বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৪

মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষীর জেরা

 ২৩.১.১৪
দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান (এমসি) ও জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দ্বিতীয় সাক্ষী মো: সানাউল্লাহ চৌধুরীকে আসামীপক্ষের জেরা শেষ হয়েছে। আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ সাক্ষীকে জেরা করেন মীর কাসেম আলীর পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। দ্বিতীয় সাক্ষীর জেরা শেষে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের তৃতীয় সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। 
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মীর কাসেম আলীকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। তিনি আদালতের কাঠগড়ায় বসে সাক্ষ্য গ্রহণ দেখেন। তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিজানুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, মীর আহমদ বিন কাসেম, আসাদ উদ্দিন ও আবু বকর সিদ্দিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ও সুলতান মাহমুদ সিমন।

জেরা:
প্রশ্ন: ডালিম হোটেল কখন থেকে চিনতেন?
উত্তর: স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকে।
প্রশ্ন: ডালিম হোটেল ভবনের কোন কোন তলা আবাসিক হোটেল ছিল?
উত্তর: দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা।
প্রশ্ন: ডালিম হোটেলের মালিক কে ছিল?
উত্তর: বলতে পারব না।
প্রশ্ন: ডালিম হোটেলের আশপাশে কোন বসতি ছিল কি না?
উত্তর: বসতি ছিল কি না বলতে পারব না, তবে দোকানপাট ছিল।
প্রশ্ন: টন্টুসেন, জসিম ও রঞ্জিত দাসকে ডালিম হোটেলে দেখার আগে চিনতেন কি না?
উত্তর: চিনতাম না।
প্রশ্ন: ডালিম হোটেলের আটক থাকা অবস্থায় নবী চৌধুরীর নাম শুনেছেন কি না?
উত্তর: শুনিনি। তবে পিডিপি নেতা নবী চৌধুরীকে আমি চিনতাম।
প্রশ্ন: তিনি কি স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন? 
উত্তর: বলতে পারব না।
প্রশ্ন: রাজাকার কমান্ডার মতিউর রহমান ওরফে মইত্যা গুন্ডার নাম শুনেছেন?
উত্তর: শুনিনি।
প্রশ্ন: ডালিম হোটেলে আপনি কোন পাকিস্তান আর্মি বা বিহারীদের দেখেছেন? 
উত্তর: দেখিনি।
প্রশ্ন: আটক অবস্থায় আপনাকে ডালিম হোটেলের কোন কোন রুমে রাখা হত?
উত্তর: নির্দিষ্ট কোন রুমে রাখত না, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রুমে রাখা হত।
প্রশ্ন: বাবুলকান্তি নাথ নামে কাউকে চেনেন?
উত্তর: এ নামে কাউকে চিনি বলে মনে পড়ছে না।
প্রশ্ন: ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত রাজাকাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়।
উত্তর: রাজাকার ও আল-বদরদের বিরুদ্ধে মামলা হয় বলে শুনেছি।
প্রশ্ন: পেশকারের দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তান আর্মির বিরুদ্ধে কোন মামলা করতে দেখেছেন?
উত্তর: আমার নজরে আসেনি।
প্রশ্ন: ১৯৭২ সালে ডালিম হোটেলের মালিক মইত্যা গুন্ডা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে হোটেল ভবন দখলে রাখা এবং সেখানে অবস্থান করে মহিলাদের শ্লীলতাহানী, লুটপাট সংগঠন প্রভৃতি অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল কি না?
উত্তর: জানা নেই।
প্রশ্ন: আপনি এসএসসি কোন সালে পাস করেছেন?
উত্তর: ১৯৬২ সালে।
প্রশ্ন: কোন সালে চাকরিতে যোগদান করেন?
উত্তর: ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের চাকরিতে যোগদান করি।
প্রশ্ন: এসডিও অফিসে কোন সালে কাজ করেছেন?
উত্তর: ১৯৭৮ সাল থেকে ’৮২ সাল পর্যন্ত এডিশনাল এসডিও অফিসে পেসকার হিসেবে চাকরি করেছি।
প্রশ্ন: ১৯৭১ সালে কোন পদে ছিলেন?
উত্তর: ’৭১ সালে ল্যান্ড অ্যাকুইজেশন শাখার অফিস সহকারী ছিলাম।
প্রশ্ন: অবসরের সময় কোন পদে ছিলেন?
উত্তর: ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় সহকারী হিসেবে কর্মরত অবস্থায় অবসর গ্রহণ করি।
প্রশ্ন: চাঁন্দগাও নামে চট্টগ্রামে কোন গ্রাম নেই।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: ১৯৭১ সালে চাঁন্দগাও ইউনিয়ন ছিল? 
উত্তর: ইউনিয়নও ছিল, গ্রামও ছিল।
প্রশ্ন: ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর্মি চট্টগ্রাম শহরে কবে প্রবেশ করে?
উত্তর: ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করার চার বা পাঁচদিন পর।
প্রশ্ন: চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানায় পাকিস্তান আর্মি কোথায় ছিল?
উত্তর: বলতে পারব না।
প্রশ্ন: জেলা প্রশাসনের নিকটবর্তী পাকিস্তান আর্মির ক্যাম্প কোথায় ছিল?
উত্তর: সার্কিট হাইজে অবস্থান করত, তবে সেখানে ক্যাম্প অফিস ছিল কিনা বলতে পারব না।
প্রশ্ন: চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সামরিক আইন প্রশাসকের কার্যালয় কোথায় ছিল?
উত্তর: বলতে পারব না।
প্রশ্ন: শন্তি কমিটির অফিস কোথায় ছিল?
উত্তর: বলতে পারব না।
প্রশ্ন: জেলা আনসার অ্যাডজুটেন্ড কার্যালয় কোথায় ছিল?
উত্তর: স্মরণ নেই।
প্রশ্ন: জেলা অ্যাকাউন্টস অফিস ভবন কোথায় ছিল?
উত্তর: জেলা প্রশাসন ভবনেই ছিল।
প্রশ্ন: ’৭১ সালে অ্যাকাউন্টস অফিসে লুটপাট হয়?
উত্তর: জানা নেই।
প্রশ্ন: মুক্তিযোদ্ধা, বিএলএফ বা অন্যকোন মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপক্ষ শক্তি কর্তৃক জেলা প্রশাসনের অফিস আক্রান্ত হয়েছিল কি না?
উত্তর: জানা নেই। 
প্রশ্ন: আপনি ১৯৭০-৭১ সালে জেলা প্রশাসন ভবনে কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের নেতা ছিলেন কি না?
উত্তর: ছিলাম না।
প্রশ্ন: ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে রাজাকার ও আল-বদর বাহিনীর প্রধান কার্যালয় কোথায় ছিল?
উত্তর: রাজাকারদের প্রধান কার্যালয় কোথায় ছিল বলতে পারব না। আল-বদরদের প্রধান অফিস চিল আন্দর কিল্লাস্থ ডালিম হোটেল।
প্রশ্ন: ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক কে ছিলেন?
উত্তর: ২৬ মার্চের পর সম্ভবত হাসান আহমেদ জেলা প্রশাসক ছিলেন।
প্রশ্ন: আপনি জবানবন্দীতে মীর কাসেম আলী সম্পার্কে যে সকল বক্তব্য দিয়েছেন সে মর্মে কোন ঘটনা ঘটেনি।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: মীর কাসেম আলী ১৯৭১ সালের ৭ নভেম্বর থেকে দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রামে থাকতেন না।
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: মীর কাসেম আলী কোন সময় আল বদর কমান্ডার ছিলেন না?
উত্তর: সত্য নয়।
প্রশ্ন: আপনি শেখানো মতে সাক্ষ্য দিয়েছেন?
উত্তর: সত্য নয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন