29/7/11 mehedy hasan
সম্প্রতি লন্ডন সফরে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে মুখোমুখি হন লর্ড এরিক এ্যাভেবুরির সাথে। লর্ড এ্যভেবুরি যদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। স্টিফেন জে র্যাপ ট্রাইব্যুনালের বিধিবিধান সংশোধনের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার কিছুই সরকার বাস্তবায়ন করেনি বলে লিখিতভাবে আইনমন্ত্রীকে জানান তিনি। এছাড়া যুদ্ধাপরাধ সংশোধন বিষয়ে আইনমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রকে অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেণ লর্ড এ্যাভেবুরি।
গত ২৭ জুলাই ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান এবং চিটাগং হিল ট্রাক্টস কমিশন কো চেয়ারম্যান লর্ড এরিক এ্যাভেবুরি লন্ডনে আইমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেণ। সেখানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং বিচার বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি মূল্যায়ন করে ২০ দফা লিখিত অভিযোগ দেন এ্যভেবুরি। বিচার প্রকৃয়া এবং আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ করে বলেন, এ ট্রাইব্যুনাল ও আইন নিরপেক্ষ নয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৯৯৩ সালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত গণ তদন্ত কমিশিনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তারা তখন যাদেরকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেণ এবং শাস্তি দাবি করেণ তাদের বেশ কয়েকজন এখন একই অভিযোগে কারাবন্দী।
যুদ্ধাপরাধ বিচার ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং আদিবাসী (?) ইস্যু নিয়েও তিনি আইনমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেন।
ইন্টারন্যাশনাল ল ব্যুরোর ওয়েবসাইটে পরিবেশিত এ বিষয়ক একটি খবরে বলা হয় আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ লর্ড এ্যাভেবুরিকে জানান যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিফেন জে র্যাপ গত ২১ মার্চ যে প্রস্তাব দিয়েছেন তার প্রতি বাংলাদেশ সরকার পূর্ণরুপে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু লর্ড এ্যাভেবুরি আইমন্ত্রীকে লিখিতভাবে বলেন, তাদের জানা মতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রী এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে তাদের জানা নেই। বরং বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধ বিচার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বিভ্রান্ত করছে অসত্য তথ্য দিয়ে।
লর্ড এ্যাভেবুরি তার ২০ দফা লিখিত অভিযোগে বলেন ট্রাইব্যুনাল শুধু বিরোধী নেতৃবৃন্দকে টার্গেট করেছে এবং তারা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক কোন আইনেইর কোন নিয়ম কানুন মানতে রাজি নয়।
যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রকৃয়া এবং আইনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লর্ড এ্যাভেবুরি যে ২০ দফা অভিযোগ পেশ করেণ সেগুলো হল:
১. ট্রাইব্যুনালে বিদেশী আইনজীবী আনয়নের আবেদন প্রত্যখ্যান। এ ক্ষেত্রে যিনি সিদ্ধান্তগ্রহণকারী তিনি হলেন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তিনি আবার এটর্নি জেনারেল এবং তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত। তিনি একই সাথে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধরীর মামলায় আইনজীবী প্যানেলেরও একজন সদস্য। এটর্নি জেনারেল যিনি এবং বার কাউন্সিল চেযারম্যান আবেদন করার আগেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা এ ধরনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করবেনা। এর মাধ্যমে তারা তাদের পূর্ব সিদ্ধান্ত প্রকাশ করল।
২. আদালতের বেশ কয়েকজন সদস্য গণতদন্ত কমিশন ( গণ আদালত) সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ১৯৯০ সালের দিকে। তখন যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধারাপধ তদন্ত হয় এবং তারা যাদেরকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেছিলেন তাদের বেশ কয়েকজন এখন একই অভিযোগে কারাবন্দী। তাদের মুত্যৃদন্ডের দাবিতে কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান গণ তদন্ত কমিশনের সদস্য ছিলেন ।
৩. স্টিফেন জে র্যাপের কোন সুপারিশ বাস্তবায়ন না করার পরিণতি। রুলস অব প্রসিউিউর এখন আগের চেয়েও আরো খারাপ করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী নিয়মিত বিচারপতি এবং আইনজীবীদের সাথে বৈঠক করেণ যা কাম্য নয়।
৪. আইন এবং সংবিধান সংশোধনে ব্যর্থতা। যুক্তরাষ্ট্র দূত স্টিফেন জে র্যাপ কে আইনমন্ত্রী বলেছেন সংবিধান সংশোধনী দরকার নেই। সংবিধানে প্রথম যে সংশোধনী আনা হয়েছিল তা অভিযুক্তদের ক্ষতির জন্য করা হয়নি। আসলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রধান বিচারপতি বিভ্রান্তিজনকভাবে বলেছেন যে, মধ্যবর্তী আবেদন সুপ্রীম কোর্টের বিষয়। অথচ রায় হবার আগে মধ্যবর্তী আবেদনের কোন সুযোগ নেই । ট্রাইব্যুনালের কোন বিচারপতি, ট্রাইব্যুনাল, আইন বা ট্রাইব্যুনালের কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন চ্যালেঞ্জ জানানো যাবেনা। ট্রাইব্যুনাল নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই বা যে বিচারপতি জড়িত তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজে পুনর্বিবেচনা করতে পারবে এ বিষয়ক একটি বিধি জারি করেছে।
৫. ট্রাইব্যুনাল সর্বশেষ শুনানীতে আসামী পক্ষকে লিখিত আদেশের কপি দিতে অস্বীকার করেছে।
৬.ট্রাইব্যুনাল সর্বশেষ শুনানীতে অভিযুক্ত’র পক্ষে যে মন্তব্য করেছেন তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
৭. ঐ তারিখে শুনানীর দিন কৌশুলীরা একটি কপিও প্রকাশ করতে সমর্থ হননাই। ট্রাইব্যুনাল বলল যে, তদন্ত গোপনীয় এবং কপি প্রকাশ না করাকে আদালত সমর্থন করলেন। ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস চুক্তির এটি বিরোধী অথচ বাংলাদেশে এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ।
৮. ট্রাইব্যুনাল দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার সম্পূর্ণরুপে অনীহা প্রকাশ করেছে। ট্রাইব্যুনাল যদি নিজেদের দেশীয় বিচার ব্যবস্থার একটি অঙ্গ মনে করে তবে তাদের দেশীয় আইন মেনে চলা উচিত। আর যদি এটাকে একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল মনে করেণ তাহলে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা উচিত। কিন্তু তারা এ দুটির একটির মধ্যেও নেই।
৯. আইনের ৩ ধারায় অপরাধের যথাযথ সংজ্ঞা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে।
১০. ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর কর্তৃপক্ষ ১৭ মাস সময় নিলেন। এবং এক বছর ধরে অভিযুক্তরা বন্দী অবস্থায় রয়েছেন।
১১.ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি, আইনজীবী এবং তদন্তকারীদের অভিজ্ঞতার যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে এবং আইনের জটিল ক্ষেত্রে তাদের কোন প্রশিক্ষন নেই। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি) কর্তৃক তারা প্রশিক্ষন নিয়েছেন বলে যদি বলা হয় তবে তা অসত্য। এ বিষয়ে আইসিসি থেকে যাচাই করা হয়েছে।
১২. আইনের বিধিতে মৌলিক অধিকার এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। সংবিধানে সবার জন্য যে মৌলিক অধিকার ঘোষনা করা হয়েছে তা বাতিল করা হয়েছে সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে। এই বিষয়টি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ব্যাড এডামস উত্থাপন করেন। আইনমন্ত্রী তখন যে জবাব দেন তাহল “এই লোকগুলো খুন করেছে”।
১৩. ট্রাইব্যুনাল শুধুমাত্র বিরোধী নেতৃবৃন্দকে টার্গেট করেছে।
১৪.আইনটি বৈষম্যমূলক। আইনে যুদ্ধে শুধু একপক্ষের অপরাধের বিচারের কথা বলা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে।
১৪. ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষতা প্রমানে ব্যর্থ হয়েছে। বিচারপতিরা ঘন ঘন সরকারি কর্মকর্তা এবং অভিযোগকারী ভুক্তভোগীদের সাথে বৈঠক করেণ।
১৫ গণমাধ্যমের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধের কারনে এ বিষয়ে কোন প্রকাশ্য বিতর্ক আয়োজন সম্ভব হচ্ছেনা। ট্রাইব্যুনাল বা সরকারের কোন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলে আদালত অবমাননা মামলায় জড়ানোর ভয় রয়েছে।
১৬ আন্তর্জাতিক আইন কানুন, নিয়মনীতি, স্বচ্ছ, নিরপক্ষে এবং মুক্তভাবে কাজ করার বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছেনা। বিচার প্রকৃয়া এবং প্রস্তুতির বিষয়ে আন্তর্জাতিক কোন পর্যবেক্ষন এবং যাচাই বাছাইয়ের ব্যাপার তাদের চূড়ান্ত অনীহা রয়েছে। প্রকৃয়াকে সঠিক করার একমাত্র উপায় হল (১) বিদেশী আইনজীবী আনার সুযোগ রাখা। (২) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষন ব্যবস্থার সুযোগ রাখা (৩) আন্তর্জাতিক আইনের বিধিবিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এবং মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করে আইনের সংশোধন।
১৭. সালাহউদ্দিন চৌধুরীকে যতবারই আদালতে নেয়া হয়েছে তিনি র্যাবের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল তার কোন তদন্তের ব্যবস্থা করেনি।
১৯ জিজ্ঞাসাবাদকালে অভিযুক্ত’র বক্তব্য আদালতে ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। ফলে এ জিজ্ঞাসাবাদ উদ্দেশ্যহীন।
২০. যতদূর জানা গেছে স্টিফেন জে র্যাপ যেসব প্রস্তাব দিয়েছিলেন সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী কোন পদক্ষেপ নেননি।
সম্প্রতি লন্ডন সফরে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে মুখোমুখি হন লর্ড এরিক এ্যাভেবুরির সাথে। লর্ড এ্যভেবুরি যদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন বিষয়ে আইনমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। স্টিফেন জে র্যাপ ট্রাইব্যুনালের বিধিবিধান সংশোধনের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার কিছুই সরকার বাস্তবায়ন করেনি বলে লিখিতভাবে আইনমন্ত্রীকে জানান তিনি। এছাড়া যুদ্ধাপরাধ সংশোধন বিষয়ে আইনমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রকে অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেণ লর্ড এ্যাভেবুরি।
গত ২৭ জুলাই ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান এবং চিটাগং হিল ট্রাক্টস কমিশন কো চেয়ারম্যান লর্ড এরিক এ্যাভেবুরি লন্ডনে আইমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেণ। সেখানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং বিচার বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি মূল্যায়ন করে ২০ দফা লিখিত অভিযোগ দেন এ্যভেবুরি। বিচার প্রকৃয়া এবং আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ করে বলেন, এ ট্রাইব্যুনাল ও আইন নিরপেক্ষ নয়। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৯৯৩ সালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত গণ তদন্ত কমিশিনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তারা তখন যাদেরকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেণ এবং শাস্তি দাবি করেণ তাদের বেশ কয়েকজন এখন একই অভিযোগে কারাবন্দী।
যুদ্ধাপরাধ বিচার ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং আদিবাসী (?) ইস্যু নিয়েও তিনি আইনমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেন।
ইন্টারন্যাশনাল ল ব্যুরোর ওয়েবসাইটে পরিবেশিত এ বিষয়ক একটি খবরে বলা হয় আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ লর্ড এ্যাভেবুরিকে জানান যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিফেন জে র্যাপ গত ২১ মার্চ যে প্রস্তাব দিয়েছেন তার প্রতি বাংলাদেশ সরকার পূর্ণরুপে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু লর্ড এ্যাভেবুরি আইমন্ত্রীকে লিখিতভাবে বলেন, তাদের জানা মতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রী এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে তাদের জানা নেই। বরং বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধ বিচার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বিভ্রান্ত করছে অসত্য তথ্য দিয়ে।
লর্ড এ্যাভেবুরি তার ২০ দফা লিখিত অভিযোগে বলেন ট্রাইব্যুনাল শুধু বিরোধী নেতৃবৃন্দকে টার্গেট করেছে এবং তারা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক কোন আইনেইর কোন নিয়ম কানুন মানতে রাজি নয়।
যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রকৃয়া এবং আইনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লর্ড এ্যাভেবুরি যে ২০ দফা অভিযোগ পেশ করেণ সেগুলো হল:
১. ট্রাইব্যুনালে বিদেশী আইনজীবী আনয়নের আবেদন প্রত্যখ্যান। এ ক্ষেত্রে যিনি সিদ্ধান্তগ্রহণকারী তিনি হলেন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তিনি আবার এটর্নি জেনারেল এবং তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত। তিনি একই সাথে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধরীর মামলায় আইনজীবী প্যানেলেরও একজন সদস্য। এটর্নি জেনারেল যিনি এবং বার কাউন্সিল চেযারম্যান আবেদন করার আগেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা এ ধরনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করবেনা। এর মাধ্যমে তারা তাদের পূর্ব সিদ্ধান্ত প্রকাশ করল।
২. আদালতের বেশ কয়েকজন সদস্য গণতদন্ত কমিশন ( গণ আদালত) সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ১৯৯০ সালের দিকে। তখন যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধারাপধ তদন্ত হয় এবং তারা যাদেরকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করেছিলেন তাদের বেশ কয়েকজন এখন একই অভিযোগে কারাবন্দী। তাদের মুত্যৃদন্ডের দাবিতে কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান গণ তদন্ত কমিশনের সদস্য ছিলেন ।
৩. স্টিফেন জে র্যাপের কোন সুপারিশ বাস্তবায়ন না করার পরিণতি। রুলস অব প্রসিউিউর এখন আগের চেয়েও আরো খারাপ করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী নিয়মিত বিচারপতি এবং আইনজীবীদের সাথে বৈঠক করেণ যা কাম্য নয়।
৪. আইন এবং সংবিধান সংশোধনে ব্যর্থতা। যুক্তরাষ্ট্র দূত স্টিফেন জে র্যাপ কে আইনমন্ত্রী বলেছেন সংবিধান সংশোধনী দরকার নেই। সংবিধানে প্রথম যে সংশোধনী আনা হয়েছিল তা অভিযুক্তদের ক্ষতির জন্য করা হয়নি। আসলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রধান বিচারপতি বিভ্রান্তিজনকভাবে বলেছেন যে, মধ্যবর্তী আবেদন সুপ্রীম কোর্টের বিষয়। অথচ রায় হবার আগে মধ্যবর্তী আবেদনের কোন সুযোগ নেই । ট্রাইব্যুনালের কোন বিচারপতি, ট্রাইব্যুনাল, আইন বা ট্রাইব্যুনালের কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোন চ্যালেঞ্জ জানানো যাবেনা। ট্রাইব্যুনাল নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই বা যে বিচারপতি জড়িত তিনি নিজের সিদ্ধান্ত নিজে পুনর্বিবেচনা করতে পারবে এ বিষয়ক একটি বিধি জারি করেছে।
৫. ট্রাইব্যুনাল সর্বশেষ শুনানীতে আসামী পক্ষকে লিখিত আদেশের কপি দিতে অস্বীকার করেছে।
৬.ট্রাইব্যুনাল সর্বশেষ শুনানীতে অভিযুক্ত’র পক্ষে যে মন্তব্য করেছেন তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।
৭. ঐ তারিখে শুনানীর দিন কৌশুলীরা একটি কপিও প্রকাশ করতে সমর্থ হননাই। ট্রাইব্যুনাল বলল যে, তদন্ত গোপনীয় এবং কপি প্রকাশ না করাকে আদালত সমর্থন করলেন। ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস চুক্তির এটি বিরোধী অথচ বাংলাদেশে এ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ।
৮. ট্রাইব্যুনাল দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার সম্পূর্ণরুপে অনীহা প্রকাশ করেছে। ট্রাইব্যুনাল যদি নিজেদের দেশীয় বিচার ব্যবস্থার একটি অঙ্গ মনে করে তবে তাদের দেশীয় আইন মেনে চলা উচিত। আর যদি এটাকে একটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল মনে করেণ তাহলে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা উচিত। কিন্তু তারা এ দুটির একটির মধ্যেও নেই।
৯. আইনের ৩ ধারায় অপরাধের যথাযথ সংজ্ঞা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে।
১০. ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর কর্তৃপক্ষ ১৭ মাস সময় নিলেন। এবং এক বছর ধরে অভিযুক্তরা বন্দী অবস্থায় রয়েছেন।
১১.ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি, আইনজীবী এবং তদন্তকারীদের অভিজ্ঞতার যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে এবং আইনের জটিল ক্ষেত্রে তাদের কোন প্রশিক্ষন নেই। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আইসিসি) কর্তৃক তারা প্রশিক্ষন নিয়েছেন বলে যদি বলা হয় তবে তা অসত্য। এ বিষয়ে আইসিসি থেকে যাচাই করা হয়েছে।
১২. আইনের বিধিতে মৌলিক অধিকার এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। সংবিধানে সবার জন্য যে মৌলিক অধিকার ঘোষনা করা হয়েছে তা বাতিল করা হয়েছে সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে। এই বিষয়টি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ব্যাড এডামস উত্থাপন করেন। আইনমন্ত্রী তখন যে জবাব দেন তাহল “এই লোকগুলো খুন করেছে”।
১৩. ট্রাইব্যুনাল শুধুমাত্র বিরোধী নেতৃবৃন্দকে টার্গেট করেছে।
১৪.আইনটি বৈষম্যমূলক। আইনে যুদ্ধে শুধু একপক্ষের অপরাধের বিচারের কথা বলা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে।
১৪. ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষতা প্রমানে ব্যর্থ হয়েছে। বিচারপতিরা ঘন ঘন সরকারি কর্মকর্তা এবং অভিযোগকারী ভুক্তভোগীদের সাথে বৈঠক করেণ।
১৫ গণমাধ্যমের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধের কারনে এ বিষয়ে কোন প্রকাশ্য বিতর্ক আয়োজন সম্ভব হচ্ছেনা। ট্রাইব্যুনাল বা সরকারের কোন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলে আদালত অবমাননা মামলায় জড়ানোর ভয় রয়েছে।
১৬ আন্তর্জাতিক আইন কানুন, নিয়মনীতি, স্বচ্ছ, নিরপক্ষে এবং মুক্তভাবে কাজ করার বিষয়ে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছেনা। বিচার প্রকৃয়া এবং প্রস্তুতির বিষয়ে আন্তর্জাতিক কোন পর্যবেক্ষন এবং যাচাই বাছাইয়ের ব্যাপার তাদের চূড়ান্ত অনীহা রয়েছে। প্রকৃয়াকে সঠিক করার একমাত্র উপায় হল (১) বিদেশী আইনজীবী আনার সুযোগ রাখা। (২) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষন ব্যবস্থার সুযোগ রাখা (৩) আন্তর্জাতিক আইনের বিধিবিধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এবং মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করে আইনের সংশোধন।
১৭. সালাহউদ্দিন চৌধুরীকে যতবারই আদালতে নেয়া হয়েছে তিনি র্যাবের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল তার কোন তদন্তের ব্যবস্থা করেনি।
১৯ জিজ্ঞাসাবাদকালে অভিযুক্ত’র বক্তব্য আদালতে ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। ফলে এ জিজ্ঞাসাবাদ উদ্দেশ্যহীন।
২০. যতদূর জানা গেছে স্টিফেন জে র্যাপ যেসব প্রস্তাব দিয়েছিলেন সে বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী কোন পদক্ষেপ নেননি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন