২৬/১২/২০১২
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (১) পুনরায় বিচার শুরুর আবেদনের ওপর আজ দ্বিতীয় দিনের মত যুক্তি পেশ করেছেন আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপ এবং ইমেইল ডকুমেন্ট তুলে ধরে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক একই সাথে একজন জজ এবং প্রসিকিউটরের (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) কাজ করেছেন। জজ যেখানে প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেন সেখানে ন্যায় বিচার থাকেনা।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তি দিয়ে বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক যা যা করে গেছেন তা যদি ন্যায় বিচারের মধ্যে পড়ে এবং আপনাদের দৃষ্টিতে যদি এসব কাজ ন্যায় বিচারের অংশ হয়ে থাকে তাহলে আমাদের বলার কিছু নেই। কিন্তু যদি এসব ন্যায় বিচারের অংশ না হয়ে থাকে তাহলে এ বিচার পুনরায় শুরুর কোন বিকল্প নেই।
পুনরায় বিচার শুরু নিয়ে আইনী বিতর্ক প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক একজন জজ হিসেবে যা করেছেন তার বিধান আইনে থাকেনা। আইন তৈরি করার সময় এটা চিন্তা করা হয়না যে একজন জজ জালিয়াতি প্রতারনার আশ্রয় নেবেন বা তিনি ন্যায় বিচার করবেননা। তাই এ বিষয়ে কোন বিধানও রাখা হয়না আইনে।
কাজইে আইনের ৬(৬) ধারা এখানে কার্যকর হবেনা। আইনের এ ধারা এ বিষয়টি কাভার করেনা। তিনি বলেন এই ট্রাইব্যুনালে এর আগে দুইবার বিচারপতি বদল হয়েছে । তখন তো আমরা পুনরায় বিচার দাবি করিনি।
আজ যুক্তি উপস্থাপনের সময় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বিচারপতি নিজামুল হক এবং ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যকার স্কাইপি সংলাপ থেকে বিচার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথোপকথন তুলে ধরেন। এছাড়া বিচার চলাকালে ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিন বেলজিয়াম থেকে যেসব ইমেইল পাঠিয়েছেন বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে তারও কিছু কিছু উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক সংবিধান, বিচারপতিদের আচরন বিধি, শপথ, আইনের মূলনীতি লঙ্ঘন করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী নির্বাচন, সাক্ষী কি বলবে তা নির্ধারন, আসামী পক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে তিনি আহমদ জিয়া উদ্দিনের সাথে আলোচনা করেছেন। বিচার কাজে তিনি সম্পূর্ণভাবে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের দিক নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালনা করেছেন। এসবের মাধ্যমে তিনি পুরো বিচার প্রকৃয়াকে কুলষিত করেছেন। ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন বিচার কাজে পুরোপুরি হস্তক্ষেপ করেছেন।
তিনি বলেন, ২/১০/২০১২ তারিখ অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন করে তিনি আদেশ দিলেন। আর সাক্ষীর সংখ্যা কত হবে এসব বিষয় নিয়ে তিনি ৫/১০/২০১২ তারিখ ড. আহেমদ জিয়া উদ্দিনের সাথে আলোচনা করেছেন। সব কিছু তারা দুজনে কোর্টের বাইরে বসে আলোচনা করে ঠিকঠাক করে কোর্টে এসে তা মঞ্চস্থ করেছেন মাত্র। সাক্ষীর সংখ্যা সীমিত করে দিলে তা নিয়ে হৈচৈ হতে পারে এ বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক স্কাইপি সংলাপে বলেচেন আমি এ নিয়ে কেয়ার করিনা। আমি সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন করে দেব।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বলেন আমরা যে ১১শ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি তা পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে তিনি কিভাবে সম্পূর্ণ অন্যের নির্দেশনা নিয়ে এ বিচার কাজ পরিচালনা করেছেন।
তিনি বলেন, সরকারি গেজেটে সহায়াক বাহিনী বা অক্সিলিয়ারি ফোর্সের যে সংজ্ঞা তাতে জামায়াতে ইসলামীকে কোন অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনের পরামর্শে বিচারপতি নিজামুল হক চার্জ গঠন আদেশের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীকে সহায়ক বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনর স্কাইপি সংলাপের সময় বিচারপতি নিজামুল হককে বলেছেন গোলাম আযমতে ধরতে হলে জামায়াতে ইসলামীকেও অক্সিলিয়ারি ফোর্স বানাতে হবে। এর ফলে তিনি ফরমাল চার্জে জামায়াতের নাম ঢুকিয়ে দেন পরে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেনে জালিয়াতির একটা সীমা থাকা দরকার।
তিনি বলেন স্কাইপি আলোচনার সময় তারা বলেছেন, সুলতানা আপা খুব ভাল সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি হাই কাস সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাকে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়ার পর তিনি বুঝে গেছেন কি কোন জিনিসটার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে সাক্ষ্য দেয়ার সময়। এ নিয়ে তার সাথে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। জেনারেল শফিউল্লাহকে সাক্ষী হিসেবে আনার দরকার নাই। কারণ তাকে নিয়ন্ত্রন করা যাবেনা। ওনার ওপর কন্ট্রোল নাই। এই ধরনের জেনারেল সাহেবদের সমস্যা হল তাদের ওপর কন্ট্রোল নাই। তাছাড়া তার মধ্যে একটা কমান্ডিং ভাব আছে। উনি যুদ্ধ করেছেন। আর্মিরাই যুদ্ধ করেছে আই টাইপের । উনি যুদ্ধের দিকে চলে যেতে পারেন। মালুম ভাই বলেছেন তারা যুদ্ধ ইস্যুটাকে এড়িয়ে যেতে চান। মালুম ভাই এ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। ওনার (শফিউল্লাহ) মুখ দিয়ে যদি বের হয়ে যায় এখানে একটা সত্যিকার যুদ্ধ হয়েছিল এবং পাকিস্তান আর্মিই ছিল মুল নায়ক। এরা আসলে কিছু ছিলনা তাহলে সেটা সুবিধার হবেনা। এটাই হল উদ্বেগের বিষয়।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এসব কারনে জেনারেল শফিউল্লাহকে সাক্ষী হিসেবে না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। মুনতাসির মামুনকে দিয়ে গ্যাপ পূরনের জন্য তাকে প্রয়োজনে আবার ডাকা হবে। কে স্টার সাক্ষী, কে ভাল সাক্ষী, কাকে আনলে ভাল হবে কাকে দিয়ে কি বলাতে হবে এসব বিষয় নিয়ে বিচারপতি নিজামুল হক এবং ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিন দীর্ঘ সময় নিয়ে পরষ্পর আলোচনা করেছেন।
স্কাইপি সংলাপের বিচারপতি নিজামুল হক বলেছেন রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবীকে তিনি কোর্টে ধমকিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন। কারণ সে যা বলছিল তা রাষ্ট্রপক্ষের বিরুদ্ধে যাচ্ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ট্রাইব্যুনালের একটি কাগজ সরবরাহ বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনকে বলেছেন ওই মিয়া (জেয়াদ আল মালুম) আমাকে গোপনে বললেই তো হত। আমি তাকে পাঠিয়ে দিতাম।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন একজন বিচারক কি এ কাজ করতে পারেন? তিনি শুধু সচেতনভাবে এসব করেননি বরং এসব নিয়ে তিনি আবার সচেবতনভাবে আরেকজনের সাথে আলোচনাও করেছেন স্কাইপির মাধ্যমে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আরো কিছু স্কাইপি সংলাপ তুলে ধরে বলেন, কোন কোর্টে কোন কেস আগে এগিয়ে নিতে হবে, কোনটার রায় আগে দিতে হবে, কোনটার পরে দিতে হবে এসব নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনের সাথে। বিচারপতি নিজামুল হক বলেছেন সবচেয়ে বেশি দায়বদ্ধতা গোলাম আযমের। সে টিম লিডার। তার কেস আগে নিতে হবে। সাঈদীর ক্ষেত্রে টিম লিডারের প্রশ্ন নাই। বড়গুলারে বাদ দিয়ে ছোটগুলারে আনার যুক্তি নেই। আমি মনে করি সবার আগে গোলাম আযম, তারপর সাঈদী, তারপর মোল্লা। আর তা না হলে সবার আগে সাঈদী। সেটা সবার আগে এগিয়ে আছে।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেছেন তার বাসায় আইনপ্রতিমন্ত্রী এসেছিল। তাড়াতাড়ি রায় দিতে বলেছেন তিনি। এ থেকে এটা স্পষ্ট যে, এ বিচারে সরকারের নির্বাহী বিভাগের কতটা প্রভাব ছিল।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল নিয়েও তারা অনেক আলোচনা করেছেন। আলোচনার এক পর্যায়ে ড. জিয়া উদ্দিন বলেছেন স্যারের (আইনমন্ত্রী) বাসায় দুই কোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে তিনি বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, গোলাম আযমের মামলায় আসামী পক্ষের সাক্ষীর তালিকা প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি আসামী পক্ষকে কিছুটা সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্বাধীনভাবে সে সসয় দেননি। তারও প্রমান রয়েছে সংলাপে। তিনি বলেছেন সময় না দিলে গভর্নমেন্ট আবার কইত তখন তুমি টাইম দিতা। এ থেকে বোঝা যায় সরকার কি বলবেনা বা না বলবে সে দিক বিবেচনা করে প্রভাবিত হয়ে তিনি আমাদের সময় দিয়েছেন। স্বাধীনভাবে দেননি তিনি।
আইনে পুনরায় বিচারের সুযোগ আছে কি নাই এ বিষয়ক আলোচনার সময় ট্রাইব্যুনালের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনের ৬ (৬) ধারায় বলা আছে ‘শুধুমাত্র ট্রাইব্যুনালের কোন সদস্যের পরিবর্তন হলে বা কোন সদস্য অনুপস্থিত থাকলে ইতোপূর্বে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন এমন কোন সাক্ষীকে পুনরায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য তলব করতে বা পুনরায় শুনানী গ্রহনে ট্রাইব্যুনাল বাধ্য থাকবেনা।’
তিনি বলেন, কোন সদস্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইংরেজিতে ‘মেয়ারলি’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলায় এর মানে হল ‘নিছক’।
তিনি বলে, এর আগে এই ট্রাইব্যুনালে মোট তিনবার বিচারপতি বদল হয়েছে।
প্রথমবার ২২/৩/২০১২ সদস্য বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরকে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হয় এবং বিচারপতি আনোয়ারুল হককে নিয়োগ দেয়া হয় তার স্থলে।
দ্বিতীয়বার ২৮/৮/২০১২ তারিখ বিচারক জহির আহমেদ চলে যান এবং তার স্থলে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিয়োগ দেয়া হয়।
তৃতীয়বার ১১/১২/২০১২ তারিখ বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেন ।
ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী প্রথম দুই বার যে বিচারপতি বদলের ঘটনা ঘটেছে সেটা স্বাভাবিক বিষয়। তাই তখন আমরা বিচারপতি বদলের কারনে বা সদস্য পরিবর্তনের কারনে পুনরায় বিচার দাবি করিনি। কিন্তু তৃতীয়বার বিচারপতি নিজামুল হকের চলে যাওয়া কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়। একটা অস্বাভাবিক ঘটনার কারনে তিনি চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এ বিষয়টি আইনে উল্লেখ নেই। তাই আমরা পুনরায় বিচার দাবি করেছি।
তিনি বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক যা করেছেন একজন জজ হিসেবে তার বিধান আইনে থাকেনা। আইন তৈরি করার সময় এটা চিন্তা করা হয়না যে একজন জজ জালিয়াতি প্রতারনার আশ্রয় নেবেন বা তিনি ন্যায় বিচার করবেননা। তাই এ বিষয়ে কোন বিধানও রাখা হয়না আইনে।
কাজইে আইনের ৬(৬) ধারা এখানে কার্যকর হবেনা। আইনের এ ধারা এ বিষয়টি কাভার করেনা।
আপনারা ন্যায় বিচারের স্বার্থে যেকোন আদেশ দিতে পারেন এবং সেটি আপনাদের সহজাত ক্ষমতা। এ ক্ষমতা আপনাদের দিয়ে দেয়া হয়েছে। কাজেই আইনে পুনরায় বিচারের বিধান নেই এ দাবি সঠিক নয়। ট্রাইব্যুনাল ন্যায় বিচারের স্বার্থে যেকোন পদক্ষেপ নিতে পারে এবং এটাই ন্যায়ের দাবি।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের দাবি শুধু পুনরায় বিচার নয়। আমাদের দাবি আরো বেশি।
আজ দিনব্যাপী শুনানী করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। আগামীকাল এক ঘন্টার মধ্যে তার শুনানী গ্রহণ শেষ করার জন্য কোর্ট অনুরোধ করেছেন তাকে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে শুনানী গ্রহনের সময় সহায়তা করেন ব্যারিস্টার এমরান সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মো: মনির প্রমুখ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম, মনজুর আহমেদ আনসারী, মতিউর রহমান আকন্দ প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল (১) চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি আনোয়ারুল হক শুনানী গ্রহণ করেন।
শুনানী চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন অধ্যাপক গোলাম আযম : গতকাল শুনানী চলাকালে কাঠগড়ায় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন অধ্যাপক গোলাম আযম। দুপুর সাড়ে বারটার সময় তিনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। অল্প সময় পরে আবার তার জ্ঞান ফিরে আসে। এরপর তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর জন্য এম্বুলেন্স আনা হয়। স্ট্রেচারে শুইয়ে তাকে দোতলা থেকে নিচে নামানো হয়।
হাজতখানায় সব শীর্ষ নেতৃবৃন্দ : এদিকে আজ প্রথম এবং দিত্বীয় ট্রাইব্যুনালে বিভিন্ন মামলা উপলক্ষে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় জামায়াতের বন্দী সব শীর্ষ নেতৃবৃন্দ একত্রে অবস্থানের সুযোগ পান। এদের মধ্যে ছিলেন সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জোনরেল আলী আহসান মো: মুজাহিদ, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মুহম্মদ কামারুজ্জামান এবং আব্দুল কাদের মোল্লা। এছাড়া বিএিনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীও এসময় হাজতখানায় তাদের সাথে ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (১) পুনরায় বিচার শুরুর আবেদনের ওপর আজ দ্বিতীয় দিনের মত যুক্তি পেশ করেছেন আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপ এবং ইমেইল ডকুমেন্ট তুলে ধরে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক একই সাথে একজন জজ এবং প্রসিকিউটরের (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) কাজ করেছেন। জজ যেখানে প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেন সেখানে ন্যায় বিচার থাকেনা।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তি দিয়ে বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক যা যা করে গেছেন তা যদি ন্যায় বিচারের মধ্যে পড়ে এবং আপনাদের দৃষ্টিতে যদি এসব কাজ ন্যায় বিচারের অংশ হয়ে থাকে তাহলে আমাদের বলার কিছু নেই। কিন্তু যদি এসব ন্যায় বিচারের অংশ না হয়ে থাকে তাহলে এ বিচার পুনরায় শুরুর কোন বিকল্প নেই।
পুনরায় বিচার শুরু নিয়ে আইনী বিতর্ক প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক একজন জজ হিসেবে যা করেছেন তার বিধান আইনে থাকেনা। আইন তৈরি করার সময় এটা চিন্তা করা হয়না যে একজন জজ জালিয়াতি প্রতারনার আশ্রয় নেবেন বা তিনি ন্যায় বিচার করবেননা। তাই এ বিষয়ে কোন বিধানও রাখা হয়না আইনে।
কাজইে আইনের ৬(৬) ধারা এখানে কার্যকর হবেনা। আইনের এ ধারা এ বিষয়টি কাভার করেনা। তিনি বলেন এই ট্রাইব্যুনালে এর আগে দুইবার বিচারপতি বদল হয়েছে । তখন তো আমরা পুনরায় বিচার দাবি করিনি।
আজ যুক্তি উপস্থাপনের সময় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বিচারপতি নিজামুল হক এবং ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যকার স্কাইপি সংলাপ থেকে বিচার সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথোপকথন তুলে ধরেন। এছাড়া বিচার চলাকালে ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিন বেলজিয়াম থেকে যেসব ইমেইল পাঠিয়েছেন বিচারপতি নিজামুল হকের কাছে তারও কিছু কিছু উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক সংবিধান, বিচারপতিদের আচরন বিধি, শপথ, আইনের মূলনীতি লঙ্ঘন করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী নির্বাচন, সাক্ষী কি বলবে তা নির্ধারন, আসামী পক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে তিনি আহমদ জিয়া উদ্দিনের সাথে আলোচনা করেছেন। বিচার কাজে তিনি সম্পূর্ণভাবে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের দিক নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালনা করেছেন। এসবের মাধ্যমে তিনি পুরো বিচার প্রকৃয়াকে কুলষিত করেছেন। ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন বিচার কাজে পুরোপুরি হস্তক্ষেপ করেছেন।
তিনি বলেন, ২/১০/২০১২ তারিখ অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন করে তিনি আদেশ দিলেন। আর সাক্ষীর সংখ্যা কত হবে এসব বিষয় নিয়ে তিনি ৫/১০/২০১২ তারিখ ড. আহেমদ জিয়া উদ্দিনের সাথে আলোচনা করেছেন। সব কিছু তারা দুজনে কোর্টের বাইরে বসে আলোচনা করে ঠিকঠাক করে কোর্টে এসে তা মঞ্চস্থ করেছেন মাত্র। সাক্ষীর সংখ্যা সীমিত করে দিলে তা নিয়ে হৈচৈ হতে পারে এ বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক স্কাইপি সংলাপে বলেচেন আমি এ নিয়ে কেয়ার করিনা। আমি সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন করে দেব।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বলেন আমরা যে ১১শ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি তা পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে তিনি কিভাবে সম্পূর্ণ অন্যের নির্দেশনা নিয়ে এ বিচার কাজ পরিচালনা করেছেন।
তিনি বলেন, সরকারি গেজেটে সহায়াক বাহিনী বা অক্সিলিয়ারি ফোর্সের যে সংজ্ঞা তাতে জামায়াতে ইসলামীকে কোন অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনের পরামর্শে বিচারপতি নিজামুল হক চার্জ গঠন আদেশের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীকে সহায়ক বাহিনী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনর স্কাইপি সংলাপের সময় বিচারপতি নিজামুল হককে বলেছেন গোলাম আযমতে ধরতে হলে জামায়াতে ইসলামীকেও অক্সিলিয়ারি ফোর্স বানাতে হবে। এর ফলে তিনি ফরমাল চার্জে জামায়াতের নাম ঢুকিয়ে দেন পরে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেনে জালিয়াতির একটা সীমা থাকা দরকার।
তিনি বলেন স্কাইপি আলোচনার সময় তারা বলেছেন, সুলতানা আপা খুব ভাল সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি হাই কাস সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাকে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়ার পর তিনি বুঝে গেছেন কি কোন জিনিসটার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে সাক্ষ্য দেয়ার সময়। এ নিয়ে তার সাথে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। জেনারেল শফিউল্লাহকে সাক্ষী হিসেবে আনার দরকার নাই। কারণ তাকে নিয়ন্ত্রন করা যাবেনা। ওনার ওপর কন্ট্রোল নাই। এই ধরনের জেনারেল সাহেবদের সমস্যা হল তাদের ওপর কন্ট্রোল নাই। তাছাড়া তার মধ্যে একটা কমান্ডিং ভাব আছে। উনি যুদ্ধ করেছেন। আর্মিরাই যুদ্ধ করেছে আই টাইপের । উনি যুদ্ধের দিকে চলে যেতে পারেন। মালুম ভাই বলেছেন তারা যুদ্ধ ইস্যুটাকে এড়িয়ে যেতে চান। মালুম ভাই এ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। ওনার (শফিউল্লাহ) মুখ দিয়ে যদি বের হয়ে যায় এখানে একটা সত্যিকার যুদ্ধ হয়েছিল এবং পাকিস্তান আর্মিই ছিল মুল নায়ক। এরা আসলে কিছু ছিলনা তাহলে সেটা সুবিধার হবেনা। এটাই হল উদ্বেগের বিষয়।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এসব কারনে জেনারেল শফিউল্লাহকে সাক্ষী হিসেবে না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। মুনতাসির মামুনকে দিয়ে গ্যাপ পূরনের জন্য তাকে প্রয়োজনে আবার ডাকা হবে। কে স্টার সাক্ষী, কে ভাল সাক্ষী, কাকে আনলে ভাল হবে কাকে দিয়ে কি বলাতে হবে এসব বিষয় নিয়ে বিচারপতি নিজামুল হক এবং ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিন দীর্ঘ সময় নিয়ে পরষ্পর আলোচনা করেছেন।
স্কাইপি সংলাপের বিচারপতি নিজামুল হক বলেছেন রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবীকে তিনি কোর্টে ধমকিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন। কারণ সে যা বলছিল তা রাষ্ট্রপক্ষের বিরুদ্ধে যাচ্ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ট্রাইব্যুনালের একটি কাগজ সরবরাহ বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনকে বলেছেন ওই মিয়া (জেয়াদ আল মালুম) আমাকে গোপনে বললেই তো হত। আমি তাকে পাঠিয়ে দিতাম।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন একজন বিচারক কি এ কাজ করতে পারেন? তিনি শুধু সচেতনভাবে এসব করেননি বরং এসব নিয়ে তিনি আবার সচেবতনভাবে আরেকজনের সাথে আলোচনাও করেছেন স্কাইপির মাধ্যমে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আরো কিছু স্কাইপি সংলাপ তুলে ধরে বলেন, কোন কোর্টে কোন কেস আগে এগিয়ে নিতে হবে, কোনটার রায় আগে দিতে হবে, কোনটার পরে দিতে হবে এসব নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি ড. আহমেদ জিয়া উদ্দিনের সাথে। বিচারপতি নিজামুল হক বলেছেন সবচেয়ে বেশি দায়বদ্ধতা গোলাম আযমের। সে টিম লিডার। তার কেস আগে নিতে হবে। সাঈদীর ক্ষেত্রে টিম লিডারের প্রশ্ন নাই। বড়গুলারে বাদ দিয়ে ছোটগুলারে আনার যুক্তি নেই। আমি মনে করি সবার আগে গোলাম আযম, তারপর সাঈদী, তারপর মোল্লা। আর তা না হলে সবার আগে সাঈদী। সেটা সবার আগে এগিয়ে আছে।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেছেন তার বাসায় আইনপ্রতিমন্ত্রী এসেছিল। তাড়াতাড়ি রায় দিতে বলেছেন তিনি। এ থেকে এটা স্পষ্ট যে, এ বিচারে সরকারের নির্বাহী বিভাগের কতটা প্রভাব ছিল।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল নিয়েও তারা অনেক আলোচনা করেছেন। আলোচনার এক পর্যায়ে ড. জিয়া উদ্দিন বলেছেন স্যারের (আইনমন্ত্রী) বাসায় দুই কোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে তিনি বৈঠকের ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, গোলাম আযমের মামলায় আসামী পক্ষের সাক্ষীর তালিকা প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি আসামী পক্ষকে কিছুটা সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি স্বাধীনভাবে সে সসয় দেননি। তারও প্রমান রয়েছে সংলাপে। তিনি বলেছেন সময় না দিলে গভর্নমেন্ট আবার কইত তখন তুমি টাইম দিতা। এ থেকে বোঝা যায় সরকার কি বলবেনা বা না বলবে সে দিক বিবেচনা করে প্রভাবিত হয়ে তিনি আমাদের সময় দিয়েছেন। স্বাধীনভাবে দেননি তিনি।
আইনে পুনরায় বিচারের সুযোগ আছে কি নাই এ বিষয়ক আলোচনার সময় ট্রাইব্যুনালের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনের ৬ (৬) ধারায় বলা আছে ‘শুধুমাত্র ট্রাইব্যুনালের কোন সদস্যের পরিবর্তন হলে বা কোন সদস্য অনুপস্থিত থাকলে ইতোপূর্বে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন এমন কোন সাক্ষীকে পুনরায় সাক্ষ্য দেয়ার জন্য তলব করতে বা পুনরায় শুনানী গ্রহনে ট্রাইব্যুনাল বাধ্য থাকবেনা।’
তিনি বলেন, কোন সদস্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইংরেজিতে ‘মেয়ারলি’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলায় এর মানে হল ‘নিছক’।
তিনি বলে, এর আগে এই ট্রাইব্যুনালে মোট তিনবার বিচারপতি বদল হয়েছে।
প্রথমবার ২২/৩/২০১২ সদস্য বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরকে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হয় এবং বিচারপতি আনোয়ারুল হককে নিয়োগ দেয়া হয় তার স্থলে।
দ্বিতীয়বার ২৮/৮/২০১২ তারিখ বিচারক জহির আহমেদ চলে যান এবং তার স্থলে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনকে নিয়োগ দেয়া হয়।
তৃতীয়বার ১১/১২/২০১২ তারিখ বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেন ।
ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী প্রথম দুই বার যে বিচারপতি বদলের ঘটনা ঘটেছে সেটা স্বাভাবিক বিষয়। তাই তখন আমরা বিচারপতি বদলের কারনে বা সদস্য পরিবর্তনের কারনে পুনরায় বিচার দাবি করিনি। কিন্তু তৃতীয়বার বিচারপতি নিজামুল হকের চলে যাওয়া কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়। একটা অস্বাভাবিক ঘটনার কারনে তিনি চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এ বিষয়টি আইনে উল্লেখ নেই। তাই আমরা পুনরায় বিচার দাবি করেছি।
তিনি বলেন, বিচারপতি নিজামুল হক যা করেছেন একজন জজ হিসেবে তার বিধান আইনে থাকেনা। আইন তৈরি করার সময় এটা চিন্তা করা হয়না যে একজন জজ জালিয়াতি প্রতারনার আশ্রয় নেবেন বা তিনি ন্যায় বিচার করবেননা। তাই এ বিষয়ে কোন বিধানও রাখা হয়না আইনে।
কাজইে আইনের ৬(৬) ধারা এখানে কার্যকর হবেনা। আইনের এ ধারা এ বিষয়টি কাভার করেনা।
আপনারা ন্যায় বিচারের স্বার্থে যেকোন আদেশ দিতে পারেন এবং সেটি আপনাদের সহজাত ক্ষমতা। এ ক্ষমতা আপনাদের দিয়ে দেয়া হয়েছে। কাজেই আইনে পুনরায় বিচারের বিধান নেই এ দাবি সঠিক নয়। ট্রাইব্যুনাল ন্যায় বিচারের স্বার্থে যেকোন পদক্ষেপ নিতে পারে এবং এটাই ন্যায়ের দাবি।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের দাবি শুধু পুনরায় বিচার নয়। আমাদের দাবি আরো বেশি।
আজ দিনব্যাপী শুনানী করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। আগামীকাল এক ঘন্টার মধ্যে তার শুনানী গ্রহণ শেষ করার জন্য কোর্ট অনুরোধ করেছেন তাকে।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে শুনানী গ্রহনের সময় সহায়তা করেন ব্যারিস্টার এমরান সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মো: মনির প্রমুখ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম, মনজুর আহমেদ আনসারী, মতিউর রহমান আকন্দ প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল (১) চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি আনোয়ারুল হক শুনানী গ্রহণ করেন।
শুনানী চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন অধ্যাপক গোলাম আযম : গতকাল শুনানী চলাকালে কাঠগড়ায় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন অধ্যাপক গোলাম আযম। দুপুর সাড়ে বারটার সময় তিনি হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। অল্প সময় পরে আবার তার জ্ঞান ফিরে আসে। এরপর তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর জন্য এম্বুলেন্স আনা হয়। স্ট্রেচারে শুইয়ে তাকে দোতলা থেকে নিচে নামানো হয়।
হাজতখানায় সব শীর্ষ নেতৃবৃন্দ : এদিকে আজ প্রথম এবং দিত্বীয় ট্রাইব্যুনালে বিভিন্ন মামলা উপলক্ষে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় জামায়াতের বন্দী সব শীর্ষ নেতৃবৃন্দ একত্রে অবস্থানের সুযোগ পান। এদের মধ্যে ছিলেন সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, বর্তমান আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জোনরেল আলী আহসান মো: মুজাহিদ, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মুহম্মদ কামারুজ্জামান এবং আব্দুল কাদের মোল্লা। এছাড়া বিএিনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীও এসময় হাজতখানায় তাদের সাথে ছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন