২৯/১১/২০১২, বৃহষ্পতিবার
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আজ পুনরায় যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, এ মামলায় সরকার পক্ষ সাক্ষী নিয়ে যে কেলেঙ্কারির আশ্রয় নিয়েছে তা ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারিকেও শত শত গুন ছাড়িয়ে গেছে। (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭২-৭৪ সালে সংঘটিত ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ফলে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল)।
তিনি বলেন, সাক্ষীর নামে তদন্ত কর্মকর্তা (হেলালউদ্দিন) নিজে জবানবন্দী লিখে তা জমা দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালে। প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে তিনি ট্রাইব্যুনালকে বিভ্রান্ত করেছেন। কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দী ট্রাইব্যুনালে পড়ে শুনিয়ে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একজনের জবানবন্দীর সাথে আরেকজনের জবানবন্দী লাইন লাইন হুবহু, ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড হুমহু মিল রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এ থেকেই প্রমানিত হয় তদন্ত কর্মকর্তা নিজে সাক্ষীর নামে জবানবন্দী লিখে তা জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে সরকার পক্ষ দাবি করেছে মাওলানা সাঈদীর সন্ত্রাসীদের ভয়ে তাদের সাক্ষীরা নিখোঁজ, বাড়িছাড়া হয়েছে। তারা সাক্ষী খুজে পাচ্ছেনা। অথচ আমরা ডকুমেন্ট হাজির করে দেখিয়েছি অনেক সাক্ষী তাদের হেফজাতেই সেফ হাউজে ছিল। দিনের পর দিন তাদের ঢাকায় রাখা হয়েছে। প্রসিকিউশন অফিসে আনা হয়েছে। কিন্তু তারা তাদের কথামত মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি না হওয়ায় সরকার পক্ষ তাদের হাজির করেনি। মাওলান সাঈদীর মামলায় সাক্ষী নয় এমন লোকদের নামেও জবানবন্দী লিখে জমা দেয়া হয়েছে।। সাক্ষীদের কাছে না গিয়েই বলা হয়েছে তাদের হাজির করা আদৌ সম্ভব নয়। এভাবে তদন্ত কর্মকর্তা একের পর এক প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছে এ মামলায়। এসব ঘটনা প্রমানের পর তদন্ত কর্মকর্তার আর কোন বিশ্বাসযোগ্যতা, গ্রহণযোগ্যতা থাকতে পারেনা।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সেফ হাউজ ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করে প্রমানের চেষ্টা করেন সেফ হাউজের অস্তিত্ব ছিল। সেখানে সাক্ষী এনে রাখত সরকার পক্ষ। তাদের সাক্ষ্য দেয়ার জন্য প্রশিক্ষন দেয়া হত ।
এছাড়া তিনি বেশ কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দী নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করে দেখান যে, তাদের সবার জবানবন্দী একই এবং তা তদন্ত কর্মকতা তাদের নামে লিখেছেন বলে দাবি করে তিনি।
তিনি বলেন, ১৯.২ ধারায় যেসব সাক্ষীকে কোর্টে না এনে তাদের অনুপস্থিতিতে তাদের জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে আসামীকে দোষী সাব্যস্তা করা যাবেনা।
১৯.২ ধারায় গৃহীত আশিষ কুমার মন্ডল, সমর মিস্ত্রী, সুমতি রানী, সিতারা বেগম, মমতাজ বেগম এবং মোস্তফার জবানবন্দী তুলনামূলক আলোচনা করে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, তাদের অনেকের বক্তব্য একজনের সাথে আরেকজনের হুবহু মিল রয়েছে অনেক স্থানে।
আশিষ কুমার মন্ডল, সুমতি রানীর জবানবন্দী পড়ে শুনিয়ে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাদের দুজনের জবানবন্দীতে কয়েকটি লাইন হুবহু মিল। পাকিস্তান সেনারা সাঈদীর দেখানো মতে মনিন্দ্রের ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তখন লোকজন ভয়ে পালাতে থাকে। পাক সেনারা তাদের ওপর গুলি করে। পাক সেনারা চলে গেলে লোকজন ফিরে এসে দেখে লাশগুলো শেয়াল কুকুরে খাচ্ছে। উভয়ের জবানবন্দীতে এ শব্দগুলো লাইন বাই লাইন, ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড, ব্যাকরনগতভাবে সব দিক দিয়ে হুবহু মিলে যাচ্ছে। এটা কি করে সম্ভব হতে পারে?
এভাবে ইব্রাহীম কুট্টি এবং সাহেব আলীকে হত্যার বিবরন বিষয়ে ইব্রাহীমের স্ত্রী মমতাজ বেগম, মমতাজ বেগমের মা সিতারা বেগমের জবানবন্দী পড়ে শোনান এবং তাদের বক্তব্যের যেখানে যেখানে হুবহু মিল আছে তা ট্রাইব্যুনালের দৃষ্টিতে আনেন। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনজন সাক্ষীই বলেছেন তিনটার সময় ঘটনা ঘটেছে। তখন কি তাদের হাতে ঘড়ি ছিল না তারা সময় লিখে রেখেছিল। ৪০ বছর পর কি করে তারা সবাই বলতে পারে তিনটার সময় ঘটনা ঘটেছিল?
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, উষারানীকে হাজির না করা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করেছে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে। অথচ একটি টিভি ইন্টারভিউ আমরা এখানে দেখিয়েছি। সেখানে তিনি বলেছেন তিনি সাঈদীর বিরুদ্ধে কোন জবানবনন্দী দেননি। তিনি সাঈদীকে চেনেনইনা। তিনি স্বাভাবিকভাবে টিভির সাথে কথা বলছেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী গণেশ আমাদের পক্ষে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে তার যে জবানবন্দী রয়েছে আর তিনি কোর্টে এসে সাঈদীর পক্ষে যা বলেছেন এ দুই বক্তব্যের মধ্যে মিল নেই। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে গনেশের বরাত দিয়ে জবানবন্দীতে লেখা আছে অনেকে বলেছে তার মায়ের হত্যার ব্যাপারে পাড়েরহাটের রাজাকার দেলোয়ার সাঈদীর প্রত্যক্ষ হাত ছিল। আর এখানে এসে গনেশ বলেছেন তার মায়ের হত্যার ব্যাপারে সাঈদী জড়িত নন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, গনেশের মা ভাগিরথী হত্যা বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত গনেশের জবানবন্দীতে সাঈদী সাহেবকে জড়িয়ে যা লেখা আছে তা তদন্ত কর্মকর্তা নিজে লিখেছেন গনেশের নামে।
ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ১৯.২ ধারায় গৃহীত জবানবন্দী পর্যালোচনা করে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী গণেশ আসামী পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত তার জবানবন্দীর আর কোন মুল্য নেই। তদন্ত কর্মকর্তার আর কোন গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বাসযোগ্যতা থাকতে পারেনা এবং নেই।
এরপর ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সেফ হাউজ ডায়েরি বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। এ বিষয়ে এর আগেও শুনানীর সময় যুক্তি উপস্থাপন করেন তিনি। গতকাল এ বিষয়ে তিনি ফাইনাল আর্গুমেন্ট পেশ করলেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৯.২ ধারায় সরকার পক্ষ ৪৬ জন সাক্ষীর বিষয়ে দরখাস্ত দিয়ে জানাল তাদেরকে হাজির করা আদৌ সম্ভব নয়। তাদের হাজির করা সময় সাপেক্ষ। অনেক সাক্ষী বিষয়ে বলা হল তারা সাঈদীর সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিখোঁজ, বাড়িছাড়া। কেউ কেউ আত্মগোপনে চলে গেছে। তাই তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন তা তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হোক। এই ছিল ২০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের দাখিল করা দরখাস্তের বিষয়।
এখান থেকে ট্রাইব্যুনাল প্রথমবার ১৫ জনের জবানবন্দী গ্রহণ করে ২৯ মার্চ আদেশ দিলেন।
তিনি বলেন, যে ৪৬ জনের বিষয়ে তারা দরখাস্ত দিয়েছিল তাদের মধ্যে অনেক স্বনামধন্য সম্মানিত লোক আছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনজন হলেন শাহরিয়ার কবির, জুয়েল আইচ এবং ড. জাফর ইকবাল। দৈনিক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শাহরিয়ার কবির বলেছেন তিনি মাওলানা সাঈদীর মামলায় কখনোই সাক্ষী ছিলেননা। তিনি জানেনইনা যে তাকে সাক্ষী করা হয়েছে। এ নিয়ে তার সাথে কোন আলোচনা হয়নি। অথচ এই শাহরিয়ার কবিরের নামে একটি জবানবন্দী লিখে তদন্ত কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়ে বললেন এটা শাহরিয়ার কবিরের জবানবন্দী এবং এটা তার অনুপস্থিতিতে গ্রহণ করে নেয়া হোক সাক্ষ্য হিসেবে। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য একজন সোচ্চার ব্যক্তি। তিনি ট্রাইব্যুনাল-২ এ এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন অন্য একজন আসামীর বিরুদ্ধে। তিনি কি এখানে আসতে পারতেননা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য? অথচ তার নামে বলা হচ্ছে তাকে হাজির করা সম্ভব নয়। তার চেয়েও বড় কথা হল তিনি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে কোন জবানবন্দীই দেননি এবং তার নামে মিথা কথা লিখে তার নামে জমা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এভাবে জুয়েল আইচ পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন তিনি যে মাওলানা সাঈদীর মামলায় সাক্ষী এ বিষয়ে কিছুই জানেননা। তাকে হাজির করার জন্য কোন সমন দেয়া হয়নি । তার কাছে কেউ যায়নি এবং তাকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। । অথচ তার নামে একটি জবানবন্দী লিখে তদন্ত কর্মকর্তা জমা দিয়েছেন এবং তাকে হাজির করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তার নামে লিখিত জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করার নিবেদন করেছে সরকার পক্ষ।
এভাবে ড. জাফর ইকবাল ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করে বলেছেন তিনি তার পিতা ফয়জুর রহমান হত্যার বিচার অবশ্যই চান । কিন্তু তার পিতার হত্যার সাথে সাঈদী জড়িত কি-না তা তিনি জানেনানা। কাজেই তিনি কিভাবে সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেন। অথচ এই জাফর ইকবালের নামেও দীর্ঘ ৯ পৃষ্ঠার একটি জবানবন্দী জমা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমি যে তিনজনের কথা উল্লেখ করলাম তাদের জবানবন্দী আপনাদের সামনে রয়েছে। এটাকে কি করে আপনারা অস্বীকার করবেন? আপনারা ১৯.২ ধারায় তাদের জবানবন্দী গ্রহণ করেননি সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু যদি করতেন তাহলে বিষয়টি কি দাড়াত? ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এভাবে আরো অনেক সাক্ষী যারা ঢাকায় বাস করেন, প্রকাশ্যে নিজ এলাকায় রয়েছেন তাদেরও হাজির করা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন সরকার পক্ষ। এরপরও এই তদন্ত কর্মকর্তার কি কোন বিশ্বাসযোগ্যতা থাকতে পারে?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক এরপর সেফ হাউজের ডকুমেন্ট থেকে তারিখসহ উল্লেখ করে বলেন কোন সাক্ষী কতদিন রাষ্ট্রপক্ষের হেফাজতে ছিল। কবে তারা ঢাকায় এসেছে কবে বাড়ি গেছে। তিনি বলেন, এসব সাক্ষী সতাদের হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপক্ষ বলেছেন তারা নিখোঁজ, সাঈদীর সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়িছাড়া।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল আশিষ কুমার মন্ডল, সুমতি রানি, সমর মিস্ত্রী আত্মিয়ের বাড়ি বেড়াতে গেছে বলে নিখোঁজ হয়ে গেছে। পরে তারা গোপনে ভারতে চলে গেছে। অথচ সেফ হাউজের ডকুমেন্টে বর্নিত আছে তারা ১৬ মার্চ পর্যন্ত তাদের হেফাজতে ছিল। এভাবে মোখলেস পসারী, মুকুন্দ দাস, শহিদুল ইসলাম খান সেলিম, আব্দুল লতিফ হাওলাদার, অনিল কুমার, আইউব আলী হাওলাদার প্রভৃতি কোন সাক্ষী কবে সেফ হাউজে আসে এবং কবে বাড়িতে চলে যায় তার সব রেকর্ড তিনি ট্রাইব্যুনালের সামনে পড়ে শোনা সেফ হাউজ ডকুমেন্ট থেকে।
তিনি বলেন সেফ হাউজের ডকুমেন্টে উল্লেখ আছে একজন পুলিশ চকবাজার গিয়েছিল একটি মালায় হাজিরা দিতে। সেফ হাউজে থাকা একজন সাক্ষীকে হুমকি দেয়া বিষয়ে যাত্রবাড়ি থানায় ডায়েরি করা হয়েছিল। সে বিষয়টিও ডায়েরির নম্বরসহ উল্লেখ আছে। গৌরাঙ্গ সাহা নামে একজন সাক্ষী ভাল সাক্ষ্য দেয়ার কারনে তাকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়েছিল, পাঞ্জাবী দেয়া হয়েছিল সে কথাও লেখা আছে।
রাষ্ট্রপক্ষের বন্ধুরা বলেছেন সেফ হাউজের কোন অস্তিত্ব নেই এবং এসব ডকুমেন্ট আমরা তৈরি করেছি। আমাদের পক্ষে কি করে জানা সম্ভব হতে পারে কোন একজন পুলিশ কবে কোন কোর্টে হাজির দিতে গেছে। কি করে জানা সম্ভব কোন সাক্ষীকে কবে কে হুমকি দিয়েছিল এবং থানায় সে ডায়েরি করেছিল সে বিষয়ে।
আমারা বলেছিলাম সেফ হাউজের ডকুমেন্টে যেসব ব্যাক্তিবর্গ, দায়িত্বরত পুলিশের নাম ধাম উল্লেখ আছে তাদের হাজির করা হোক। আমরা তাদের পরীক্ষা করব। তাহলেই এর সত্যতা প্রমানিত হয়ে যাবে। কিন্তু সে সুযোগ আমাদের দেয়া হলনা।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী এনে রাখা হত যে সেফ হাউজে সেখানে তিনটি ডায়েরি মেনটেন করা হত। একটিতে খাওয়ার বিষয়, একটিতে যাবতীয় বিষয় এবং আরেকটিতে সাক্ষীদের আসা যাওয়া বিষয় লিখে রাখা হত।
যুক্তি উপস্থাপনে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু , প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী উপস্থিত ছিলেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আজ পুনরায় যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, এ মামলায় সরকার পক্ষ সাক্ষী নিয়ে যে কেলেঙ্কারির আশ্রয় নিয়েছে তা ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারিকেও শত শত গুন ছাড়িয়ে গেছে। (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭২-৭৪ সালে সংঘটিত ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ফলে প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল)।
তিনি বলেন, সাক্ষীর নামে তদন্ত কর্মকর্তা (হেলালউদ্দিন) নিজে জবানবন্দী লিখে তা জমা দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালে। প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে তিনি ট্রাইব্যুনালকে বিভ্রান্ত করেছেন। কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দী ট্রাইব্যুনালে পড়ে শুনিয়ে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একজনের জবানবন্দীর সাথে আরেকজনের জবানবন্দী লাইন লাইন হুবহু, ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড হুমহু মিল রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এ থেকেই প্রমানিত হয় তদন্ত কর্মকর্তা নিজে সাক্ষীর নামে জবানবন্দী লিখে তা জমা দিয়েছেন।
অন্যদিকে সরকার পক্ষ দাবি করেছে মাওলানা সাঈদীর সন্ত্রাসীদের ভয়ে তাদের সাক্ষীরা নিখোঁজ, বাড়িছাড়া হয়েছে। তারা সাক্ষী খুজে পাচ্ছেনা। অথচ আমরা ডকুমেন্ট হাজির করে দেখিয়েছি অনেক সাক্ষী তাদের হেফজাতেই সেফ হাউজে ছিল। দিনের পর দিন তাদের ঢাকায় রাখা হয়েছে। প্রসিকিউশন অফিসে আনা হয়েছে। কিন্তু তারা তাদের কথামত মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি না হওয়ায় সরকার পক্ষ তাদের হাজির করেনি। মাওলান সাঈদীর মামলায় সাক্ষী নয় এমন লোকদের নামেও জবানবন্দী লিখে জমা দেয়া হয়েছে।। সাক্ষীদের কাছে না গিয়েই বলা হয়েছে তাদের হাজির করা আদৌ সম্ভব নয়। এভাবে তদন্ত কর্মকর্তা একের পর এক প্রতারনার আশ্রয় নিয়েছে এ মামলায়। এসব ঘটনা প্রমানের পর তদন্ত কর্মকর্তার আর কোন বিশ্বাসযোগ্যতা, গ্রহণযোগ্যতা থাকতে পারেনা।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সেফ হাউজ ডকুমেন্ট পর্যালোচনা করে প্রমানের চেষ্টা করেন সেফ হাউজের অস্তিত্ব ছিল। সেখানে সাক্ষী এনে রাখত সরকার পক্ষ। তাদের সাক্ষ্য দেয়ার জন্য প্রশিক্ষন দেয়া হত ।
এছাড়া তিনি বেশ কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দী নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করে দেখান যে, তাদের সবার জবানবন্দী একই এবং তা তদন্ত কর্মকতা তাদের নামে লিখেছেন বলে দাবি করে তিনি।
তিনি বলেন, ১৯.২ ধারায় যেসব সাক্ষীকে কোর্টে না এনে তাদের অনুপস্থিতিতে তাদের জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে আসামীকে দোষী সাব্যস্তা করা যাবেনা।
১৯.২ ধারায় গৃহীত আশিষ কুমার মন্ডল, সমর মিস্ত্রী, সুমতি রানী, সিতারা বেগম, মমতাজ বেগম এবং মোস্তফার জবানবন্দী তুলনামূলক আলোচনা করে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, তাদের অনেকের বক্তব্য একজনের সাথে আরেকজনের হুবহু মিল রয়েছে অনেক স্থানে।
আশিষ কুমার মন্ডল, সুমতি রানীর জবানবন্দী পড়ে শুনিয়ে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাদের দুজনের জবানবন্দীতে কয়েকটি লাইন হুবহু মিল। পাকিস্তান সেনারা সাঈদীর দেখানো মতে মনিন্দ্রের ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তখন লোকজন ভয়ে পালাতে থাকে। পাক সেনারা তাদের ওপর গুলি করে। পাক সেনারা চলে গেলে লোকজন ফিরে এসে দেখে লাশগুলো শেয়াল কুকুরে খাচ্ছে। উভয়ের জবানবন্দীতে এ শব্দগুলো লাইন বাই লাইন, ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড, ব্যাকরনগতভাবে সব দিক দিয়ে হুবহু মিলে যাচ্ছে। এটা কি করে সম্ভব হতে পারে?
এভাবে ইব্রাহীম কুট্টি এবং সাহেব আলীকে হত্যার বিবরন বিষয়ে ইব্রাহীমের স্ত্রী মমতাজ বেগম, মমতাজ বেগমের মা সিতারা বেগমের জবানবন্দী পড়ে শোনান এবং তাদের বক্তব্যের যেখানে যেখানে হুবহু মিল আছে তা ট্রাইব্যুনালের দৃষ্টিতে আনেন। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনজন সাক্ষীই বলেছেন তিনটার সময় ঘটনা ঘটেছে। তখন কি তাদের হাতে ঘড়ি ছিল না তারা সময় লিখে রেখেছিল। ৪০ বছর পর কি করে তারা সবাই বলতে পারে তিনটার সময় ঘটনা ঘটেছিল?
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, উষারানীকে হাজির না করা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করেছে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে। অথচ একটি টিভি ইন্টারভিউ আমরা এখানে দেখিয়েছি। সেখানে তিনি বলেছেন তিনি সাঈদীর বিরুদ্ধে কোন জবানবনন্দী দেননি। তিনি সাঈদীকে চেনেনইনা। তিনি স্বাভাবিকভাবে টিভির সাথে কথা বলছেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যুক্তি উপস্থাপন করে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী গণেশ আমাদের পক্ষে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে তার যে জবানবন্দী রয়েছে আর তিনি কোর্টে এসে সাঈদীর পক্ষে যা বলেছেন এ দুই বক্তব্যের মধ্যে মিল নেই। তদন্ত কর্মকর্তার কাছে গনেশের বরাত দিয়ে জবানবন্দীতে লেখা আছে অনেকে বলেছে তার মায়ের হত্যার ব্যাপারে পাড়েরহাটের রাজাকার দেলোয়ার সাঈদীর প্রত্যক্ষ হাত ছিল। আর এখানে এসে গনেশ বলেছেন তার মায়ের হত্যার ব্যাপারে সাঈদী জড়িত নন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, গনেশের মা ভাগিরথী হত্যা বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত গনেশের জবানবন্দীতে সাঈদী সাহেবকে জড়িয়ে যা লেখা আছে তা তদন্ত কর্মকর্তা নিজে লিখেছেন গনেশের নামে।
ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ১৯.২ ধারায় গৃহীত জবানবন্দী পর্যালোচনা করে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী গণেশ আসামী পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত তার জবানবন্দীর আর কোন মুল্য নেই। তদন্ত কর্মকর্তার আর কোন গ্রহণযোগ্যতা বিশ্বাসযোগ্যতা থাকতে পারেনা এবং নেই।
এরপর ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সেফ হাউজ ডায়েরি বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন। এ বিষয়ে এর আগেও শুনানীর সময় যুক্তি উপস্থাপন করেন তিনি। গতকাল এ বিষয়ে তিনি ফাইনাল আর্গুমেন্ট পেশ করলেন।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৯.২ ধারায় সরকার পক্ষ ৪৬ জন সাক্ষীর বিষয়ে দরখাস্ত দিয়ে জানাল তাদেরকে হাজির করা আদৌ সম্ভব নয়। তাদের হাজির করা সময় সাপেক্ষ। অনেক সাক্ষী বিষয়ে বলা হল তারা সাঈদীর সন্ত্রাসীদের ভয়ে নিখোঁজ, বাড়িছাড়া। কেউ কেউ আত্মগোপনে চলে গেছে। তাই তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন তা তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হোক। এই ছিল ২০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের দাখিল করা দরখাস্তের বিষয়।
এখান থেকে ট্রাইব্যুনাল প্রথমবার ১৫ জনের জবানবন্দী গ্রহণ করে ২৯ মার্চ আদেশ দিলেন।
তিনি বলেন, যে ৪৬ জনের বিষয়ে তারা দরখাস্ত দিয়েছিল তাদের মধ্যে অনেক স্বনামধন্য সম্মানিত লোক আছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনজন হলেন শাহরিয়ার কবির, জুয়েল আইচ এবং ড. জাফর ইকবাল। দৈনিক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শাহরিয়ার কবির বলেছেন তিনি মাওলানা সাঈদীর মামলায় কখনোই সাক্ষী ছিলেননা। তিনি জানেনইনা যে তাকে সাক্ষী করা হয়েছে। এ নিয়ে তার সাথে কোন আলোচনা হয়নি। অথচ এই শাহরিয়ার কবিরের নামে একটি জবানবন্দী লিখে তদন্ত কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়ে বললেন এটা শাহরিয়ার কবিরের জবানবন্দী এবং এটা তার অনুপস্থিতিতে গ্রহণ করে নেয়া হোক সাক্ষ্য হিসেবে। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য একজন সোচ্চার ব্যক্তি। তিনি ট্রাইব্যুনাল-২ এ এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন অন্য একজন আসামীর বিরুদ্ধে। তিনি কি এখানে আসতে পারতেননা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য? অথচ তার নামে বলা হচ্ছে তাকে হাজির করা সম্ভব নয়। তার চেয়েও বড় কথা হল তিনি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে কোন জবানবন্দীই দেননি এবং তার নামে মিথা কথা লিখে তার নামে জমা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এভাবে জুয়েল আইচ পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন তিনি যে মাওলানা সাঈদীর মামলায় সাক্ষী এ বিষয়ে কিছুই জানেননা। তাকে হাজির করার জন্য কোন সমন দেয়া হয়নি । তার কাছে কেউ যায়নি এবং তাকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। । অথচ তার নামে একটি জবানবন্দী লিখে তদন্ত কর্মকর্তা জমা দিয়েছেন এবং তাকে হাজির করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তার নামে লিখিত জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করার নিবেদন করেছে সরকার পক্ষ।
এভাবে ড. জাফর ইকবাল ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকার করে বলেছেন তিনি তার পিতা ফয়জুর রহমান হত্যার বিচার অবশ্যই চান । কিন্তু তার পিতার হত্যার সাথে সাঈদী জড়িত কি-না তা তিনি জানেনানা। কাজেই তিনি কিভাবে সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেন। অথচ এই জাফর ইকবালের নামেও দীর্ঘ ৯ পৃষ্ঠার একটি জবানবন্দী জমা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমি যে তিনজনের কথা উল্লেখ করলাম তাদের জবানবন্দী আপনাদের সামনে রয়েছে। এটাকে কি করে আপনারা অস্বীকার করবেন? আপনারা ১৯.২ ধারায় তাদের জবানবন্দী গ্রহণ করেননি সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু যদি করতেন তাহলে বিষয়টি কি দাড়াত? ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এভাবে আরো অনেক সাক্ষী যারা ঢাকায় বাস করেন, প্রকাশ্যে নিজ এলাকায় রয়েছেন তাদেরও হাজির করা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন সরকার পক্ষ। এরপরও এই তদন্ত কর্মকর্তার কি কোন বিশ্বাসযোগ্যতা থাকতে পারে?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক এরপর সেফ হাউজের ডকুমেন্ট থেকে তারিখসহ উল্লেখ করে বলেন কোন সাক্ষী কতদিন রাষ্ট্রপক্ষের হেফাজতে ছিল। কবে তারা ঢাকায় এসেছে কবে বাড়ি গেছে। তিনি বলেন, এসব সাক্ষী সতাদের হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপক্ষ বলেছেন তারা নিখোঁজ, সাঈদীর সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়িছাড়া।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল আশিষ কুমার মন্ডল, সুমতি রানি, সমর মিস্ত্রী আত্মিয়ের বাড়ি বেড়াতে গেছে বলে নিখোঁজ হয়ে গেছে। পরে তারা গোপনে ভারতে চলে গেছে। অথচ সেফ হাউজের ডকুমেন্টে বর্নিত আছে তারা ১৬ মার্চ পর্যন্ত তাদের হেফাজতে ছিল। এভাবে মোখলেস পসারী, মুকুন্দ দাস, শহিদুল ইসলাম খান সেলিম, আব্দুল লতিফ হাওলাদার, অনিল কুমার, আইউব আলী হাওলাদার প্রভৃতি কোন সাক্ষী কবে সেফ হাউজে আসে এবং কবে বাড়িতে চলে যায় তার সব রেকর্ড তিনি ট্রাইব্যুনালের সামনে পড়ে শোনা সেফ হাউজ ডকুমেন্ট থেকে।
তিনি বলেন সেফ হাউজের ডকুমেন্টে উল্লেখ আছে একজন পুলিশ চকবাজার গিয়েছিল একটি মালায় হাজিরা দিতে। সেফ হাউজে থাকা একজন সাক্ষীকে হুমকি দেয়া বিষয়ে যাত্রবাড়ি থানায় ডায়েরি করা হয়েছিল। সে বিষয়টিও ডায়েরির নম্বরসহ উল্লেখ আছে। গৌরাঙ্গ সাহা নামে একজন সাক্ষী ভাল সাক্ষ্য দেয়ার কারনে তাকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়েছিল, পাঞ্জাবী দেয়া হয়েছিল সে কথাও লেখা আছে।
রাষ্ট্রপক্ষের বন্ধুরা বলেছেন সেফ হাউজের কোন অস্তিত্ব নেই এবং এসব ডকুমেন্ট আমরা তৈরি করেছি। আমাদের পক্ষে কি করে জানা সম্ভব হতে পারে কোন একজন পুলিশ কবে কোন কোর্টে হাজির দিতে গেছে। কি করে জানা সম্ভব কোন সাক্ষীকে কবে কে হুমকি দিয়েছিল এবং থানায় সে ডায়েরি করেছিল সে বিষয়ে।
আমারা বলেছিলাম সেফ হাউজের ডকুমেন্টে যেসব ব্যাক্তিবর্গ, দায়িত্বরত পুলিশের নাম ধাম উল্লেখ আছে তাদের হাজির করা হোক। আমরা তাদের পরীক্ষা করব। তাহলেই এর সত্যতা প্রমানিত হয়ে যাবে। কিন্তু সে সুযোগ আমাদের দেয়া হলনা।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী এনে রাখা হত যে সেফ হাউজে সেখানে তিনটি ডায়েরি মেনটেন করা হত। একটিতে খাওয়ার বিষয়, একটিতে যাবতীয় বিষয় এবং আরেকটিতে সাক্ষীদের আসা যাওয়া বিষয় লিখে রাখা হত।
যুক্তি উপস্থাপনে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাককে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু , প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী উপস্থিত ছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন