শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৩

এক নজরে যুদ্ধাপরাধ এ্যাক্ট


 মেহেদী হাসান
নাম:        দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবিউনালস) (এমেন্ডমেন্ট) এ্যাক্ট ২০০৯
            (১৯৭৩ সালে দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবিউনাল) এ্যাক্ট প্রণীত হয়।
             ২০০৯  সালের ৮ জুলাই সংশোধন করা হয়।)

আইনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও  আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির আটক, বিচার  শাস্তি বিধানের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে এ এ্যাক্ট প্রণীত হয়।

শাস্তি: এই এ্যাক্টের অধীনে প্রতিষ্ঠিত আদালত অপরাধীর সবোর্চচ্চ শাস্তি মুত্যদণ্ড প্রদান
       করতে পারবে।
বিচারের আওতা: এই  এ্যাক্টের অধীনে প্রতিষ্ঠিত আদালত মূলত চারটি অপরাধের বিচার
                    করবে। এগুলো হল-মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, শান্তির বিরুদ্ধে
                    অপরাধ,গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধ। সশস্ত্র বাহিনী, প্রতিরক্ষা বাহিনী বা
                    সহায়ক বাহিনীর সদস্য ছাড়াও কোন একক ব্যক্তি বা ব্যাক্তিগোষ্ঠীকেও 
                    বিচারের আওতায় আনা যাবে।

অপরাধের সংজ্ঞা:
১. মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ:  হত্যা,  দাসত্ব করতে বাধ্য করা, জোরপূর্বক জনসাধারণকে অন্যত্র স্থানান্তর বা দ্বীপান্তর করা, অবরোধ করে  রাখা, নির্যাতন চালানো,
ধর্ষণ, অপহরণ এবং রাজনৈতিক, ধর্ম, বর্ণ বা  অন্য কোন কারণে বেসরমারিক জনসধারণের বিরুদ্ধে অন্য যেকোন অনমানবিক অপরাধ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। 
২. শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ: আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করে আগ্রাসনমূলক যুদ্ধের জন্য  পরিকল্পনা ও  প্রস্তুতি
৩. গণহত্যা: কোন জাতি, গোষ্ঠী, বর্ণ এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়কে আংশিক বা পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের বিরুদ্ধে নিচের যেকোন একটি অপরাধমূলক কাজ পরিচালনা করলে তা গণহত্যার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে যথা-
ক. কোন সম্প্রদায় বা শ্রেণীর  সদস্যদের হত্যা করা
খ. সম্প্রদায় বা শ্রেণীর  সদস্যদের শারিরীক এবং মানসিকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতি
    করা
গ. আংশিক বা পুরোপুরিভাবে কোন শ্রেণীকে ধ্বংস করার জন্য তাদের ওপর কোনকিছু 
    চাপিয়ে দেয় বা জীবন বিপন্ন করে তোলার ব্যবস্থা করা।
ঘ. জন্মহার নিয়ন্ত্রন করার জন্য কোন পদ্ধতি  চাপিয়ে দিয়ে তাদের  নির্মূলের কৌশল গ্রহণ করা
ঙ. শিশুদের জোরপূর্বক এক গ্রুপ থেকে অন্য গ্রুপে স্থানান্তর করা।
৪. যুদ্ধাপরাধ:  যুদ্ধের আইন এবং রীতি লঙ্ঘন করে কাউকে হত্যা করা, দাসে পরিণত করা, যুদ্ধ বন্দীকে হত্যা করা, রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তিগত সম্পত্তি দখল করা, শহর, নগর এবং বন্দরে নির্মম ধ্বংস লীলা পরিচালনা করা।

আদালত:
এক বা একাধিক আদালত স্থাপন করা যাবে এই এ্যাক্টের অধীনে। প্রতি আদালতে একজন চেয়ারম্যান এবং সদস্য সংখ্যা দুই এর কম এবং চারজনের বেশি হবেনা।  বাংলাদেশের সুপ্রীম কোটের বিচারপতি হবার যোগ্য যেকোন বিচারপতি চেয়ারম্যান বা সদস্য হিসেবে নিয়োগ   করা যাবে।

রুলস অব এভিডেন্স: সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনে প্রকাশিত খবর, ছবি এবং ক্যামেরায় ধারণ করা চিত্র বা  রেকডির্ং  অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমান হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে। এসনকি মৃত্যবরণকারী কোন ব্যক্তির অতীতে রেকর্ড করা বক্তব্যও প্রমান হিসেবে আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে। বিচারের আগে জিজ্ঞাসাবাদের সময় যেকোন প্রথম শ্রেণীর মেজিস্ট্রেট তার অভিযুক্তের জবানবন্দী রেকর্ড করতে পারবে।

১৯৭৩ সালের আইনের সংশোধন:
১৯৭৩ সালের আইনে  সশস্ত্র বাহিনী, প্রতিরক্ষা বাহিনী বা
                    সহায়ক বাহিনীর সদস্যদের বিচার করার কথা বলা হয়। পরে ২০০৯ সালের
                      সংশোধনীতে ‘কোন একক ব্যক্তি বা ব্যাক্তিগোষ্ঠীকেও  (ইন্ডিভিজুয়াল অর  গ্রুপ অব
                     ইন্ডিভিজুয়ালস)                       বিচারের আওতায় আনা যাবে’ কথাগুলো যোগ রা  
                    হয় । এ সংশোধনীর   মাধ্যমে বাংলাদেশী লোকজনের বিচারের উদ্যোগ নেয়া
                     হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন