মেহেদী হাসান, ১১/৪/২০১২
রাষ্ট্রপক্ষ নিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন আজ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যেসব ডকুমেন্ট প্রদর্শন করলেন তাতেই দেখা গেল মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম দেলোয়ার শিকদার ছিলনা। তার দাখিল এবং আলিম সনদে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিতা ইউসুফ সাঈদী হিসেবে লেখা রয়েছে।
অথচ ইতোপূর্বে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যারা সাক্ষী দিয়েছেন তাদের অধিকাংশ জোর দিয়ে বলে গেছেন স্বাধীনতার পর রাজাকার দেলোয়ার শিকদারই বর্তমানে নাম পরিবর্তন করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নাম ধারন করেছেন। চার্জশিটেও এ কথা উল্লেখ করা আছে। মিজানুর রহমান তালুকদার নামে একজন সাক্ষী জেরার সময় আদালতে উত্তেজিত হয়ে বলেছিলেন, সাঈদীর পিতার নামের শেষেও শিকদার আছে । এটাও কি তারা মিথ্যা প্রমান করতে চায়?
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, মাওলানা সাঈদী কখনো শিকদার ছিলেননা। আমরা সেটি বারবার কোর্টে বলার চেষ্টা করেছি। আজ প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে যে কাগজপত্র উপস্থাপন করা হল তাতেই প্রমান হল তিনি শিকদার ছিলেননা। দেলোয়ার শিকদার এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দুজন আলাদা মানুষ।
আজ তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার সময় মাওলানা সাঈদীর দাখিল এবং আলিম পরীক্ষার সনদ প্রদর্শন করেন আদালতে। তদন্ত কর্মকর্তা মাওলানা সাঈদীর দাখিলের সনদ প্রদর্শন করে বলেন, ১৯৫৭ সালে তিনি দাখিল পাশ করেছেন। দাখিলের সনদে জন্ম তারিখ লেখা আছে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০।
এরপর আলিমের সনদ প্রদর্শন করে বলেন, আলিম পরীক্ষার সাল ১৯৬০ উল্লেখ আছে। নামের ঘরে ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’ নামের পূর্বে ‘আবু নাঈম মোহাম্মদ’ লেখা রয়েছে। এই ‘আবু নাঈম মোহাম্মদ’ শব্দ তিনটি কলম দিয়ে কাটা রয়েছে। একই সনদে বয়স প্রথমে লেখা ছিল ১৫ বছর তিন মাস। তা কেটে ১৯ বছর ১ মাস লেখা আছে।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আলিমের সনদে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নামের পূর্বে ‘আবু নাঈম মোহাম্মদ’ শব্দগুলো বোর্ডই ভুল করে লিখেছিল এবং বোর্ড থেকেই এগুলো কাটা হয়েছে। সনদে বোর্ডের সিল সাপ্পরও রয়েছে। সনদটি ওভাবেই বোর্ড থেকে তোলা হয়েছে।
মিজুনাল ইসলাম বলেন, মাওলানা সাঈদীর দাখিল সনদে তার নাম ‘দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী’ লেখা আছে স্পষ্ট করে। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা সেটা আদালতে উচ্চারন করলেননা। তিনি পড়ে শোনালেন যে নামটি সংশোধন করা হয়েছে সেটি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তিনি এটি করেছেন।
মিজানুল ইসলাম বলেন, যেভাবেই দেখানো হোকনা কেন তাতেই বের হয়ে আসছে স্বাধীনতা যুদ্ধেরও বহুপূর্ব থেকেই তার নাম সাঈদী ছিল। তার পিতার নামের সাথেও সাঈদী শব্দটি যুক্ত আছে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার সময় কোন কোন সাক্ষী বলেছিলেন, ১২/১৫ বছর পূর্বে দেলোয়ার শিকদার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নাম ধারন করেছেন। কেউ বলেছিলেন স্বাধীনতার পর দেলোয়ার শিকদার মাওলানা সাঈদী নাম ধারন করেছেন। কেউ বা বলেছিলেন আশির দশকে দেলোয়ার শিকদার সাঈদী নামে আত্মপ্রকাশ করেন।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা এর আগে সাক্ষীদের জেরার সময় অনেকবার আদালতে বলার চেষ্টা করেছেন দেলোয়ার শিকদার নামে পিরোজপুরে একজন কুখ্যাত রাজাকার ছিল। স্বাধীনতার পর সে গণরোষে নিহত হয়েছে। সেই দেলোয়ার শিকদার এবং বর্তমান মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দুজন আলাদ ব্যক্তি।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আসা অধিকাংশ সাক্ষীকে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা রাজাকার দেলোয়ার শিকদার, তার পিতা রসুল শিকদার সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ প্রশ্ন করলে তারা দৃঢ়তার সাথে জানিয়েছেন এই নামে পিরোজপুরে কোন রাজাকার ছিলনা। এই নামের কোন রাজাকারকে তারা চেনেননা।
পূর্বের সাক্ষীরা বলেছেন, দেলোয়ার শিকদার নামে তারা যে কুখ্যাত রাজাকারকে চেনেন তিনি জীবিত আছেন এবং বর্তমানে তিনিই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নামে পরিচিতি। তার পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী। এজন্য তারা আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার সময় ‘দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী’ এভাবে উচ্চারন করেছেন নামটি।
আজ তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন ছারছিনা দারুসুন্নদ মাদ্রাসা ১৯২৮ থেকে ১৯৫৫ পর্যন্ত রেজিষ্ট্রি খাতায় মাওলানা সাঈদী সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট পাতা প্রর্দশন করেন।
এসব ডকুমেন্ট প্রদর্শনের সময় মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আগে শোনা গেল দেলোয়ার শিকদার। এখন দেখা গেল শিকদার নয় তিনি আগে থেকেই সাঈদী ছিলেন। তখন বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বরেন, ৫৫ সালের কাগজেও দেখা গেল সাঈদীর পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী লেখা রয়েছে। নট শিকদার। তিনি মিজানুল ইসলামকে বলেন এ বিষয়ে আপনারা পরে কথা বলার সুযোগ পাবেন।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে অনেক সাক্ষী তাকে অতীতে শিকদার থাকা মর্মে অভিযোগ করলেও একজন সাক্ষী ভিন্ন তথ্য দিয়েছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি ৮১ বছর বয়স্ক মধুসূদন ঘরামী মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার পর জেরার সময় স্বীকারে করেছিলেন দেলোয়ার শিকদার, পিতা রসুল শিকদার নামে পিরোজপুরে কুখ্যাত একজন রাজাকার ছিল। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা রাজাকার দেলোয়ার শিকদারের পিতৃ পরিচয় (রসুল শিকদার ) সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে প্রশ্ন করলে প্রবীণ সাক্ষী মধুসূদন ঘরামী বলেন, এই নামে একজন রাজাকার ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার অপকর্মের কারনে মুক্তিযোদ্ধা এবং এলাকাবাসীর গণরোষের শিকার হয়ে পিরোজপুরে নিহত হয়ে থাকতে পারেন তিনি।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ
‘প্রয়োজনে আসামী বাইন্ধ্যা রাখা হবে’ মর্মে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক যে মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে আজ মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম প্রতিকৃয়া ব্যক্ত করে সাংবাদিকদের বলেন, একজন বিচারপতি বিচারকের আসনে বসে এ ধরনের কথা বলতে পারেননা। একথা বলার এখতিয়ার তার নেই। এর মাধ্যমে তিনি বিচারপতি হিসেবে শপথ ভঙ্গ করেছেন। এতে প্রমানিত হচ্ছে যে, তিনি আবেগ দ্বারা তাড়িত হচ্ছেন। একজন বিচারপতির এ ধরনের মন্তব্য ন্যায় বিচার পরিপন্থী। বিচারপতির এ ধরনের মন্তব্য আদালতের ভাবমর্যাদা ুন্ন করেছে। এটি আদালত অবমাননার শামিল।
আজ দুপুরের বিররিত পর ট্রাইব্যুনালের বারান্দায় বসে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, আজো (বুধবার) রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অনেক ডকুমেন্ট আদালতে হাজির করেছেন যার কোন কপি আসামী পক্ষকে পূর্বে দেয়া হয়নি। ট্রাইব্যুনাল তাৎক্ষনিকভাবে সেগুলো আসামী পক্ষকে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং এভাবে তিনি ঐ ডকুমেন্টগুলো গ্রহণ করেছেন। অথচ আইন অনুযায়ী এসব ডকুমেন্ট চার্জগঠনের পূর্বেই আসামী পক্ষের পাওয়ার কথা। আইন ভঙ্গ করে এসব ডকুমেন্ট আদালতে প্রদর্শন করানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গত মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল চলাকালে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ বোধ করায় তার আইনজীবীরা তাকে কোর্ট থেকে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। আদালত তা গ্রহণ করে তাকে কোর্ট থেকে পাঠিয়ে দেন দুপুরের দিকে।
এরপর বিকালে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা কোর্ট বর্জন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী তখন ট্রাইব্যুনালের সামনে দাড়িয়ে বলেন তারা পরিকল্পনা করে দুপুরে আসামীকে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। এখন নিজেরা চলে গেল।
বিচারপতি নিজামুল হক তখন বলেন, তাই নাকি। এরপর আর বিচার চলাকালে কাউকে চলে যেতে দেয়া হবেনা। সুস্থ অসুস্থ যাই থাকুক প্রয়োজনে সাড়ে চারটা পর্যন্ত আসামী বাইন্ধ্যা রাখা হবে।
রাষ্ট্রপক্ষ নিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন আজ মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যেসব ডকুমেন্ট প্রদর্শন করলেন তাতেই দেখা গেল মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম দেলোয়ার শিকদার ছিলনা। তার দাখিল এবং আলিম সনদে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিতা ইউসুফ সাঈদী হিসেবে লেখা রয়েছে।
অথচ ইতোপূর্বে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যারা সাক্ষী দিয়েছেন তাদের অধিকাংশ জোর দিয়ে বলে গেছেন স্বাধীনতার পর রাজাকার দেলোয়ার শিকদারই বর্তমানে নাম পরিবর্তন করে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নাম ধারন করেছেন। চার্জশিটেও এ কথা উল্লেখ করা আছে। মিজানুর রহমান তালুকদার নামে একজন সাক্ষী জেরার সময় আদালতে উত্তেজিত হয়ে বলেছিলেন, সাঈদীর পিতার নামের শেষেও শিকদার আছে । এটাও কি তারা মিথ্যা প্রমান করতে চায়?
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, মাওলানা সাঈদী কখনো শিকদার ছিলেননা। আমরা সেটি বারবার কোর্টে বলার চেষ্টা করেছি। আজ প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে যে কাগজপত্র উপস্থাপন করা হল তাতেই প্রমান হল তিনি শিকদার ছিলেননা। দেলোয়ার শিকদার এবং দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দুজন আলাদা মানুষ।
আজ তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার সময় মাওলানা সাঈদীর দাখিল এবং আলিম পরীক্ষার সনদ প্রদর্শন করেন আদালতে। তদন্ত কর্মকর্তা মাওলানা সাঈদীর দাখিলের সনদ প্রদর্শন করে বলেন, ১৯৫৭ সালে তিনি দাখিল পাশ করেছেন। দাখিলের সনদে জন্ম তারিখ লেখা আছে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০।
এরপর আলিমের সনদ প্রদর্শন করে বলেন, আলিম পরীক্ষার সাল ১৯৬০ উল্লেখ আছে। নামের ঘরে ‘দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী’ নামের পূর্বে ‘আবু নাঈম মোহাম্মদ’ লেখা রয়েছে। এই ‘আবু নাঈম মোহাম্মদ’ শব্দ তিনটি কলম দিয়ে কাটা রয়েছে। একই সনদে বয়স প্রথমে লেখা ছিল ১৫ বছর তিন মাস। তা কেটে ১৯ বছর ১ মাস লেখা আছে।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আলিমের সনদে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নামের পূর্বে ‘আবু নাঈম মোহাম্মদ’ শব্দগুলো বোর্ডই ভুল করে লিখেছিল এবং বোর্ড থেকেই এগুলো কাটা হয়েছে। সনদে বোর্ডের সিল সাপ্পরও রয়েছে। সনদটি ওভাবেই বোর্ড থেকে তোলা হয়েছে।
মিজুনাল ইসলাম বলেন, মাওলানা সাঈদীর দাখিল সনদে তার নাম ‘দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী’ লেখা আছে স্পষ্ট করে। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা সেটা আদালতে উচ্চারন করলেননা। তিনি পড়ে শোনালেন যে নামটি সংশোধন করা হয়েছে সেটি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তিনি এটি করেছেন।
মিজানুল ইসলাম বলেন, যেভাবেই দেখানো হোকনা কেন তাতেই বের হয়ে আসছে স্বাধীনতা যুদ্ধেরও বহুপূর্ব থেকেই তার নাম সাঈদী ছিল। তার পিতার নামের সাথেও সাঈদী শব্দটি যুক্ত আছে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার সময় কোন কোন সাক্ষী বলেছিলেন, ১২/১৫ বছর পূর্বে দেলোয়ার শিকদার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নাম ধারন করেছেন। কেউ বলেছিলেন স্বাধীনতার পর দেলোয়ার শিকদার মাওলানা সাঈদী নাম ধারন করেছেন। কেউ বা বলেছিলেন আশির দশকে দেলোয়ার শিকদার সাঈদী নামে আত্মপ্রকাশ করেন।
মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা এর আগে সাক্ষীদের জেরার সময় অনেকবার আদালতে বলার চেষ্টা করেছেন দেলোয়ার শিকদার নামে পিরোজপুরে একজন কুখ্যাত রাজাকার ছিল। স্বাধীনতার পর সে গণরোষে নিহত হয়েছে। সেই দেলোয়ার শিকদার এবং বর্তমান মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দুজন আলাদ ব্যক্তি।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আসা অধিকাংশ সাক্ষীকে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা রাজাকার দেলোয়ার শিকদার, তার পিতা রসুল শিকদার সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ প্রশ্ন করলে তারা দৃঢ়তার সাথে জানিয়েছেন এই নামে পিরোজপুরে কোন রাজাকার ছিলনা। এই নামের কোন রাজাকারকে তারা চেনেননা।
পূর্বের সাক্ষীরা বলেছেন, দেলোয়ার শিকদার নামে তারা যে কুখ্যাত রাজাকারকে চেনেন তিনি জীবিত আছেন এবং বর্তমানে তিনিই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নামে পরিচিতি। তার পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী। এজন্য তারা আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার সময় ‘দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী’ এভাবে উচ্চারন করেছেন নামটি।
আজ তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন ছারছিনা দারুসুন্নদ মাদ্রাসা ১৯২৮ থেকে ১৯৫৫ পর্যন্ত রেজিষ্ট্রি খাতায় মাওলানা সাঈদী সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট পাতা প্রর্দশন করেন।
এসব ডকুমেন্ট প্রদর্শনের সময় মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আগে শোনা গেল দেলোয়ার শিকদার। এখন দেখা গেল শিকদার নয় তিনি আগে থেকেই সাঈদী ছিলেন। তখন বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বরেন, ৫৫ সালের কাগজেও দেখা গেল সাঈদীর পিতার নাম ইউসুফ সাঈদী লেখা রয়েছে। নট শিকদার। তিনি মিজানুল ইসলামকে বলেন এ বিষয়ে আপনারা পরে কথা বলার সুযোগ পাবেন।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে অনেক সাক্ষী তাকে অতীতে শিকদার থাকা মর্মে অভিযোগ করলেও একজন সাক্ষী ভিন্ন তথ্য দিয়েছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি ৮১ বছর বয়স্ক মধুসূদন ঘরামী মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার পর জেরার সময় স্বীকারে করেছিলেন দেলোয়ার শিকদার, পিতা রসুল শিকদার নামে পিরোজপুরে কুখ্যাত একজন রাজাকার ছিল। মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা রাজাকার দেলোয়ার শিকদারের পিতৃ পরিচয় (রসুল শিকদার ) সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে প্রশ্ন করলে প্রবীণ সাক্ষী মধুসূদন ঘরামী বলেন, এই নামে একজন রাজাকার ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার অপকর্মের কারনে মুক্তিযোদ্ধা এবং এলাকাবাসীর গণরোষের শিকার হয়ে পিরোজপুরে নিহত হয়ে থাকতে পারেন তিনি।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ
‘প্রয়োজনে আসামী বাইন্ধ্যা রাখা হবে’ মর্মে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক যে মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে আজ মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম প্রতিকৃয়া ব্যক্ত করে সাংবাদিকদের বলেন, একজন বিচারপতি বিচারকের আসনে বসে এ ধরনের কথা বলতে পারেননা। একথা বলার এখতিয়ার তার নেই। এর মাধ্যমে তিনি বিচারপতি হিসেবে শপথ ভঙ্গ করেছেন। এতে প্রমানিত হচ্ছে যে, তিনি আবেগ দ্বারা তাড়িত হচ্ছেন। একজন বিচারপতির এ ধরনের মন্তব্য ন্যায় বিচার পরিপন্থী। বিচারপতির এ ধরনের মন্তব্য আদালতের ভাবমর্যাদা ুন্ন করেছে। এটি আদালত অবমাননার শামিল।
আজ দুপুরের বিররিত পর ট্রাইব্যুনালের বারান্দায় বসে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে একথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, আজো (বুধবার) রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অনেক ডকুমেন্ট আদালতে হাজির করেছেন যার কোন কপি আসামী পক্ষকে পূর্বে দেয়া হয়নি। ট্রাইব্যুনাল তাৎক্ষনিকভাবে সেগুলো আসামী পক্ষকে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং এভাবে তিনি ঐ ডকুমেন্টগুলো গ্রহণ করেছেন। অথচ আইন অনুযায়ী এসব ডকুমেন্ট চার্জগঠনের পূর্বেই আসামী পক্ষের পাওয়ার কথা। আইন ভঙ্গ করে এসব ডকুমেন্ট আদালতে প্রদর্শন করানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গত মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল চলাকালে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ বোধ করায় তার আইনজীবীরা তাকে কোর্ট থেকে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেন। আদালত তা গ্রহণ করে তাকে কোর্ট থেকে পাঠিয়ে দেন দুপুরের দিকে।
এরপর বিকালে মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীরা কোর্ট বর্জন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী তখন ট্রাইব্যুনালের সামনে দাড়িয়ে বলেন তারা পরিকল্পনা করে দুপুরে আসামীকে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। এখন নিজেরা চলে গেল।
বিচারপতি নিজামুল হক তখন বলেন, তাই নাকি। এরপর আর বিচার চলাকালে কাউকে চলে যেতে দেয়া হবেনা। সুস্থ অসুস্থ যাই থাকুক প্রয়োজনে সাড়ে চারটা পর্যন্ত আসামী বাইন্ধ্যা রাখা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন