বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া কাউকে ঘটনার কথা বলিনাই ////মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে ২১ তম সাক্ষীর জেরা সম্পন্ন

১১/৯/২০১৩
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে ২১ তম সাক্ষী  ইউসুফ আলী বিশ্বাস পাবনা জেলার সাথিয়া থানায় মাতপুর বাজারের পাশে তিনজনকে   হত্যাকান্ডের একটি ঘটনা  বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১০ জুন আর্মির দুটি গাড়ি আসে মাতপুর বাজারে। আর্মির একটি গাড়িতে করে তিনজন বাঙ্গালীকে চোখ বাঁধা অবস্থায় মাতপুর বাজার থেকে অল্প দূরে ইছামতি নদীর ধারে নিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত তিনজনের একজনকে তিনি চিনতে পারেন। তিনি হলেন পাবনা জেলা স্কুলের হেড মওলানা কছিম উদ্দিন মাস্টার। সাক্ষী বলেন, যে দুটি গাড়িতে করে পাকিস্তানী আর্মি আসে তার সামনের গাড়ির সামনের সিটে একজন মেজরের  পাশে বসা ছিলেন মাওলানা নিজামী।

এ ঘটনা বিষয়ে সাক্ষীকে  আজ  জেরা করেন মাওলানা নিজামীর  আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। জেরায় সাক্ষী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, চার/পাঁচ মাস আগে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দী প্রদানের সময় ছাড়া গত ৪১ বছরে তিনি কারো কাছে এ ঘটনার কথা  বলেননি।

অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম  নয়া দিগন্তকে বলেন, সাক্ষী  কাউকে এ ঘটনার কথা বলেননি। তাহলে তদন্ত কর্মকর্তা  এ ঘটনা জানল কিভাবে সেটা আমাদের প্রশ্ন।

জেরায় মিজানুল ইসলামকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমেদ আনসারী, তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, আসাদ উদ্দিন প্রমুখ।  আজ  ২১ তম সাক্ষীর জেরা শেষ হয়েছে। আগামীকাল   মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে ২২ তম সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের কথা রয়েছে।


জেরা :
জেরায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন,
পাবনা থেকে যে রাস্তা মাধপুর মোড়ে আসে সেটি উত্তর পূর্ব দিকে সাথিয়ার দিকে চলে গেল। আরেকটি রাস্তা মাধপুর মোড় থেকে কাশিনাথপুরে গিয়েছে। সাথিয়া যাওয়ার রাস্তা পূর্ব দিকে এবং কাশিনাথপুর যাওয়ার রাস্তার উত্তর দিকে মাধপুর বাজার অবস্থিত। আমি যে দোকানে চা খেয়েছিলাম সেই দোকানটি ঐ বাজারেই ছিল। ঐ বাজারটি নন্দনপুরের মাইবাড়িয়াতে অবস্থিত নয়, মাধপুর বাজারের পাশে মাইবাড়িয়া নামে কোন এলাকা আছে কিনা তাহা আমার জানা নাই। পাবনা নগড়বাড়ি রোডের উত্তর দিকে যে অংশ তার পশ্চিম দিকে হচ্ছে তৈলকুপি গ্রাম। তৈলকুপি গ্রামের উত্তর দিকে নয় মাধপুর গ্রামের উত্তর দিকে হচ্ছে গোসাইপাড়া গ্রাম। গোসাইপাড়া গ্রাম ও মাধপুর গ্রামের মাঝখান দিয়ে গিয়েছে ইছামতি নদী। সাথিয়াগামী রোডের উত্তর পাশে ঘটনাস্থল। মাধপুর বাজার থেকে ঘটনাস্থল অনুমান ৭০০/৮০০ গজ দূরে। মাধপুর বাজার থেকে সাথিয়ার দিকে যাওয়ার পথে হাতের বামে ঘটনাস্থল। ঐ দোকানে আমরা তিন জনই চা খাচ্ছিলাম সে সময় অন্য কোন খরিদ্দার ছিল না। চায়ের দোকানের মালিকের নাম আমার জানা নাই। চায়ের দোকানের আশে পাশে আরো ৪/৫ টি দোকান ছিল। ঐ দোকান সমুহের মালিক বা কর্মচারীর নাম আমি বলতে পারব না। ঘটনার সময় আমরা যে খড়ির ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলাম সে ঘরটি ছিল রাস্তার দক্ষিন পাশে। আমি ঐ বাড়ির মালিকের নামও বলতে পারব না। গুলির শব্দ শোনার পর চায়ের দোকানের মালিকও ঐ সময় দোকান ছেড়ে পালিয়ে যায়। আমার জবানবন্দীতে আমি যে সেকেন্দারের কথা বলেছিলাম তিনিও সেনাবাহিনীতে চাকুরী করতেন, তবে সেই সময় তিনি কর্মরত ছিলেন কিনা তাহা আমার জানা নাই। ১৯৭১ সালের জুন মাসের পূর্বেই সেনাবাহিনীতে যোগদানের আগে তার সাথে আমার পরিচয় ছিল। তার পিতার নাম আমার জানা নাই। ঐ সময় তার ছেলে মেয়ের সংখ্যা বা ভাই-বোনের সংখ্যা আমি বলতে পারব না। আরশেদ আলী প্রামানিকের সাথে আমার সেনাবাহিনীতে যোগদানের পূর্বেই পরিচয় ছিল। ১৯৭১ সালে উনার বয়স আনুমানিক ৩০ বৎসর ছিল। বন্ধু হিসেবে তার সাথে সম্পর্ক ছিল তবে তার পিতার নাম আমার জানা নাই। তার ছেলে মেয়ের সংখ্যা বা নাম আমি বলতে পারব না। তৈলকুপি গ্রাম থেকে পুটিগাড়া গ্রাম পাশাপাশি দুরত্ব ১ কিলোমিটারের কিছু কম। পুটিগাড়া গ্রামে আরশেদ আলী প্রামানিক নামে কোন মুক্তিযোদ্ধা বা অধিবাসী ছিলেন না, ইহা সত্য নহে। আব্দুল কুদ্দুসের পিতার নাম আমি বলতে পারব না, তবে তার পিতা একজন ডাক্তার ছিলেন। ১৯৭১ সালের পূর্বে আব্দুল কুদ্দুস একজন ছাত্র ছিলেন, তবে কলেজের না স্কুলের ছাত্র তাহা আমার স্মরন নাই, বয়সে সে আমার ছোট ছিল। নজরুলের পিতার নাম মজির উদ্দিন কিনা তাহা আমার জানা নাই। আমি যে শিক্ষক শাহাজাহানের কথা বলেছি তার পিতার নাম জানু কেষ। তিনি আমার থেকে ৮/৯ বৎসর নয় ২/৩ বৎসরের ছোট ছিল। আমি যে মতিয়ার সর্দার এবং শাহজাহান আলীর কথা বলেছি তারা ভারতে ট্রেনিং এর জন্য যায় নাই তবে দেশের ভিতরে মুক্তিযুদ্ধের কাজ করেছে। এই দুইজনের নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাই। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম তালিকায় আমি আমার নাম তালিকাভুক্ত ভয়ে করাই নাই, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করি। আমি ভারত থেকে ফেরত আসার পর পাবনা এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ করি নাই কুষ্টিয়া এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করি। ১৯৭১ সালে ডিসেম্বরের শেষে আমি পাবনায় আসি। দেশ স্বাধীনের পর স্বাধীনতা বিরোধীরা পালিয়ে গিয়েছিল, অনেকে নিহত হয়েছিল, তাদের মধ্যে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছিল কিনা তাহা আমার জানা নাই।
ইবিআরসি ট্রেনিং সেন্টারটি চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের ভিতরেই অবস্থিত ছিল।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরবর্তী এক দেড় বৎসরের মধ্যে মাধপুরে যাই নাই, কারণ সময় ছিল না। সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রতি বৎসর একসাথে দুই মাস ছুটি পেতাম, তখন বাড়িতে এসে থাকতাম। দেশ স্বাধীনের পরপর বাৎসরিক ছুটিতে বাড়িতে অবস্থান করার সময় আমার ঐ তিন বন্ধুর সাথে দেখা হয় নাই। ঐ তিন বন্ধু আমার সাথে ভারতে যায় নাই।
১৯৭১ সালের ৯ই জুন তারিখে আমি আরশেদ আলীর বাড়িতে গিয়েছিলাম, তবে ঐ দিন মাধপুর বাজারে যাই নাই। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে আমরা তিন জন ও স্থানীয় ২/৩ জন লোক সেখানে গিয়েছিলাম, অন্যান্য লোকজন ভয়ে সেখানে আসে নাই। স্থানীয় ঐ ২/৩ জনের নাম আমার জানা নাই। ঐ ২/৩ জন লোক আমাদের যাওয়ার পূর্বেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। রজব আলী মাওলানাকে আমি চিনতাম না। নন্দনপুর ইউনিয়ন বর্তমান আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদকে আমি চিনি না। ঘটনাস্থলের একটু দূরে রোডের সাইডে বাড়ি ছিল। গর্ত থেকে ২০/২৫ গজ দূরে নদীর পাড় তার নিচে পানি ছিল।
মতিউর রহমান নিজামী সাহেবকে ১০ই জুন ১৯৭১ তারিখের আগে থেকেই চিনতাম। সেই সময় আমি আওয়ামী লীগ সহ অন্য সব দলের সভা শুনতাম। আমি তখনও আওয়ামী লীগ করতাম এখনও আওয়ামী লীগ করি, আমি ছোটকাল থেকেই আওয়ামী লীগ করি। আমাদের গ্রামের ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সভা হয়েছিল। ঐ সভায় ছাত্রলীগের কেউ ভাষন দিয়েছিল কিনা তাহা আমার জানা নাই, তবে আওয়ামী লীগের বড় নেতারা ভাষন দিতেন তাদের নাম উল্লেখ করা হত। ১৯৭০ সালে তোফায়েল আহমেদ এর নাম আমি শুনেছি, তার পরিচয় কি ছিল তাহা আমার জানা নাই। ১৯৭১ সালের পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নাম আমার স্মরন নাই।
আজ থেকে অনুমান ৪/৫ মাস আগে সম্ভবত ১৭-০৫-২০১৩ইং তারিখে আমি এই মামলার একজন সাক্ষী তাহা জানতে পারি। ১৭-০৫-২০১৩ইং তারিখে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বলার আগে ১০ই জুন ১৯৭১ সালের ঘটনার বর্ণনা অন্য কারো কাছে বলি নাই।
১৯৭১ সালে আর্মিদেরকে পাবনার অলি গলি দেখিয়ে দেওয়ার জন্য মতিউর রহমান নিজামী সাহেব ছাড়াও আরও লোকজন ছিল।
ইহা সত্য নহে যে, “মাইরা থুইয়া গেল” এই কথাগুলি পাবনার আঞ্চলিক ভাষা নয়।
“নায়েক শফি এবং আমাদের উস্তাদদের নেতৃত্বে বাঙ্গালী সৈনিকরাও প্রতিরোধ আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকিস্তানী বেশ কিছু সৈনিক নিহত হয়। ইহাতে পাকিস্তান সৈনিকরা একটু পেছনে হটে। এই সময়ে আমাদের ওস্তাদরা আমাদের নির্দেশ দেয় যে, তোমরা রুম থেকে বের হয়ে আস্ত্রাগারে হামলা করো এবং অস্ত্র হাতে নাও এবং অস্ত্র হাতে নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা কর।” বা “ এইভাবে যখন ভোর হয়ে যায় তখন পাকিস্তান আর্মিরা আমাদের দিকে এডভান্স হতে থাকে। তখন আমরা তাদের প্রতি পাল্টা আক্রমণ করি। এই আক্রমণ কিছুক্ষণ চলার পর আমাদের গোলাবারুদ শর্ট হয়ে গেলে আমাদের ওস্তাদরা ওখান থেকে আমাদেরকে পিছু হটে জীবন বাঁচাতে বলতে আমরা পিছু হটে যাই। ওখান থেকে আমরা সারাদিন না খেয়ে পায়ে হেটে ছলিমপুর চলে যাই। ওখান থেকে পরদিন সাম্পানে করে সন্দ্বিপ চলে যাই। সেই সময় আমরা তিন জন ছিলাম। ওখান থেকে আমরা জনগণের সাহায্যে ও সহযোগিতায় হাতিয়ায় চলে যাই। তারপর সেখানে রামগঞ্জ থানার পুলিশ অফিসার আমাদেরকে তাদের গাড়ি করে রামগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। তখনও আমাদের হাতে অস্ত্র ছিল।” বা “ এবং রাত্রে সেখানেই থাকি। ওসি সাহেব আমাদেরকে রাতে খাওয়া দাওয়া করান এবং সম্মানের সাথে রাখেন। এরপর ওসি সাহেবের ওখান থেকে চা নাস্তা খেয়ে পায়ে হেটে চাঁদপুর আসি। ওখান থেকে আমাদের কাছ থেকে একজন জামালপুরে চলে যায় আর আমরা নদী ও সড়ক পথে পাবনায় আমার নিজের গ্রামের বাড়িতে ৩০শে মার্চ ১৯৭১ তারিখে গিয়ে পৌঁছি।” বা “কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার ট্রেনিং নিয়া পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে বাংলাদেশ থেকে তাড়িয়ে দেশকে স্বাধীন করবো। এইভাবে প্রায় বেশ কিছু দিন রাত্রি বেলায় বাড়ির দক্ষিণের চরে বাঙ্গালী যুবকদের সংঘটিত করি এবং ট্রেনিং দেই। পরবর্তীতে পাকিস্তান আর্মিরা নগরবাড়ি ঘাট দখল করে” বা “ পাবনায় কয়েক জায়গায় ক্যাম্প করার পরে পিস কমিটি গঠন করে। পরে সুবহান মাওলানা, মতিউর রহমান নিজামী ও ইছহাক মাওলানা এবং তাদের সংগঠনের লোক পিস কমিটি গঠন করে। এরপর তারা রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন করে। এরপরে তারা মহল্লায় মহল্লায় আওয়ামীলীগ নেতাদের, ইপিআর পুলিশদের এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নাম লিষ্ট করে পাকসেনাদের নিয়ে ঐ সব গ্রাম ঘিরে লিষ্ট ধরে আলাদা লাইন করে হত্যা করে এবং কিছু লোকদের ধরে নিয়ে যায় এবং তারা অগ্নিসংযোগ করে এবং নারী ধর্ষণ করে। এইভাবে প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হয়।” বা “সেখানে রাত্রে তাদেরকে ডেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা করি। সেখানে আমরা আলোচনা করি যে, ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে ভারী অস্ত্রসহ দেশে ঢুকে পাকসেনা, রাজাকার ও আলবদরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শত্রুমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। ঐ রাত্রি পুটিগাড়ায় আরশেদ আলী প্রামনিকের বাড়িতে অবস্থান করি।” বা “ ঐ গাড়ি দুটি মাধপুর মোড়ে এসে থামে।” বা “ আরো দেখি যে, আর্মির ঐ পিকআপে পিছনের সিটে তিনজন বাঙ্গালী লোক চোখ বাধা অবস্থায় ছিল এবং আরো কিছু পাকিস্তানী সৈনিক তাদের পাশে বসা ছিল। সেই সময় আমার সঙ্গে চায়ের দোকানে কুদ্দুস ও আরশেদ আলী বসা ছিল। কিছুক্ষণ পরে মতিউর রহমান নিজামী সাহেব সাথিয়ার রাস্তার দিকে ইশারা করেন।” বা “ আমরা তিনজনই পাশের একটি বাড়িতে খড়ির বেড়ার ঘরে গিয়ে লুকাই। তখন ওখান থেকে খড়ির বেড়া ফাক করে দেখতে থাকি গাড়ি দুটি আবার এদিকে আসে কিনা। ঐ গুলির শব্দের আনুমানিক ১০/১৫ মিনিট পরে দেখি যে, ঐ পিকআপ গাড়ি দুটি এদিকে পাবনার দিকে আসছে। ঐ গাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি তখনও ঐ পিকআপ গাড়িতে মেজর সাহেবের পাশে মতিউর রহমান নিজামী সাহেব বসা আছে। এরপর দেখি গাড়ি পাবনার দিকে চলে গেল। তখন আমরা যে বাড়িতে লুকিয়ে ছিলাম সেই বাড়ি থেকে দেখি যে, ঐ দুটি পিকআপ গাড়ি পাবনার দিকে চলে গেছে।” বা “ তখন ঐখানে স্থানীয় লোকজন বলাবলি করে যে, ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি মতিউর রহমান নিজামী পাকিস্তান আর্মিদের নিয়ে এসে এই তিন জন লোককে মাইরা থুইয়া গেল। তখন আমি উপস্থিত লোকদেরকে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক লাশ তিনটিকে দাফন করার কথা বলে আমরা তিনজন আবার মাধপুর বাজারে চলে যাই। এরপর ১৫ই জুন আমি আমার সঙ্গীদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য ট্রেনিং নিতে ভারতে যাই এবং ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে লেঃ জাহাঙ্গীর সাহেবের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভিতরে প্রবেশ করি এবং বিভিন্ন জায়গায় আর্মি ও রাজাকার আলবদরদের ক্যাম্পে অপারেশন করি।” একথাগুলি আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট বলি নাই, ইহা সত্য নহে।
ইহা সত্য নহে যে, ৯ই জুন আমার বন্ধু সেকেন্দার আলী, আরশেদ আলী ও কুদ্দুসদের মাধপুরের গ্রামের বাড়িতে যাই এই কথাগুলি তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট বলি নাই। আমার স্মরন নাই যে, তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট পিক আপ দেখার কথা বলেছিলাম কিনা।
পিক আপের সামনে ড্রাইভারের পাশের সিটটি ড্রাইভারের সিটের চেয়ে বড় থাকে না, ইহা সত্য নহে।
ইহা সত্য নহে যে, আমি যেহেতু আওয়ামী লীগ করি এই কারণে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দী জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের বিরুদ্ধে অসত্য সাক্ষ্য দিলাম।  (জেরা সমাপ্ত)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন