বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৩

তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ// জেরায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সাঈদী নির্দোষ-আইনজীবী

মেহেদী হাসান, ১৩/৮/২০১২, সোমবার
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের জেরা আজ সোমবারন শেষ হয়। আজ  তার জেরা শেষ করার জন্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ  ছিল মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীর  প্রতি।

জেরা শেষে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলামের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান  সাক্ষী এবং তদন্ত কর্মকর্তার যে জেরা হল তাতে আপনারা কি পেলেন এখন পর্যন্ত । জবাবে  মিজানুল ইসলাম বলেন, জেরায় এ পর্যন্ত যে তথ্য আমরা পেলাম তাতে এটি প্রতিষ্ঠিত  যে, সাঈদী সাহেব নির্দোষ। দেশবাসীর কাছে  ইতোমধ্যে সাঈদী সাহেব নির্দোষ হিসেবে প্রমানিত হয়েছেন। তিনি বলেন, মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ ছিল সাতটি গ্রামের সব বাড়িঘর পোড়ানো এবং লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু  এর পক্ষে তারা একজন সাক্ষীও আনতে পারেননি।

মাওলানা সাঈদীর নাম সংশোধন বিষয়ে সংসদীয় তদন্ত গঠন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের  বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে সম্ভবত এমন নজির নেই যে, কোন ব্যক্তির নাম সংশোধন   বিষয়ে তদন্তের জন্য সংসদীয় কমিটি গঠিত হতে পারে। মাওলানা সাঈদীর নাম ১৯৫৭ সালের দাখিল সনদে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, পিতা ইউসুফ সাঈদী লেখা আছে। রাষ্ট্রপক্ষ  সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে যে ডকুমেন্ট দিয়েছেন তাতেই এ তথ্য রয়েছে। আলিম সনদে তার নাম ভুল থাকায় তা সংশোধন করা হয়েছে।
মিজানুল ইসলাম বলেন, সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে  রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল তিনি পূর্বে দেলোয়ার হোসেন  শিকদার  ছিলেন।  পরে নামের শেষে  শিকদার বাদ দিয়ে সাঈদী  নাম ধারন করেন তিনি।  কিন্তু এর পক্ষে তারা কোন একটি  প্রমানও  হাজির করতে পারেনি। উপরুন্ত তাদের দেয়া ডকুমেন্ট যেটি তারা শর্ষিণা মাদ্রাসা থেকে সংগ্রহ করেছেন তাতেই দেখা যায় ১৯৫৭ সালেই মাওলানার নামের শেষে সাঈদী লেখা আছে, শিকদার নয়। পিতার নামের শেষেও সাঈদী লেখা রয়েছে। মিজানুল ইসলাম বলেন রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য থেকে আজ তার নামের বিষয়ে সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে মিজানুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা ২৫ ভাগ প্রশ্নের জবাবে উত্তর দিয়েছেন “আমার নোটে নেই,  আমার রেকর্ডে নেই, আমি বলতে পারবনা” বলে। এ থেকেই বোঝা যায় তিনি আসলে কি তদন্ত করেছেন। রাজনৈতিক নির্দেশ মত তিনি আসলে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

গত ২৫ এপ্রিল তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের জেরা  শুরু হয়। তখন থেকে দিনের সংখ্যা হিসেবে  তার মোট ৪৮ দিন জেরা হয়েছে। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, পূর্ণ দিন হিসেব করলে ২০ দিনের মত তার জেরা হয়েছে। সংখ্যায় ৪৮ দিন হলেও খুব কম দিনই  তার একটানা পূর্ণ দিন জেরা হয়েছে। কোন দিন  অর্ধ দিবস, কোন দিন এক থেকে  দুই ঘন্টা, কোন দিন পূর্ণ দিবস এভাবে  জেরা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দী হয় মোট নয়দিন। তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, জবানবন্দীও সব সময় একটানা পুরো দিন হয়নি।
গত বছর সাত ডিসেম্বর মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

তদন্ত কর্মকর্তার জেরা আট আগস্ট শেষ করার জন্য এর  আগে ২ আগস্ট আদেশ পাশ করেন ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু আট আগস্ট   জেরা শেষ করতে না পারায় এবং নতুন আরেক সাক্ষীর জবানবন্দী তার অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করার প্রেক্ষিতে আরো দুইদিন সময় বাড়িয়ে দিয়ে ১৩ আগস্ট জেরা শেষ করার পুনরায় নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।  আট আগস্ট দুই দিন সময় বাড়িয়ে আদেশ পাশ করার সময় ট্রাইব্যুনাল বলেন আর কোন সময় বাড়ানো হবেনা। সে হিসেবে গতকাল তার জেরা শেষ হয়েছে।

আজ তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরায় অ্যডভোকেট মিজানুল ইসলামকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমদ আনসারী, ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন, আবু বকর সিদ্দিক, হাসানুল বান্না সোহাগ।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষী হাজির করা বিষয়ে ঈদের ছুটির পর তারিখ নির্ধারন করা হবে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন