মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৩

অবরোধে অনুপস্থিত আইনজীবী// আরো এক সাক্ষীর জেরা বন্ধ ঘোষনা

মেহেদী হাসান, ৩/১২/২০১৩
অবরোধের কারনে সিনিয়র আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় মাওলানা একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে আরো এক সাক্ষীর জেরা বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ মাওলানা ইউসুফের বিরুদ্ধে ১৪ তম সাক্ষীর জেরার জন্য ধার্য্য ছিল আজ। কিন্তু আসামী পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় জেরা বন্ধ ঘোষনা করে ট্রাইব্যুনাল। এর আগে ১২ এবং ১৩ তম সাক্ষীর জেরাও একই কারনে অসমাপ্ত অবস্থায় বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

সকাল সোয়া ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনাল বসলে আসামী পক্ষে উপস্থিত জুনিয়র আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম ১৪ তম সাক্ষীর জেরা মুলতবি রাখার জন্য আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল জানতে চান কেন মুলতবি করা হবে। গাজি তামিম বলেন, অস্বাভাবাবিক পরিস্থিতির কারনে  তিনি আসতে পারেননি। অবরোধে হাইকোর্টেরও কোন বেঞ্চ বসেনি।
এসময় সদস্য বিচারপতি মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা কি হাইকোর্টের আন্ডারে? চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আমরা স্বাধীন। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করব।
এসময় গাজি তামিম অবরোধ পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তার বিষয়টি তুৃলে ধরার চেষ্টা করলে অপর সদস্য বিচারপতি শাহীনূর ইসলাম বলেন, কতদিন মুলতবি করব? অবরোধ তো চলছে। আপনাদের আইনজীবী  সৈয়দ মিজানুর রহমান যেদিন আসতে পারবে সেদিন পর্যন্ত মুলতবি করব আমরা? এভাবে কি চলতে পারে?
এ পর্যায়ে গাজি তামিম আবারো অবরোধ এবং সহিংস পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, কার ওপর কখন যে কোন দিক দিয়ে হামলা হয় কেউ বলতে পারেনা।
এসময় চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, দেখুন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও অনেক মানুষ দুর্ঘটনায় পড়ে, মারা যায়। তাই বলে সবাই ঘরে বসে নেই। কপালে যা আছে হবেই । মৃত্যু যেভাবে লেখা আছে হবেই । এ বিশ্বাস করেন তো নাকি? আল্লাহর ওপর বিশ্বাস আপনাদের কম মনে হয়? দেখুন যে আগুনে পড়ে মারা গেছে মনে করতে হবে এটা তার কপালে লেখা ছিল এভাবে তার মৃত্যু হবে। উছিলা হল ওই বদমাশ যে আগুন দিয়েছে। এ বিশ্বাস রাখতে হবে। এ বিশ্বাস করেনতো নাকি?

এরপর তিনি আসামী পক্ষের সংশ্লিষ্ট সিনিয়র আইনজীবীর প্রতি উদ্দেশ্য করে বলেন, উনি হাটেননা, খাননা, চলাফেরা করেননা? আমরা সবাই কোর্টে আসি, অন্যরা আসে, সাক্ষী আসে, আর উনি আসতে পারেননা? আমরা সবাই আছি শুধু তিনি নেই। দেখুন আমরা চাই উনি কোটি বছর হায়াত পাক। কিন্তু কপালে থাকলে এভাবে মৃত্যু হবে।কেউ ঠেকাতে পারবেনা। কিন্তু তাই বলে বসে থাকলে চলেনা।

এরপর তিনি রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন  ১৪ তম সাক্ষীকে কাঠগড়ায় আনার জন্য । গাজি তামিমকে তিনি প্রশ্ন করেন আপনি কি জেরা করবেন? গাজি তামিম বলেন, না। তখন চেয়ারম্যান বলেন জেরা কোজ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নতুন সাক্ষী আছে? রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয় নতুন সাক্ষী নেই আজ। এরপর নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের জন্য আগামী রোববার পর্যন্ত মুলতবি করা হয় বিচার কার্যক্রম।


এছাড়া গাজি তামিম ১৩ তম সাক্ষীর জেরা বন্ধের আদেশ বিষয়ে  রিভিউ আবেদন জমা দিলেও তাও খারিজ করে দেয়া হয়।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন