সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৩

একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে ১২ তম সাক্ষীর জেরা

23/12/2013
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে ১২ তম সাক্ষীর জেরা সম্পন্ন হয়েছে। সাক্ষীর নাম শেখ আফজাল হোসেন।  গত ২৫ নভেম্বর তার জবানবন্দী গ্রহণ করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ। 
অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম সাক্ষীকে জেরা করেন। তাকে সহায়তা করেন গাজী এমএইচ তামিম।

জেরা :
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে ইপিআর এ কোন পদে ছিলেন?
উত্তর : হাবিলদার।
প্রশ্ন : ১৯৭২ সালে বিডিআর এ যোগ দিয়েছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : বিডিআর থেকে আপনি কোন অবসার ভাতা পাননা।
উত্তর : পাইনা।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের আগেই আপনাকে ইপিআর থেকে বরখাস্ত করা হয়? 
উত্তর : না।
প্রশ্ন : সাক্ষী সুধাংশু মন্ডলকে কতদিন ধরে চেনেন?
উত্তর : মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিচয় হয়।
প্রশ্ন : তিনি বর্তমানে বাগেরহাট অ্যাডভোকেট জ্ঞানেন্দ্রনাথ মন্ডলের সহকারি।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : স্বরোচিশ সরকার নামে কারোর নাম শুনেছেন যিনি একাত্তরে বাগেরহাট নামে বই লিখেছেন?
উত্তর : শুনে থাকতে পারি। এখন মনে নেই।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কোন লেখক বা সাংবাদিকের কাছে ঘটনা বর্ননা করেছেন কখনো?
উত্তর : ৫/৭/১০ বছর আগে সাংবাদিকরা এসেছিলেন। তখন কিছু কথা বলেছিলাম।
প্রশ্ন : ভারত থেকে কোন পথে দেশে আসলেন?
উত্তর :  ধুমঘাট মুন্সিগঞ্জ
প্রশ্ন : কালেখার দিঘির পাড় থেকে চুলকাঠি বাজারের দূরত্ব কত?
উত্তর : ১২/১৩ মাইল।
প্রশ্ন : কালেখার দিঘির ১২/১৩ মাইলের মধ্যে কোন আর্মি বা রাজাকার ক্যাম্প ছিল?
উত্তর : এটা তখন জানার অবস্থা আমার ছিলনা।
প্রশ্ন আপনারা কি আর্মি বা রাজাকার ক্যাম্প আক্রমনের জন্য বাগেরহাট গিয়েছিলেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ঘনশ্যামপুর হাইস্কুল থেকে চুলকাঠির দূরত্ব এক মাইল এবং মাঝে নদী আছে।
উত্তর : ১ মাইলের বেশি হবে। মাঝে নদী নাই।
প্রশ্ন : আপনারা যে মাঝির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তার দূরত্ব ঘনশ্যামপুর স্কুল থেকে কতদূরে?
উত্তর : ২ মাইল দূরে মরাপশুর নদীর কন্যাডুবি ঘাটের খেয়া মাঝির বাড়িতে আমরা ১২/১৩ জন আশ্রয় নিয়েছিলাম।
প্রশ্ন : নদীর ধারা এবং ঘনশ্যামপুর স্কুলের মাঝে চুলকাঠি বাজার।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : নদীর ধারে মাঝির বাড়ি থেকে ঘনশ্যামপুর স্কুল কোন দিকে কতদূর?
উত্তর : দণি পশ্চিম দিকে দেড় মাইল।
প্রশ্ন : ঘনশ্যামপুর স্কুল থেকে চুলকাঠি বাজার কোন দিকে?
উত্তর : পূর্ব দিকে।
প্রশ্ন : মরা পশুর নদীর পার হয়েছিলেন ভারতে যাবার সময়?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে রজব আলী ফকিরের নাম শুনেছেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে সে মুসলিম লীগের সদস্য হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের প্রার্থী ছিলেন তা কি ১৯৭১ সালে শুনেছেন?
উত্তর : তখন তো সে রাজাকার ছিল। কালেখার দিঘির কাছে প্রায়ই সে আমাদের ওপর আক্রমন পরিচালনা করত।
প্রশ্ন : আহত হবার কতদিন পর স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু করেন আপনি ?
উত্তর : দেড়/দুই মাস।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের আগে খান এ সবুর খান, একেএম ইউসুফ সাহেবকে চিনতেন?
উত্তর : খান এ সবুরের নাম শুনেছি চিনতামনা । ইউসুফ সাহেবের নাম শুনিনি।
প্রশ্ন : আপনার ভগ্নিপতির ভাই আশরাফুলের বাড়ি কোথায়?
উত্তর : ঘনশ্যামপুর।
প্রশ্ন : সে জীবিত?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : সে কি মুক্তিযুদ্ধ করেছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ঘনশ্যামপুর স্কুলে পরে আর গিয়েছিলেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আপনাদের সেট করা বোমায় স্কুল বিধ্বস্ত হয়?
উত্তর : চেয়ার টেবিল বিধ্বস্ত হয়।
প্রশ্ন : আপনি জবানবন্দীতে বলেছেন, রাজাকারদের মধ্যে দেখলাম পাজামা পাঞ্জাবী পরা মুখে সামান্য দাড়ি সে অন্যদের বলল এদের বাঁচিয়ে রেখে লাভ কি? গুলি কর। এ তথ্য আপনি তদন্ত কর্মকর্তাকে দিয়েছেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ভগ্নিপতির ভাই বলল সাদা পাজামা পাঞ্জাবি পরা লোকটি একেম ইউসুফ। তার নির্দেশে এ হত্যাকান্ড হয়েছে। এ তথ্য কি তদন্ত কর্মকর্তাকে দিয়েছেন?
উত্তর : দিয়েছি।
প্রশ্ন : জবানবন্দীতে বলেছেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানের ভাতিজা জানিয়েছে  ইউসুফ সাহেবের নির্দেশে রাজাকার চারদিক থেকে ঘিরে ফিলেছে। ইউসুফ সাহেব কোথায় কার সামনে বসে রাজাকারদের আক্রমন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা কি আপনার ভাতিজা আপনাকে বলেছিলেন?
উত্তর : রাজাকারদের আসার খবর দিয়ে সাথে সাথে সে চলে যায়। একথা বলার অবস্থা ছিলনা।

প্রশ্ন : চেয়ারম্যানের ভাতিজাকে আগে কখনো দেখেছিলেন?
উত্তর : ওইদিন ওই সময়ই প্রথম দেখা।
প্রশ্ন : ইউসুফ সাহেব খুলনায় অবস্থান করতেন।
উত্তর : শুনেছি খুলনায় ভুতের বাড়ির সামনে থাকতেন।
প্রশ্ন : একেএম ইউসুফ সাহেবের নির্দেশ ঘনশ্যামপুর হাইস্কুলে আক্রমন করার কথা অসত্য।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : সাদা পাজামা পাঞ্জাবী পরা মুখে সামান্য দাড়ি দাড়িওয়ালা লোকটি ছিল একেএম ইউসুফ। সে বলল এদের বাঁচিয়ে রেখে লাভ কি। গুলি কর। আপনার একথা অসত্য।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ইউসুফ সাহেব কখনো বাগেরহাটের কোথাও  যাননি।
উত্তর : অসত্য।

সাড়ে ১২টার দিকে জেরা শেষ হলে বিকালের সেশনে  মুলতবি আবেদন জানিয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল ১৩ ও ১৪ তম সাক্ষীর তিনি জেরা করতে চাচ্ছেন। কোর্ট আবেদন মঞ্জুর করেন।
ট্রাইব্যুনাল-২ চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সদস্য বিচারপতি মুজিবুর রহমান ও বিচারপতি শাহীনূর ইসলাম বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন