বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

মাওলানা আব্দুর রহিমের ঘণিষ্ঠ আত্মীয় আবেদ খান

মেহেদী হাসান, ১৬/২/২০১২, বৃহষ্পতিবার
দৈনিক সমকাল এবং দৈনিক কালের কণ্ঠের সাবেক সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে  ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন আজ। পাকিস্তান  জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমীর এবং পূর্ব পাকিস্তান  জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা বরেণ্য আলেম মরহুম মাওলানা আব্দুর রহিম তার ঘণিষ্ঠ আত্মীয় বলে জেরায় স্বীকার করেন আবেদ খান।  এছাড়া মাওলানা আকরাম  খাঁ-ও তার  আত্মীয় বলে  আদালতে জেরার সময় জানান  তিনি।  

২০০৭ সালে মাওলানা সাঈদীকে নিয়ে দৈনিক সমকালে প্রকাশিত একটি খবর বিষয়ে  আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন আবেদ খান। তখন তিনি ঐ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।

আবেদ খানের জবানবন্দী শেষে তাকে জেরা করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। মিজানুল ইসলাম তাকে প্রশ্ন করেন “পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দেন মাওলানা আব্দুর রহিম।”  আবেদ খান “হ্যা” বলে জবাব দেন। এরপর মিজানুল ইসলাম প্রশ্ন করেন, “তিনি আপনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়”। এ প্রশ্নের জবাবে আবেদ খান বলেন “হ্যা। বিবাহ সূত্রে”।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, মাওলানা আব্দুর রহিমের ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করেছেন আবেদ খান। সেই হিসেবে তিনি মাওলানা আব্দুর রহিমের ভাতিজী জামাই।

আবেদ খান ২০০৭ সালে সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন  বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়ার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে আদালতে বক্তব্য রাখেন। তাতে তিনি পাকিস্তান সৃষ্টি, সাইয়ৈদ আবুল আলা মওদূদীর ফাঁসির আদেশ,   ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে জামায়াত এবং জামায়াত রাজনীতিবিদদের ভূমিকা নিয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলামও তাকে  তার ইতিহাস বিষয়ক বক্তব্যের ওপর দীর্ঘ জেরা করেন। আজ সাড়ে তিনটায় তার জেরা  অসমাপ্ত অবস্থায় মুলতবী করেন আদালত।

আবেদ খানের জবানবন্দী
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে আবেদ  খানের জবানবন্দী   দেয়ার ব্যবস্থা করেন আদালতে। এখানে হুবহু তা তুলে ধরা হল:
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী : আপনার নাম, বয়স  এবং পেশা বলেন।
আবেদ খান: আমার নাম আবেদ খান। বয়স প্রায় ৬৭ বছরের কাছাকাছি। আমি পেশায় সাংবাদিক। ১৯৬২ সালের নভেম্বর মাস থেকে আমি ছাত্রবস্থায়ই সাংবাদিকতা শুরু করি। এবছর আমার সাংবাদিকতার বয়স ৫০ বছর পূর্ণ হবে।
আইনজীবী : ২০০৭ সালেও আপনি এই পেশায় ছিলেন?
আবেদ  খান: ২০০৭ সালে আমি ‘দৈনিক সমকাল’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলাম।
আইনজীবী : ২০০৭ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারী তারিখে ‘দৈনিক সমকাল’ পত্রিকায় একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
আবেদ খান: জি।
আইনজীবী : রিপোর্টটি কি বিষয়ে ছিল আমাদের বলেন।
আবেদ খান : যতদূর মনে পড়ে রিপোর্টের শিরোনাম ছিল ‘জামাতের গডফাদাররা ধরাছোয়ার বাইরে’। এটি ঐদিন সমকালে লিড নিউজ ছিল। (এসময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এসময় কম্পিউটারের মনিটর দেখে বলেন জামাত কথাটি ভুল লেখা হয়েছে। এটি হবে জামায়াত। তখন আবেদ খান বলেন  সমকালে আমরা ‘জামাত’ এভাবে লিখতাম।)
আইনজীবী : ঐ রিপোর্ট কাদের নিয়ে করা হয়েছিল?
আবেদ খান: রিপোর্টে চারজনের  কথা উল্লেখ ছিল।
আইনজীবী : তাদের নাম বলেন।
আবেদ খান:  চারজনের মধ্যে এক নম্বরে ছিলেন দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী, দুই নম্বরে ছিলেন  শাহজাহান চৌধুরী, তিন নম্বরে গোলাম পরোয়ার এবং চার নম্বরে ছিলেন আবু তাহের। স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রেরিত সংবাদের ভিত্তিতে সেই সংবাদগুলো একত্রিত করে পত্রিকায় ছাপানো হয়।
আইনজীবী : রিপোর্টের বিষয়বস্তু  কি ছিল?
আবেদ খান: দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে  ঐ রিপোর্টে ছিল যে, পাড়েরহাট বন্দরে তিনি রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিলেন, নির্যাতন করেন। লুন্ঠন করেন।  পাড়েরহাট বন্দরে ধনাঢ্য  ব্যবসায়ী মদন সাহা, বিপদ সাহা, নারায়ন সাহাদের দোকান বাড়ি ঘর লুটপাটের বিবরন ছিল।   তার সাথে সাত সদস্যের যে বাহিনী ছিল তারা সকলেই রাজাকার, আলবদর, আল শামস্ বাহিনীর সদস্য ছিল।

আইনজীবী : রিপোর্ট প্রকাশ হবার পর  তিনি (মাওলানা সাঈদী) কি কোন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন?
আবেদ খান: যেহেতু আমি সম্পাদক সেহেতু সংবাদ প্রকাশের দায়-দায়িত্ব আমার।  তাই ঐ রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী আমার বিরুদ্ধে  ১০ কোটি টাকার মান হানি মামলা করেন। আমিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
আইনজীবী : আপনারা মামলার জবাব দিয়েছিলেন?
আবেদ খান: ঐ মামলায় আমাদের পক্ষ থেকে আদালতে বর্ণনাপত্র দাখিল করা হয়েছিল। আইনজীবী : মামলার ফলাফল কি হয়েছিল?
আবেদ খান : মামলাটি পিরোজপুর যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দাখিল হয়েছিল এবং মামলার নম্বর ছিল ০৪/২০০৭। মামলাটি খারিজ হয়ে গিয়েছিল।
এরপর ২০০৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের ফটোকপি আবেদ খানের সামনে পেশ করা হয় এবং এটি সেই রিপোর্ট বলে তিনি প্রত্যয়ন করেন। আবেদ খান   আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন  তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার অফিসে আমার নিকট গিয়ে আমার জবানবন্দী নিয়েছেন। তখন আমি ‘কালের কন্ঠ’ পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে কর্মরত ছিলাম।

আদালতে আবেদ খানের বক্তব্য :
প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে জবানবন্দী শেষ হয়ে  আবেদ  খান আদালতকে বলেন,   সাংবাদিক হিসেবে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। আজকের যুদ্ধাপরাধের বিচার ইতিহাসের একটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। তিনি আদালতে এ বিষয়ে কিছু বলার জন্য অনুমতি চান। আদালত বলেন মামলার সাথে প্রাসঙ্গিক  হলে বলতে পারবেন। অপ্রাসঙ্গিক হলে বলার দরকার নেই। আমরা সেটি রেকর্ডেও রাখবনা।
তখন আবেদ খান বলেন মামলার সাথে প্রাসঙ্গিকতা আছে। তখন আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি বলা শুরু করেন।
১৯৪৭ সালে দ্বীজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে যখন পাকিস্তান হয় তখন মওদূদী সাহেব পাকিস্তান মেনে মেননি। তিনি লিখেছিলেন আমরা জাতি বা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করিনা। মওদুদী সাহেব তার লেখায়  পাকিস্তানকে না পাকিস্তান বলে উল্লেখ করেছিলেন। পরবর্তী পর্যায়ে মওদুদী সাহেব যখন পাকিস্তানে আগমন করেন তার পরে একটি বিশাল দাঙ্গা হয় যা কাদিয়ানী দাঙ্গা নামে পরিচিত। সেই দাঙ্গায় উস্কানী দেয়ার কারণে মওদুদী সাহেবের বিচার করা হয় এবং তার প্রাণ দন্ডাদেশ হয় এবং ইতিহাস থেকে বোঝা যায় মওদুদী সাহেব তখন তার জামায়াতে ইসলামী বাহিনী সমেত তদানিন্তন প্রতিক্রিয়াশীল পাকিস্তান সরকারের অনুগত হয়ে যান এবং সামগ্রিক ভাবে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের বিরোধীতা করতে শুরু করেন। জনাব আব্বাস আলী খানের আত্ম জৈবনিক গ্রন্থে মওদুদী সাহেবের এই দর্শনের প্রতিফলন আছে যা এখনো পর্যন্ত জামাতি দর্শন হিসাবে পরিগনিত। সাঈদী সাহেবের বিভিন্ন সময়ের ওয়াজ মাহফিলেও এই ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের যে সৈরাচারী সরকার এবং পরবর্তী পর্যায়ের সামরিক তন্ত্র তাদের একটিই উদ্দেশ্য ছিল এদেশের বাঙালী জাতীয়তাবাদকে ধ্বংস করা, বাঙালী সাংস্কৃতিকে ধ্বংস করা এবং এদেশের জনসংখ্যার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসাবে প্রতিপন্ন করার প্রয়াস নেয়া। এ ব্যাপারে তদানিন্তন দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলসমূহ বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। যার জন্য আমরা দেখতে পাই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচন, ১৯৬২ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন ও শিক্ষা আন্দোলন এবং ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ভিত্তিতে আত্মনিয়ন্ত্রনাধিকার এবং সায়ত্তশাসনের  যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামের বিরোধীতা করেছিল জামাতে ইসলামী। আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখিছি যখনি এদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে কিংবা বাঙালী জাতিসত্ত্বার অধিকারের প্রসঙ্গ উস্থাপিত হয়েছে তখনি এখানকার প্রতিটি সংগ্রামকে পাশ্ববর্তী দেশের চক্রান্ত কিংবা তাদের এজেন্টদের কর্মকান্ড হিসাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুথানের ভিতর দিয়ে যখন আইউবি সামরিক তন্ত্রের পতন ঘটে এবং আরেক সামরিক শাষক ইয়াহিয়ার উত্থান ঘটে তখন জামাতে ইমলামীর ভূমিকা ছিল রহস্যজনক যার পরিণতি আমরা দেখতে পাই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকে জনাব গোলাম আযম এবং জামাতে ইসলামী সংগঠন হিসাবে তাদের কার্যক্রমে। আমরা জামাতে ইসলামীকে সক্রিয় দেখতে পাই আলবদর, রাজাকার, আল শামস্ বাহিনী গঠনে। কাজেই সাঈদী সাহেব যখন লুন্ঠনে কিংবা বিভিন্ন মানবতা বিরোধী কার্যক্রমে জড়িত হয়ে পড়েন কিংবা পাকিস্তান বাহিনীর অনুচর হিসাবে বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত করেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই তার বাহিনীকে ধরে নেয়া হয় আলবদর, রাজাকার এবং আল শামস্ বাহিনীর সংঘবদ্ধ সংগঠন হিসাবে। আমরা দেখতে পাই স্বাধীনতা পরবর্তী পর্যায়ে মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী কিংবা জামাতে ইসলামীর অন্যান্য নেতৃস্থানীয় যারা ছিলেন তারা আত্মগোপন করেন। পাকিস্তানের পক্ষে এবং পূর্ব পাকিস্তান রক্ষার পক্ষে তারা তাদের ভূমিকা পালন করতে থাকেন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর জামাতে ইসলামী স্বরুপে আবির্ভূত হয় এবং পরবর্তী পর্যায়ে ইসলামী ডেমোক্রেটিক লীগ গঠন এবং তার পরবর্তী পর্যায়ে জামাতে ইসলাম সরাসরিভাবে রাজনৈতিক মঞ্চে আবির্ভূত এবং গোলাম আযম সাহেব বাংলাদেশে বিশেষ ব্যবস্থাধীনে আগমন করেন। জামাতের রাজনৈতিক কর্মকান্ড ক্ষেত্র প্রস্তুত হয় এবং তখন থেকেই প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকান্ড তারা পরিচালনা করতে শুরু করে তারা।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর এক প্রশ্নের জবাবে আবেদ খান বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় সারা দেশের মানুষ আশ্রয়ের জন্য এক স্থান হতে অন্য স্থানে ছুটাছুটি করেছে, কোথায় স্থির থাকতে পারেনি। এক কোটি মানুষকে দেশ ত্যাগ করতে হয়েছিল। মূলত সেই সময়ে মানুষেরা গণহত্যা, সম্ভমহানী, অত্যাচার ইত্যাদি থেকে আত্মরক্ষার জন্য এদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। আমরা জানি ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হন। চার লক্ষ মা-বোনের সম্ভমহানী হয় এবং অনেক লোককে দেশের মধ্যে আশ্রয়হীন হতে হয়। সাঈদী সাহেব পরবর্তীকালে তার ওয়াজ ও কর্মকান্ডের মাধ্যমে এই জিনিসগুলোকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছেন।
এরপর মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম আবেদ খানকে জেরা করেন।

জেরা:
আইনজীবী : পূর্ব পাকিস্তান  জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেন মাওলানা আব্দুর রহিম?
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : তিনি আপনার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়?
সাক্ষী : হ্যা। বিবাহসূত্রে।
আইনজীবী : প্রখ্যাত সাংবাদিক মাওলানা আকরাম খাঁ তিনিও আপনার আত্মীয়?
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সমর্থক ছিল দৈনিক আজাদ।
সাক্ষী : ঐভাবে ছিলনা। সামগ্রিকভাবে সমর্থক ছিলনা।
আইনজীবী : তবে ঐ পত্রিকার সম্পাদক জনাব আবুল কালাম শামসুদ্দিন ভাষা আন্দোলন সমর্থন করেছিলেন।
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : ভাষা আন্দোলনের বিরোধীতার কারনে তখন উত্তেজিত জনতা দৈনিক সংবাদ পত্রিকা পুড়িয়ে দিয়েছিল।
সাক্ষী : হ্যা। কারণ ওর মালিক ছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী  নুরুল আমিন।
আইনজীবী : সম্পাদক কে ছিলেন?
সাক্ষী :  খায়রুল কবির খুব সম্ভবত।
আইনজীবী : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী অংশ নিয়েছিল।
সাক্ষী : আমার যতুটুকু মনে হয় তারা অংশগ্রহণ করেনি।
আইনজীবী : যে মামলায় মাওলানা মওদূদী সাহেবের ফাঁসির হুকুম হয় উচ্চ  আদালতে সে মামলায় তার আইনজীবী ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী তা আপনার জানা আছে?
সাক্ষী : আমার অতটা জানা নেই।
আইনজীবী : কাদিয়ানী বিরোধী উসকানী দেয়ার অভিযোগে তার ফাঁসির আদেশ হয় বললেন  আপনি। কিভাবে তিনি উসকানী দিয়েছেন বলতে পারবেন?
সাক্ষী : কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষনার দাবিতে তার একটা লেখার কারনে কাদিয়ানী বিরোধী দাঙ্গা সংঘটিত হয়।
আইনজীবী : তার ঐ লেখাটি কি পরে পাকিস্তান সরকার নিষিদ্ধ করেছিল?
সাক্ষী : এ মুহুর্তে বলতে পারবনা।
আইনজীবী : দাঙ্গাকারী কারো মৃত্যুদন্ড হয়েছিল?
সাক্ষী : আমার জানা নেই।
আইনজীবী : মৌলিক গণতন্ত্রের অধীনে নির্বাচনে আইউব খানের বিরুদ্ধে  ফাতেমা জিন্নাহে সম্মিলিত বিরোধী দল প্রেসিডেন্ট প্রাথী করেছিল।
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : এই সম্মিলিত বিরোধী দলে আওয়ামী লীগ  এবং জামায়াতও ছিল।
সাক্ষী : আওয়ামী লীগ ছিল। তবে জামায়াত ছিল কি-না বলতে পারবনা।
আইনজীবী : ঐ নির্বাচনের পর পার্লামেন্টে কেন্দ্রীয় পরিষদের সংসদীয় দলের নেতা ছিলেন খান এ সবুর খান।
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : বিরোধী দলের নেতা ছিলেন মশিউর রহমান।
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : স্পিকার ছিলেন ফজলুল কাদের চৌধুরী  এবং আব্দুল জব্বার খান পর্যায়ক্রমে।
সাক্ষী : হ্যা। কেন্দ্রীয় পরিষদের।
আইনজীবী : এই আব্দুল জব্বারের ছেলে হচ্ছেন রাশেদ খান  মেনন  এমপি যিনি শিক্ষা  মন্ত্রণালয়  বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বর্তমানে
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : ঐ সময় প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধী দলের নেতা ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান খান।
সাক্ষী : আসাদুজ্জামান খান নয় অ্যাডভোকেট আফসারুল ।
আইনজীবী : উপনেতা ছিলেন মাওলানা আব্দুস সোবহান।
সাক্ষী : আমার মনে হয় ঠিক নয়। আপনি মনে হয় জিয়াউর রহমানের সময়ের কথা বলছেন।
আইনজীবী : ১৯৬৬-৬৯ সালে আইউব সরকার টিকে থাকুক এই মর্মে তখন ইত্তেফাকে জামায়াতের কোন বিবৃতি ছাপা হয়েছিল? আপনি তো তখন ইত্তেফাকে কর্মরত ছিলেন।
সাক্ষী : সরকারি নির্দেশে  তখন ইত্তেফাক বন্ধ ছিল।
আইনজীবী : অন্য কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল কি-না বলতে পারবেন?
সাক্ষী :  এই মুহুর্তে বলতে পারবনা।
আইনজীবী : পূর্ব বাংলার মানুষ অবহেলিত এবং তাদের উন্নয়নের ছুতায় ১৯০৫ সালে বঙ্গবঙ্গ হয়েছিল।
সাক্ষী : বঙ্গভঙ্গ করেছিল বৃটিশরা তাদের প্রশাসনিক সুবিধার জন্য। অবহেলিতদের জন্য উন্নয়নের ছুতায় করেছিল কি-না বলতে পারবনা।
আইনজীবী : এই বঙ্গভঙ্গের বিরোধীতায় তৎকালীন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস আন্দোলন করেছিল।
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : এই বঙভঙ্গের অন্যতম বিরোধীতাকারী ছিলেন কবিগুরু  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এবং বিরোধীতা করে তিনি গানও লিখেছিলেন।
সাক্ষী : রবীন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গের বিরোধী ছিলেন।  বিরোধীতা করে গান লিখেছিলেন কি-না জানা নেই।
আইনজীবী : ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবে উপমহাদেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ  এলাকা নিয়ে একাধিক মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব ছিল।
সাক্ষী : হ্যা। আমার একটু ব্যাখ্যা আছে। (তবে সে ব্যাখ্যা কোর্টের রেকর্ডে লিপিবদ্ধ  হয়নি।)
আইনজীবী : ১৯৪৬ সালের লাহোর প্রস্তাব সংশোধন করে একাধিক মুসলিম রাষ্ট্র কথাটি সংশোধন করে একটি মুসলিম রাষ্ট্র প্রস্তাব করা হয়।
সাক্ষী : মুসলিম লীগ  করেছিল এটা।
আইনজীবী : এসময় পূর্ব বাংলার মুসলিম লীগের নেতৃত্বে ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিম।
সাক্ষী : হ্যা। মাওলানা আকরাম খাঁও ছিলেন।
আইনজীবী : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সেময় মুসলিম লীগ করতেন।
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : লাহোর প্রস্তাব সংশোধন করে একাধিক মুসলিম রাষ্ট্র প্রস্তাব বাদ দিয়ে একটি মুসলিম রাষ্ট্র করার প্রস্তাব গ্রহণ করায় মসুলিম লীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক।
সাক্ষী : ঐ কারনে নয়। তিনি তার রাজনৈতিদক কারনে মুসলিম লীগ থেকে বের হয়ে আসেন। তিনি কৃষক প্রজা পার্টি করতেন। তিনি কিছুদিনের জন্য মুসলিম লীগে আসেন। পরে আবার নিজ দলে ফিরে যান।
আইনজীবী : ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাব পাশের সময় শেরে বাংলা মুসলিম লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন।
সাক্ষী : আমি নিশ্চিত নই।
আইনজীবী : ১৯৪৬ সালে লাহোর প্রস্তাব সংশোধনের কারনে মুসলিম লীগ থেকে শেরে বাংলার পদত্যাগের পর এ দলের সাধারন সম্পাদক পদ গ্রহণ করেন আবুল হাশিম।
সাক্ষী : এটাও আমার নিশ্চিত করে জানা নেই।
আইনজীবী : প্রখ্যাত কলামিস্ট বদরুদ্দিন উমরের পিতা হচ্ছেন এই আবুল  হাশিম।
আইনজীবী : ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধীতাকারী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টিরও বিরোধীতা করেছিল।
সাক্ষী : হ্যা, কংগ্রেস পাকিস্তান সৃষ্টির বিপক্ষে ছিল এটা সর্বাংশে সত্য নয়। কিছূ অংশ পক্ষেও ছিল।
আইনজীবী : ১৯৪৭ সালে কংগ্রেসের ভারত ছাড় আন্দোলনের আর এস এস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ)ও ছিল
সাক্ষী : এই মুহুর্তে বলতে পারছিনা।
আইনজীবী : কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া এবং আর এস এস ভারত বিভক্তির বিপক্ষে ছিল।
সাক্ষী : সত্য।
আইনজীবী : যারা পাকিস্তানের পক্ষে ছিল তারা ভারত বিভক্তির পরে এ অঞ্চলে নিখিল পাকিস্তান কংগ্রেস গঠন করেছিলেন?
সাক্ষী : হ্যা:
আইনজীবী : অনুরূপভাবে এই অঞ্চলের কমিউস্টিরা পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেছিল?
সাক্ষী : হ্যা। একটু ব্যাখ্যা দরকার। তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির যারা এদেশে ছিলেন তারা পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির স্লোগান ছিল ‘ইয়ে আজাদী ঝুটা হ্যায় লাখো ইনসান ভুখা হ্যায়’। এই স্লোগানের কারনে দেশ বিভক্তির পর তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের রাজনৈতিক নির্যাতনের শিকারে পরিনত হয়ে কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা গ্রেফতার হন, কেউ কেউ কারাগারে মারা যান, অনেকে দেশ ত্যাগ করেন। সেই কারনে রাজনৈতিক শূন্যতার প্রেক্ষাপটে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি গঠন হয়।
আইনজীবী : শ্যামা প্রাসাদ মুখার্জী  এবং সরদার বল্লব ভাই প্যাটেল  একই সাথে কংগ্রেস এবং আর এস এস করতেন।
সাক্ষী : তারা কংগ্রেস থেকে বের হয়ে আর এস এস  গঠন করেন। একসাথে দুটি রাজনৈতিক দল করা যায়না।
আইনজীবী : ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা  যুদ্ধের সময়  কংগ্রেস ভারতের ক্ষমতায় ছিল।
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী: পাকিস্তান সৃষ্টির পর এ অঞ্চলের মুসলমানদের আশা আকাঙ্খা পূরণ না হওয়ায় মুসলিম লীগ ভাগ করে এ অঞ্চলের নেতারা আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করেন।
সাক্ষী : হ্যা। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন।
আইনজীবী : পরবর্তীকালে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে এবং পূর্ব পাকিস্তান নিখিল কংগ্রেস আওয়ামী লীগে যোগ দেয় তাদের পার্টি বিলুপ্ত করে।
সাক্ষী : বিষয়টি এরকম নয়। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে একদল থেকে আরেক দলে যোগ দিতে পারে । কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাতে পার্টি বিলুপ্ত হবে।
আইনজীবী : পাকিস্তান জাতীয় কংগ্রেসের সকল সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন।
সাক্ষী : আমার নিশ্চিত জানা নেই।
আইনজীবী : ১৯৭০ নির্বাচনে কংগ্রেস অংশ নেয়নি।
সাক্ষী : সত্য।
আইনজীবী : ১৯৭০ দশকের পরে ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ অন্তর্ভুক্ত হয়।
সাক্ষী : ১৯৭৬ সালে সম্ভবত।
আইনজীবী : বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর যে সংবিধান হয় তার অন্যতম মূলনীতি ছিল গনতন্ত্র।
সাক্ষী : হ্যা:
আইনজীবী : ১৯৭৫ সালে চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে একদল গঠন করা হয়।
সাক্ষী : একদল নয় বাকশাল গঠন করা হয়।
আইনজীবী : বাকশাল গঠনের পর অন্যান্য দল ছিল?
সাক্ষী : ছিল।
আইনজীবী :   সেসব দলের নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী : পূর্ব বাংলা কমিউস্টি পার্টি, সর্বহারা পার্টি, জাসদ।
আইনজীবী : বাকশাল গঠনের পর বাকশাল সদস্য ছাড়া কারোর নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকার ছিলনা।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : বাকশালে যোগ না দেয়ার কারনে রাজশাহী -২ আসনের সংসদ সদস্য মইনুদ্দীন আহমেদ মানিকের আসনটি শূন্য ঘোষনা করে উপনির্বাচন করা হয় এবং উপনির্বাচনে জয়ী হন বাকশাল  প্রার্থী আব্দুল হাকিম।
সাক্ষী : আমার নিশ্চিত জানা নেই।
আইনজীবী : আমি বলছি বাকশাল গঠনের মাধ্যমে এদেশে একদলীয় শাসন কায়েম করা হয় । এটা জেনে শুনে আপনি গোপন করছেন।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : বাকশালের সদস্য ছাড়া কারোর রাজনীতি করার অধিকার ছিলনা।
সাক্ষী : সত্য নয়।
আইনজীবী : সিরাজ শিকদার ছিলেন সর্বহারা পার্টির নেতা?
সাক্ষী : হ্যা।
আইনজীবী : সর্বহারা পার্টি কি নিষিদ্ধ ছিল?
সাক্ষী : আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ছিল বলে আমার মনে হয়না।
আইনজীবী : তৎকালীন বিরোধী নেতা তোয়াহা, সিরাজ শিকদার, আব্দুল হক আরো অনেক নেতার বিরুদ্ধে  হুলিয়া জারি ছিল।
সাক্ষী : আমার মনে হয়না। তবে যারা বাম রাজনীতি করতেন তাদের অনেকে অনেক সময় রাজনীতির কারনে স্বেচ্ছা আত্মগোপনে থাকতেন।
আইনজীবী : ১৯৭৪ সালে মাওলানা আব্দুল হামিদ খানের ঢাকায় একটি সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সরকার।
সাক্ষী : আমার কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।
আইনজীবী : বাকশাল গঠনের পর চারটি পত্রিকা ছাড়া অন্য সকল পত্রিকার প্রকশনা নিষিদ্ধ করা হয়।
সাক্ষী : সত্য। এনাম এ্যক্ট।
আইনজীবী : ঐ চারটি পত্রিকা সরকারি নিয়ন্ত্রনে নেয়া হয়েছিল।
সাক্ষী : সত্য।
আইনজীবী স: বাকশাল বিলুপ্তির পর আবার অন্যান্য পত্রিকা প্রকাশের অনুমতি দেয়া হয় এবং বহুদলীয়  গণতন্ত্র চালু হয়।
সাক্ষী : সংবাদ পত্র প্রকাশের অনুমতি দেয়া হয় একথাটুকু সত্য।
আইনজীবী : বাকশাল পতনের পর সামরিক সরকার রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য পিপিআর  (পলিটিক্যাল  পার্টি রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়।
সাক্ষী : সামরিক সরকারের অধীনে সীমাবদ্ধ রাজনৈতিক ব্যবস্থা  চালুর জন্য পিপিআর  জারি করা হয়।
আইনজীবী : পিপিআর এর অধীনে আওয়ামী লীগ, জাগদল, মুসলিম লীগ, ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিয়াল) গঠন করা হয়।
সাক্ষী : রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করে তারা। জিয়াউর রহমান সাহেব তার জাগদল জাস্টিফাইড করার জন্য পিপিআর চালু করে। (প্রসিকিউশনের আপত্তি প্রশ্নের বিষয়ে)।
আইনজীবী : আইডিয়াল প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কে ছিলেন মনে পড়ে?
সাক্ষী : মাওলানা আব্দুর রহিম।
আইনজীবী : উনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমীর ছিলেন।
সাক্ষী : আমি নিশ্চিত নই। সম্ভবত ছিলেন।
আইনজীবী : আব্দুর রহিম সাহেব জামায়াতের মনোনয়নে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করেন ভান্ডারিয়া কাউখালি আসন থেকে।
সাক্ষী : আমার জানা নেই।
আইনজীবী : আইডিয়াল নিয়ে দ্বন্দ্বের কারনে আব্দুর রহিম এবং মাওলানা সিদ্দিক আহমেদ পৃথক দুটি  আইডিয়াল দল করেন পরে।
সাক্ষী : জানা নেই।
আইনজীবী : জিয়াউর রহমানের সময় পিপিআর এর অধীনে আব্বাস আলী খান জামায়াতের রেজিস্ট্রেশনের জন্য দরখাস্ত করেন। কিন্তু তাদের রেজিষ্ট্রেশন দেয়া হয়নি।
সাক্ষী : জামায়াতের জন্য অবস্থা অনুকুলে না থাকায় আবেদন মঞ্জুর করা হয়নি তখন।
আইনজীবী: পরবর্তীতে পঞ্চম সংশোধনী সংসদের পাশের পর পিপিআর বিলুপ্ত হয় এবং ত:খন জামায়াত আত্মপ্রকাশ করে।
সাক্ষী : তখন জামায়াতের প্রকাশ্য রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
আইনজীবী : জিয়াউর রহমানের অধীনে যে সংসদ নির্বাচন হয় তাতে জামায়াতের লোকজন মাওলানা আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে আইডিয়ালে ব্যানারে  এবং   মুসলিম লীগের লোকজন খান এ সবুরের নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে একটি রাজনৈতিক ফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
সাক্ষী : ফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনের পরে।
আইনজীবী : আমি বলছি নির্বাচনের আগেই ফ্রন্ট গঠন হয়েছিল। নির্বাচনের পরে তাদের ফ্রন্টে ভাঙ্গন দেখা দেয়  এবং সংসদে এই দুই নেতা দুটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন পৃথক পৃথকভাবে।
সাক্ষী : স্মরন নেই।
আইনজীবী : ঐ নির্বচনে মুসলিম লীগ ১২টি এবং আইডিয়াল ৬টি আসন পায়।
সাক্ষী : আমার স্মরন নেই।
আইনজীবী : সৈয়দা রাজিয়ায় ফয়েজ তখন এ দুলের সমন্বয়ে গঠিত ফ্রন্টের অধীনে সরাসরি নির্বচন করে জয়ী হন।
সাক্ষী : সত্য। সাতক্ষীরা থেকে জয়ী হন তিনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন