Mehedy Hasan
শহীদ পরিবার হিসেবে আয়েশা ফয়েজ স্বাধীনতার পর একটি বাড়ি বরাদ্দ পেয়েছিলেন সরকারিভাবে। সে বাসায় ওঠার তিনদিনের মাথায় তাদেরকে রক্ষীবাহিনী বাসা থেকে পথে নামিয়ে দেয়। সে কথা লিখেছেন তিনি তার ‘জীবন যে রকম’ বইয়ে।
“বাবর রোডের বাসায় ওঠার তিনদিন পর হঠাৎ একদিন রক্ষীবাহিনী এসে হাজির হল। একজন সুবেদার মেজর জিজ্ঞাসা করল, এ বাড়ি আপনি কোথা থেকে পেলেন?
আমি বললাম সরকার আমাকে দিয়েছে। আমার স্বামী যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন তাই।
সুবেদার মেজর কিছু না বলে চলে গেল। আমার মনের ভেতর হঠাৎ করে একটা খটকা লেগে গেল। হঠাৎ করে রক্ষীবাহিনী আসছে কেন? ক্ষানিকক্ষন পর আরেকজন সুবেদার মেজর এসে হাজির। সে একা নয়। তার সাথে বোঝাই এক ট্রাক রক্ষী বাহিনী। সবার হাতে অস্ত্র। সুবেদার মেজরের নাম হাফিজ। ভেতরে ঢুকে বলল, এই বাড়ি আমার। শেখ সাহেব আমাকে দিয়েছেন।
আমি বললাম, সে কি করে হয়? আমার সাথে বাসার এলটমেন্ট রয়েছে।
সে কোন কথা না বলে টান দিয়ে ঘরের একটা পর্দা ছিড়ে ফেলল। সাথে আসা রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের বলল ছেলে মেয়েদের ঘাড় ধরে বের কর ।
আমি এতদিনে পোড় খাওয়া পাথর হয়ে গেছি। রুখে দাড়িয়ে বলেছি, দেখি তোমার কত সাহস।
সুবেদার মেজর একটু থমকে গিয়ে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
দেখতে দেখতে পুরো এলাকা রক্ষী বাহিনী দিয়ে বোঝাই হয়ে গেল। বাসা চারদিকে ঘেরাও হয়ে আছে। কাউকে বাসায় ঢুকতেও দেয়না, বের হতেও দেয়না। কাজল (সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ) মহসিন হলে ছিল। খবর পেয়ে এসেছে। তাকেও ঢুকতে দিলনা। সারা রাত এভাবে কেটেছে।
ভোর হতেই আমি বের হলাম। পুলিশের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইলাম। পুলিশ বলল আমরা গোলামীর পোশাক পরে বসে আছি। রক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে আমরা কি করব?
বঙ্গভবন, গণভবন এমন কোন জায়গা আমি বাকি রাখলামনা সাহায্যের জন্য। কিন্তু লাভ হলনা। আমি তুচ্ছ মানুষ। আমার জন্য কার মাথাব্যথা?
রাতে ফিরে এসেছি। আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেবেনা। অনেক বলে ভেতরে ঢুকেছি। রাত আটটার দিকে রক্ষীবাহিনীর দল লাথি মেরে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে গেল। ইকবাল (ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল) আমাকে আড়াল করে দাড়াল। একজন বেয়োনেট উচিয়ে লাফিয়ে এল। রাইফেল তুলে ট্রিগারে হাত দিয়েছে। চিৎকার করে কিছু একটা বলছে। গুলি করে মেরে ফেলবে আমাদের?
আমি ছেলে মেয়েদের হাত ধরে বের হয়ে এলাম।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাকে প্রথমবার গৃহহারা করেছিল।
বাংলাদেশ সরকারের রক্ষীবাহিনী আমাকে দ্বিতীয়বার গৃহহারা করল।
শহীদ পরিবার হিসেবে আয়েশা ফয়েজ স্বাধীনতার পর একটি বাড়ি বরাদ্দ পেয়েছিলেন সরকারিভাবে। সে বাসায় ওঠার তিনদিনের মাথায় তাদেরকে রক্ষীবাহিনী বাসা থেকে পথে নামিয়ে দেয়। সে কথা লিখেছেন তিনি তার ‘জীবন যে রকম’ বইয়ে।
“বাবর রোডের বাসায় ওঠার তিনদিন পর হঠাৎ একদিন রক্ষীবাহিনী এসে হাজির হল। একজন সুবেদার মেজর জিজ্ঞাসা করল, এ বাড়ি আপনি কোথা থেকে পেলেন?
আমি বললাম সরকার আমাকে দিয়েছে। আমার স্বামী যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন তাই।
সুবেদার মেজর কিছু না বলে চলে গেল। আমার মনের ভেতর হঠাৎ করে একটা খটকা লেগে গেল। হঠাৎ করে রক্ষীবাহিনী আসছে কেন? ক্ষানিকক্ষন পর আরেকজন সুবেদার মেজর এসে হাজির। সে একা নয়। তার সাথে বোঝাই এক ট্রাক রক্ষী বাহিনী। সবার হাতে অস্ত্র। সুবেদার মেজরের নাম হাফিজ। ভেতরে ঢুকে বলল, এই বাড়ি আমার। শেখ সাহেব আমাকে দিয়েছেন।
আমি বললাম, সে কি করে হয়? আমার সাথে বাসার এলটমেন্ট রয়েছে।
সে কোন কথা না বলে টান দিয়ে ঘরের একটা পর্দা ছিড়ে ফেলল। সাথে আসা রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের বলল ছেলে মেয়েদের ঘাড় ধরে বের কর ।
আমি এতদিনে পোড় খাওয়া পাথর হয়ে গেছি। রুখে দাড়িয়ে বলেছি, দেখি তোমার কত সাহস।
সুবেদার মেজর একটু থমকে গিয়ে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।
দেখতে দেখতে পুরো এলাকা রক্ষী বাহিনী দিয়ে বোঝাই হয়ে গেল। বাসা চারদিকে ঘেরাও হয়ে আছে। কাউকে বাসায় ঢুকতেও দেয়না, বের হতেও দেয়না। কাজল (সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ) মহসিন হলে ছিল। খবর পেয়ে এসেছে। তাকেও ঢুকতে দিলনা। সারা রাত এভাবে কেটেছে।
ভোর হতেই আমি বের হলাম। পুলিশের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইলাম। পুলিশ বলল আমরা গোলামীর পোশাক পরে বসে আছি। রক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে আমরা কি করব?
বঙ্গভবন, গণভবন এমন কোন জায়গা আমি বাকি রাখলামনা সাহায্যের জন্য। কিন্তু লাভ হলনা। আমি তুচ্ছ মানুষ। আমার জন্য কার মাথাব্যথা?
রাতে ফিরে এসেছি। আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেবেনা। অনেক বলে ভেতরে ঢুকেছি। রাত আটটার দিকে রক্ষীবাহিনীর দল লাথি মেরে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে গেল। ইকবাল (ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল) আমাকে আড়াল করে দাড়াল। একজন বেয়োনেট উচিয়ে লাফিয়ে এল। রাইফেল তুলে ট্রিগারে হাত দিয়েছে। চিৎকার করে কিছু একটা বলছে। গুলি করে মেরে ফেলবে আমাদের?
আমি ছেলে মেয়েদের হাত ধরে বের হয়ে এলাম।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমাকে প্রথমবার গৃহহারা করেছিল।
বাংলাদেশ সরকারের রক্ষীবাহিনী আমাকে দ্বিতীয়বার গৃহহারা করল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন