শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সুখরঞ্জন বালীর সাক্ষাতকার জমা আপিল বিভাগে/// আমার ভাই হত্যার সময় সাঈদী সাহেব ছিলেন তা কখনো শুনিনাই

মেহেদী হাসান, ১৪/২/২০১৪
মাওলানা  দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় আলোচিত সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর একটি সাক্ষাতকারের সিডি এবং স্ক্রিপ্ট আপিল বিভাগে জমা দেয়া হয়েছে আসামী পক্ষ থেকে। ট্রাইব্যুনালের সামনে থেকে অপহরনের আগে দিগন্ত টিভিতে তিনি এ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন  বলে আদালতে জানানো হয়েছে। সাক্ষাতকারে সুখরঞ্জন বালী বলেছেন, আমার ভাই বিশাবালীকে  হত্যার সময় সাঈদী সাহেব ছিলেন বলে কখনো শুনিনাই। মিলিটারি এবং  দেশীয় যেসব লোক আমাদের বাড়ি থেকে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায় সেদিন সাঈদী সাহেব সেখানে ছিলেননা, তাকে দেখিনাই।

মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে বিশাবালী হত্যার অভিযোগ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপনের সময় গত ১১ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান সুখরঞ্জন বালীর সাক্ষাতকারের সিডি জমা দেন আপিল বিভাগে। এসময় প্রধান বিচারপতি মো : মোজাম্মেল হোসেন সিডির স্ক্রিপ্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।

সুখরঞ্জন বালী নিহত বিশাবালীর ভাই। তিনি ছিলেন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী। কিন্তু তিনি রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দিতে না এসে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে আসার পথে ট্রাইব্যুনালের সামনে থেকে ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অপহরন করে বলে দাবি করে আসামী পক্ষ। এ নিয়ে সারা বিশ্বে তখন তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ভারতে অবস্থানকারী সুখরঞ্জন বালীও গোয়েন্দা পুলিশ কর্তৃক তাকে অপহরনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১৯৭১ সালে  পিরোজপুরে উমেদপুরে বিশাবালী নামে এক ব্যক্তিকে নারকেল গাছের সাথে বেঁধে মাওলানা  সাঈদীর নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ আনা হয়েছে  মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে। মাওলানা সাঈদীকে ট্রাইব্যুনাল  বিশাবালী হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে।

বিশাবালীর ভাই সুখরঞ্জন বালী ঢাকায় সাক্ষ্য দিতে আসার পর অপহরনের আগের দিন দিগন্ত টিভি তার সাক্ষাৎকার ধারন করেন। সেখানে তিনি তার ভাই হত্যার বিবরন দেন এবং তিনি দাবি করেন তার ভাই হত্যার সাথে মাওলানা সাঈদী জড়িত নন।
দিগন্ত টিভি ধারনকৃত সুখরঞ্জন বালীর সাক্ষাতকারের যে সিডি আদালতে জমা দেয়া হয়েছে তা নিন্মে তুলে ধরা হল।

প্রশ্ন ঃ ১৯৭১ সালে আপনার বাড়িতে কি ঘটনা ঘটেছিল? আপনার ভাই কিভাবে মারা গেলেন এবং কারা কারা এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিল?
সুখরঞ্জন বালী ঃ যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে আমরা বাড়ি থাকি, জৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি। বাড়ি থাকি তখন আমার ভাই অসুস্থ ।  উনারে নিয়া থাকি ঘরে। থাকার পরে শুনি, চিৎকার টের পাই মিলিটারি আসছে মিলিটারি টের পাই, টের পাওয়ার পরে আমার মাকে নিয়া আমি বাগানে যাই আমার অসুস্থ ভাইকে ঘরে রাইখ্যা। যাওয়ার পর বাগানে আড়ালে বইস্যা দেখি যে, ১৫/১৬ জন মিলিটারি আসছে তার সাথে দেশিয় মানুষ আসছে আবার কয়েকজন। রাজ্জাক, সেকেন্দার শিকদার, দানেশ মোল্লা, গনি গাজি, মোসলেম মওলানা, মোহসিন ও মোমিন ও মুন্সি এইরা ছিল মিলিটারীদের  সাথে আর কেউ ছিলেন না। তাদের সাথে অন্য কেউ ছিলেন না।  যদি অন্য কেউ আসতো তাকে চিনতাম। সাঈদী সাহেব ছিলেন না, তারে আমরা ভালোভাবেই চিনি। তার শ্বশুরের দোকান ছিল, পাড়েরহাটে কাপড়ের দোকান।  সেখানে বসে তার সাথে আমাদের পরিচয় আছে। সে যদি আসতেন তারে আমরা ভালভাবে চিনতাম। সে ছিলেন না, তারে আমরা দেখি নাই। আমার ঘরে আমার বড় ভাইর ঘরে মিলিটারি বা দেশি মানুষ যারা ছিল তারা উইড্ডা, আমার বড় ভাই অসুস্থ মানুষ তারে ঘর থেকে নামাইয়া রাইফেলের কোন্দা দিয়া পিডায়।  পিডাইয়া তারে বাইন্দা ছাইন্দা নিয়া এরপর আমার ঘরে এবং আমার পাশ্ববর্তী যতো হিন্দু বাড়ি ছিল সব পুড়াইয়া ফেলায়। এ পুড়াইয়া ফেলার পরে আমার ভাইকে নিয়া হোগলাবুনিয়া যায়। যাওয়ার পরে কিছু সময় পরে দেখি যে ধোয়া ওড়ে, এগুলা আমরা বাড়ি বসে দেখি। বিকেল বেলা শুনতে পাই যে, আমার ভাই এবং হোগলাবুনিয়া থেকে ৫/৬ জন হিন্দু লোক ধরে নিয়া পিরোজপুর যায় মিলিটারীরা। যাগো কাছে শুনছি তারাও বলছে সেখানে সাঈদী সাহেব ছিলেন না, যদি থাকতেন তাহলে আমার কাছে বলতেন। যাওয়ার পরে পরদিন সকাল বেলা শুনি পিরোজপুর বলেশ্বর নদীর পাড়ে নিয়া আমার ভাই ও হোগলাবুনিয়ার যে ৫/৬ জন লোক ধরছে তাদেরকে একত্র করিয়া বলেশ্বর নদীর ঘাটে নিয়া গুল্লি কইরা হত্যা করছে। সেখানে সাঈদী সাহেব ছিলেন না সে যথেষ্ঠ ভালো লোক ছিলেন।
প্রশ্ন ঃ তাহলে আপনার ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলেশ্বর নদীর ঘাটে-
সুখরঞ্জন বালী ঃ বলেশ্বর নদীর ঘাটে বসিয়া হত্যা করছে আমার ভাইকে।
প্রশ্ন ঃ কারা হত্যা করেছে?
সুখরঞ্জন বালী ঃ পাক সেনারা আর আমার দেশীয় যে রাজ্জাক, সেকেন্দার শিকদার, দানেশ মোল্লা, গনি গাজী যারাই ছিলেন, তারাই আমার ভাইকে গুলি করিয়া মারছে। এদের সাথে সাঈদী সাহেব ছিলেন না, কখনও তার নাম শুনিও নাই, আর সে ছিলও না।
প্রশ্ন ঃ আপনি তো সরকার পক্ষের একজন সাক্ষী ছিলেন। সরকার পক্ষের মানিত একজন সাক্ষী ছিলেন, আপনি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিতে আসলেন না কেন?
সুখরঞ্জন বালী ঃ আসি নাই কারন আমি সত্য সাক্ষী দিবো বিধায়। এজন্য হেদিকে আমি যাই নাই। এদিকে আমারে আনছে, তারা আমারে আনে নাই।
প্রশ্ন ঃ তারা আপনাকে কেন আনলো না?
সুখরঞ্জন বালী ঃ আনে নাই, কারন আমাকে দিয়া তারা মিথ্যা কথা বলানোর জন্য চেষ্টা করছে। আমি মিথ্যা কথা বলতে পারবনা, সেই জন্য তারা আমারে আনে নাই ।
প্রশ্ন ঃ কি বলতে বলছে আপনাকে?
সুখরঞ্জন বালী ঃ বলতে বলছে, সাঈদী সাহেব ছিল এই কথা বলবা। আমি বলছি, না আমি বলতে পারবো না আমি মিথ্যা কথা বলবো না। যারে আমি দেখি নাই আমার বাড়ি কিভাবে বলব আমি যে, যারে আমি না দেখছি আমার বাড়ি, আমি কোনদিন তার নামে কোন মিথ্যা কথা বলতে পারবো না।
প্রশ্ন ঃ ট্রাইব্যুনাল থেকে লোক গিয়েছিল তো আপনার বাসায়?
সুখরঞ্জন বালী ঃ গেছিলো। আমার বাড়িতে গেছে তখন মাহবুব আমার বাড়িতে যাইয়া বলে তুমি সাক্ষী দিতে যাবা একটু পাড়েরহাট
প্রশ্ন ঃ মাহবুব কে?
সুখরঞ্জন বালী ঃ মাহবুব, এখন বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাজছে। এই মাহবুব আমার কাছে বলছে যে, তুমি একটু সাক্ষী দিতে যাবা। আমি বলছি, ঠিক আছে আমি যা জানি সেই সত্য কথাই বলব। সে বলে, ঠিক আছে যাবা আমার সাথে এহন চলো। হেরপর, আমারে নিয়া পাড়েরহাট রাজলক্ষী স্কুলের দোতলায় বইসা আমাকে সাক্ষী নেয়া শুরু করছে। আমি যেডুক জানি আমার ভাই সম্মন্ধে  কে মারছে, এই কথা আমি বলা শুরু করছি ।  আমি বলি যে অমুক অমুক ছিল, তখন মাহবুব বলে যে, না ঐসব বাদ দিয়া তুমি সাঈদীর কথা বলবা। আমি বলছি আমি পারব না বলতে, সাঈদীর কথা বলতে। যারে আমার বাড়ি দেখি নাই আমি কখনও বলতে পারব না। তখন আমার পেট পাছাইয়া চিমটি মারে, আমার পিঠে আঙুল দিয়া ঘগতা মারে মানিক ও মাহবুব। দু’জনাই এইসব করতাছে তখন ট্রাইব্যুনাল গেছে ঢাকা দিয়া তখন তার সামনে বলছি, স্যার আমি যেটা জানি সেটা বলব না আপনারা যা শিখায় দিবেন হেইডা বলব। তখন এই কথা বলার পরে তবু আমাকে ঐভাবে আঙুল দিয়া পেট পাছাইয়া মোচড় দেয়, চামড়া ধইরা মোড়ায়, গুতা দেয় । 
প্রশ্ন ঃ নির্যাতন করছে আপনাকে?
সুখরঞ্জন বালী ঃ হ্যা। আমাকে খুব রকমই করছে। তখন আমি তার কাছে বলি সেই ট্রাইব্যুনালের কাছে, তখন ট্রাইব্যুনাল এর লোক বলে কি যে, মাহবুব সাহেব আপনি যে সাক্ষী আনছেন, এই সাক্ষী আপনার সর্বনাশ হইয়া যাইতেছে, আপনার সাক্ষী হয় না। তখন অন্য ট্রাইব্যুনালের (এখানে ট্রাইব্যুনাল বলতে সুখরঞ্জন বালী তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত সংস্থার লোক যারা পিরোজপুর গিয়েছিল তাদের বুঝিয়েছেন)  লোক বলে কি, হেয় যা জানে হেইয়া বলতে দেন। তখন এই কথা বলার পরে আমার ঐখান দিয়া মাহবুব আর ঐ মানিক আইস্সা আমারে উঠাইয়া দেয়, আমি চইল্লা আসি বাড়িতে
প্রশ্ন ঃ অভিযোগ আছে আপনাকে সাঈদী সাহেবের পক্ষের লোকজন, অস্ত্রধারী লোকজন, সাঈদী সাহেবের ক্যাডারেরা আপনাকে হুমকি ধামকি দিছে বলেই আপনি সাক্ষী দিতে আসেমন নাই, তাইতো?
সুখরঞ্জন বালী ঃ না, কোনদিন আমার সাথে হেদের কেউ দেখাও করে নাই, হুমকি ধামকিও দেয় নাই। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যে মাহবুব আর মানিক হেইরা আমারে হুমকি ধামকি করতেছে। আমাকে আর একদিন বলতেছে কি, তোমারে একটি বাড়ি একটি খামার দেব আর দেড় লাখ টাকা দেব, তুমি সাঈদী সাহেবের নামের কথা বলবা। আমি বলছি না, আমার মরা ভাইকে আমি বেচতে আমি স্বিকার নাই। আমার এত কিছুর দরকার নাই। আমি মিথ্যা কথা কইতাম না। যারে না দেখছি আমি কেউর নামের কথা বলতে পারব না। আর তুমি এই যে এইয়া এইয়া নামের কথা কইতে কও, আমি মিথ্যা কথা বলতেও পারব না আর কিছুও না ।
প্রশ্ন ঃ সাঈদী সাহেবের লোকেরা হুমকি ধামকি দিছে এই মর্মে আপনার মেয়ে একটি জিডি করেছে থানায়, ঠিক কিনা?
সুখরঞ্জন বালী ঃ আমি যখন বাড়ি দিয়া চইল্লা যাই তাদের ঐ মাইর গুতা খাইয়া, হের পর যখন বাজারে যাই, তখন লোকজন দিয়া রগ কাটতে চায় আমার পায়ের ।
প্রশ্ন ঃ কারা?
সুখরঞ্জন বালী ঃ ঐ মাহবুব আর মানিক লোকজন নিয়া রগ কাটতে চায়। তখন আমি বাড়িতে গেলে ওরা বাড়িতে যাইয়া আমারে ব্যার (ঘেরাও) দেছে, গালাগালি করছে। হেরপর, একদিন হঠাৎ আমার সাথে দেখা, দেখার পরে বলে তুমি একটি বাড়ি একটি খামার তুমি নিবা নাইলে তুমি এই দেশে থাকতে পারবা না। তারপরে আমার উপর টর্চারিং করার পরে আমি বাড়ির থেইক্কা চইল্লা গেছি। চইল্লা যাওয়ার পরে আমার মেয়ে, মেয়েরে এসে হুমকি ধামকি দিছে, তোর বাবার নামে তুই গুম কেস করবি। আমার মেয়ে বলছে, আমার বাবার নামে গুম কেস করা লাগবে না। আমার স্ত্রীর কাছেও ওরা বলছে, আমার স্ত্রী বলছে, হেয় যেখানে থাকুক না কেন আমাগো সাথে কথা বার্তা চলে, আমরা কারো নামে গুম কেস করতে পারব না। শেষ মেষ বলে জোর করে আমার মেয়েকে ১০০০/- এক হাজার টাকা দিয়া একটা সাদা কাগজে সই নিছে। তারপর ঐ সই করা কাগজ দিয়া তারা কি করছে না করছে তা আমি বলতে পারব না।


বিশাবালী হত্যা বিষয়ে অভিযোগ : মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যে ২০ টি অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে বিচার হয়েছে তার মধ্যে একটি হল তার নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে বিশাবালী নামে একজনকে নারকেল গাছের সাথে বেঁধে হত্যা করা হয়। এ অভিযোগ বিষয়ে মামলার বাদী এবং প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম ২০১১ সালের  ৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দী প্রদানের সময় বলেন,
২ জুন সকাল বেলা আমি নিজ বাড়িতে ছিলাম। লোকদের কাছ থেকে জানতে পারি অনুমান সকাল ১০টায় পারেড়হাটের শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী দানশ আলী মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মোমিন হাওলাদার, হাকিম  কাজী, হাবিবুর রহমান মুন্সী  পাক হানাদার বাহিনী সঙ্গে নিয় উমেদপুর গ্রামে  আমার বাড়ির  নিকটস্থ হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ চালিয়েছে।  ২৫/৩০টি ঘর লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বিশাবালী অসুস্থ  থাকায় তাকে ধরে ফেলে এবং একটি নারিকেল গাছের সাথে বেঁেধ মারমিট করে। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নির্দেশক্রমে বলে যে, ওটাকে যখন পেয়েছি ওটাকে গুলি কর। জনৈক রাজাকার গুলি করে বিশাবালীকে হত্যা করে।


বালীর ভারতে অবস্থান বিষয়ে নিউএজ এর  প্রতিবেদন :

সুখরঞ্জন বালী ভারতের কারাগারে বন্দী রয়েছে মর্মে ২০১৩ সালের ১৬ মে  নিউএজ পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।  চাঞ্চল্যকর এ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি করেছেন নিউএজ পত্রিকার সাংবাদিক (এডিটর স্পেশাল রিপোর্টস) ডেভিড বার্গম্যান। এখানে তার প্রতিবেদনটির অনুবাদ তুলে ধরা হল।

ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন সাক্ষী ছিলেন সুখরঞ্জন বালী। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করে বলে আসামী পক্ষ দাবি করে আসছে। কলকাতার একটি কারাগারে তার খোঁজ পাওয়া  গেছে।
দণিাঞ্চলীয়  জেলা পিরোজপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের  লোক সুখরঞ্জন বালী।  গত বছরের (২০১২)  ৫ নভেম্বর  সকালে তিনি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে যাচ্ছিলেন। এসময় সকালে ট্রাইব্যুনালের সামনে  থেকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে অপহরন করে নিয়ে য়াওয়ার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন।

সুখরঞ্জন বালী কলকাতার দমদম সংশোধন কেন্দ্রে আটক রয়েছেন  এবং তাকে দেখতে তার  পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়েছে  মর্মে চলতি  বছরের  ফেব্রয়িারি মাসে  জানতে পারে নিউএজ।  এরপর এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করতে এবং কিভাবে তিনি সেখানে গেলেন তা খুঁজে বের করার জন্য অনুসন্ধান চালায় পত্রিকাটি।
পত্রিকাটি তার সঙ্গে দেখা করতে এবং তার বক্তব্য জানার জন্য  ওই কারাগারে  প্রবেশে  সক্ষম  একজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। নিরাপত্তার কারণে তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছর কথা জানান ওই ব্যক্তি। ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির অনেক নেতৃবৃন্দের বিচার চলছে। এর কোন একটি দলের সাথেও ওই ব্যক্তির কোন সম্পৃক্ততা নেই।

যাকে দিয়ে আমরা সুখরঞ্জন বালীর কাছ থেকে বক্তব্য সংগ্রহ করেছি তিনি নিউএজকে নিশ্চিত করেছেন যে,  যে ব্যক্তির বক্তব্য সংগ্রহ করা হয়েছে তার সাথে বালীর আসল ছবির সম্পূর্ণ মিল রয়েছে।

বালীর কাছ থেকে বক্তব্য সংগ্রহ করা ওই ব্যক্তি নিউএজকে জানান, বালী পুরো অপহরন ঘটনার অত্যন্ত স্পষ্ট বিবরন দিয়েছেন। । আমি মনে করি, ঘটনাটি সত্য না হলে এ রকম মুহূর্তে তার কাছ থেকে এমন বিবরণ আসা খুবই কঠিন।’ অবশ্য বালীকে তখন নার্ভাস দেখাচ্ছিল  বলেও ওই ব্যক্তি নিউ এইজ-কে জানান।

বালী জানান, অপহরনের পর  তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।  তবে তারা প্রশ্ন করেছে  ‘কেন আমি সাঈদী সাহেবের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছি।  তারা বলেছে- আমাকে হত্যা করা হবে এবং সাঈদী সাহেবকে ফাঁসিতে ঝোলানো  হবে।’
তার বক্তব্য অনুযায়ী  ২০১২ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী  বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার আগে ঢাকায় তাকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত আটক রাখা হয়। গত সাড়ে চার মাস তাকে  ভারতের বিভিন্ন কারাগারে আটক রাখা  হয়েছে।

বালীর এসব দাবির সত্যতা নিউএইজ স্বাধীনভাবে   নিশ্চিত করতে পারেনি। কারণ, এর আগে তার পরিবারের এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আসামী পক্ষ তার অপহরন বিষয়ে যেসব কথা বলেছিল তার সাথে বালীর সর্বশেষ বক্তব্যের কিছু  কিছু গরমিল রয়েছে। তবে  বালী আটক থাকা থাকার  সময়সীমার যে তথ্য দিয়েছে তার সাথে মিল রয়েছে ভারতীয় আদালতে তার আটক থাকা বিষয়ে  পুলিশের দাখিলকৃত তথ্যের সাথে।

ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দেশটির ফরেইনার অ্যাক্ট-১৯৪৬ এর অধীনে কলকাতার একটি আদালত বালীকে ১০৫ দিনের কারাদণ্ড দেয় গত ৩ এপ্রিল । । যেহেতু বিচার চলাকালে এই মেয়াদটা  তিনি কারাভোগ করেছেন, সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে  তাকে যেকোনো দিন বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া এবং পাবলিক রিলেশনস কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে (বালীর বিষয়ে) কোনো তথ্য নেই। আমি যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলামের  সঙ্গে কথা বলেছি এবং তিনি বলেছেন- তিনি কিছুই জানেন না। এই মুহূর্তে বালী কোথায়  আছে তিনি তা জানেন না।’ মনিরুল ইসলাম ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে  আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেলাওয়ার হোসাইন  সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেন গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে।  এরমধ্যে একটি হলো- সুখরঞ্জন বালীর ভাই বিশাবালীকে হত্যায় জড়িত  থাকার অভিযোগ।

আদালত রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে  বিশাবালীকে একটি নারিকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা  হয়  এবং ‘অভিযুক্ত দেলাওয়ার  হোসাইন সাঈদীর নির্দেশে  রাজাকাররা তাকে গুলি করে হত্যা করে।  আদালত আরো ছয়টি অপরাধের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করলেও কোনো সাজা ঘোষণা করেনি। মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিম  কোর্টের  আপিল বিভাগে রয়েছে।

ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে বালীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করেছে এমন অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে সরকার এবং ট্রাইব্যুনাল কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের (২০১২)  ৫ নভেম্বর  সকালে আসামিপক্ষের  আইনজীবীরা বালীকে অপহরনের ঘটনাটি  ট্রাইব্যুনালকে  জানায়। এর কিছুক্ষন পর  চিফ  প্রসিকিউটর  আদালতকে বলেন, ‘আদালত চত্বরে সাক্ষী অপহরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। আদালত চত্বরে যেসব পুলিশ সদস্য রয়েছে তাদের সাথে আমি কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে এখানে আজ এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেননা। চিফ প্রসিকিউটর যখন ট্রাইব্যুনালকে এ তথ্য জানান তখন তার পাশে তদন্ত সংস্থার প্রধানও উপস্থিত ছিলেন এবং তিনিও এ বক্তব্য সমর্থন করেন।

এরপর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয় সাক্ষী অপহরনের ঘটনাটি আসামী পক্ষের একটি অগ্রহনযোগ্য নাটক। নেতাদের বেআইনিভাবে মুক্ত করতে ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম বনচাল করতে তাদের  (জামায়াাতে ইসলামীর) চেষ্টার অংশ এটি।

অপহরণের ঘটনার এক সপ্তাহ পর বালীর পক্ষে দায়ের করা হেবিয়াস করপাস  আবেদনের পরিপ্রেেিত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম হাই কোর্টকে বলেন, ‘এই গল্প একেবারেই উদ্ভট এবং ট্রাইব্যুনালের সুনাম নষ্ট, ট্রাইব্যুনালকে হেয় প্রতিপন্ন  করাই এর উদ্দেশ্য।

বালীর জেলখানায় থেকে দেয়া বিবৃতিতে জানান,  ছয় সপ্তাহ তাকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটকে রাখার পর ২৩ ডিসেম্বর তাকে চোক বেঁধে  পুলিশ তাকে সীমান্তে  নিয়ে যায়। এরপর ভারতীয়  সীমান্তরী বাহিনী-বিএসএফের হাতে তাকে তুলে দেয়া হয়।  নিজের সই করা বিবৃতিতে বালী বলেন, ‘তারা আমাকে খাবার দেয়ার  জন্য মাগুরার একটি হোটেলের সামনে গাড়ি থামায় ।  এসময় তারা আমার চোখের বাঁধন খুলে দেয়  এবং আমি বুঝতে পারি আমাকে প্রাইভেটকারে এখানে আনা  হয়েছে।

‘আমার খাবার খাওয়া  শেষ হলে ফের আমার চোখ বেঁধে  রওয়ানা দেয়া হয় গাড়িতে করে।  সর্বশেষ বিকেল ৫টার দিকে বিএসএফের হাতে আমাকে তুলে দিয়ে  তারা চলে যায।

বালী বলেন, বিএসএফ সদস্যরা তার সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করে। ‘তারা আমাকে নির্যাতন করে এবং জানতে চায় আমি সেখানে কী করছিলাম। বিএসএফের হাতে তুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত আমি কী করেছি তা তুলে ধরার চেষ্টা করি। সম্ভবত তারা আমার কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব পায়নি এবং আমাকে আরো বেধড়ক মারধর করা হয়।’
এতে আহত হলে বিএসএফ তাকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে স্বরূপনগর থানায  নিয়ে যাওয়া  হয়। সেখান থেকে পরদিন তাকে বসিরহাট আদালতে তোলা হয়। । বসিরহাট কারাগারে ২০ দিন আটক থাকার পর তাকে দম দম   সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয় বলে জানান বালী।

বালী তার বক্তব্যে বলেন, ২০১২ সালের মে মাসের কিছুদিন পর সাঈদীর ছেলে ‘বুলবুল’ তার বাড়িতে যান  তার সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু এসময় তিনি বাড়িতে ছিলেননা। পরে ফোনে তিনি তাকে প্রথমবারের মত তার পিতা  সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য  দিতে বলেন। বুলবুল তার বাবার জন্য সাক্ষী হতে আমাকে অনুরোধ করে। কিছুদিন পর বুলবুল মারা যান। বালী উল্লেখ করেন  ২০১২ সালের ১৩ জুন সাঈদীর বড ছেলে রফিক-বিন-সাঈদী মারা যান।

এই ছেলে হৃদরোগে মারা যাওয়ার পর সাঈদীর আরেক ছেলে তার  সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখেন বলে জানান বালী এবং দুর্গাপূজার আগে (অক্টোবর ২০-২৪) তিনি ঢাকা আসেন। সাঈদীর বাসায়  ১৫ থেকে ১৬ দিন থাকেন।
তিনি বলেন, ৫ নভেম্বর তাকে সাঈদীর আইনজীবীদের অফিস পল্টনের একটি ভবনের ১০ম তলায় নেয়া হয়।  সেখানে সাঈদীর আইনজীবীদের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। এরপর  তাকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যায়  তারা।

এর আগে সাঈদীর আইনজীবীরা এবং বালীর স্ত্রী দাবি করেন, বালী নভেম্বরের শুরুতে প্রথমে ঢাকা আসেন। ঢাকায় অবস্থানকালে বালী সাঈদীর পরিবারের কোনো সদস্যের বাড়িতে অবস্থান করেননি  বলেও দাবি করেন তারা আইনজীবীরা।
ভারতীয় পুলিশের ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর দাখিল করা প্রথম প্রতিবেদনে  বলা হয়, পুলিশ কর্মকর্তা কুলদীপ সিং ভারতীয়  সীমান্তবর্তী স্বরূপনগরে ‘সন্দেহজনক গতিবিধি পর্যবেক্ষন’ করেন এবং বালীকে চ্যালেঞ্জ করলে তিনি পালান। এফআইআর-এ বলা হয়, আটক করা হলে বালী তাদের জানায়, ‘তিনি বাংলাদেশ থেকে তার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে ভারতে এসেছে।’

কলকাতায় ভারতীয়  হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) শরিফ উদ্দিন নিউ এইজ-কে বলেন, ‘বিভিন্ন সংশোধন কেন্দ্রে আটক বাংলাদেশিদের দেখতে এপ্রিলের শেষের দিকে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের  একটি দল কলকাতায় আসেন।’
‘আমরা  দমদম  সংশোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। আমি তাদের সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু  তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি বালী সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা আমি বলতে পারবো না’ বলে জানান শরিফ উদ্দিন।

ওই  প্রতিনিধি দলের একজন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির লে. কর্নেল তৌহিদ বলেন, ‘বালীর সঙ্গে তারা দেখা করেছেন কিনা তা তিনি বলতে পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু কারাগারে  প্রায় ১৩০ জন ছিল, তাই আমি বিষয়টি স্মরণ করতে পারছি না। আপনাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করতে হবে।’

কে এই সুখরঞ্জন বালী?  
নিহত বিশাবালীর ছোট ভাই ভাই সুখরঞ্জন বালীকেই সাক্ষী মেনেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু তিনি রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দিতে আসেননি ট্রাইব্যুনালে। তিনি যে শুধু রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ছিলেন তাই নয়, যে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনাল মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন সেই ১৫ জনেরও একজন এই   সুখরঞ্জন বালী। ।

গত ২০ মার্চ  রাষ্ট্রপক্ষ থেকে  মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে   ৪৬ জন সাক্ষীর বিষয়ে একটি দরখাস্ত দাখিল করা হয়  ট্রাইব্যুনালে । দরখাস্তে নিবেদন করা হয়  ৪৬ জন সাক্ষীকে  ট্রাইব্যুনালে হাজির করা তাদের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। তাই এসব সাক্ষী  তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছে তা তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হোক।
৪৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জন সম্পর্কে দরখাস্তে রাষ্ট্রপক্ষ উল্লেখ করেছিল  আসামীর (মাওলানা সাঈদী) পক্ষ অবলম্বনকারী পিরোজপুরের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ কর্তৃক সাক্ষীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকির  প্রেক্ষিতে ভয়ে ভীত হয়ে তারা আত্মপোগন করেছে। তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই তাদের হাজির করা সম্ভব নয়।
সুখরঞ্জন বালী সম্পর্কে বলা হয়েছিল চার মাস আগে  নিজ বাড়ি থেকে বের হবার পর নিখোঁজ। 
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের  প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল গত ২৯ মার্চ ১৫ জন সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী প্রদান করেন তা তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে আদেশ দেন।  সুখরঞ্জন বালীর  নাম সেই ১৫ জনের তালিকায়ও রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষ যে সাক্ষীর বিষয়ে বলেছিল মাওলানা সাঈদীর  পক্ষাবলম্বনকারী অস্ত্রধারী  সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ সেই সুখরঞ্জন বালী ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর এসেছিলেন মাওলানা সাঈদীর পক্ষে  সাক্ষ্য দিতে। ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে তাকে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা অপহরন করে নিয়ে যায়।  রাষ্ট্রপক্ষের  প্রধান আইনজীবী গোলাম আরিফ টিপু বলেছেন সেদিন এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন