শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৩

মাওলানা সাঈদীর পিরোজপুর ও যশোরে অবস্থান নিয়ে উভয় পক্ষের সাক্ষীরা যা বললেন

 ২৯/১০/২০১২
মেহেদী  হাসান
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন ১৯৭১ সালের মে মাসে মাওলানা সাঈদী পিরোজপুরের পাড়েরহাটে ছিলেন। ৭ মে পাড়েরহাট পাকিস্তান আর্মি আসার পর মাওলানা সাঈদীসহ শান্তি কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তাদের অভ্যর্থনা জানান। এরপর মাওলানা সাঈদীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের নির্দেশ মোতাবেক পাকিস্তান আর্মি ও শান্তি কমিটির লোকজন পাড়েরহাট বাজারে এবং এর আশপাশের এলাকায় লুটপাট. অগ্নিসংযোগ এবং হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়।

অন্যদিকে মাওলানা সাঈদীর পক্ষের সাক্ষীরা দাবি করেছেন ১৯৭১ সালে  স্বাধীনতাযুদ্ধ  শুরুর অনেক আগে থেকেই মাওলানা সাঈদী যশোরের নিউটাউনে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন সপরিবারে ।  যশোরের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মসভা করতেন। এরপর  ১৯৭১ সালে ২৬ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি পরিবারের লোকজনসহ  যাশোরে মহিরন  গ্রামে তিনি তার পরিচিত এক পীর সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে কিছুদিন থাকার পর  ১৯৭১ সালের মে মাসের প্রথম দিকে তিনি  বাঘারপাড়া থানার দোহাকোলা গ্রামে রওশন আলী নামক এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন। জুলাই মাস পর্যন্ত সেখানে থাকার পর তিনি পিরোজপুরে নিজ বাড়িতে যান।

১৯৭১ সালের মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত  যে সময় পিরোজপুরে পাড়েরহাটসহ আশপাশের এলাকায় মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ করেছেন মাওলানা সাঈদীর বিপক্ষের সাক্ষীরা ঠিক সেই সময় মাওলানা সাঈদী পিরোজপুরেই ছিলেননা বলে দাবি করছেন মাওলানা সাঈদীর পক্ষের সাক্ষীরা।

রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা যা বললেন :
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার বাদী এবং ১ নং সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদার ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন,  ১৯৭১ সালের  মে মাসের প্রথম সপ্তায় পাক হানাদার বাহিনী পিরোজপুরে আসে। ৭ মে সকাল বেলা আমি নিজ বাড়িতেই ছিলাম।  লোকমুখে শুনতে পাই পাক হানাদার বাহিনী পাড়েরহাট আসিতেছে  এবং পাড়েরহাটের শান্তি কমিটির লোকেরা পাড়েরহাট রিক্সা স্ট্যান্ডে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছে। আমি পাড়েরহাটে যাইয়া  রিক্সা স্ট্যান্ডের আড়ালে থেকে  গোপনে লক্ষ্য করিতেছি পাড়েরহাটের শান্তি কমিটির লোকেরা দাড়িয়ে আছে। কিছু পরে ২৬টি রিক্সায় ৫২ জন পাক হানাদার বাহিনী রিক্সা স্ট্যান্ডে নামে। শান্তি কমিটির লোকেরা তাদের অভ্যর্থনা জানায়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী উর্দুভাষা ভাল জানতেন বিধায় ক্যাপ্টেন ইজাজের সাথে কথা বলেন।

দ্বিতীয় সাক্ষী রুহুল আমিন নবীন বলেন, ৭ মে  পাড়েরহাটের শান্তি কমিটির  সেকেন্দার  আলী শিকদার, দানেস মোল্লা, মাওলানা মোসলেম উদ্দিন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবসহ আরো কয়েকজন পাড়েরহাটে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য রিক্সা স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে থাকে।

রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী সুলতান আহমদ হাওলাদার ট্রাইব্যুনালে বলেন, ১৯৭১ সালে আমি   পিরোজপুর সোহরাওয়াদী কলেজের   ছাত্র ছিলাম। পিরোজপুরে পাক বাহিনী আসার খবর পেয়ে  গ্রামে চলে যাই। গ্রামে গিয়ে  জানতে  পারি জামায়াত নেতা সেকেন্দার  আলী শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, দেলোয়ার হোসেন


শিকদার বর্তমানে সাঈদী, মোসলেম মাওওলানা এদের নেতৃত্বে পিস কমিটি গঠিত হয়।   পাক বাহিনী  পাড়েরহাটে আসার পর উপরে বর্নিত পিস কমিটির নেতৃবৃন্দ পাক পাহিনীকে স্বাগত জানায় এবং বাজারে নিয়ে   যায় লুটপাটের জন্য।

৫ম সাক্ষী মাহতাব উদ্দিন  তার জবানবন্দীতে বলেন,  ১৯৭১ সালের ২ জুন আমি পাড়েরহাট বাজারে যাই। তখন  শান্তি কমিটির দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী, দানেশ আলী মোল্লা, সেকেন্দার শিকার, মাওলানা মোসলেম উদ্দিন সশস্ত্র রাজাকার এবং পাক আর্মিদের  নিয়ে উমেদপুর গ্রামে যেতে দেখি।

ষষ্ঠ সাক্ষী মানিক পসারী জবানবন্দীতে বলেন, ১৯৭১ সালে ৮ মে পাক সেনাবাহিনী নিয়ে দেলোয়ার শিকদার বর্তমানে সাঈদী, সেকেন্দার শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, মোসলেম মাওলানা, রেজাকার  মবিন, হাকিম কারী, সোবহান মাওলানাসহ আরো অনেকে রেজাকার আমার বাড়িতে   প্রবেশ করে।

সপ্তম সাক্ষী  মফিজ উদ্দিন বলেন,  ১৯৭১ সালের ৮ মে সকালে   ১২/১৪ জন পাক আর্মি, ২০/২২ জন রাজাকার মামার বাড়ি যাচ্ছে দেখতে পাই। তার মধ্যে দিলু  শিকদার ছিল।

অষ্টম সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদার  জবানবন্দী দিতে গিয়ে বলেন, আমি ১৯৭১ সালে পাড়েরহাট বাজারে বুটমুড়ি ফেরি করে বিক্রি করতাম।  মে মাসের সাত তারিখ  শান্তি কমিটির দেলোয়ার  শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, মোসলেম মাওলানা এরা  বাজারের উত্তর মাথায় রিক্সা স্ট্যান্ডের কাছে যায়। কিছুক্ষন পর ২৬টি  রিক্সায় ৫২ জন পাক আর্মি আসে। পাক আর্মি নামার পর তারা দেলোয়ার শিকদার, মোসলেম মাওলানা,  দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার এদের জিজ্ঞসা করে বাজারের  অবস্থা কি । তারপর শান্তি কমিটির লোকজন পাক আর্মিদের হিন্দু এবং নৌকা মার্কার লোকজনের দোকান, ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়।  

নবম সাক্ষীর জবানবন্দী  আলতাফ হাওলাদার বলেন, মে মাসের  সাত তারিখ পাক আর্মি পাড়েরহাট বাজারে আসে। পাক আর্মি আসার  ছয়/সাত দিন আগে  সেকেন্দার শিকদার, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী, মোসলেম মাওলানা, দানেশ আলী মোল্লার নেতৃত্বে শান্তি কমিটি গঠন হয়। তারপর রেজাকার বাহিনী গঠন হয় দেলাওয়ার হোসেন  সাঈদীর নেতত্বে।

দশম সাক্ষী বাসুদেব মিস্ত্রী  বলেন,  ১৯৭১ সালে  মে মাসের ৮ তারিখে পাঞ্জাবী আর্মি, রাজাকার, শান্তি বাহিনীর লোকজন মানিক পসারীর বাড়িতে আসে। দিলু শিকদার, সেকেন্দার আলী শিকদার, মোসলেম মাওলানা, দানেশ আলী মোল্লা, রুহুল আমিন, হাকমি কারী মোমিন এদের দেখেছি তখন।

আরেক সাক্ষী আব্দুল জলিল  বলেন,  ১৯৭১ সালের ৮ মে দেলোয়ার হোসেন দিলু,  দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার, আরো কয়েকজন রাজাকার মিলে ১০/১৫   জনের  একটি দল এবং পাক সেনা মিলে আমাদের চিথলিয়া গ্রামে আসে।

মাওলানা সাঈদীর পক্ষের সাক্ষীরা যা বললেন : মাওলানা সাঈদীর পক্ষে চতুর্থ সাক্ষী মো: আবুল হোসেন বলেন, ১৯৬৮ সাল হতে যশোর নিউ টাউন, ব্লক -এ, ১৮৫ নম্বর বাড়িতে বসবাস করে আসছি। ১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চ কালরাত্রে পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে । যশোর সেনানিবাস থেকে গোলাগুলি শুরু হয়। ২৬, ২৭  ও ২৮ শে মার্চ ওখান থেকে নিয়মিত গোলাগুলি চলে। আমার বাড়ির পাশে ১৮৪ নম্বর বাড়িতে বসবাস করতেন শহিদুল ইসলাম সাহেব। তিনি শেখহাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তার পাশের বাসায় ১৮৩ নম্বর বাড়িতে বসবাস করতেন একই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ( নাম মনে পড়ছেনা এখন) ।  ১৮২ নম্বর বাসায় বসবাস করতেন দেলওয়ার হোসেন সাঈদী সাহেব। যশোর শহর থেকে অনেক পরিবার ভয়ে শহর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যাচ্ছিল। তখন


আমাদের এই চার পরিবারের অভিভাবকরা আলোচনা করলেন যে, এখানে তো আর থাকা যায় না। আমরা ১৯৭১ সালের ৩ অথবা ৪ এপ্রিল তারিখে যশোর থেকে শেখহাটি চলে যাই। রাত্রে শেখহাটিতে অবস্থান করি। ওখান থেকে সকালে আমরা আরও ভিতরে পূর্বদিকে ধানঘাটা গ্রামে চলে গিয়ে অবস্থান নেই। সেখানে ১৮৩ নম্বর বাড়ির বাসিন্দার (তার নাম   মনে পড়ছে আবুল খায়ের) মামার বাড়িতে অবস্থান করি। সেখানে ৭/৮ দিন থাকার পরে  সিদ্ধান্ত হয় যে, আমাদের পরিবার এবং শহিদুল ইসলামের পরিবার ভারতে চলে যাবে ।  আবুল খায়ের তিনি তার মামার বাড়ি ধানঘাটায় থেকে গেলেন । সাঈদী সাহেব ওখান থেকে ৮/৯ মাইল দূরে চলে গেলেন যশোরের বাঘারপাড়া থানাধীন মহিরন উনার এক পীর সাহেবের বাড়িতে। আমাদের পরিবার এবং শহিদুল ইসলামের পরিবার ভারতে চলে যাই। এরপর সাঈদী সাহেবের সংগে আমার আর যোগাযোগ হয় নাই।

মাওলানা সাঈদীর পক্ষে যশোরের আরেক সাক্ষী রওশন আলী তার  জবানবন্দীতে বলেন, আমাদের  গ্রাম দোহাকোলা, থানা বাঘারপাড়া, যশোর। ১৯৬৯/৭০ সালে আমাদের এলাকায় সাঈদী সাহেব অনেক ধর্মসভা করেছেন। সে ধর্মসভার মাধ্যমে ওনার সাথে আমার পরিচয় হয়। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে যখন পাকিস্তানী সেনারা গুলিগোলা মারতে  শুরু করল তখন সাঈদী সাহেব তার পরিবারসহ বাঘারপাড়ার মহিরন গ্রামের পীর সদরুদ্দীন সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এপ্রিলের মাঝামাঝি পীর   সাহেব হুজুর আমাকে খবর দেন। আমি পীর সাহেবের বাড়িতে যাই। পীর সাহেব হুজুর আমাকে বললেন তাদের বাড়িতে সদস্য সংখ্যা অনেক। তারও কিছু আত্মীয় স্বজন ঢাকা থেকে এসেছেন তাদের বাড়িতে। তিনি আমাকে অনুরোধ করেন  আমি যেন সাঈদী সাহেবকে স্বপরিবারে আমাদের বাড়িতে নিয়ে  রাখার ব্যবস্থা করি। তিনিও (সাঈদী সাহেব) এখানে কষ্ট পাচ্ছেন। মে মাসের প্রথম দিকে তাকে স্বপরিবারে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। আড়াই মাসের মত সাঈদী সাহেব আমার বাড়িতে থাকেন। জুলাই মাসের মাঝামাঝি তিনি তার গ্রামের বাড়ি চলে যান।

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে  ১২ তম সাক্ষী   মোঃ হাফিজুল হক  বলেন, আমাদের  গ্রাম- খড়কী, বামনপাড়া রোড, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর। আমার পিতা মাস্টার  মোঃ শহিদুল ইসলাম ১৯৬৬ সালে যশোর নিউ টাউনে এ ব্লকের ১৮৪ নম্বর বাসা একজন এ্যালটির কাছ থেকে ক্রয় করেন। তারপর আমরা ঐ বাসায় স্বপরিবারে বসবাস করতে থাকি। ১৯৬৮ সালে আমার বাসার পশ্চিম পাশে ১৮৫ নম্বর বাসা মৃত হযরত আলী সাহেব এক এলোটির কাছ থেকে ক্রয় করেন। তারপর আমরা দুই পরিবার পাশাপাশি বসবাস করতে থাকি। ১৯৬৯ সালে আমার বাসার পূর্বদিকে প্রিন্সিপাল আনোয়ার সাহেবের ১৮৩ নম্বর বাসায় মাওলানা আবুল খায়ের সাহেব ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতে থাকেন।  ঐ একই সময়ে প্রফেসর আনোয়ার সাহেবের ১৮২ নম্বর বাসায় মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতে থাকেন। আমার পিতা মাস্টার  মোঃ শহিদুল ইসলাম শেখহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। মরহুম হযরত আলী মিয়া যশোর এস.পি অফিসের হেড কার্ক ছিলেন। মাওঃ আবুল খায়ের সাহেব আমার পিতার স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। মাওঃ দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব বৃহত্তর যশোরের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াজ মাহফিল করতেন।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ  ভয়াল রাতে  যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে যশোর শহরের উপর গোলাগুলি চলতে থাকে।  পরবর্তী ২/৩ দিন ও একই ভাবে গোলাগুলি চলতে থাকে। এমতাবস্থায় শহরের লোকজন গ্রামের দিকে আশ্রয় নিতে থাকে। আমার পিতা, হযরত আলী চাচা, আবুল খায়ের চাচা এবং সাঈদী চাচা সম্মিলিতভাবে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা সিদ্ধান্ত নেন অন্যত্র চলে যাওয়ার।
পরবর্তী ৪ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে শেখহাটি চলে যাই। ওখানে আমার পিতার স্কুলের তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মরহুম জয়নুল আবেদীন সাহেবের বাসায় রাত্রি যাপন করি। পরের দিন সকালে চাচা আবুল খায়ের সাহেবের মামার বাড়িতে ধান কাটাঘাটা নামক স্থানে চলে যাই। ওখানে আমরা ৭/৮ দিন থাকি। অনেকগুলি পরিবার এক জায়গায় থাকায় আবার ৪ জন মুরব্বিরা মিলে  সিদ্ধান্ত  নেন অন্যত্র চলে যাওয়ার। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব বলেন যে, তিনি বাঘার পাড়ায় মহিরণের পীর সাহেবের বাড়ি


যাবেন। আমার পিতা এবং হয়রত আলী সাহেব একত্রে ইন্ডিয়া চলে যাবেন। পরবর্তী দিন সকালে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব মহিরনের উদ্দেশ্যে চলে যান। তারপর হযরত আলী এবং আমরা ভারতের উদ্দেশ্যে চলে যাই এবং মাওলানা আবুল খায়ের সাহেব ঐ বাড়িতেই থেকে যান।

১৪ তম সাক্ষী  এমরান হোসাইন বলেন, আমার   গ্রাম- মহিরন, থানা- বাঘারপাড়া, জেলা যশোর । আমার পেশা শিক্ষকতা। বাঘারপাড়া পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।
১৯৭১ সালে  আমি ছাত্র ছিলাম। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭১ সালের  মে মাসের মাঝামাঝি সময় আমাদের মহিরন গ্রামে মরহুম সদরুদ্দিন পীর সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে ১৫ দিন থাকার পরে দোহাকোলো গ্রামের রওশন আলী সাহেবকে পীর সাহেব ডেকে বললেন, আমার বাড়িতে লোকজনের ভিড় হয়েছে, থাকার সমস্যা । আপনি আপনার বাড়িতে সাঈদী সাহেবকে নিয়ে যান। উনার বাড়িতে আড়াই মাস থাকার পর সাঈদী সাহেবকে তার ভাই এসে তাকে দেশের বাড়িতে পিরোজপুর  নিয়ে গেলেন।
এছাড়া কোবাদ আলী নামে  আরেক সাক্ষী মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন ১৯৭১ সালের মে মাসে মাওলানা সাঈদী যশোর ছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন