১৭/৪/১১
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ট্রানজিশনাল জাস্টিস (আইসিটিজে) এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচার আইন ন্যায় বিচারের মানদণ্ড পূরণ করেনা। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে তার অনেক কিছুই অনুপস্থিতি বাংলাদেশের আইনে।
আইসটিজে’র সভাপতি ডেভিড টোলবার কর্তক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার শফিক আহমেদ বরাবার লিখিত এক চিঠিতে একথা বলা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে বিদ্যমান আইনী কাঠামোতে অভিযুক্ত ব্যক্তির ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য যেসব অধিকার রয়েছে তা পাওয়া সম্ভব নয়। বিদ্যমান আদালতে যেসব অপরাধের বিচার করা হবে সে বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়নি। অপরাধকে সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। অথচ আদালতের বিচারিক ক্ষমতা, এখতিয়ার এবং আওতা নিভর করে এসবের ওপর। চিঠিতে বলা হয়েছে, নাগরিকদের নির্বিচারে গ্রেপতার করার অধিকার রাষ্ট্রকে দেয়া হয়নি। কেবলমাত্র যৌক্তিক এবং সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগেই আদালত কাউকে গ্রেফতারের আদেশ দিতে পারে।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির যেসব ন্যূনতম মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা রয়েছে তার তুলনায় বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনটিতে অনেক ঘাটতি রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে এ বিষয়টি উপেক্ষিত রয়ে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হতে পারে।
যুদ্ধাপরাধ বিচার আইন তথা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এর সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন ডেভিড টোলবার। সেইসাথে অভিযুক্ত ব্যক্তির অধিকার রক্ষা এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে বেশ কিছু সনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে তার চিঠিতে।
আইনের শাসন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অভিযুক্তদের অধিকার রক্ষায় এ্যডভোকেসি হিসেবে কাজ করে আসছে আইসিটিজে। গত ১৫ মার্চ এ সংস্থা বাংলাদেশের আইনমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েয়েছে যুদ্ধাপরাধ বিচার বিষয়ে তাদের অভিমত ব্যক্ত করে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যাতে ন্যায় বিচার পায় তার সকল নিশ্চয়তা বিধানের ব্যবস্থা করতে হবে বাংলাদেশকে। যুদ্ধাপরাধ আইনের ইতোমধ্যে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে তাতে অভিযুক্তদের জন্য কিছু কিছু সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির যেসব ন্যূনতম মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা রয়েছে তার তুলনায় বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনটিতে অনেক ঘাটতি রয়েছে। এ বিষয়টি উপেক্ষিত রয়ে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের বিচার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা যেমন ুন্ন হবে তেমনি বিচার প্রকৃয়ারও বৈধতা এবং আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে। এতে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন থাকবেনা বিচারের প্রতি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস এ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক এ চুক্তির ১৪ ধারা মোতাবেক যেকোন ফেজাদরী বিচাররের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির ন্যায় বিচার প্রাাপ্তির লক্ষ্যে তার সকল অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু ঘটনা হল যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কিছু কিছু অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে রহিত করা হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। বিদ্যমান যুদ্ধাপরাধ আইন এবং আইনী কাঠামো গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে আইসিটিজে’র পক্ষ থেকে। সে আলোকে ১০৭১ সালে পরিচালিত বর্বরতার শাস্তি বিধানের ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, বিচারকে আন্তর্জাতকিভাবে গ্রহনযোগ্য এবং এটি যাতে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করে সেজন্য আইসিটিজে’র পক্ষ থেকে কতিপয় প্রস্তাব করা হয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবগুলো নিন্মরূপ
বৈধতার মূলনীতি: যে আইনের অধীনে যুদ্ধাপরাধের বিচার কাজ চলছে সে আইনে অপরাধসমূহকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। আদালতের আওতা বা বিচারিক ক্ষমতা নির্দিষ্ট করতে হলে অপরাধকেও সঠিকভাবে বর্ণনা করা এবং নির্দিষ্ট করা দরকার। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ আনা হয়েছে সে বিষয়ে যাতে সে ভাল করে বুঝতে পারে এবং নিজেকে অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করতে যথেষ্ট সময় পান সেজন্য আদালতের আওতা বা বিচারিক ক্ষমতা অবশ্যই সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে। ঐ অআদালত কি কি অপরাধের বিচার করতে পারবে সে বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা থাকতে হবে। অপরাধের উপাদান কি কি, ব্যক্তিগত অপরাধের দায়দায়িত্ব এবং যে সময়ে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেই সময়ে অভিযুক্ত’র পক্ষে কি কি গ্রহণযোগ্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল সেসব বিষয় স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানদণ্ড অনুযায়ী বিচার সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আপত্তি উত্থাপনের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে এবং রায়ের বিরুদ্ধে জুড়িশিয়াল রিভিউর সুযোগ থাকতে হবে।
নির্বিচার গ্রেফতার ঠেকাতে পদক্ষেপ: নির্বিচারে কাউকে গ্রেফতারের অধিকার রাষ্ট্রের নেই এবং কোন সরকারের এ ধরণের অপরাধ ঠেকাতে রাষ্ট্রের আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা দরকার। রাষ্ট্র কর্তৃক নাগরিকদের নির্বিচারে গ্রেফতার এখন একটি উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ বিচার আইনে বলা হয়েছে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনে আটক বা গ্রেফতার করা যেতে পারে। তবে কেবলমাত্র যৌক্তিক এবং সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগেই আদালত কাউকে গ্রেফতারের আদেশ দিতে পারে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নোটিশ জারি করা, অভিযোগের ভিত্তি কি এবং আটককৃতদের জুড়িশিয়াল রিভিউর সুযোগ আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ন্যায় বিচারের অধিকার এবং সঠিক বিচার প্রকৃয়ার নিশ্চয়তা: বিদ্যমান বিচার কাঠামোতে বিচারের পূর্বে এবং বিচারের সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে যেসব টেকনিক্যায় সুরক্ষা এবং অধিকার থাকা দরকার অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য তার কোন নিশ্চয়তা বিধান করা হয়নি। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার আইনজীবীর সাথে পর্যাপ্ত দেখা সাক্ষাত, পরামর্শ গ্রহণ, প্রস্তুতি গ্রহণ এবং অভিযোগ বিষয়ে সুষ্পষ্ট করে জানা অতিশয় জরুরি। অভিযুকক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যেসব স্বাক্ষ্য প্রমান হাজির করা হবে সেসব যথাযথ প্রকৃয়ায় পরীক্ষা নিরীক্ষা হতে হবে এবং এসবের রিবুদ্ধে জুড়িশিয়াল রিভিউর অধিকার থাকতে হবে অভিযুক্ত ব্যক্তির। নিজেকে নির্দোষী প্রমানের পক্ষে আন্তর্জাতিক আইনে যে মান দণ্ড ঠিক করা আছে সে বিষয়টি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচার আইন এবং আইনের বিধিবিধানে সঠিকভাবে অন্তভুক্ত করা হয়নি। সমস্ত অভিযুক্ত এবং এর মধ্যে যারা আটককৃত রয়েছে তাদের সকলেরই ন্যায় বিচার পাবার লক্ষ্যে যেসব টেকনিক্যাল সুরক্ষার বিধান আছে তার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
সমতা: বিদ্যমান আইনী কাঠামোয় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রস্তুতকরণ, সার্বিক আইনী প্রকৃয়া মোকাবেলা, সাক্ষ্যসাবদু সংগ্রহ প্রভৃতির জন্য প্রস্তুতি নিতে যে সময় দরকার তা প্রদান করা হয়নি। অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত এবং তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা, অভিযুক্ত এবং স্বাক্ষীর সুরক্ষা, পূর্বে ক্ষমাপ্রাপ্তি এবং বর্তমান বিচার প্রকৃয়ার মধ্যে সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয়ে ব্যাখ্যা থাকতে হবে।
এই সাথে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলতে চাই যে, আমরা ফৌজদারী বিচারের ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড বিধানের বিরুদ্ধে। যেখানে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা নেই সেখানে মৃত্যুদন্ড ব্যবস্থা থাকা সত্যিই একটি হুমকি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আইসিটিজে’র পক্ষ থেকে উপরে যেসব সমস্যা বর্নিত হল তার আলোকে আমরা বাংলাদেশের আইনটি সংশোধনের দাবি করছি। যুদ্ধাপরাধ বিচারের ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইসিটিজে সার্বিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশকে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ট্রানজিশনাল জাস্টিস (আইসিটিজে) এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচার আইন ন্যায় বিচারের মানদণ্ড পূরণ করেনা। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে তার অনেক কিছুই অনুপস্থিতি বাংলাদেশের আইনে।
আইসটিজে’র সভাপতি ডেভিড টোলবার কর্তক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার শফিক আহমেদ বরাবার লিখিত এক চিঠিতে একথা বলা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে বিদ্যমান আইনী কাঠামোতে অভিযুক্ত ব্যক্তির ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য যেসব অধিকার রয়েছে তা পাওয়া সম্ভব নয়। বিদ্যমান আদালতে যেসব অপরাধের বিচার করা হবে সে বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়নি। অপরাধকে সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। অথচ আদালতের বিচারিক ক্ষমতা, এখতিয়ার এবং আওতা নিভর করে এসবের ওপর। চিঠিতে বলা হয়েছে, নাগরিকদের নির্বিচারে গ্রেপতার করার অধিকার রাষ্ট্রকে দেয়া হয়নি। কেবলমাত্র যৌক্তিক এবং সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগেই আদালত কাউকে গ্রেফতারের আদেশ দিতে পারে।
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির যেসব ন্যূনতম মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা রয়েছে তার তুলনায় বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনটিতে অনেক ঘাটতি রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে এ বিষয়টি উপেক্ষিত রয়ে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হতে পারে।
যুদ্ধাপরাধ বিচার আইন তথা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এর সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন ডেভিড টোলবার। সেইসাথে অভিযুক্ত ব্যক্তির অধিকার রক্ষা এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে বেশ কিছু সনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে তার চিঠিতে।
আইনের শাসন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অভিযুক্তদের অধিকার রক্ষায় এ্যডভোকেসি হিসেবে কাজ করে আসছে আইসিটিজে। গত ১৫ মার্চ এ সংস্থা বাংলাদেশের আইনমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েয়েছে যুদ্ধাপরাধ বিচার বিষয়ে তাদের অভিমত ব্যক্ত করে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যাতে ন্যায় বিচার পায় তার সকল নিশ্চয়তা বিধানের ব্যবস্থা করতে হবে বাংলাদেশকে। যুদ্ধাপরাধ আইনের ইতোমধ্যে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছে তাতে অভিযুক্তদের জন্য কিছু কিছু সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু তারপরও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির যেসব ন্যূনতম মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা রয়েছে তার তুলনায় বাংলাদেশে বিদ্যমান আইনটিতে অনেক ঘাটতি রয়েছে। এ বিষয়টি উপেক্ষিত রয়ে গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের বিচার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা যেমন ুন্ন হবে তেমনি বিচার প্রকৃয়ারও বৈধতা এবং আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে। এতে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন থাকবেনা বিচারের প্রতি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্ট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস এ চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক এ চুক্তির ১৪ ধারা মোতাবেক যেকোন ফেজাদরী বিচাররের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির ন্যায় বিচার প্রাাপ্তির লক্ষ্যে তার সকল অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু ঘটনা হল যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কিছু কিছু অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে রহিত করা হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। বিদ্যমান যুদ্ধাপরাধ আইন এবং আইনী কাঠামো গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে আইসিটিজে’র পক্ষ থেকে। সে আলোকে ১০৭১ সালে পরিচালিত বর্বরতার শাস্তি বিধানের ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা, বিচারকে আন্তর্জাতকিভাবে গ্রহনযোগ্য এবং এটি যাতে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করে সেজন্য আইসিটিজে’র পক্ষ থেকে কতিপয় প্রস্তাব করা হয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবগুলো নিন্মরূপ
বৈধতার মূলনীতি: যে আইনের অধীনে যুদ্ধাপরাধের বিচার কাজ চলছে সে আইনে অপরাধসমূহকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়নি। আদালতের আওতা বা বিচারিক ক্ষমতা নির্দিষ্ট করতে হলে অপরাধকেও সঠিকভাবে বর্ণনা করা এবং নির্দিষ্ট করা দরকার। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ আনা হয়েছে সে বিষয়ে যাতে সে ভাল করে বুঝতে পারে এবং নিজেকে অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রস্তুত করতে যথেষ্ট সময় পান সেজন্য আদালতের আওতা বা বিচারিক ক্ষমতা অবশ্যই সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হবে। ঐ অআদালত কি কি অপরাধের বিচার করতে পারবে সে বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা থাকতে হবে। অপরাধের উপাদান কি কি, ব্যক্তিগত অপরাধের দায়দায়িত্ব এবং যে সময়ে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেই সময়ে অভিযুক্ত’র পক্ষে কি কি গ্রহণযোগ্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল সেসব বিষয় স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকতে হবে। আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানদণ্ড অনুযায়ী বিচার সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আপত্তি উত্থাপনের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে এবং রায়ের বিরুদ্ধে জুড়িশিয়াল রিভিউর সুযোগ থাকতে হবে।
নির্বিচার গ্রেফতার ঠেকাতে পদক্ষেপ: নির্বিচারে কাউকে গ্রেফতারের অধিকার রাষ্ট্রের নেই এবং কোন সরকারের এ ধরণের অপরাধ ঠেকাতে রাষ্ট্রের আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা দরকার। রাষ্ট্র কর্তৃক নাগরিকদের নির্বিচারে গ্রেফতার এখন একটি উদ্বেগের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধ বিচার আইনে বলা হয়েছে যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনে আটক বা গ্রেফতার করা যেতে পারে। তবে কেবলমাত্র যৌক্তিক এবং সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগেই আদালত কাউকে গ্রেফতারের আদেশ দিতে পারে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নোটিশ জারি করা, অভিযোগের ভিত্তি কি এবং আটককৃতদের জুড়িশিয়াল রিভিউর সুযোগ আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ন্যায় বিচারের অধিকার এবং সঠিক বিচার প্রকৃয়ার নিশ্চয়তা: বিদ্যমান বিচার কাঠামোতে বিচারের পূর্বে এবং বিচারের সময় অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে যেসব টেকনিক্যায় সুরক্ষা এবং অধিকার থাকা দরকার অভিযুক্ত ব্যক্তির জন্য তার কোন নিশ্চয়তা বিধান করা হয়নি। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার আইনজীবীর সাথে পর্যাপ্ত দেখা সাক্ষাত, পরামর্শ গ্রহণ, প্রস্তুতি গ্রহণ এবং অভিযোগ বিষয়ে সুষ্পষ্ট করে জানা অতিশয় জরুরি। অভিযুকক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যেসব স্বাক্ষ্য প্রমান হাজির করা হবে সেসব যথাযথ প্রকৃয়ায় পরীক্ষা নিরীক্ষা হতে হবে এবং এসবের রিবুদ্ধে জুড়িশিয়াল রিভিউর অধিকার থাকতে হবে অভিযুক্ত ব্যক্তির। নিজেকে নির্দোষী প্রমানের পক্ষে আন্তর্জাতিক আইনে যে মান দণ্ড ঠিক করা আছে সে বিষয়টি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচার আইন এবং আইনের বিধিবিধানে সঠিকভাবে অন্তভুক্ত করা হয়নি। সমস্ত অভিযুক্ত এবং এর মধ্যে যারা আটককৃত রয়েছে তাদের সকলেরই ন্যায় বিচার পাবার লক্ষ্যে যেসব টেকনিক্যাল সুরক্ষার বিধান আছে তার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
সমতা: বিদ্যমান আইনী কাঠামোয় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রস্তুতকরণ, সার্বিক আইনী প্রকৃয়া মোকাবেলা, সাক্ষ্যসাবদু সংগ্রহ প্রভৃতির জন্য প্রস্তুতি নিতে যে সময় দরকার তা প্রদান করা হয়নি। অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত এবং তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা, অভিযুক্ত এবং স্বাক্ষীর সুরক্ষা, পূর্বে ক্ষমাপ্রাপ্তি এবং বর্তমান বিচার প্রকৃয়ার মধ্যে সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয়ে ব্যাখ্যা থাকতে হবে।
এই সাথে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলতে চাই যে, আমরা ফৌজদারী বিচারের ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড বিধানের বিরুদ্ধে। যেখানে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা নেই সেখানে মৃত্যুদন্ড ব্যবস্থা থাকা সত্যিই একটি হুমকি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আইসিটিজে’র পক্ষ থেকে উপরে যেসব সমস্যা বর্নিত হল তার আলোকে আমরা বাংলাদেশের আইনটি সংশোধনের দাবি করছি। যুদ্ধাপরাধ বিচারের ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইসিটিজে সার্বিক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশকে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন