মেহেদী হাসান, ১৬/৬/২০১৫
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মুৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনালের রায়ে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদন্ডের একটি সাজা বহাল রাখা হয়েছে এবং মৃত্যুদন্ডের আরেকটি সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ সকালে এ রায় ঘোষনা করেন। বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মুত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে সেটি হল ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা এবং ষড়যন্ত্র ।
আপিল বিভাগের আজকের রায়ে মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের আরো তিনটি অভিযোগে সাজার রায় বহাল রাখা হয়েছে। একটি অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
সকাল নয়টা সাত মিনিটের সময় প্রধান বিচারপতি সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শুরু করেন এবং এক মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায় রায় ঘোষনা। রায় ঘোষনার সময় দেশী বিদেশী বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক এবং আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন ।
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় দেয়।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ থেকে। সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তাকে দোষীসাব্যস্ত করা হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে। এর মধ্যে দুটিতে যথা ছয় এবং সাত নং অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। যে অভিযোগগুলোতে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় সেগুলো ৬ নং অভিযোগ যথা মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে শারীরিক শিা কলেজ) পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে আলী আহসান মুজাহিদ বাঙালি নিধনের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করেন। ওই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ’৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড শুরু হয়।
আপিল বিভাগের আজকের রায়ে ছয় নং তথা বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
সাত নং অভিযোগ হল ফরিদপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের হত্যা। এ অভিযোগে বলা হয়েছে, আলী আহসান মুজাহিদের নির্দেশে রাজাকার বাহিনী ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার বকচর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করে। সেখানে বীরেন্দ্র সাহা, নৃপেণ সিকদার, সানু সাহা, জগবন্ধু মিত্র, জলধর মিত্র, সত্য রঞ্জন দাস, নরদ বন্ধু মিত্র প্রমুখকে হত্যা করা হয়। এ অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল মুৃত্যুদণ্ড দেয়। আপিল বিভাগের আজকের রায়ে এ অভিযোগে মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে ৫ নং অভিযোগ ছিল শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ছেলে রুমি, আলতাফ মাহমুদ, বদি, জুয়েল ও আজাদকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ। এ অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের রায়ে যাবজ্জিবন সাজা প্রদান করা হয়। আপিল বিভাগের আজকের রায়ে এ সাজা বহাল রাখা হয়েছে।
ফরিদপুরের রণজিৎ নাথ ওরফে বাবু নাথকে আটক করে নির্যাতনের অভিযোগটি ছিল তিন নং অভিযোগ। এ অভিযোগে ট্রাইবু্যূনালে পাঁচ বছর সাজা দেয়া হয় । আপিল বিভাগের আজকের ট্রাইব্যুনালের এ সাজাও বহাল রাখা হয়েছে।
শহীদ সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন হত্যাকান্ডের অভিযোগ ছিল এক নং অভিযোগ। ট্র্ইাব্যুনালের রায়ে এ অভিযোগেও আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তবে এ অভিযোগে আলাদা করে কোন সাজার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এক নং এ অভিযোগটিকে ছয় নং অভিযোগের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আপিল বিভাগের আজকের রায়ে ১ নং অভিযোগ থেকে আসামীকে খালাস দেয়া হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আসামী পক্ষ ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
২০১০ সালের ২৯ জুন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে শাহরিয়ার কবিরের সাক্ষ্য গ্রহনের মধ্য দিয়ে স্যাগ্রহণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই বিচার কার্যক্রম শেষে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষনা করে।
আপিল বিভাগে আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রধান আইনজীবী ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন।
মুজাহিদের পরিচিতি:
আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ১৯৪৮ সালের ২ জানুয়ারি ফরিদপুরের কোতয়ালি থানার পশ্চিম খাবাসপুরে তার দাদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা আবদুল আলী। মাতার নাম নুরজাহান বেগম। আলী আহসান মুজাহিদ ছিলেন রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তার পিতা মওলানা আব্দুল আলী ১৯৬২ সাল থেকে ৬৪ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এমএলএ (প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য) ছিলেন। আলী আহসান মুজাহিদ মুজাহিদ ১৯৬৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং তারপর ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।
পিতার অনুসরনে আলী আহসান মুজাহিদ ছাত্র জীবন থেকে সংগঠনের সাথে যুক্ত জন। ১৯৬৮ থেকে ৭০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক এবং দুমাসের মাথায় তিনি সভাপতি হন। ১৯৮১ সালে তিনি জামায়াতের ঢাকা মহানগরী আমির নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন এ পদে দায়িত্ব পালনের পর তিনি ২০০০ সালে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন এবং একযুগেরও বেশি সময় তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৬ সালে জেনারেল এরশাদের সময় তিনি সর্বপ্রথম জামায়াতের পক্ষ থেকে ফরিদপুরে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেন। তবে তিনি জয়লাভ করতে পারেননি। এরপর ২০০১ সাল বাদে সবক’টি সংসদ নির্বাচনেই অংশ নিয়েছেন ।
একজন দক্ষ সংগঠক এবং সমন্বয়ক হিসেবে সুনাম রয়েছে তার। জেনারেল এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় বিএনপি আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের সাথে তিনি লিয়াজো রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা আন্দোলনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দল ও ব্যক্তিবর্গের সাথে তিনি সমন্বয় রক্ষার ভূমিকা পালন করেছেন।
২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকারে তিনি টেকনোক্র্যাট কোটায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মুৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনালের রায়ে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদন্ডের একটি সাজা বহাল রাখা হয়েছে এবং মৃত্যুদন্ডের আরেকটি সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ সকালে এ রায় ঘোষনা করেন। বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মুত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে সেটি হল ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা এবং ষড়যন্ত্র ।
আপিল বিভাগের আজকের রায়ে মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের আরো তিনটি অভিযোগে সাজার রায় বহাল রাখা হয়েছে। একটি অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
সকাল নয়টা সাত মিনিটের সময় প্রধান বিচারপতি সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শুরু করেন এবং এক মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে যায় রায় ঘোষনা। রায় ঘোষনার সময় দেশী বিদেশী বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক এবং আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন ।
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় দেয়।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ থেকে। সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তাকে দোষীসাব্যস্ত করা হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে। এর মধ্যে দুটিতে যথা ছয় এবং সাত নং অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। যে অভিযোগগুলোতে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় সেগুলো ৬ নং অভিযোগ যথা মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে শারীরিক শিা কলেজ) পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে আলী আহসান মুজাহিদ বাঙালি নিধনের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করেন। ওই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ’৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড শুরু হয়।
আপিল বিভাগের আজকের রায়ে ছয় নং তথা বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
সাত নং অভিযোগ হল ফরিদপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের হত্যা। এ অভিযোগে বলা হয়েছে, আলী আহসান মুজাহিদের নির্দেশে রাজাকার বাহিনী ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার বকচর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করে। সেখানে বীরেন্দ্র সাহা, নৃপেণ সিকদার, সানু সাহা, জগবন্ধু মিত্র, জলধর মিত্র, সত্য রঞ্জন দাস, নরদ বন্ধু মিত্র প্রমুখকে হত্যা করা হয়। এ অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল মুৃত্যুদণ্ড দেয়। আপিল বিভাগের আজকের রায়ে এ অভিযোগে মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে ৫ নং অভিযোগ ছিল শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ছেলে রুমি, আলতাফ মাহমুদ, বদি, জুয়েল ও আজাদকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ। এ অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের রায়ে যাবজ্জিবন সাজা প্রদান করা হয়। আপিল বিভাগের আজকের রায়ে এ সাজা বহাল রাখা হয়েছে।
ফরিদপুরের রণজিৎ নাথ ওরফে বাবু নাথকে আটক করে নির্যাতনের অভিযোগটি ছিল তিন নং অভিযোগ। এ অভিযোগে ট্রাইবু্যূনালে পাঁচ বছর সাজা দেয়া হয় । আপিল বিভাগের আজকের ট্রাইব্যুনালের এ সাজাও বহাল রাখা হয়েছে।
শহীদ সাংবাদিক সিরাজউদ্দিন হত্যাকান্ডের অভিযোগ ছিল এক নং অভিযোগ। ট্র্ইাব্যুনালের রায়ে এ অভিযোগেও আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় তবে এ অভিযোগে আলাদা করে কোন সাজার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এক নং এ অভিযোগটিকে ছয় নং অভিযোগের সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আপিল বিভাগের আজকের রায়ে ১ নং অভিযোগ থেকে আসামীকে খালাস দেয়া হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আসামী পক্ষ ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
২০১০ সালের ২৯ জুন আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে শাহরিয়ার কবিরের সাক্ষ্য গ্রহনের মধ্য দিয়ে স্যাগ্রহণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই বিচার কার্যক্রম শেষে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষনা করে।
আপিল বিভাগে আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রধান আইনজীবী ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন।
মুজাহিদের পরিচিতি:
আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ১৯৪৮ সালের ২ জানুয়ারি ফরিদপুরের কোতয়ালি থানার পশ্চিম খাবাসপুরে তার দাদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা আবদুল আলী। মাতার নাম নুরজাহান বেগম। আলী আহসান মুজাহিদ ছিলেন রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। তার পিতা মওলানা আব্দুল আলী ১৯৬২ সাল থেকে ৬৪ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এমএলএ (প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য) ছিলেন। আলী আহসান মুজাহিদ মুজাহিদ ১৯৬৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং তারপর ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।
পিতার অনুসরনে আলী আহসান মুজাহিদ ছাত্র জীবন থেকে সংগঠনের সাথে যুক্ত জন। ১৯৬৮ থেকে ৭০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক এবং দুমাসের মাথায় তিনি সভাপতি হন। ১৯৮১ সালে তিনি জামায়াতের ঢাকা মহানগরী আমির নির্বাচিত হন। দীর্ঘদিন এ পদে দায়িত্ব পালনের পর তিনি ২০০০ সালে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন এবং একযুগেরও বেশি সময় তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৬ সালে জেনারেল এরশাদের সময় তিনি সর্বপ্রথম জামায়াতের পক্ষ থেকে ফরিদপুরে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেন। তবে তিনি জয়লাভ করতে পারেননি। এরপর ২০০১ সাল বাদে সবক’টি সংসদ নির্বাচনেই অংশ নিয়েছেন ।
একজন দক্ষ সংগঠক এবং সমন্বয়ক হিসেবে সুনাম রয়েছে তার। জেনারেল এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় বিএনপি আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের সাথে তিনি লিয়াজো রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা আন্দোলনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দল ও ব্যক্তিবর্গের সাথে তিনি সমন্বয় রক্ষার ভূমিকা পালন করেছেন।
২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকারে তিনি টেকনোক্র্যাট কোটায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন