বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৩

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মুনতাসির মামুনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং জেরা শুরু

মেহেদী হাসান, ১/৭/২০১২
জামায়াতে ইসলামের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর মুনতাসির মামুন । প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা জবানবন্দী শেষে আজই তার জেরা শুরু হয়। তাকে জেরা করেন অধ্যাপক গোলাম আযমের পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম।

ইতিহাস গবেষক হিসেবে মুনতাসির মামুন তার জবাবন্দীতে বলেন, ২৫ মার্চের পর যেসব রাজনৈতিক দল পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ নেয় তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী এবং মুসলিম লীগের ভূমিকাই ছিল প্রধান। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে যারা পাকিস্তানের পক্ষে মুখ্য ভূমিকা নেন তাদের মধ্যে প্রখ্যাত ছিলেন নুরুল আমিন এবং গোলাম আযম। তাদের পরামর্শে এবং উৎসাহে প্রথমে শান্তি কমিটি  গঠিত হয়। পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামের মাধ্যমে রাজাকার বাহিনীর সূত্রপাত হয়। আল বদর বাহিনীর নেতৃত্বেও ছিল জামায়ত নেতৃবৃন্দ।

এসব কমিটি এবং বাহিনীতে দল হিসেবে জামায়াতের প্রাধান্য এবং তাদের কর্মীদের আধিক্য ছিল। পরবর্তীতে পাকিস্তান সরকার  এসব বাহিনী আইনী কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসে।

আজ  মুনতাসির মামুন  জবানবন্দী প্রদানের সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম বারবার লিডিং প্রশ্ন করায় ট্রাইব্যুনালে খানিক  উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ঘটনা  ঘটে।  বারবার সতর্ক করে দেয়া সত্ত্বেও জেয়াদ আল মালুম পুনরায় লিডিং প্রশ্ন করায় এক পর্যায়ে  ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল  হকও উষমা প্রকাশ করেন জেয়াদ আল মালুমের প্রতি।  জেয়াদ  আল মালুম মুনতাসর মামুনকে যেসব লিডিং প্রশ্ন করেন তার মধ্যে একটি ছিল “আপনি ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের পর যেসব পত্রিকা বের হত সেগুলো কি পড়তেন?”  তখন বিচারপতি  নিজামুল হক বলেন, মি. মালুম আপনাকে  আগেও বারবার বলেছি যেসব প্রশ্নের উত্তর হ্যা বা না হবে সেজাতীয় প্রশ্ন করতে পারবেননা। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন ঐ সময় আপনি কি  কি পত্রিকা পড়তেন? এভাবে আপনি প্রশ্নের উত্তর বের করে আনতে পারেন।

জবানবন্দীর এক পর্যায়ে মুনতাসির মামুন ২৯ মার্চের বদলে ২৯ আগস্ট বলেন।  বিষয়টি লিখিত আকারে রেকডভুক্ত করার  সময় রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী বলেন ২৯ মার্চ হবে। তখন মুনতাসির মামুনও শুধরে নিয়ে বলেন, ২৯ মার্চ   হবে। সাথে সাথে গোলাম আযমের পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম  এর প্রতিবাদ  করেন। তখন মুনতাসির মামুন বলেন, আমি এখানে জবানবন্দী দিচ্ছি।  আমার কোন কথা ভুল হলে, তথ্য ভুল হলে আমি কি তা  সংশোধন করতে পারবনা?

মিজানুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে লক্ষ্য করে বলেন, সাক্ষী তার বক্তব্য অবশ্যই সংশোধন, পরিবর্তন করার অধিকার রাখেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে  ইঙ্গিত দেয়ার পর, বলে দেয়ার পর  তিনি অবশ্যই পরিবর্তন করার অধিকার রাখেননা। মিজানুল ইসলাম যখন যুক্তি পেশ করছিলেন তখন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু কথা বলেন। মিজানুল ইসলাম তখন ট্রাইব্যুনালকে বলেন, এভাবে আমি  ট্রাইব্যুনালের সাথে কথা বলার মাঝে ওনার কথা বলা আইনবিরোধীতো বটেই দৃষ্টিকটুও । তখন মিজানুল ইসলামের কণ্ঠস্বর বেশ জোরে শোনাচ্ছিল। দুই পক্ষের মধ্যে তখন  বাক্য বিনিময় চলতে থাকে।  বিচারপতি নিজামুর হক দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার অনুরোধ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।

মুনতাসির মামুনের জবানবন্দী (সংক্ষিপ্ত)
স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর প্রেক্ষাপট সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ননা করে মুনতাসির মামনু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত আমি মিরপুরের পল্লবীতে ছিলাম। ২৫ মার্চ রাতের গোলাগুলির শব্দে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। মিরপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ছিল অবাঙ্গালি। কি হয়েছিল তা  দেখার জন্য আমরা ছাদে উঠি। গোলাগুলির অস্পষ্ট শব্দ শুনতে পাই। দূরে আগুনের লেলিহান শিখা চোখে পড়ে। কিছুক্ষন পর আমরা দেখলাম পাকিস্তানী সৈন্য রাস্তা দিয়ে টহল দিচ্ছে। আহমদ ছফ টেলিফোনে বলেছিলেন ঢাকা শহরে প্রচন্ড গোলাগুলি শুরু হয়েছে। পাকিস্তানী সেনারা রাস্তায় নেমে পড়েছে। ২৯ মার্চ পর্যন্ত মিরপুরে অবাঙ্গালিরা পাকিস্তানী বাহিনীর সহায়তায় প্রতিটি বাঙ্গালীর ঘর লুটপাট করে, হত্যাকান্ড চালায়। আমাদের পরিবার কয়েকটি তখন কয়েকজন অবাঙ্গালির সহৃদয়তায় বেঁচে যাই। ২৯  মার্চ মিরপুর থেকে ঢাকায় আসি।
আমি সম্ভবত ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় ছিলাম।
 মার্চ মাসের পর থেকে যেসব রাজনৈতিক দল পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের সমর্থন করেছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল জামায়াতে ইসলামী এবং মুসলিম লীগ। মুসলিম লীগের আবার কয়েকটি অংশ ছিল।
এছাড়া পিডিব, পিপিপিও  সমর্থন করে পাকিস্তান সরকারকে। তবে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াত এবং মুসলিম লীগের ভূমিকাই ছিল প্রধান।
যেসব রাজনৈতিক দল এবং নেতৃবৃন্দ পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তাকে সহায়তা করে তাদের প্রথম পদক্ষেপ ছিল টিক্কা খানের সাথে  সদলবলে দেখা করা। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তায় তারা একজাটি করেছিল যখন নাকি পাকিস্তানী বাহিনী প্রতিদিনই হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট, ধর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছিল। এ রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে প্রখ্যাত ছিলেন  নুরুল আমিন এবং গোলাম আযম। এপ্রিলে তাদের উৎসাহে এবং পরামর্শে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। শান্তি কমিটি পরবর্তীতে দুভাগ হয়। খাজা খয়ের উদ্দিন এবঙ গোলাম আযমের নেতৃত্বে প্রাধান্য বিস্তার করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহায়তা পেয়েছে তারা। পরবর্তীকালে গঠিত হয় রাজাকার বাহিনী, আরো পরে আল বদর, আল শামস। এসব বাহিনী বা কমিটিতে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর প্রাধান্য ছিল।
ঐ সময়ের সংবাদপত্রগুলি যদি  দেখি তাহলে দেখা যাবে জামায়াতের তৎকালীন আমীর জনাব গোলাম আমের বক্তব্যই প্রাধান্য পাচ্ছে। পরবর্তীকালে পাকিস্তান সামরিক সরকার আইনী কাঠামো তৈরি করে। আল বদর বাহিনীরও নেতৃত্বে ছিল জামায়াতের নেতৃবৃন্দ। যেহেতু পাকিস্তান সরকারকে সহায়তাকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াত ছিল সবচেয়ে বড় সে কারনে এসব কমিটি এবং বিভিন্ন বাহিনীতে জামায়াতের কর্মীদের আধিক্য ছিল বেশি। এর সাথে অন্যান্য দল যাদের কথা আগে বলেছিল তাদের কর্মীরাও প্রধানত শান্তি কমিটি এবঙ রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল। আমি যখন জামায়াতে ইসলামী বলছি তখন এর অঙ্গসংগঠনও এর অন্তর্ভুক্ত করছি এবং প্রত্যেকটি দলের ক্ষেত্রে এ কথা  প্রযোজ্য। এসব  দলের নেতারা প্রতিনিয়ত বক্তৃতা বিবৃতির মাধ্যমে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেছে, প্রনোদনা যুগিয়েছে এসব কমিটি এবং বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্য। আমি আগেই বলেছি রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সামরিক জান্তাকে সহায়তার জন্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছিল জনাব গোলাম আযম। আজ ৪০ বছরও শান্তি কমিটির সদস্য, রাজাকার, আল বদরদের হত্যাযজ্ঞম ধর্ষন অগ্নিসংযোগ এবঙ লুটপাটের কথা যখন স্মরন করি তখন শিউরে উঠি।
পাকিস্তানী বাহিনীতো ছিলই কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে তাদের এই সহযোগিতা যদি না থাকত তাহলে হয়ত এই ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা খানিকটা কম হত এবং আমরা আরো আগে জয়ী হতে পারতাম। ......
মুনতাসির মামুন বলেন, তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের সাথে সংযুক্ত থাকা, লুটের মাধ্যমে সম্পদ  আহরন করা এবং জনগনকে দমিত করার জন্য হত্যা এবং ধর্ষণকে ব্যবহার করেছে। এরা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেছে, বাঙ্গালি নারীদের ধর্ষণ করেছে , লুট করেছে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের । তাদের সব সময় প্ররোচনা দিয়েছে, প্রনোদনা দিয়েছে শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ। যার মধ্যে জামায়াতের আমীর গোলাম আযম ছিলেন প্রধান। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত গোলাম ্যামের বক্তব্যের তিনটি বৈশিষ্ট তুরে ধরে তিনি বলেন, গোলাম ্যামে তখন পাকিস্তানী সহযোগী এবং তার ভাষায় দেশপ্রেমিকদের প্রয়োজনে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিতকরনের আহবান জানান। তাদেরকে প্রকাশ্যে উজ্জিবীত করায় এবং সহায়তা করায় প্রকৃতপক্ষে হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট এবং ধর্ষনে সহায়তা করা হয়েছে। শান্তি কমিটি রাজাকাররা প্রকাশ্যে লুটপাট, গণহত্যা চালিয়েছে। কিন্তু আল বদররা প্রধানত পেশজীবী, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। বলা যায় তারা ওপেন লাইসেন্স পেয়েছিল এসব হত্যা এবং বর্বর কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য। যারা এসব কাজে উৎসাহ যুগিয়েছে তারা প্রত্যেকে এই গণহত্যা, হত্যা এবং লুটের জন্য দায়ীয়।
মুনতাসির মামুন বলেন, আল বদরের অধিকাংশ সদস্য ছিল শিবিরের কর্মী। জেনারেল নিয়াজীর একটি দলিলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিয়াজী তার  মেমোতে উল্লেখ করেছিলেন যে, পাকিস্তানদের উচিত হবে বাঙ্গালীদের সংখ্যালঘূতে পরিণত করা।  সেইসব  রাজনীতিবিদ যাদের কথা আগে উল্লেখ করেছি তারা এবং সেইসব বাহিনী এ লক্ষ্য পুরনে সহায়তা করে গেছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে। বাঙ্গালীকে সংখ্যা লঘু করা ছাড়াও  হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করা ছিল তাদের লক্ষ্য।  
দেশের অবরুদ্ধ পরিস্থিতির বিবরন দিয়ে মুনতাসির মামুন বলেন,   অবরুদ্ধ দেশের এই যে চিত্র আমরা দেখি এর একমাত্র কারণ পাকিস্তানী বাহিনী নয়। তাদের সহযোগী, রাজনৈতিক দলও এর  জন্য দায়ী। কারন তাদের পরামর্শে পরিকল্পনায় শান্তি কমিটি, আল বদর, ইত্যাদি গটিত হয়েছিল। এসব রাজনৈতিক দলের মধ্যে আমি আগেও  উল্লেখ করেছি এবং আবারো বলছি জামায়াতে ইসলামী ছিল প্রধান এবং এর দায়িত্ব জামায়াতের নেতৃবৃন্দ বিশেষ করে আমীর গোলাম আযমের ওপর বর্তায়।


মুনতাসির মামুনকে জেরা :

প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে আপনি অনার্স  কোন বর্ষের ছাত্র ছিলেন?
উত্তর : ৩য় বর্ষের
প্রশ্ন : আপনি  মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি।
উত্তর :  আমি অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি নাই। তবে মুক্তিযুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কাজে আমি যুক্ত ছিলাম।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের আগে কিংবা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় বা আজ পর্যন্ত  গোলাম আযমের সাথে  আপনার কোন ব্যক্তিগত যোগাযোগ হয়েছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : অধ্যাপক গোলাম আযম যে সকল সভায় বক্তব্য দিয়েছেন এরকম কোন সভায় আপনি উপস্থিত হননি।
উত্তর : না যাইনি।
প্রশ্ন :  জামায়াতে ইসলামী কোন সভা সমাবেশে আপনি কোন দিন যোগদান করেছেন?
উত্তর  : না।
প্রশ্ন : ঢাকা  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করাকালীন কোন ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন?
উত্তর :  ছাত্র ইউনিয়নে রাজনীতির সঙ্গে যুক্তছিলাম।
প্রশ্ন : ছাত্র ইউনিয়নের কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার কমিটির কোন পদে ছিলেন কখনো?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : স্বাধীনতার পূর্বে ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন কবে হয়েছিল  এবং সেই নির্বাচনে আপনি কোন প্রার্থী ছিলেন কিনা ?
উত্তর :   কবে সর্বশেষ নির্বাচন হয় তা আমার স্মরণ নেই  এব্ং আমি সেই  নির্বাচনে আমি কোন প্রার্র্র্র্র্র্র্র্র্থী ছিলাম না।
প্রশ্ন :  বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর প্রথম ডাকসু নির্বাচন কোন সালে হয়েছিল  তা মনে আছে?
 উত্তর :  স্মরণ নেই।  ডাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত কোন তথ্য আমি দিতে পারব না। এসব প্রশ্ন করে লাভ নেই। কারণ আমার মনে নেই।
প্রশ্ন :  স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে বাংলাদেশে প্রথম কখন আদমশুমারী হয়েছিল তা   বলতে পারবেন?
উত্তর : আমি বলতে পারব না।
প্রশ্ন :  স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে এদেশে সর্বশেষ কত সালে আদমশুমারী হয়েছিল তা  বলতে পারবেন?
উত্তর :  না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শরুর সময় এদেশের জনসংখ্যা সাড়ে সাত কোটি ছিল বলা হয়।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আপনি কোন সাল থেকে গবেষনা শুরু করেন?
উত্তর : আমি ১৯৭৪ সাল থেকে
প্রশ্ন ১৯৭৪ সালের আগে থেকেই দৈনিক বাংলা এবং সাপ্তাহিক বিচিত্রায় লেখালেখি করতেন আপনি?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের পূর্ব পর্যন্ত অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কোন প্রবন্ধ  লেখেননি আপনি।
উত্তর : আমার  স্মরণ নাই।
প্রশ্ন : অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিলেন তা কবে প্রথম জানতে পারেন?
উত্তর :  কত সালে সর্বপ্রথম জানতে পারি তা বলতে পারি না তবে যখন গঠন করেছিলেন তখনই জেনেছিলাম। যতদূর মনে পড়ে তিনি সেটা গঠন করেছিলেন ১৯৭৩ সালে।

প্রশ্ন : কমিটি  গঠনের সংবাদ রেডিও, টেলিভিশন, পত্র/পত্রিকা বা কোন লোকের পত্র বা টেলিফোনের মাধ্যমে জেনেছিলেন বলতে পারবেন?
উত্তর : স্মরন নেই।
প্রশ্ন :  অধ্যাপক গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিলেন তার কোন দৃশ্যমান কাগজ আপনার কাছে আছে?
উত্তর : নাই।
প্রশ্ন : কতজন লোক নিয়ে এই কমিটি গঠিত হয়েছিল ?
উত্তর : তা আমি বলতে পারব না।
প্রশ্ন : কমিটির সম্পাদক কে ছিলেন
উত্তর : বলতে পারবনা। কারণ আমাদের কাছে গোলাম আযমের ব্যাপারটিই মুখ্য ছিল অন্য কিছু নয়।
প্রশ্ন :  অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিলেন  এ মর্মে  ১৯৭৫ সালের পূর্বে দেশের কোন সাংবাদপত্র বা পত্রিকা আপনার সংগ্রহে আছে?
উত্তর : নাই।
প্রশ্ন :  ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মিরপুরের সঙ্গে কোন এলাকা নিয়ে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের আসন ছিল তা আমার মনে নাই।

প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে যে দুটি আসন আওয়ামী লীগ পায় নাই সে দুটির মধ্যে একটি হলো ময়মনসিংহ এবং অপরটি পার্বব্য চট্টগ্রাম।
উত্তর : সঠিক।


প্রশ্ন :  জেনারেল নিয়াজের যে দলিলের কথা জবানবন্দীতে উল্লেখ করেছেন তাকি হাতে রৈখা কোন দলিল না অন্যকিছু?
উত্তর :  তা ছিল টাইপ করা নথির অংশ।
প্রশ্ন : তাতে  নিয়াজী সাহেবের কোন স্বাক্ষর ছিল ?
উত্তর :
প্রশ্ন : এটি আপনি কিভাবে সংগ্রহ করলেন?
উত্তর :  আমি রাজশাহী হেরিটেজ আর্কাইভ হইতে সংগ্রহ করেছিলাম। হেরিটেজ আর্কাইভ প্রতিষ্ঠানটি হলো অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত যা রাজশাহীর কাজলা এলাকায় অবস্থিত।
প্রশ্ন : তিনি কোথা থেকে নিয়াজির সাহেবের দলিলটি সংগ্রহ করেছেন তা তাকে জিজ্ঞাসা   করেছিলেন? উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তারিখে আত্মসর্ম্পণে সময় জেনারেল নিয়াজি সাহেব তার অস্ত্র-সস্ত্রসহ দলিলপত্র মিত্রবাহিনীর প্রধান জগজিৎসিংহ অররার নিকট প্রদান করেছিলেন।
উত্তর : তা আমি এ মুহূর্তে বলতে পারব না।
প্রশ্ন : জেনারেল নিয়াজির দলিলটি  কোন নথির ধারাবাহিক বিবরণ বা অংশ  কিনা সে ব্যাপারে অনুসন্ধান করেছিলেন ?
উত্তর : সে ব্যাপারে আমি কোন অনুসন্ধান করি নাই।
 (চলবে)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন