মেহেদী হাসান, ১২/৬/২০১২, মঙ্গলবার
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আমরা সেফ হাউজ বিষয়ে যেসব তথ্য প্রমান হাজির করেছি তারপর আর মাওলানা সাঈদীর বিচার চলতে পারেনা। সম্পূর্ণ মিথ্যা দিয়ে সাজানো হয়েছে এ মামলা। প্রতারনা এবং জালিয়াতির সুনামী হয়েছে এ মামলায়। তাই তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত। এ মামলা আর চালানো উচিত নয়। কারণ এ মামলার কোন ভিত্তি নেই। তদন্ত সংস্থার বিরুদ্ধে আমরা যে মিথ্যা এবং প্রতারনার প্রমান হাজির করেছি তারপর এ মামলা পরিচালনা করলে তা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় কালিমা লেপনের শামিল হবে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ সাক্ষী বিষয়ে রিভিউ আবেদনের শুনানীতে ব্যারিস্টার রাজ্জাক আজ ট্রাইব্যুনালে একথা বলেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমাদের যদি হাইকোর্টে যাবার সুযোগ থাকত তাহলে পাঁচ মিনিট শোনার পর হাইকোর্ট এ মামলার সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করে দিত। ব্যারিস্টার রাজ্জাক ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আর যাই হোক আপনি অন্তন্ত এ বিষয়ে আমার সাথে দ্বিমত করবনেনা। তখন বিচারপতি নিজামুল হক মুচকি হাসেন।
দুই পক্ষের শুনানী শেষে রিভিউ আবেবদেরন আদেশ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সিএভি (কোর্ট এডজর্নড ফর ভারডিক্ট) । অর্থাৎ রায় না দেয়া পর্যন্ত এ বিষয়টি মুলতবি রাখা হল।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন সিএভি বেশি হয়ে যাচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, এ পর্যন্ত তিনটি সিএভি হয়েছে। ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, সিএভি হলে এ মামলার সব কার্যক্রম স্থগিত রাখা হোক রায় না দেয়া পর্যন্ত। যে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা এতবড় মিথ্যা এবং প্রতারানার তথ্য প্রমান দাখিল করলাম তার বিষয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত এ মামলা কিভাবে চলতে পারে?
জবাবে ট্রাইব্যুনাল বলেন, রায়ের সময় আমরা সব বিবেচনা করব। কিন্তু রায়ের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবেনা। মামলার কার্যক্রম চলবে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে গত ২৯ মার্চ রায় দেন। সে রায় পুনরায় বিবেচনার জন্য গত ৯ মে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী। গত ২২ মে এ বিষয়ে প্রথম শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। গত ৩রা জুন পুনরায় শুনানীর সময় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সেফ হাউজের (ঢাকায় যেখানে সাক্ষী এনে রাখা হত) সমস্ত কাগজপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে বলেন, সাক্ষী হাজির করতে না পারা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ যে
কারণ দেখিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা কার্টে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে প্রতারিত করেছেন। অনেক সাক্ষী তাদের হেফাজতেই ছিল এবং সেফহাউজের এসব কাগজপত্রে তার প্রমান রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী এসময় বলেন, সেফ হাউজ বলতে আমাদের কিছু নেই। তারা সেফ হাউজের নামে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন এই রিপোর্ট আমাদের না। এটি তাদের প্রডাকশন। হতে পারে এটি তাদের প্রডাকশন।
আজ ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তথ্য প্রমান উপস্থাপন করে আদালতে প্রমান করেন যে, সেফ হাউজের নামে তারা যে ৬০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট আদালতে দাখিল করেছেন তা সত্য।
সেফ হাউজের ডকুমেন্টকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের কর্তৃক অস্বীকার করা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, এ বিচার রাজনৈতিক বিচার। সেজন্য তারা কোন সত্যের ধার ধারেননা। তাদের একটাই লক্ষ্য। তারা চান তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ঝুলিয়ে দিতে। সেজন্য তারা সবকিছুকে অস্বীকার করছে এককথায়।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবিত ও মৃত’ গল্পের কাদম্বিনী চরিত্র উদাহরন পেশ করে বলেন, কাদম্বিনী মরিয়া প্রমান করেছিল যে, সে মরে নাই। আর আজ যাকে মারার জন্য সেফ হাউজ বানানো হয়েছে তিনি না মরে প্রমান করলেন তাদের সবই মিথ্যা।
তারা (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) বলল তিন জন সাক্ষী আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে চলে গেছে। তাদের খোঁজ খবর তাদের কাছে নাই। । আমরা প্রমান দিলাম ঐ তিন সাক্ষী ঐ সময় পর্যন্ত তাদের হেফাজতেই ছিল।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, সেফ হাউজে থাকা একজন সাক্ষীকে হুমকি দেয়া বিষয়ে যাত্রবাড়ি থানায় ডায়েরি করা হয়েছে । ডায়েরি নম্বর ৪৯১। সেফ হাউজে দায়িত্ব রত একজন পুলিশ মেজিস্ট্রেট কোর্টে সাক্ষ্য দিতে গেছে। সে তথ্যও লেখা রয়েছে সেফ হাউজেহর ডায়েরিতে। কোন ফার্নিচার দোকান থেকে আসববাপত্র কেনা হয়েছে তার টেলিফোন নম্বরও লেখা আছে। কয়টি কম্বল, জগ, মগ, ভাতের চামচ, থালা বাসন বালিশ কেনা হয়েছে তার সবই উল্লেখ আছে সেফ হাউজের ডায়েরিতে। গৌরাঙ্গ নামে একজন সাক্ষ্য ভাল সাক্ষ্য দেয়ায় মিস্টি খাওয়ানো হয়েছে, সিগারেট কিনে দেয়া হয়েছে সে তথ্যও লেখা আছে। কোন দিন কোন সাক্ষী এসেছে, কার সাথে কোন কোন মেহমান ছিল, কে কয়বেলা খেয়েছে, কাকে কখন চা আপ্যায়ন করা হয়েছে, কাকে কোন হাসপাতালে নিয়ে রক্ত পরীক্ষা এবং অন্যান্য চিকিৎসা করা হয়েছে, কাকে কোনদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে, তার সাথে কোন কোন পুলিশ ছিল সবই ডায়েরিতে লেখা আছে। আমরা এসব ডডকুমেন্ট হাজির করেছি এবং তা যে সত্য তারও প্রমান দাখিল করেছি।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, এসব কি কোন মানুষের পক্ষে বানিয়ে লেখা সম্ভব?
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তার বক্তব্য পেশ করার পর বেলা দুইটায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী শুনানীতে অংশ নেন। সেফ হাউজের যেসব ডকুমেন্ট মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী কর্তৃক আদালতে দাখিল করা হয়েছে তাকে তিনি একটি ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ষড়যন্ত্রের পক্ষে প্রমান হিসেবে তিনি বলেন, এ ডকুমেমেন্টর ওপর ভিত্তি করে ওনারা ১৫ সাক্ষী বিষয়ক রায় বাতিলের আবেদন করেছেন। সবশেষে তারা আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন।
সেফ হাউজের ডকুমেন্টকে তিনি জাল টাকার সাথে তুলনা করে বলেন, জাল টাকা দেখতে খুব সুন্দর। এটা জালা হতে পারে। আমার সাবমিশন হল এটা জাল।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের কাল হাত কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তা এ থেকে বোঝা যায়।
তিনি ব্যারিস্টার রাজ্জাকের উপস্থাপনা বিষয়ে বলেন, ভাল ইপস্থাপন করলেই তা বিশ্বাসযোগ্য হবার কোন কারণ নেই।
সেফ হাউজের ডায়েরি তথ্য অস্বীকার করায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের লক্ষ্য করে বিচারপতি এ কে এম জহির আহমেদ বলেন আপনাদের সাক্ষী হাউজ কি তাহলে লিল্লাহ বোর্ডিং? খাওয়াচ্ছেন দাওয়াচ্ছেন কোন রেকর্ড রাখা হয়না সেখানে?
বিচারপতি জহির আহমেদ সৈয়দ হায়দার আলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি বলতে চাচ্ছেন কালাচাঁদ মেজিস্ট্রেট কোর্টে সাক্ষ্য দিয়েছিল সেটা ওনারা জেনে তারপর তার নামে এ ডায়েরি তৈরি করেছেন?
টেলিফোন নম্বর বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত সংস্থা কি এই টেলিফোন নম্বর স্বীকার করেনা?
সেফ হাউজের নাম নিয়ে বিতর্কের এক পর্যায়ে বিচারপতি জহির আহমেদ বলেন, নাম যাই বলেন, গোলাপ গোলাপই।
বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বলেন, সেফ হাউজের রেকড, এখানে সাক্ষীদের সাক্ষ্যের রেকর্ড এবং পত্রিকার রেকর্ডের মধ্যে মিল রয়েছে। তাহলে এগুলো অস্বীকার করব কিভাবে?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক ট্রাইব্যুনালে বলেন, আমরা যে ডকুমেন্ট দাখিল করেছি তা যে সত্য তার পক্ষে আমরা কয়েকটি প্রমান হাজির করতে চাই।
প্রথমত টেলিফোন বিল। সাধারন ডাইরিতে তিনটি টেলিফোন নম্বর লেখা রয়েছে সেফ হাউজের। এগুলো হল ৭৫৪৭৮০৭, ৭৫৪৭৮০৪, ৭৫৪৭৮১০। ২০১১ সালে নভেম্বর মাসে উক্ত তিনটি টেফিফোন নম্বরের পাশে বিল উল্লেখ করা আছে যথাক্রমে ৪৯১২ টাকা, ৪১১৪ টাকা এবং ৪১৬৮ টাকা। এরপর লেখা রয়েছে-“টেলিফোন বিল আইসিটি হেড অফিস বরাবর প্রেরন করা হইল” ।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমরা বিটিসিএল থেকে এ তিনটি নম্বরের বিপরীতে বিলপত্র সংগ্রহ করেছি।
বিটিসিএলের টেলিফোন বিলে ঠিকানা উল্লেখ আছে ৬৪৫, অতীশ দিপঙ্কর রোড, পুলিশ টাওয়ার বিল্ডিং, গোলাপবাগ, ঢাকা। । বিলে ইংরেজিতে নাম হিসেবে উল্লেখ আছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, সেফ হাউজের ঠিকানায়ও উল্লেখ আছে ৬৪৫, অতীশ দিপঙ্কর রোড, পুলিশ টাওয়ার বিল্ডিং, গোলাপবাগ, ঢাকা। এই একটি ঘটনাই যথেষ্ট এটা প্রমানের জন্য যে, সমস্ত ডকুমেন্ট সত্য।
দ্বিতীয় প্রমান হিসেবে ব্যাস্টিার রাজ্জাক বলেন, সেফ হাউজে দায়িত্বরত এসআই কাল চাঁদ ঘোষ চকবাজার থানার মামলা নম্বর ৪১ (০১)১০ জিআর ১০২/১০ ইং তারিখ ১২-০১-১২ মূলে সাক্ষ্য প্রদান করার জন্য সিএমএম কোর্ট নম্বর ৩১-ঢাকা এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় লেখা আছে।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, কালাচাঁদ যে কোর্টে সাক্ষ্য দিতে গেল তা আমাদের পক্ষে জানা কেমন করে সম্ভব? আপনারা প্রয়োজনে ঐদিন মেজিস্ট্রেট কোর্টের কাগজপত্র তলব করেন। তাহলেই সত্যতা বের হয়ে যাবে। তিনি বলেন, কালা চাঁদকে কোর্টে হাজির করা হোক। আমরা তাকে জেরা করব।
১৬ জানুয়ারির আরেকটি ডায়েরি নোট আদালতে পড়ে শোনান ব্যারিস্টার রাজ্জাক। এখানে উল্লেখ আছে “পার্শ্বলিখিত সময় আসিটির প্রধান সমন্বয়ক অত্র সেইফ হাউজের নতুন স্বাক্ষী মধু সুদন ঘরামী এসেছে কিনা এমন কেমন আছেন জানতে চায, তৎসঙ্গে তিনি আরো বলেন স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ সাহার স্বাক্ষ্য খুব ভাল হয়েছে। টেলিফোনে আলোচনার সময়ে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ মিষ্টি খাওয়ার দাবী করে। বিষয়টি ওএ স্যারকে জানালে তিনি বলেন, তাকে অর্থ্যাৎ গৌরাঙ্গকে মিষ্টি সহ পাঞ্জাবী পায়জামা দিয়ে দাও। তিনি আরো বলেন, যদি আরো কিছু চায় তবে আমি যেন সাধ্য মতো প্রদান করি। বিষয়টি সম্পর্কে ওএ সানাউল্লাহ
স্যারকে জানালে তিনি একই আদেশ প্রদান করেন। সিনিয়র দুই ¯্রারের আদেশে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ সঙ্গে বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার ও অপর স্বাক্ষী মো: আব্দুল হালিম বাবুলকে অত্র সেইফ হাউজের সন্নিকটে বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার হইতে দুইশত পঞ্চার টাকার মিষ্টি, সিগারেট, ঔষধ, প্রসাধনী সহ মোট ৫০০/= টাকা ব্যয় করা হইল। বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য ডাইরী ভুক্ত করে রাখা হল” ।
৮/১২/২০১১ তারিখের একটি নোট : অত্র সেইফ হাউজে তদন্ত সংস্থা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপ্লেন্ট রেজিষ্টার ক্রমিক নং ০২ তাং ২১/০৭/২০১১ ইং এর মামলার স্বাক্ষী জনাব মাহাবুবুল আলম হাওলাদার সেইফ হাউজে অবস্থানরত আছে। তিনি জনান যে, গত ইং ০৭/১২/২০১১ইং ট্র্রাইব্যুনালে স্বাক্ষী দেওয়ার পর অদ্য ০৮/১২/২০১১ ইং সন্ধ্যা ০৬.১৪ মিনিটের সময় ফেরাউন পরিচয় ধারী অজ্ঞাত ব্যক্তি তাহার মোবা: নং- ১৯৪৪-২১৪৩৫৪ থেকে তাহাকে প্রাণ নাসের হুমকি সহ তাহার বাড়ী ঘর আগুন দিয়ে জ্বলাইয়া দেওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করিলে উক্ত বিষয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জানান। যেহেতু ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে বিচার কার্য চলিতেছে এই মুহুর্তে এই ধরনের হুমকি মূলক কার্য স্বাক্ষী উপস্থিতি, স্বাক্ষী গ্রহন ও আগমনে বাধা সৃষ্টির বিদ্যমান। সেহেতু উক্ত ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আলোচনা করিয়া এবং মোবাইল নম্বর পর্যালোচনা করিয়া বিষয়টি যেহেতু অতি গুরুত্বপূর্ন সেহেতু উক্ত ব্যাপারে ডাইরী ভূক্ত করার জন্য অফিসার ইনচার্জ যাত্রাবাড়ী থানা বরাবরে এস,আই, আব্দুল্লাহ্ আল বাকী এর মাধ্যেমে সাধারন ডাইরী করার জন্য প্রেরণ করি। এবং উক্ত বিষয় যাত্রাবাড়ী থানার সাধারন ডাইরী নাম্বার ৪৯২ তাং-০৮/১২/২০১১ ইং মূলে ডাইরী ভূক্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি অভিযোগে বিস্তারিত লিপিবদ্ধ আছে।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমাদের পক্ষে কিভাবে জানা সম্ভব যে, এভাবে থানায় জিডি করা হয়েছে?
এসব তথ্য প্রমান উপস্থাপনের সময় ট্রাইব্যুনাল ব্যারিস্টার রাজ্জাকের কাছে জানতে চান এসব তথ্য সত্য হলে কি হবে বলেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমাদের আবেদন শুধু ১৫ সাক্ষীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেনা। আমরা মাওলানা সাঈদীকে পুরো মামলা থেকে অব্যহতি চাচ্ছি।
এসময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনাদের দাবি হল ১৫ সাক্ষী বিষয়ে প্রসিকিউশন মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। কিন্তু ঐ ১৫ জন সাক্ষী ছাড়া যে, ১৬ জনের জবানবন্দী কোর্টে নেয়া হয়েছে এবং জেরা হয়েছে তাদের সাক্ষ্য কিভাবে বাতিল করা যাবে?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, যারা ১৫ জন সাক্ষী বিষয়ে এভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন আদালতে তাদের অন্য বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা কি? মাওলানা সাঈদীর মামলা তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা দিয়ে সাজিয়েছে। এ মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যার ওপর দাগিয়ে আছে। এ মামলার কোন ভিত্তি নেই।
ট্রাইব্যুনালের অপর বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন, চার্জ গঠনের পর সিচার্জ করার কোন সুযোগ নেই। হয় দোষী না হয় খালাস পাবেন বিচারে। জবাবে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, এখানে সিআরপিসি কার্যকর নেই। এটা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল । কাজেই চার্জ গঠনের পর তা বাতিল করা যাবেনা তা কোথাও বলা নেই।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, আমরা সেফ হাউজ বিষয়ে যেসব তথ্য প্রমান হাজির করেছি তারপর আর মাওলানা সাঈদীর বিচার চলতে পারেনা। সম্পূর্ণ মিথ্যা দিয়ে সাজানো হয়েছে এ মামলা। প্রতারনা এবং জালিয়াতির সুনামী হয়েছে এ মামলায়। তাই তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত। এ মামলা আর চালানো উচিত নয়। কারণ এ মামলার কোন ভিত্তি নেই। তদন্ত সংস্থার বিরুদ্ধে আমরা যে মিথ্যা এবং প্রতারনার প্রমান হাজির করেছি তারপর এ মামলা পরিচালনা করলে তা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় কালিমা লেপনের শামিল হবে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ সাক্ষী বিষয়ে রিভিউ আবেদনের শুনানীতে ব্যারিস্টার রাজ্জাক আজ ট্রাইব্যুনালে একথা বলেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমাদের যদি হাইকোর্টে যাবার সুযোগ থাকত তাহলে পাঁচ মিনিট শোনার পর হাইকোর্ট এ মামলার সমস্ত কার্যক্রম স্থগিত করে দিত। ব্যারিস্টার রাজ্জাক ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আর যাই হোক আপনি অন্তন্ত এ বিষয়ে আমার সাথে দ্বিমত করবনেনা। তখন বিচারপতি নিজামুল হক মুচকি হাসেন।
দুই পক্ষের শুনানী শেষে রিভিউ আবেবদেরন আদেশ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, সিএভি (কোর্ট এডজর্নড ফর ভারডিক্ট) । অর্থাৎ রায় না দেয়া পর্যন্ত এ বিষয়টি মুলতবি রাখা হল।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন সিএভি বেশি হয়ে যাচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, এ পর্যন্ত তিনটি সিএভি হয়েছে। ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, সিএভি হলে এ মামলার সব কার্যক্রম স্থগিত রাখা হোক রায় না দেয়া পর্যন্ত। যে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আমরা এতবড় মিথ্যা এবং প্রতারানার তথ্য প্রমান দাখিল করলাম তার বিষয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত এ মামলা কিভাবে চলতে পারে?
জবাবে ট্রাইব্যুনাল বলেন, রায়ের সময় আমরা সব বিবেচনা করব। কিন্তু রায়ের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবেনা। মামলার কার্যক্রম চলবে।
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে গত ২৯ মার্চ রায় দেন। সে রায় পুনরায় বিবেচনার জন্য গত ৯ মে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী। গত ২২ মে এ বিষয়ে প্রথম শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। গত ৩রা জুন পুনরায় শুনানীর সময় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সেফ হাউজের (ঢাকায় যেখানে সাক্ষী এনে রাখা হত) সমস্ত কাগজপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে বলেন, সাক্ষী হাজির করতে না পারা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ যে
কারণ দেখিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা কার্টে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে প্রতারিত করেছেন। অনেক সাক্ষী তাদের হেফাজতেই ছিল এবং সেফহাউজের এসব কাগজপত্রে তার প্রমান রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী এসময় বলেন, সেফ হাউজ বলতে আমাদের কিছু নেই। তারা সেফ হাউজের নামে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন এই রিপোর্ট আমাদের না। এটি তাদের প্রডাকশন। হতে পারে এটি তাদের প্রডাকশন।
আজ ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তথ্য প্রমান উপস্থাপন করে আদালতে প্রমান করেন যে, সেফ হাউজের নামে তারা যে ৬০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট আদালতে দাখিল করেছেন তা সত্য।
সেফ হাউজের ডকুমেন্টকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের কর্তৃক অস্বীকার করা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, এ বিচার রাজনৈতিক বিচার। সেজন্য তারা কোন সত্যের ধার ধারেননা। তাদের একটাই লক্ষ্য। তারা চান তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ঝুলিয়ে দিতে। সেজন্য তারা সবকিছুকে অস্বীকার করছে এককথায়।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবিত ও মৃত’ গল্পের কাদম্বিনী চরিত্র উদাহরন পেশ করে বলেন, কাদম্বিনী মরিয়া প্রমান করেছিল যে, সে মরে নাই। আর আজ যাকে মারার জন্য সেফ হাউজ বানানো হয়েছে তিনি না মরে প্রমান করলেন তাদের সবই মিথ্যা।
তারা (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) বলল তিন জন সাক্ষী আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে চলে গেছে। তাদের খোঁজ খবর তাদের কাছে নাই। । আমরা প্রমান দিলাম ঐ তিন সাক্ষী ঐ সময় পর্যন্ত তাদের হেফাজতেই ছিল।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, সেফ হাউজে থাকা একজন সাক্ষীকে হুমকি দেয়া বিষয়ে যাত্রবাড়ি থানায় ডায়েরি করা হয়েছে । ডায়েরি নম্বর ৪৯১। সেফ হাউজে দায়িত্ব রত একজন পুলিশ মেজিস্ট্রেট কোর্টে সাক্ষ্য দিতে গেছে। সে তথ্যও লেখা রয়েছে সেফ হাউজেহর ডায়েরিতে। কোন ফার্নিচার দোকান থেকে আসববাপত্র কেনা হয়েছে তার টেলিফোন নম্বরও লেখা আছে। কয়টি কম্বল, জগ, মগ, ভাতের চামচ, থালা বাসন বালিশ কেনা হয়েছে তার সবই উল্লেখ আছে সেফ হাউজের ডায়েরিতে। গৌরাঙ্গ নামে একজন সাক্ষ্য ভাল সাক্ষ্য দেয়ায় মিস্টি খাওয়ানো হয়েছে, সিগারেট কিনে দেয়া হয়েছে সে তথ্যও লেখা আছে। কোন দিন কোন সাক্ষী এসেছে, কার সাথে কোন কোন মেহমান ছিল, কে কয়বেলা খেয়েছে, কাকে কখন চা আপ্যায়ন করা হয়েছে, কাকে কোন হাসপাতালে নিয়ে রক্ত পরীক্ষা এবং অন্যান্য চিকিৎসা করা হয়েছে, কাকে কোনদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে, তার সাথে কোন কোন পুলিশ ছিল সবই ডায়েরিতে লেখা আছে। আমরা এসব ডডকুমেন্ট হাজির করেছি এবং তা যে সত্য তারও প্রমান দাখিল করেছি।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, এসব কি কোন মানুষের পক্ষে বানিয়ে লেখা সম্ভব?
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তার বক্তব্য পেশ করার পর বেলা দুইটায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী শুনানীতে অংশ নেন। সেফ হাউজের যেসব ডকুমেন্ট মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী কর্তৃক আদালতে দাখিল করা হয়েছে তাকে তিনি একটি ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ষড়যন্ত্রের পক্ষে প্রমান হিসেবে তিনি বলেন, এ ডকুমেমেন্টর ওপর ভিত্তি করে ওনারা ১৫ সাক্ষী বিষয়ক রায় বাতিলের আবেদন করেছেন। সবশেষে তারা আসামীকে মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানিয়েছেন।
সেফ হাউজের ডকুমেন্টকে তিনি জাল টাকার সাথে তুলনা করে বলেন, জাল টাকা দেখতে খুব সুন্দর। এটা জালা হতে পারে। আমার সাবমিশন হল এটা জাল।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের কাল হাত কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তা এ থেকে বোঝা যায়।
তিনি ব্যারিস্টার রাজ্জাকের উপস্থাপনা বিষয়ে বলেন, ভাল ইপস্থাপন করলেই তা বিশ্বাসযোগ্য হবার কোন কারণ নেই।
সেফ হাউজের ডায়েরি তথ্য অস্বীকার করায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের লক্ষ্য করে বিচারপতি এ কে এম জহির আহমেদ বলেন আপনাদের সাক্ষী হাউজ কি তাহলে লিল্লাহ বোর্ডিং? খাওয়াচ্ছেন দাওয়াচ্ছেন কোন রেকর্ড রাখা হয়না সেখানে?
বিচারপতি জহির আহমেদ সৈয়দ হায়দার আলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি বলতে চাচ্ছেন কালাচাঁদ মেজিস্ট্রেট কোর্টে সাক্ষ্য দিয়েছিল সেটা ওনারা জেনে তারপর তার নামে এ ডায়েরি তৈরি করেছেন?
টেলিফোন নম্বর বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত সংস্থা কি এই টেলিফোন নম্বর স্বীকার করেনা?
সেফ হাউজের নাম নিয়ে বিতর্কের এক পর্যায়ে বিচারপতি জহির আহমেদ বলেন, নাম যাই বলেন, গোলাপ গোলাপই।
বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বলেন, সেফ হাউজের রেকড, এখানে সাক্ষীদের সাক্ষ্যের রেকর্ড এবং পত্রিকার রেকর্ডের মধ্যে মিল রয়েছে। তাহলে এগুলো অস্বীকার করব কিভাবে?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক ট্রাইব্যুনালে বলেন, আমরা যে ডকুমেন্ট দাখিল করেছি তা যে সত্য তার পক্ষে আমরা কয়েকটি প্রমান হাজির করতে চাই।
প্রথমত টেলিফোন বিল। সাধারন ডাইরিতে তিনটি টেলিফোন নম্বর লেখা রয়েছে সেফ হাউজের। এগুলো হল ৭৫৪৭৮০৭, ৭৫৪৭৮০৪, ৭৫৪৭৮১০। ২০১১ সালে নভেম্বর মাসে উক্ত তিনটি টেফিফোন নম্বরের পাশে বিল উল্লেখ করা আছে যথাক্রমে ৪৯১২ টাকা, ৪১১৪ টাকা এবং ৪১৬৮ টাকা। এরপর লেখা রয়েছে-“টেলিফোন বিল আইসিটি হেড অফিস বরাবর প্রেরন করা হইল” ।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমরা বিটিসিএল থেকে এ তিনটি নম্বরের বিপরীতে বিলপত্র সংগ্রহ করেছি।
বিটিসিএলের টেলিফোন বিলে ঠিকানা উল্লেখ আছে ৬৪৫, অতীশ দিপঙ্কর রোড, পুলিশ টাওয়ার বিল্ডিং, গোলাপবাগ, ঢাকা। । বিলে ইংরেজিতে নাম হিসেবে উল্লেখ আছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, সেফ হাউজের ঠিকানায়ও উল্লেখ আছে ৬৪৫, অতীশ দিপঙ্কর রোড, পুলিশ টাওয়ার বিল্ডিং, গোলাপবাগ, ঢাকা। এই একটি ঘটনাই যথেষ্ট এটা প্রমানের জন্য যে, সমস্ত ডকুমেন্ট সত্য।
দ্বিতীয় প্রমান হিসেবে ব্যাস্টিার রাজ্জাক বলেন, সেফ হাউজে দায়িত্বরত এসআই কাল চাঁদ ঘোষ চকবাজার থানার মামলা নম্বর ৪১ (০১)১০ জিআর ১০২/১০ ইং তারিখ ১২-০১-১২ মূলে সাক্ষ্য প্রদান করার জন্য সিএমএম কোর্ট নম্বর ৩১-ঢাকা এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় লেখা আছে।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, কালাচাঁদ যে কোর্টে সাক্ষ্য দিতে গেল তা আমাদের পক্ষে জানা কেমন করে সম্ভব? আপনারা প্রয়োজনে ঐদিন মেজিস্ট্রেট কোর্টের কাগজপত্র তলব করেন। তাহলেই সত্যতা বের হয়ে যাবে। তিনি বলেন, কালা চাঁদকে কোর্টে হাজির করা হোক। আমরা তাকে জেরা করব।
১৬ জানুয়ারির আরেকটি ডায়েরি নোট আদালতে পড়ে শোনান ব্যারিস্টার রাজ্জাক। এখানে উল্লেখ আছে “পার্শ্বলিখিত সময় আসিটির প্রধান সমন্বয়ক অত্র সেইফ হাউজের নতুন স্বাক্ষী মধু সুদন ঘরামী এসেছে কিনা এমন কেমন আছেন জানতে চায, তৎসঙ্গে তিনি আরো বলেন স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ সাহার স্বাক্ষ্য খুব ভাল হয়েছে। টেলিফোনে আলোচনার সময়ে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ মিষ্টি খাওয়ার দাবী করে। বিষয়টি ওএ স্যারকে জানালে তিনি বলেন, তাকে অর্থ্যাৎ গৌরাঙ্গকে মিষ্টি সহ পাঞ্জাবী পায়জামা দিয়ে দাও। তিনি আরো বলেন, যদি আরো কিছু চায় তবে আমি যেন সাধ্য মতো প্রদান করি। বিষয়টি সম্পর্কে ওএ সানাউল্লাহ
স্যারকে জানালে তিনি একই আদেশ প্রদান করেন। সিনিয়র দুই ¯্রারের আদেশে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ সঙ্গে বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার ও অপর স্বাক্ষী মো: আব্দুল হালিম বাবুলকে অত্র সেইফ হাউজের সন্নিকটে বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার হইতে দুইশত পঞ্চার টাকার মিষ্টি, সিগারেট, ঔষধ, প্রসাধনী সহ মোট ৫০০/= টাকা ব্যয় করা হইল। বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য ডাইরী ভুক্ত করে রাখা হল” ।
৮/১২/২০১১ তারিখের একটি নোট : অত্র সেইফ হাউজে তদন্ত সংস্থা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপ্লেন্ট রেজিষ্টার ক্রমিক নং ০২ তাং ২১/০৭/২০১১ ইং এর মামলার স্বাক্ষী জনাব মাহাবুবুল আলম হাওলাদার সেইফ হাউজে অবস্থানরত আছে। তিনি জনান যে, গত ইং ০৭/১২/২০১১ইং ট্র্রাইব্যুনালে স্বাক্ষী দেওয়ার পর অদ্য ০৮/১২/২০১১ ইং সন্ধ্যা ০৬.১৪ মিনিটের সময় ফেরাউন পরিচয় ধারী অজ্ঞাত ব্যক্তি তাহার মোবা: নং- ১৯৪৪-২১৪৩৫৪ থেকে তাহাকে প্রাণ নাসের হুমকি সহ তাহার বাড়ী ঘর আগুন দিয়ে জ্বলাইয়া দেওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করিলে উক্ত বিষয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জানান। যেহেতু ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে বিচার কার্য চলিতেছে এই মুহুর্তে এই ধরনের হুমকি মূলক কার্য স্বাক্ষী উপস্থিতি, স্বাক্ষী গ্রহন ও আগমনে বাধা সৃষ্টির বিদ্যমান। সেহেতু উক্ত ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আলোচনা করিয়া এবং মোবাইল নম্বর পর্যালোচনা করিয়া বিষয়টি যেহেতু অতি গুরুত্বপূর্ন সেহেতু উক্ত ব্যাপারে ডাইরী ভূক্ত করার জন্য অফিসার ইনচার্জ যাত্রাবাড়ী থানা বরাবরে এস,আই, আব্দুল্লাহ্ আল বাকী এর মাধ্যেমে সাধারন ডাইরী করার জন্য প্রেরণ করি। এবং উক্ত বিষয় যাত্রাবাড়ী থানার সাধারন ডাইরী নাম্বার ৪৯২ তাং-০৮/১২/২০১১ ইং মূলে ডাইরী ভূক্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি অভিযোগে বিস্তারিত লিপিবদ্ধ আছে।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমাদের পক্ষে কিভাবে জানা সম্ভব যে, এভাবে থানায় জিডি করা হয়েছে?
এসব তথ্য প্রমান উপস্থাপনের সময় ট্রাইব্যুনাল ব্যারিস্টার রাজ্জাকের কাছে জানতে চান এসব তথ্য সত্য হলে কি হবে বলেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমাদের আবেদন শুধু ১৫ সাক্ষীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেনা। আমরা মাওলানা সাঈদীকে পুরো মামলা থেকে অব্যহতি চাচ্ছি।
এসময় ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনাদের দাবি হল ১৫ সাক্ষী বিষয়ে প্রসিকিউশন মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। কিন্তু ঐ ১৫ জন সাক্ষী ছাড়া যে, ১৬ জনের জবানবন্দী কোর্টে নেয়া হয়েছে এবং জেরা হয়েছে তাদের সাক্ষ্য কিভাবে বাতিল করা যাবে?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, যারা ১৫ জন সাক্ষী বিষয়ে এভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন আদালতে তাদের অন্য বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা কি? মাওলানা সাঈদীর মামলা তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা দিয়ে সাজিয়েছে। এ মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যার ওপর দাগিয়ে আছে। এ মামলার কোন ভিত্তি নেই।
ট্রাইব্যুনালের অপর বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন, চার্জ গঠনের পর সিচার্জ করার কোন সুযোগ নেই। হয় দোষী না হয় খালাস পাবেন বিচারে। জবাবে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, এখানে সিআরপিসি কার্যকর নেই। এটা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল । কাজেই চার্জ গঠনের পর তা বাতিল করা যাবেনা তা কোথাও বলা নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন