মেহেদী হাসান , ১৪/৮/২০১৩
বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী মামলায় যেকোন দিন রায় ঘোষনা করা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (১) এ মামলার সমস্ত বিচার কার্যক্রম শেষ হলে আজ রায় প্রদানের তারিখ অপেক্ষমান ঘোষনা করা হয়।
যুক্তি উপস্থাপনের শেষে রাষ্ট্রপক্ষ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে।
গত বছর ১৯ এপ্রিল সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। এক বছর চার মাসের মাথায় আলোচিত এ মামলার সমস্ত বিচার কার্যক্রম শেষ হল।
১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধ তথা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত ট্রাইব্যুনালে এই প্রথম কোন বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শেষ হল এবং যেকোন দিন রায় ঘোষনা হতে পারে। ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোরে গ্রেফতার করা হয় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া এবং বোয়ালিয়া থানায় হত্যা, গনহত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অপহরন, নির্যতান দেশান্তরকরনসহ মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী মোট ৩২টি অভিযোগ দায়ের করে। সেখান থেকে ট্রাইব্যুনাল ২৩ টি অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১৭টি অভিযোগের পক্ষে সাক্ষী হাজির করে এবং যুক্তি পেশ করে। বাকী ছয়টি অভিযোগ তারা ছেড়ে দিয়েছে। ছয়টি অভিযোগ কেন ছেড়ে দেয়া হল সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান সময়ের অভাবে তারা এসব অভিযোগের পক্ষে সাক্ষী হাজির করতে পারেনি।
১৭টি অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ মোট ৪১ জন সাক্ষী হাজির করে। অপর দিকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে আসামী নিজেসহ মোট চারজন সাক্ষী হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাস থেকে সেপ্টম্বর মাস পর্যন্ত উপরোক্ত থানাগুলোতে যেসব অপরধ সংঘটিত হয়েছে তার অনেকগুলোতে পাকিস্তান আর্মির সাথে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন।
অপর দিকে আসামী পক্ষের দাবি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী সেসময় দেশেই ছিলেননা। তিনি পাকিস্তানে ছিলেন তখন। তাদের দাবি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পাকিস্তান গমন করেন এবং ১৯৭৪ সালের ২০ এপ্রিল বাংলাদেশে আসেন। কাজেই অপরাধের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নই আসেনা। যুক্তি পেশের শেষে আসামী পক্ষ দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমান করতে পারেনি। তারা তার বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা সাক্ষী হাজির করেছে। তাই তারা আসামীর বেকসুর খালাস দাবি করেন।
বিচার কার্যাক্রম শেষে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির রায় অপেক্ষমান ঘোষনা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম, সুলতান মাহমুদ সিমন এবং ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। অপর দিকে আসামী পক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল হক হেনা, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আল ফেসানী প্রমুখ।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনিত অভিযোগ :
অভিযোগ ১ : ১৯৭১ সালের ৪ বা ৫ এপ্রিল রাত আনুমাণিক ৯টার পর মতিলাল চৌধুরী, অরুণ চৌধুরী, যোগেশ চন্দ্র দে ও পরিতোষ দাস, পাচক সুনীল প্রমুখকে শহীদ মতিলাল চৌধুরীর চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালি থানার রামজন লেনের বাসভব থেকে অপরহন করে নিয়ে যাওয়া হয় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পাারিবারিক বাসভবন গুড়সহিলে। পরে এদের মধ্য থেকে ছয়জনের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ ২ : ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একদল সদস্য রাউজানের গহিরা গ্রামের হিন্দু পাড়ায় সশস্ত্র অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে নিরীহ নিরস্ত্র হিন্দুদের ডাক্তার মাখন লাল শর্মার বাড়িতে জড়ো করা হয়। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে পাকিস্তানি দখলদার সেনাবাহিনীর সদস্যরা ব্রাশফায়ার করে । এসময় পঞ্চবালা শর্মা, সুনীল শর্মা, মতিলাল শর্মা ও দুলাল শর্মা নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত মাখন লাল শর্মা তিন চারদিন পর মারা যায়।
অভিযোগ-৩ : ১৩ এপ্রিল রাউজানের গহিরায় অবস্থিত কুন্ডেশ্বরী কমপ্লেক্স এর প্রতিষ্ঠাতা সমাজসেবক অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা করা হয়। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে পাকিস্তান আর্মি তাকে প্রথমে গুলি করে । পরে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী নিজেও গুলি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।
অভিযোগ-৪ : ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী স্থানীয় সহযোগী এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে হিন্দু অধ্যুষিত জগৎমলপাড়ায় অভিযান চালান। এসময় ৩২ জনকে হত্যা করা হয়।
অভিযোগ-৫ : ১৩ এপ্রিল বেলা আনুমাণিক একটার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী কতিপয় অনুসারীদের নিয়ে রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে হামলা চালান। এসময় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
অভিযোগ-৬ : ১৩ এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে ৫টা নাগাদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধরিী হিন্দু জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্য রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় সশস্ত্র অভিযান চালান। এসময় হিন্দু নর-নারীদের স্থানীয় তিীশ মহাজনের বাড়ির পেছনে পুকুর পাড়ে শান্তি মিটিংয়ের নামে একত্রিত করে এবং ৫০ থেকে ৫৫ জনকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে।
অভিযোগ-৭ : ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল দুপুর আনুমাণিক ১২টার দিকে আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল পাকিস্তানি সেনা সদস্য রাউজান পৌরসভা এলাকার সতীশ চন্দ্র পালিতের বাড়িতে প্রবেশ করে। আসামীর নির্দেশে তাকে গুলি করে হত্যার পর লাশ কাপড়ে মুড়িয়ে পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
অভিযোগ-৮ : ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল । চট্টগ্রমাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহম্মদ তার পুত্র শেখ আলমগীরসহ তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য প্রাইভেটকারযোগে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসছিলেন। পথে হাটহাজারী থানার খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি তিন রাস্তার মোড়ে সকাল অনুমান ১১টার দিকে পৌঁছামাত্র আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি দখলদার সৈন্যরা তাদের প্রাইভেট গাড়িটি অবরোধ করে শেখ মোজাফফর আহম্মেদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে আটক করে স্থানীয় পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে আর তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ-৯ : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালে এপ্রিলের মাঝামাঝি বোয়ালখালি থানার কদুরখিল গ্রামে যাওয়ার সময় মুন্সীরহাটের শান্তি দেবকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়।
অভিযোগ-১০ : ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল মানিক ধরের বাড়ি থেকে তার জিপ গাড়ি ও ধান ভাঙ্গার কল লুট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগ-১১ : ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল সকালবেলা বোয়ালখালী থানার হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা শাকপুরা গ্রামে সশস্ত্র অভিযান চালিয়ে হিন্দুদের হত্যা করে। পরবর্তীতে শহীদদের মধ্যে ৫২ জনের লাশ শনাক্ত করা হয়। এসব হত্যাকাণ্ড ছাড়াও শাকপুরা এলাকায় যুদ্ধকালীন বিভিন্ন সময়ে আরও তিন শতাধিক লোককে হত্যা করা হয়, যাদের সেখানে মাটিচাপা দিয়ে সমাধিস্থ করা হয়েছে।
অভিযোগ-১২ : ১৯৭১ সালের ৫ মে সকাল সাড়ে ১০টায় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাউজান থানার জ্যোতিমল গ্রামে গুলি করে বিজয় কৃষ্ণ চৌধুরী রাখাল, বিভূতি ভূষণ চৌধুরী, হীরেন্দ্র লাল চৌধুরীকে হত্যা করে।
অভিযোগ-১৩ : ১৯৭১ সালের ১৫ মে সন্ধ্যার সময় আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নির্দেশে ঘাসিমাঝির পার এলাকায় ৬ জনকে গুলি করে হত্যা, ২ জনকে গুরুতর আহত এবং অন্তত ৫ মহিলাকে ধর্ষণ করে।
অভিযোগ-১৪ : ১৯৭১ সালের ২০ মে বিকেল ৪টার দিকে আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে তার সহযোগী কয়েকজন রাজাকার সদস্য পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার পথেরহাটের কর্তার দীঘির পারে মোঃ হানিফের বাড়িতে যায়। তাকে অপরহন করে গুড়সহিলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ-১৫ : ১৯৭১ সালের মে মাসের মাঝামাঝি শেখ মায়মুন আলী চৌধুরী তার ভাগ্নি জামাই মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরীর চট্টগ্রাম শহরের রহমতগঞ্জের বাসায় ছিলেন। আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে শেখ মায়মুন আলীকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
অভিযোগ-১৬ : ১৯৭১ সালের ৭ জুন রাজাকার মাকসুদুর রহমান ও আসামির পিতা ফজলুল কাদের চৌধুরী পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের সহযোগিতায় জামাল খান রোড থেকে ওমর ফারুককে ধরে নিয়ে গুড়সহিলে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।
অভিযোগ-১৭ : ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই সন্ধ্যা আনুমাণিক সাতটা থেকে সাড়ে সাতটার দিকে আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তার আরও ২/৩ জন সহযোগীসহ পাকিস্তান সেনা সদস্যরা চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার হাজারী লেনের জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পোড়োবাড়ি থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ, সিরাজ ও ওয়াহেদ ওরফে ঝুনু পাগলাকে অপহরণ করে বন্দী করে রাখা হয় দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত।
অভিযোগ-১৮ : ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে একদিন ভোর আনুমাণিক সাড়ে ৫টায় আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পিতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহচর মুসলিম লীগ নেতা শিকারপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মৃত শামসু মিয়া সহযোগী তিনজন রাজাকারসমেত চট্টগ্রাম জেলার চান্দগাঁও থানার মোহারা গ্রামে আব্দুল মোতালেব চৌধুরীর বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তারা মোঃ সালেহউদ্দিনকে অপহরণ করে। পরে তাকে গুড়সহিলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী তার গালে চড় মারেন।
অভিযোগ-১৯ : ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই রাত আনুমাণিক সাড়ে আটটায় হাটহাজারীর নেয়ামত আলী রোডের সাহেব মিয়ার বাড়ি (রজমান টেন্ডলের বাড়ি) ঘেরাও করে তার দু’ছেলে নুর মোহাম্মদ ও নুরুল আলমকে অপহরণ করা হয়। পরে তাদেরকে মুক্তিপনের বিনিময়ে ছাড়া হয়।
অভিযোগ-২০ : ১৯৭১ সালের ২৭/২৮ জুলাই বিকেল ৩/৪টায় রাজাকার বাহিনী আকলাচ মিয়াকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে গুডসহিলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। সেখানে তার মৃত্যু ঘটে।
অভিযোগ-২১ : ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার বিনাজুরি গ্রামের ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরীকে অপরহ করে গুডসহিলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়।
অভিযোগ-২২ : ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে এইচএসসি পরীা চলাকালীন রাত আনুমাণিক ৯টায় মোঃ নুরুল আনোয়ার চৌধুরীকে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপন আদায় করা হয়।
অভিযোগ-২৩ : এম সলিমুল্লাহকে গুড়সহিলে নিয়ে নির্যাতন।
।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন