বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৩

এটিএন বাংলার দুই ঘন্টার ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখানো হল ট্রাইব্যুনালে

মেহেদী হাসান, ১৭/৪/২০১২
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে আজ   ষষ্ঠ দিনের মত সাক্ষ্য দিলেন তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যের অংশ হিসেবে টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলার তৈরিকৃত  ‘১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ শীর্ষক  দুই ঘন্টার একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখানো হল  বড়  পর্দায়।
এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান প্রযোজিত  প্রামান্য চিত্রের ধারাভাষ্যে ছিলেন এটিএন বাংলার সাংবাদিক রুমি নোমান এবং রাহুল রাহা। প্রামান্য চিত্রটি শুরু  করা হয় পলাশী থেকে।  তারপর  চলে আসা হয় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং ভারত বিভাগ প্রসঙ্গে। ভারত বিভাগের জন্য মুসলিম লীগের অনমনীয় অবস্থানকে দায়ী করা হল সম্পূর্ণভাবে  । মহাত্মা গান্ধী শত চেষ্টা করেও ভারত বিভাগ ঠেকাতে পারলেননা মুসলিম লীগ এবং     মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র কারনে।  এরপর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর  উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হল তিনি ডাইরেক্ট এ্যকশন বলার পরপর শুরু  হয়ে গেল   ইতিহাসে ভয়াবহ হিন্দু মুসলমান  দাঙ্গা। এ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ল বাংলাদেশের নোয়াখালিতেও। দাঙ্গা দমনের চেষ্টায় মহাত্মা গান্ধীর নোয়াখালি সফর দেখানো হল। ধারাভাষ্যে বলা হল  এবং দেখানো হল মহাত্মা গান্ধী দাঙ্গা ঠেকানোর জন্য যারপরনেই চেষ্টা করছেন। মহাত্মা গান্ধী এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চেষ্টায় দাঙ্গা বন্ধ হল এক সময়।
এরপর ২৫ মার্চের গনহত্যা, স্বাধীনতা যুদ্ধের  প্রস্তুতি থেকে  শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উল্লাস পর্যন্ত  বিভিন্ন পর্যায় দেখানো হল। স্বাধীনতা যুদ্ধ  শুরুর পর ভারতে আশ্রয় নেয়া শরনার্থীদের করুন দৃশ্য দেখানো হয়। ভারতে আশ্রয় নেয়া অসহায় ুধার্ত  মৃত্যুপথযাত্রী শিশু নারী এবং বৃদ্ধদের করুন দৃশ্যগুলো ছিল হৃদয় বিদারক। ধারাভাষ্যে বলা হল ুধা  এবং অপুষ্টির কারনে শরনার্থীতে আট লাখ শিশু মারা যায়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে ভারতের তৎকালীন মিসেস ইন্দিরাগান্ধীর বিশ্বময় সফর  এবং বিভিন্ন উদ্যোগ দেখানো হল স্ববিস্তারে। ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ  শুরু হয়ে যাওয়া, ভারতের সৈন্যদের বাংলাদেশে প্রবেশ করা, যুদ্ধে অংশ নেয়া থেকে শুরু করে ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের আত্মসমপর্ন এবং বিজয় উল্লাস বিস্তারিত দেখানো হয়।  বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার দৃশ্য, জহির রায়হানের বক্তব্য স্থান পায় ডকুমেন্টারিতে।  ১১টি সেক্টর কমান্ডের মধ্যে সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফের যুদ্ধে অংশগ্রহণ, বক্তব্য প্রচার ছাড়াও তার সম্পর্কে বলা হল অনন্য যুদ্ধ কৌশলের অধিকারী ছিলেন তিনি।
এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডন থেকে ভারত হয়ে দেশে আসার পর্যায় দেখানো হল।  দেশে আসার পথে ভারতে যাত্রা বিরতিকালে ভারতের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী  কর্তৃক সংবর্ধনা, দিল্লী জনসভায় বঙ্গবন্ধুর ভাষন স্থান পায় ডকুমেন্টারিতে। 
১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে ৭ মার্চের ভাষন, ১৭   এপ্রিল মুজিব নগর সরকার গঠন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষন, দেখানোর পাশপাশি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ  রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক লিখিত স্বাধীনতা ঘোষনা ইপিআর বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে প্রচারের ডুকমেন্ট দেখানো হয়। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার অংশ বিশেষও  শোনানো হয়।
দুই ঘন্টার ডকুমেন্টের সবশেষে রয়েছে ইভারহমানের  একটি দেশাত্ববোধের গানের দৃশ্য সাভার স্মৃতিসৌধে। তবে ডকুমেন্টারির কোথাও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সম্পর্কিত কিছু ছিলনা।

দুই ঘন্টার এ ডকুমেন্ট ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের ওপর  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনবিসি এবং সিবিএস টিভিতে  প্রচারিত খবর দেখানো হয়।
এটিন বাংলার ফিল্ম দেখানোর পর তদন্ত কর্মকর্তা তার জবানবন্দী প্রদান আবার শুরু  করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন