ।
রাজনৈতিক উদ্দেশে বিচার পরিচালনার অভিযোগ এবং শাহবাগের দাবির প্রেক্ষিতে আইনের সংশোধন বিষযক এক প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন জে র‌্যাপ বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশে বিচার হচ্ছে এ অভিযোগ উঠেছে প্রতিবারই। তাই এটাকে আরো বেদনাদায়ক করার জন্য রায় হয়ে যাওয়ার পর আইন সংশোধন করাটা ভাল দেখায় না। আর কোন পক্ষের দাবির দিকে তাকিয়ে নয় বরং  ঘটনা (ফ্যাক্টস) এবং সাক্ষ্য প্রমানের ওপর ভিত্তি করেই বিচারকদের রায় দেয়া উচিত। রাজনীতি নয় বরং ফ্যাক্টস এর ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।

যুদ্ধাপরাধ বিচার আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী অঙ্গিকার ছিল এবং জনগন তাদের এজন্য ভোট দিয়েছে। এ বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাপ বলেন, বিচারে রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলন আছে এং রাজনৈতিক ইচ্ছা এখানে একটি বিষয় (দেয়ার ইজ এ রিফেকশন অব পলিটিক্যাল উইল এন্ড পলিটিক্যাল উইল ইজ এ ফ্যাক্টর)।

মৃত্যুদন্ড প্রদান বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আরো সতর্ক  হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন