শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৩

ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে সমালোচনার তালিকা ক্রমে দীর্ঘ হচ্ছে


মেহেদী হাসান
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে  গঠিত ট্রাইব্যুনাল নিয়ে ঢাকার নিউএজ পত্রিকায় কর্মরত বিদেশী সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের একটি প্রতিবেদনের কারনে তাকে আদালতে ডেকে পাঠানো হয় সম্প্রাতি। ভবিষ্যতে এ ধরনের মানহানিকর প্রতিবেদন করার বিষয়ে তাকে সাবধান করেছেনে আদালত।

এ বিষয়কে কেন্দ্র করে রেডিও নেদারল্যান্ডে সাংবাদিক রিচার্ড ওয়াকারের একটি  একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়।  তাতে তিনি বলেছেন, যুদ্ধাপরাধ  বিচারের লক্ষ্যে গঠিত  ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) সম্পর্কে সমালোচনা ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। সমালোচনার তালিকা ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর  হচ্ছে। ট্রাইবুন্যানের বিরুদ্ধে এ সমালোচনার মূলে রয়েছে এ ধরনের বিচার এবং ট্রাইব্যুনাল গঠনের ক্ষেত্রে  আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যেসব মানদণ্ড রয়েছে তা  মেনে না চলা এবং কোন অভিযোগ ছাড়াই সন্দেহভাজনদের দীর্ঘদিন আটকে রাখা।   ট্রাইব্যুানলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে    অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালিত হচ্ছে।

রিচার্ড ওয়াকার তার প্রতিবেদনে বলেছেন, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তিরষ্কারের মাধ্যমে এ আদালত এখন নিজেই  নিজের মুখ খুলেছে। “গত বছর থেকে ট্রাইব্যুনাল  কার্যক্রম শুরু করে। ৪০ বছর আগে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের যারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত তাদের বিচারের কথা  রয়েছে এ ট্রাইব্যুনালের। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে সমালোচানর তালিকা  ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।” 

এ ধরনের অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে মানদণ্ড রয়েছে তা পূরণ না করায় গত ১২ মাসে ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা হয়েছে। কোন অভিযোগ ছাড়াই সন্দেহভাজনদের দীর্ঘদিন ধরে আটক রাখা হয়েছে। তাদের যে পদ্ধতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আন্তর্জাতিক  খ্যাতিসম্পন্ন আইনবিদ ব্যারিস্টার স্টিফেন কেই বলেছেন “বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীণ আইনী কাঠামোর মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আমদানি করেছে এবং একই সময় অভিযুক্তদের যেসব অধিকার রয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের যেসব স্বীকৃত নিয়মনীতি রয়েছে সেগুলো রপ্তানি করে দিয়েছে। এবং আপনি এর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ  তুলতে পারবেননা। তারা খুবই অদ্ভুত একটি আদালত স্থাপন করেছে যেখানে অভিযুক্তদের অধিকার  হরণ করা হয়েছে।”
এ আদালতের বিরুদ্ধে আরো যেসব অভিযোগ রয়েছে তা হল বর্তমানে যেসব মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং এসব মামলা  কোর্টরুমেই নির্ধারণ করা হচ্ছে।

মুখ সামলাও: কিন্তু  আদালত এখন নতুন আইনী জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছে। ঢাকার একটি পত্রিকায় কর্মরত বিদেশী একজন সাংবাদিক সম্প্রদি ট্রাইব্যুনালকে ‘মেরুদণ্ডহীন’ (নো ব্যাকবোন) এবং ‘রাবার স্ট্যাম্প’ হিসেবে  আখ্যায়িত করেছেন  একটি প্রতিবেদনে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে আদালতে  তলব করা হয় এবং বিচারক এ কে এম জহির আহমেদ বলেন, “আপনার প্রতিবেদনে আদালতকে  রাবার স্ট্যাম্প হিসেবে আখ্যায়িত করা ছাড়াও আরো অনেক মানহানিকর শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা আদালত
অবমাননার শামিল। আপনি যদি এভাবে লেখা অব্যাহত রাখেন তবে ভবিষ্যতে আপনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে। ”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন