মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৩

মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে আরো ৫ অতিরিক্ত সাক্ষী

মেহেদী হাসান 27/8/2013
জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে নতুন করে আরো পাঁচজন সাক্ষী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন সাক্ষী তালিকভুক্ত করা বিষয়ে আজ ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন। এ নিয়ে মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের মোট তালিকাভুক্ত সাক্ষীর সংখ্যা দাড়াল ১০৪ জনে। এর আগেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে দুইবার সাক্ষীর সংখ্যা বাড়ানোর অনুমতি  দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষকে।

রাষ্ট্রপক্ষ মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে প্রথমে মোট ৬৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দেয়। এরপর একবার ছয় জন এবং আরেক বার ২৮ জন নতুন সাক্ষী তালিকাভুক্ত করার আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ এবং তা মঞ্জুর করা হয়। আজ নতুন করে আরো পাঁচজন  নতুন সাক্ষী বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে অনুমতি দেয়া হল।

মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
আজ নতুন যে পাঁচজন সাক্ষীর আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে তাদের মধ্য থেকে একজনকে রাষ্ট্রপক্ষ হাজির করে ট্রাইব্যুনালে। তবে ট্রাইব্যুনাল তার সাক্ষ্য গ্রহনে রাজি হয়নি। ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের প্রশ্ন  করেন আপনাদের আজকের আবেদন আমরা গ্রহণ করব তা আগে থেকে জানতেন কি করে? তখন প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী বলেন, যদি গ্রহণ করা হয় সেই আশা থেকে আমরা নতুন পাঁচজনের মধ্য থেকে একজনকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য নিয়ে এসেছি।
আগামী বৃহষ্পতিবার নতুন সাক্ষীর জবানবন্দী  গ্রহণ করা হবে। রোববার তার জেরার জন্য ধার্য্য করা হয়েছে।

নতুন সাক্ষীর আবেদন বিষয়ে শুনানী :
মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত পাঁচজন সাক্ষী বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা আবেদনের ওপর সকালে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপক্ষে  প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী শুনানী পেশ করেন প্রথমে। তিনি বলেন, মাওলানা নিজামীর মামলায় এখনো তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং নতুন তথ্য প্রমান পাওয়া গেছে। সে কারনে ন্যায় বিচারের স্বার্থে নতুন সাক্ষী গ্রহণ করা উচিত। তা নাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।
ট্রাইব্যুনাল সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন তখন প্রশ্ন করেন, আগেই আপনাদের ১০০ জন সাক্ষী হাজিরের বিষয়ে অনুমতি দেয়া আছে। এত সাক্ষী থাকার পরও নতুন করে সাক্ষী কেন দরকার?
অপর সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন,  আপনারা কি আগের সাক্ষীদের বিষয়ে কান্ত (এক্সহজটডে) হয়ে গেছেন?
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির বলেন, মিস্টার মোহাম্মদ আলী, আমরা আগেও আপনাদের দুইবার সাক্ষী বাড়ানোর বিষয়ে আবেদন গ্রহণ করেছি। নতুন করে সাক্ষীর আবেদন করলে আপনাদের  নির্দিষ্ট করে দেখাতে হবে কেন নতুন সাক্ষী দরকার।

এরপর আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম রাষ্ট্রপক্ষের দরখাস্তের বিরোধীতা করে শুনানী পেশ করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর বলেছেন এ মামলায় এখনো তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আমার মনে হয় এটি উনি ঠিক বলেননি। আইন এবং রুলস অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর আর নতুন করে তদন্ত পরিচালনার কোন সুযোগ নেই।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের দরখাস্তের একটি প্যারা উদ্ধৃত করে মিজানুল ইসলাম বলেন, এটা ওনারা কি লিখলেন? এটাই যদি হয় তাহলে ন্যায় বিচারের আর কিছু থাকেনা। প্রথমে তারা ৬৮ জন সাক্ষীর তালিকা দিলেন। এরপর আরো দুই দফায় সাক্ষীর তালিকা বাড়ানো হল। এসব সাক্ষী তারা কেন হাজির করতে পারছেনা তার কোন ব্যাখ্যা তারা দেয়নি।
মিজানুল ইসলাম বলেন, আসলে এ মামলায় তাদের অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি হয়েছে। সেগুলো শোধরানোর জন্য তদন্ত কর্মকর্তা এবং প্রসিকিউটর মিলে কাজ করছেন। তারই অংশ হিসেবে তারা নতুন সাক্ষীর দরখাস্ত দিয়েছেন।  তারা সততার সাথে এ দরখাস্ত এনেছে কি-না এবং আসামী পক্ষকে ক্ষতিগ্রস্ত করা এর লক্ষ্য কি-না তা আপনাদের খতিয়ে দেখা দরকার। আমাদের বক্তব্য হল তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ দরখাস্ত এনেছে মামলার এ পর্যায়ে।

এ সময় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আগে রাষ্ট্রপক্ষ বলত আসামী পক্ষ মামলা বিলম্ব করার চেষ্টা করছে। এখন মনে হয় রাষ্ট্রপক্ষ মামলা ডিলে করতে চাচ্ছে।
চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএফ ফজলে কবির বলেন, আগে ১০০ জনের অনুমতি দেয়া আছে। এখন আবার নতুন করে সাক্ষী বাড়াতে চাচ্ছেন। এতে তো মনে হয় দুই বছরেও আপনারা মামলা শেষ করবেননা।

বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীর উদ্দেশে বলেন, আসামী পক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম প্রশ্ন তুলেছেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর তদন্তের আর কোন সুযোগ নেই। এর জবাব  দেন।

মোহাম্মদ আলী তখন আইন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, তদন্ত কমকর্তার পাশাপাশি আইনজীবীও এ মামলায় তদন্তের কাজ পরিচালনা করতে পারে। মামলায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এটা একটা চলমান প্রকৃয়া। তদন্ত রিপোর্ট যখন জমা দেয়া হয়েছে সেটা তদন্তের একটা পার্ট। কিন্তু তদন্ত এখনো চলছে এবং তারই অংশ হিসেবে আমরা নতুন সাক্ষী এনেছি।
বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির বলেন, আপনি এটি ঠিক বলেননি। বস্তুত তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর তার হাতে আর কিছু থাকেনা। তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার পর তদন্তের আর সুযোগ নেই।  তবে হ্যা নতুন করে গুরুত্বপূর্ণ কোন এভিডেন্স নজরে আসলে তখন সেটি বিবেচনা করা যেতে পারে। তাছাড়া পুনরায় তদন্তের সুযোগ নেই।  আর আইনজীবী তদন্ত করতে পারলেও বস্তুত আপনারা তো তদন্ত করেনননি। করেছে তদন্ত সংস্থা।

এরপর ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের দরখাস্ত মঞ্জুর করে আদেশ দেন এবং সাক্ষী  হাজিরের জন্য বলেন রাষ্ট্রপক্ষকে।
রাষ্ট্রপক্ষ তখন  আজকের দরখাস্তে অনুমতি প্রাপ্ত পাঁচজন থেকে একজনকে হাজির করে। মিজানুল ইসলাম তখন বলেন, আপনারা কি করে জানলেন যে, আপনাদের দরখাস্ত মঞ্জুর হবে?
তখন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ সাক্ষীর সাক্ষ্য আজ আমরা নেবনা। আপনারা কি করে জানলেন আপনাদের নতুন সাক্ষীদের বিষয়ে দরখাস্ত আমরা গ্রহণ করব?
তখন মোহাম্মদ আলী বলেন, যদি গ্রহণ করা হয় সেই আশায় নিয়ে এসেছিলাম।
বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির বলেন, আমিতো মনে করেছিলাম পুরান সাক্ষী এনেছেন।
এরপর মিজানুল ইসলাম বলেন, নতুন সাক্ষীদের বিষয়ে আমাদের তদন্তের জন্য কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় দেন। আর আজ যে নতুন সাক্ষী হাজির করা হল তার সাক্ষ্য  গ্রহণ করতে হলে আগামী রোববার তারিখ নির্ধারন করা হোক।
এরপর আগামী বুধবার নতুন সাক্ষীর জবানবন্দী এবং রোববার জেরার জন্য নির্ধারন করা হয়।
এদিকে ইকোনমিস্ট বিষয়ে  আজ  আদেশ দেয়ার কথা থাকলেও তা পুনরায় ২৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারন করা হয়েছে।

নতুন সাক্ষী বিষয়ে দরখাস্তের বিরোধীতা করে  আসামী পক্ষ ট্রাইব্যুনালে যে লিখিত আপত্তি দায়ের করে তা নিম্নরূপ
IN THE INTERNATIONAL CRIMES TRIBUNAL-1, DHAKA

ICT-BD. CASE NO.   03 OF 2011

IN THE MATTER OF:
Prayer for dismissing the application filed by the prosecution on 26.08.2013 for seeking permission to submit the statement of 5 (five) additional prosecution witnesses.

AND
IN THE MATTER OF:
Motiur Rahman Nizami, Ameer of Bangladesh Jamaat-e-Islami, 505 Elephant Road, Mogbazar, Dhaka 1217.
…Accused-Petitioner.
-versus-

The Prosecution.
       …Opposite Party.
The humble petition on behalf of the Accused-Petitioner above named most respectfully –

S H E W E T H:
1.   That on 9 January 2012, this Hon’ble Tribunal stated that a prima facie case had been established against the Accused-Petitioner and ordered that cognizance be taken under sections 3 (2), 4 (1) and 4 (2) of the International Crimes (Tribunal) Act 1973 (hereinafter: “IC(T)A”).
2.   The Tribunal ordered for the Prosecution to disclose copies of the formal charge and all supporting documents relied upon while forming the charge concerned to the Defence by 15 January 2012. Pursuant to the above mentioned order passed on 9 January 2012 and Rule 18 (4) of the Rules of Procedure, the Defence was supplied with a copy of formal charge and supporting documents on 15 January 2012. This consists of 15 volumes of documents comprising of 4288 pages.
3.   That on ....... the prosecution filed an application seeking permission to submit the statement of 6 ( six) additional prosecution witnesses which was vehemently opposed by the Defence but this Hon’ble Tribunal allowed that application and the prosecution examined only one witness from those additional witnesses.
4.     That the prosecution again filed an application seeking permission to submit the statement of 28 ( twenty eight) additional prosecution witnesses which was hard on 11.02.2013 and that was also vehemently opposed by the Defence but the Defence yet not been well informed regarding the fate of that application though the prosecution already examined one witness from that additional witness list.
5.   That furthermore, 0n 26.08.2013 again the prosecution filed an application for permission to submit an additional list of 5 (five) prosecution witnesses statement.
6.   That it is stated that the prosecution filed this application only to fill up the lacuna arises from the Defense’s cross examination of the PW’s.
7.   That it is further submitted that the prosecution in fact filed this application only to mislead the Tribunal as the defense by cross examination of the PW’s got major discrepancies between the prosecution story and the facts on the ground and thereby destroyed the prosecution case and now by taking the advantage of submitting additional prosecution witnesses they have just reversed their previous case and come with a new case which can no way be allowed.
8.   That as prosecution is not come with the application for seeking permission to submit the statement of 5 (five) additional prosecution witnesses with clean hand the prosecution application is liable to be dismissed.
9.   That it is submitted that the 5 new witness statements brought before the Tribunal in the form of application are manipulated, fabricated and concocted and if the prosecution application is allowed the accused petitioner will be highly prejudiced.
10.           That for the abovementioned reasons the Accused-Petitioner humbly prays that this Hon’ble Tribunal issues an order directing for rejecting the application filed by the prosecution.
Wherefore it is most humbly prayed that the Hon’ble Tribunal would graciously be pleased to issue an order dismissing the application filed by the prosecution for seeking permission to submit the statement of 5 (five) additional prosecution witnesses and/or pass any order or further order(s) as it may deem fit and proper. 
And for this act of kindness, that the Accused-Petitioner, as in duty bound shall ever pray.

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন