বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৩

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিষয়ে আগামীকাল শুনানী

২১/৮/২০১৩
নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) বিরুদ্ধে আদালত অবমনার  অভিযোগ বিষয়ে আগামীকাল  বৃহষ্পতিবার শুনানী অনুষ্টিত হবে। আজ ট্রাইব্যুনাল এ তারিখ ধার্য্য করেছে।

ট্রাইব্যুনাল-১ চেয়ারম্যান এটিএম ফজলে কবির আজ মীর কাসেম আলীর চার্জ গঠন শুনানী শেষে বলেন, আমাদের কাছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিষয়ে যে আবেদন করা হয়েছে তা আমরা দেখেছি। আগামীকাল এ বিষয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। তিনি রাষ্ট্রপক্ষকে এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেন।

প্রসিকিউশন বা রাষ্ট্রপক্ষ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিরুদ্ধে আদালত অবমনার  অভিযোগে গত মঙ্গলবার মামলা দায়ের ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে বিচার প্রকৃয়াকে  মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ এবং পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে আখ্যায়িত করে গত ১৬ আগস্ট  বিবৃতি প্রদানের  প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ সংস্থাটির বিরুদ্ধে  আদালত অবমাননার  অভিযোগ দাখিল  করে।

চলতি মাসের  ১৬ তারিখ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার প্রকৃয়ার তীব্র সমালোচনা করে বিবৃতি প্রদান করে। এতে বলা হয়-  অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার প্রকৃয়া মারাত্মক ত্রুটিপূর্ন ছিল এবং ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করেছে। রাষ্ট্রপক্ষের  উপস্থাপিত তথ্য প্রমানে ঘাটতি থাকায় ট্রাইব্যুনাল নিজ থেকে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এটা তারা করতে পারেনা কারণ বিচারকরা তাদের সামনে উপস্থাপিত তথ্য বিশ্লেষন করে রায় দেবেন। নিজেরা তদন্ত করতে পারেননা।  তাদের তদন্তের ফাইন্ডিংস  বিষয়ে আসামী পক্ষ কোন বক্তব্য রাখার সুযোগ পায়নি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় যে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয় তাহল-ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সাথে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আতাত ছিল এবং বিচারপকরা রাষ্ট্রপক্ষের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করেছেন। এ বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ স্কাইপ কেলেঙ্কারির বিষয় তুলে ধরে মন্তব্য করেছে-এ থেকে স্পষ্ট যে, রাষ্ট্রপক্ষ কিভাবে এ বিচার পরিচালনা করবে, কোন সাক্ষী কখন হাজির করবে, সাক্ষীকে দিয়ে কি বলাতে হবে এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারক রাষ্ট্রপক্ষের হাতে নীলনকশা তুলে দিয়েছে। স্কাইপ ডায়ালগ থেকে এটি স্পষ্ট যে বিচারকরা ঘণিষ্ঠভাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পরামর্শ এবং নির্দেশনা দিয়েছে এ বিচার পরিচালনা বিষয়ে।

অধ্যাপক গোলাম আযমের বিচার নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতিকে একটি স্বাধীন দেশের বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ, ট্রাইব্যুনালের পুরো বিচার প্রকৃয়াকে হেয় করা, ট্রাইব্যুাল সম্পর্কে জনমনে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করা, ট্রাইব্যুনালের সম্মান নষ্ট করা  এবং সার্বিকভাবে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে হেয় করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে।

আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন  হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিরুদ্ধে বিচার প্রকৃয়া শুরু করা হবেনা সে মর্মে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে। এছাড়া হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল আইনের ১১ (৪) ধারায় বর্নিত সর্বোচ্চ ১ বছরের সাজা অথবা পর্যাপ্ত পরিমান জরিমানারও আবেদন করা হয়েছে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন