মেহেদী হাসান, ১৫/৬/১২, শুক্রবার
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে গত ১৬ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা। গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা ভাল সাক্ষ্য দেয়ায় সেদিন সেফ হাউজে তাকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়। এছাড়া সিগারেট, প্রসাধীন এবং ঔষধ কিনে দেয়া হয় তাকে। এ বিষয়গুলোও লেখা রয়েছে সেফ হাউজের ডায়েরিতে।
এখানে সেফ হাউজের ১৬ জানুয়ারি ২০১২ তারিখের এ বিষয়ক বিবরন ডায়েরি থেকে তুলে ধরা হল
“প্রধান সমন্বয়ক অত্র সেইফ হাউজের নতুন স্বাক্ষী মধু সুদন ঘরামী এসেছে কিনা, এখন কেমন আছেন জানতে চান। তৎসঙ্গে তিনি আরো বলেন স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ সাহার স্বাক্ষ্য খুব ভাল হয়েছে। টেলিফোনে আলোচনার সময়ে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ মিষ্টি খাওয়ার দাবী করে। বিষয়টি ওএ স্যারকে ( সমন্বয়ক হান্নান খান এবং সানাউল হককে আইজির মর্যাদায় তদন্ত সংস্থায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে) জানালে তিনি বলেন, তাকে অর্থ্যাৎ গৌরাঙ্গকে মিষ্টিসহ পাঞ্জাবী পায়জামা দিয়ে দাও। তিনি আরো বলেন, যদি আরো কিছু চায় তবে আমি যেন সাধ্য মতো প্রদান করি। বিষয়টি সম্পর্কে ওএ সানাউল্লাহ স্যারকে জানালে তিনি একই আদেশ প্রদান করেন। সিনিয়র দুই স্যারের আদেশে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ, সঙ্গে বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার ও অপর স্বাক্ষী মো: আব্দুল হালিম বাবুলকে অত্র সেইফ হাউজের সন্নিকটে বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার হইতে দুইশত পঞ্চার টাকার মিষ্টি, সিগারেট, ঔষধ, প্রসাধনী সহ মোট ৫০০/= টাকা ব্যয় করা হইল। বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য ডাইরী ভুক্ত করে রাখা হল।”
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে গত ২৯ মার্চ রায় দেন। সে রায় পুনরায় বিবেচনার জন্য গত ৯ মে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী। গত ৩রা জুন এ বিষয়ে শুনানীর সময় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সেফ হাউজের (ঢাকায় যেখানে সাক্ষী এনে রাখা হত) সমস্ত কাগজপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে বলেন, সাক্ষী হাজির করতে না পারা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ যে কারণ দেখিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা কোর্টে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে প্রতারিত করেছেন। অনেক সাক্ষী তাদের হেফাজতেই ছিল এবং সেফহাউজের এসব কাগজপত্রে তার প্রমান রয়েছে। কোন সাক্ষী কবে ঢাকায় আসে, কতদিন সেফ হাউজে ছিল, কয়বেলা খাবার খেয়েছেন, কোন কোন পুলিশ ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর এবং কনস্টেবল কোনদিন সেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন তার সমস্ত বিবরণ লেখা রয়েছে সেফ হাউজের ডায়েরিতে। আসামী পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে সে ডায়রির কপি দাখিল করা হয় কোর্টে। গত ১২ জুন আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক কোর্টে সেফ হাউজের সে ডায়রি থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে শোনান। সেসময় তিনি কোর্টে উপরোক্ত মিষ্টি খাওয়ানোর বিষয়টিও উপস্থাপন করেন।
গত ৩ রা জুন আসামী পক্ষ থেকে সেফ হাউজের ডায়েরি আদালতে দাখিলের সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, সেফ হাউজ বলতে আমাদের কিছু নেই। তারা সেফ হাউজের নামে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন এই রিপোর্ট আমাদের না। এটি তাদের প্রডাকশন। হতে পারে এটি
তাদের প্রডাকশন। তিনি সেফ হাউজের বদলে উইটনেস হাউজ বা সাক্ষী হাউজ লেখার দাবি জানান ট্রাইব্যুনালের প্রতি।
সেফ হাউজ পত্তন বিষয়টিও সেফ হাউজের ডায়েরিতে লেখা রয়েছে। এখানে এ বিষয়ক বিবরন সেফ হাউজ ডায়েরি থেকে তুলে ধরা হল। নোটটি ১৮/১০/২০১১ তারিখ লেখা। “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার আদেশ নম্বর ২৪, তারিখ ১২-১০-১১ এর মোতাবেক এবং স্মারক নং ১০৮০, তারিখ ১২-১০-১১ অনুসারে অত্র ৬৪৫ অতীশ দীপংকর, সায়েদাবাদ, গোলাপবাগ, যাত্রাবাড়িস্থ সেইফ হাউজ এর যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা এবং উর্ধ্বতন অফিসারগণের পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রন সহ সরকারী আদেশ উপদেশ কার্যকরী করার কল্পে অদ্য ১৮-১০-১১ তারিখের সকাল ০৮.০০ হতে অত্র ডায়েরী পত্তন তথা খোলা হইলো। অত্র ডায়েরী থানার ডায়েরী ন্যায় অর্থাৎ চজই ৩৭৭ এবং পুলিশ আইনে ৪৪ ধারা মোতাবেক ব্যবহৃত হবে। বিশেষ করে অফিসার ফোর্স বাহির গমনে এবং স্বাীদের আইনগত সুযোগ সুবিধা ও উর্ধ্বতন অফিসারগনের তাৎনিক আদেশ কার্যকরী করা হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার মামলা বা স্বাী বা যে কোন ঘটনা এই অফিসের ইনচার্জ সাহেবকে জানাতে হবে। তিনি উর্ধ্বতন অফিসারকে জ্ঞাত করবেন। প্রয়োজনে ঘটনা বা তথ্য বিচারে সরাসরি উর্ধ্বতন অফিসারকে জ্ঞাত করবেন। অত্র অফিসের জন্য নিয়োজিত সকল ফোর্সের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির হিসাব ঝও বাকি বিল্লাহ সাহেব নিয়ন্ত্রন করবেন। সেন্ট্রাল অফিস থেকে প্রেরিত মালামালের হিসাব তথা ষ্টক রেজিষ্ট্রার ঝও কালাচাঁদ বাবু রনাবেন করবেন। সংশ্লিষ্ট ০২জন ঝও সাহেব অফিস চালুর যাবতীয় অসমাপ্ত কার্য সমূহ তরান্বিত করে আগামী ২৬-১০-১১ তারিখে সর্ব্বত উপযোগী করে তুলবেন। তারা আমার মাধ্যমে বা সরাসরি ইন্স: ওবায়েদুল্লাহ সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকল প্রকার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন। ”
সেফ হাউজে কে কি দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ক ১৫/১১/১১ তারিখের আরেকটি ডায়েরি নোট এখানে তুলে ধরা হল । “আমি (আমজাদ হোসেন) ইনচার্জ সেইফ হাউজ গোলাপবাগ এই মর্মে নোট করিতেছি যে, অত্র সেইফ হাউজের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার-ষ্টাফদের মধ্যে নি¤েœ স্ব স্ব নামে পার্শ্বে দ্বায়িত্ব পালনের জন্য কার্য বন্টন করিয়া দেওয়া হইল এবং স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা বিধান করিবেন এবং আমার সাথে এবং উর্ধ্বতন অফিসারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করিবেন।
ঝও কালা চাঁদ ঘোঘ সঙ্গে ক/রবিউল
০১। স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা
০২। স্বাক্ষীদের খাবারের বাজার
০৩। বাবুর্চিদের তত্বাবধান এবং খাবার সরবরাহ
০৪। প্রধান সমন্বয়ক অফিসের সাথে যাবতীয় অর্থনৈতিক যোগযোগ ও হিসাব সংরক্ষন
ঝও আব্দুল্লাহ আল বাকী সঙ্গে ক/মাসুম
০১। স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা
০২। রিসিভ সেকশনে ডিউটিরত ও স্বাক্ষীদের তথ্য ১টি রেজিষ্টারে রক্ষনাবেক্ষন
০৩। স্বাক্ষীদের জন্য অফিসে সংরক্ষিত মূল রেজিষ্টার রক্ষনাবেক্ষন
০৪। স্বাক্ষীদের অবস্থানে যাবতীয় ব্যবস্থা
০৫। স্বাক্ষীদের কোর্টে প্রেরণ এবং কোর্ট প্রত্যাগত স্বাক্ষীদের গ্রহন
০৬। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্তকারী অফিসার ও প্রসিকিউটরদের আপ্যায়নসহ যাবতীয় কাজ করবেন
শর্ষিণা মাদ্রাসার অধ্যক্ষও এসেছিলেন সাক্ষ্য দিতে: সেফ হাউজ ডায়েরিতে স্বরূপকাঠীর ছারছিনা দারুস সুন্নত আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. সৈয়দ মো: শরাফত আলীর নামও লেখা রয়েছে। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে তিনি সাক্ষ্য দিতে এসে এখানে উঠেছিলেন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত সাক্ষ্য দেননি।
সেফ হাউজ ডায়েরিতে আরো যাদের আসা যাওয়ার খবর লেখা রয়েছে তারা হলেন মো: মাহবুবুল আলম হাওলাদার, মো: মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার, মো: মোস্তফা হাওলাদার, মানিক পশারী, আশিষ কুমার মন্ডল, সমর মিস্ত্রি, রুহুল আমীন নবীন, মো: আলতাফ হাওলাদার, সুলতান আহমদ।
মিজানুর রহমান তালুকদার (তার বাসা ঢাকায় তবে তিনি সেখানে সাক্ষীদের সাথে দেখা করতে এবং আলোচনার জন্য যান বলে লেখা আছে। অন্য কয়েকজন সাক্ষীর সাথে তাকেও সাক্ষী দিতে সেফ হাউজ থেকে গাড়ি যোগে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসার বিষয় লেখা রয়েছে। সেফ হাউজ ডায়েরির বেশ কয়েকটা তারিখের ঘটনায় তার নাম লেখা রয়েছে। তা থেকে সহজে ধারনা করা যায় তিনি সেখানে বেশ কয়েকদিন ছিলেন এবং প্রায়ই আসা যাওয়াও করতেন।)
আব্দুল লতিফ হাওলাদার?, মো: খলিল (৫), মো: লতিফ ও, মো: এনতাজ, মো: আইয়ুব আলী তালুকদার, মো: জলিল শেখ, বাসুদেব মিস্ত্রি, মো: সেলিম খান, মুকুন্দ চক্রবর্তী, গৌরাঙ্গ সাহা,
অনিল চন্দ্র মন্ডল, মা: বজলুর রহমান, আব্দুল হালিম বাবুল, মধুসুদন ঘোরামী,
ড. সৈয়দ মো: শরাফত আলী, পিন্সিপাল ছারছিনা দারুস সুন্নত আলীয়া মাদ্রাসা, সরুপকাঠি
মো: আব্দুর রাজ্জাক, অফিস সহকারী দারুস সুন্নত আলীয়া মাদ্রাসা, সরুপকাঠি ও
মো: সোলায়মান হোসেন বিশ্বাস, মো: জুলফিকার আলী
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে গত ১৬ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা। গৌরাঙ্গ চন্দ্র সাহা ভাল সাক্ষ্য দেয়ায় সেদিন সেফ হাউজে তাকে মিষ্টি খাওয়ানো হয়। এছাড়া সিগারেট, প্রসাধীন এবং ঔষধ কিনে দেয়া হয় তাকে। এ বিষয়গুলোও লেখা রয়েছে সেফ হাউজের ডায়েরিতে।
এখানে সেফ হাউজের ১৬ জানুয়ারি ২০১২ তারিখের এ বিষয়ক বিবরন ডায়েরি থেকে তুলে ধরা হল
“প্রধান সমন্বয়ক অত্র সেইফ হাউজের নতুন স্বাক্ষী মধু সুদন ঘরামী এসেছে কিনা, এখন কেমন আছেন জানতে চান। তৎসঙ্গে তিনি আরো বলেন স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ সাহার স্বাক্ষ্য খুব ভাল হয়েছে। টেলিফোনে আলোচনার সময়ে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ মিষ্টি খাওয়ার দাবী করে। বিষয়টি ওএ স্যারকে ( সমন্বয়ক হান্নান খান এবং সানাউল হককে আইজির মর্যাদায় তদন্ত সংস্থায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে) জানালে তিনি বলেন, তাকে অর্থ্যাৎ গৌরাঙ্গকে মিষ্টিসহ পাঞ্জাবী পায়জামা দিয়ে দাও। তিনি আরো বলেন, যদি আরো কিছু চায় তবে আমি যেন সাধ্য মতো প্রদান করি। বিষয়টি সম্পর্কে ওএ সানাউল্লাহ স্যারকে জানালে তিনি একই আদেশ প্রদান করেন। সিনিয়র দুই স্যারের আদেশে স্বাক্ষী গৌরাঙ্গ, সঙ্গে বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার ও অপর স্বাক্ষী মো: আব্দুল হালিম বাবুলকে অত্র সেইফ হাউজের সন্নিকটে বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার হইতে দুইশত পঞ্চার টাকার মিষ্টি, সিগারেট, ঔষধ, প্রসাধনী সহ মোট ৫০০/= টাকা ব্যয় করা হইল। বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য ডাইরী ভুক্ত করে রাখা হল।”
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে গত ২৯ মার্চ রায় দেন। সে রায় পুনরায় বিবেচনার জন্য গত ৯ মে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী। গত ৩রা জুন এ বিষয়ে শুনানীর সময় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা সেফ হাউজের (ঢাকায় যেখানে সাক্ষী এনে রাখা হত) সমস্ত কাগজপত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে বলেন, সাক্ষী হাজির করতে না পারা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ যে কারণ দেখিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা কোর্টে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে প্রতারিত করেছেন। অনেক সাক্ষী তাদের হেফাজতেই ছিল এবং সেফহাউজের এসব কাগজপত্রে তার প্রমান রয়েছে। কোন সাক্ষী কবে ঢাকায় আসে, কতদিন সেফ হাউজে ছিল, কয়বেলা খাবার খেয়েছেন, কোন কোন পুলিশ ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর এবং কনস্টেবল কোনদিন সেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন তার সমস্ত বিবরণ লেখা রয়েছে সেফ হাউজের ডায়েরিতে। আসামী পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে সে ডায়রির কপি দাখিল করা হয় কোর্টে। গত ১২ জুন আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক কোর্টে সেফ হাউজের সে ডায়রি থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে শোনান। সেসময় তিনি কোর্টে উপরোক্ত মিষ্টি খাওয়ানোর বিষয়টিও উপস্থাপন করেন।
গত ৩ রা জুন আসামী পক্ষ থেকে সেফ হাউজের ডায়েরি আদালতে দাখিলের সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, সেফ হাউজ বলতে আমাদের কিছু নেই। তারা সেফ হাউজের নামে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন এই রিপোর্ট আমাদের না। এটি তাদের প্রডাকশন। হতে পারে এটি
তাদের প্রডাকশন। তিনি সেফ হাউজের বদলে উইটনেস হাউজ বা সাক্ষী হাউজ লেখার দাবি জানান ট্রাইব্যুনালের প্রতি।
সেফ হাউজ পত্তন বিষয়টিও সেফ হাউজের ডায়েরিতে লেখা রয়েছে। এখানে এ বিষয়ক বিবরন সেফ হাউজ ডায়েরি থেকে তুলে ধরা হল। নোটটি ১৮/১০/২০১১ তারিখ লেখা। “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার আদেশ নম্বর ২৪, তারিখ ১২-১০-১১ এর মোতাবেক এবং স্মারক নং ১০৮০, তারিখ ১২-১০-১১ অনুসারে অত্র ৬৪৫ অতীশ দীপংকর, সায়েদাবাদ, গোলাপবাগ, যাত্রাবাড়িস্থ সেইফ হাউজ এর যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা এবং উর্ধ্বতন অফিসারগণের পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রন সহ সরকারী আদেশ উপদেশ কার্যকরী করার কল্পে অদ্য ১৮-১০-১১ তারিখের সকাল ০৮.০০ হতে অত্র ডায়েরী পত্তন তথা খোলা হইলো। অত্র ডায়েরী থানার ডায়েরী ন্যায় অর্থাৎ চজই ৩৭৭ এবং পুলিশ আইনে ৪৪ ধারা মোতাবেক ব্যবহৃত হবে। বিশেষ করে অফিসার ফোর্স বাহির গমনে এবং স্বাীদের আইনগত সুযোগ সুবিধা ও উর্ধ্বতন অফিসারগনের তাৎনিক আদেশ কার্যকরী করা হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার মামলা বা স্বাী বা যে কোন ঘটনা এই অফিসের ইনচার্জ সাহেবকে জানাতে হবে। তিনি উর্ধ্বতন অফিসারকে জ্ঞাত করবেন। প্রয়োজনে ঘটনা বা তথ্য বিচারে সরাসরি উর্ধ্বতন অফিসারকে জ্ঞাত করবেন। অত্র অফিসের জন্য নিয়োজিত সকল ফোর্সের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির হিসাব ঝও বাকি বিল্লাহ সাহেব নিয়ন্ত্রন করবেন। সেন্ট্রাল অফিস থেকে প্রেরিত মালামালের হিসাব তথা ষ্টক রেজিষ্ট্রার ঝও কালাচাঁদ বাবু রনাবেন করবেন। সংশ্লিষ্ট ০২জন ঝও সাহেব অফিস চালুর যাবতীয় অসমাপ্ত কার্য সমূহ তরান্বিত করে আগামী ২৬-১০-১১ তারিখে সর্ব্বত উপযোগী করে তুলবেন। তারা আমার মাধ্যমে বা সরাসরি ইন্স: ওবায়েদুল্লাহ সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকল প্রকার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন। ”
সেফ হাউজে কে কি দায়িত্ব পালন করবেন সে বিষয়ক ১৫/১১/১১ তারিখের আরেকটি ডায়েরি নোট এখানে তুলে ধরা হল । “আমি (আমজাদ হোসেন) ইনচার্জ সেইফ হাউজ গোলাপবাগ এই মর্মে নোট করিতেছি যে, অত্র সেইফ হাউজের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার-ষ্টাফদের মধ্যে নি¤েœ স্ব স্ব নামে পার্শ্বে দ্বায়িত্ব পালনের জন্য কার্য বন্টন করিয়া দেওয়া হইল এবং স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা বিধান করিবেন এবং আমার সাথে এবং উর্ধ্বতন অফিসারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করিবেন।
ঝও কালা চাঁদ ঘোঘ সঙ্গে ক/রবিউল
০১। স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা
০২। স্বাক্ষীদের খাবারের বাজার
০৩। বাবুর্চিদের তত্বাবধান এবং খাবার সরবরাহ
০৪। প্রধান সমন্বয়ক অফিসের সাথে যাবতীয় অর্থনৈতিক যোগযোগ ও হিসাব সংরক্ষন
ঝও আব্দুল্লাহ আল বাকী সঙ্গে ক/মাসুম
০১। স্বাক্ষীদের নিরাপত্তা
০২। রিসিভ সেকশনে ডিউটিরত ও স্বাক্ষীদের তথ্য ১টি রেজিষ্টারে রক্ষনাবেক্ষন
০৩। স্বাক্ষীদের জন্য অফিসে সংরক্ষিত মূল রেজিষ্টার রক্ষনাবেক্ষন
০৪। স্বাক্ষীদের অবস্থানে যাবতীয় ব্যবস্থা
০৫। স্বাক্ষীদের কোর্টে প্রেরণ এবং কোর্ট প্রত্যাগত স্বাক্ষীদের গ্রহন
০৬। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্তকারী অফিসার ও প্রসিকিউটরদের আপ্যায়নসহ যাবতীয় কাজ করবেন
শর্ষিণা মাদ্রাসার অধ্যক্ষও এসেছিলেন সাক্ষ্য দিতে: সেফ হাউজ ডায়েরিতে স্বরূপকাঠীর ছারছিনা দারুস সুন্নত আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. সৈয়দ মো: শরাফত আলীর নামও লেখা রয়েছে। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে তিনি সাক্ষ্য দিতে এসে এখানে উঠেছিলেন। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত সাক্ষ্য দেননি।
সেফ হাউজ ডায়েরিতে আরো যাদের আসা যাওয়ার খবর লেখা রয়েছে তারা হলেন মো: মাহবুবুল আলম হাওলাদার, মো: মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার, মো: মোস্তফা হাওলাদার, মানিক পশারী, আশিষ কুমার মন্ডল, সমর মিস্ত্রি, রুহুল আমীন নবীন, মো: আলতাফ হাওলাদার, সুলতান আহমদ।
মিজানুর রহমান তালুকদার (তার বাসা ঢাকায় তবে তিনি সেখানে সাক্ষীদের সাথে দেখা করতে এবং আলোচনার জন্য যান বলে লেখা আছে। অন্য কয়েকজন সাক্ষীর সাথে তাকেও সাক্ষী দিতে সেফ হাউজ থেকে গাড়ি যোগে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসার বিষয় লেখা রয়েছে। সেফ হাউজ ডায়েরির বেশ কয়েকটা তারিখের ঘটনায় তার নাম লেখা রয়েছে। তা থেকে সহজে ধারনা করা যায় তিনি সেখানে বেশ কয়েকদিন ছিলেন এবং প্রায়ই আসা যাওয়াও করতেন।)
আব্দুল লতিফ হাওলাদার?, মো: খলিল (৫), মো: লতিফ ও, মো: এনতাজ, মো: আইয়ুব আলী তালুকদার, মো: জলিল শেখ, বাসুদেব মিস্ত্রি, মো: সেলিম খান, মুকুন্দ চক্রবর্তী, গৌরাঙ্গ সাহা,
অনিল চন্দ্র মন্ডল, মা: বজলুর রহমান, আব্দুল হালিম বাবুল, মধুসুদন ঘোরামী,
ড. সৈয়দ মো: শরাফত আলী, পিন্সিপাল ছারছিনা দারুস সুন্নত আলীয়া মাদ্রাসা, সরুপকাঠি
মো: আব্দুর রাজ্জাক, অফিস সহকারী দারুস সুন্নত আলীয়া মাদ্রাসা, সরুপকাঠি ও
মো: সোলায়মান হোসেন বিশ্বাস, মো: জুলফিকার আলী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন