মেহেদী হাসান, ১৪/৮/২০১২, মঙ্গলবার
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে ২০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে পারবেন। সাঈদীর পক্ষে ২০ জন সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন করে দিয়ে আজ ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়েছেন।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে অইনজীবী তাজুল ইসলাম আদেশ পাশের সাথে সাথে তীব্র আপত্তি জানান ট্রাইব্যুনালে। তিনি বলেন, এ আদেশ অন্যায়। এ আদেশের ফলে ন্যায় বিচারের কবর রচনা হবে। এ ধরনের আদেশ প্রদানের পর আমাদের আর এখানে থাকার কোন অর্থ হয়না। আমাদের চলে যাওয়াই ভাল।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে ২০ জন সাক্ষী নির্ধারন করে প্রদান করা আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মাওলানা সাঈদীর পক্ষে মোট ২৮ জন সাক্ষী হাজির করেছেন। এর মধ্যে সাতজন হলেন জব্দ তালিকার সাক্ষী। একজন তদন্ত কর্মকর্তা। বাকী ২০ জন সাক্ষী হলেন ঘটনার সাক্ষী। আমরা মনে করি ন্যায় বিচারের জন্য আসামী পক্ষেও ২০ জন সাক্ষী যথেষ্ট।
আগামী ২৩ আগস্ট আসামী পক্ষকে ২০ জন সাক্ষীর তালিকা ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ২৮ আগস্ট আসামী পক্ষের সাক্ষী হাজিরের জন্য ধার্য্য করা হয়েছে।
তাজুল ইসলামের তীব্র প্রতিকৃয়া:
আদেশ পাশের সাথে সাথে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে আইনজীবী তাজুল ইসলাম ভিষন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি প্রতিবাদ করার ভাষা খুজে পাচ্ছিলেননা। এরপর তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, এ আদেশ অন্যায়। কোন আইনের বলে কিভাবে এ আদেশ আপনারা পাশ করলেন আপনারা? তার চেয়ে ভাল জাজমেন্ট দিয়ে দেন এখনই । আমাদের আর আসার দরকার নেই এখানে। ।
তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ অনেক সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছে। তারা সেসব সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। এটা তাদের ব্যর্থতা। তারা ২০ জন ঘটনার সাক্ষী হাজির করছে বলে আমাদেরও কেন ২০ জন নির্ধারন করে দেয়া হবে? তাদের ব্যর্থতার দায় আমরা কেন নেব? তাজুল ইসলাম বলেন, আপানদের এতটা যান্ত্রিক হলে চলবেনা। আপনারা এখানে ন্যায় বিচার করার জন্য বসেছেন। এ ধরনের আদেশ দিলে বিচারের কি দরকার ছিল? প্রথম দিন বলে দিতে পারতেন তোমরা চলে যাওয়। আমরা চলে যেতাম। আমাদের এখানে থাকার দরকার নেই।
তাজুল ইসলাম বলেন, সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে ২০ টি অভিযোগ আনা হয়েছে। হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মত অভিযোগ রয়েছে। আমরা সাঈদী সাহেবের পক্ষে ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছি। তার মধ্য থেকে মাত্র ২০ জন আপনারা কিভাবে নির্ধারন করে দিতে পারেন? আমরা আইন অনুযায়ী অনেক আগেই সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছি। এখন আবার কেন ২০ জন জমা দেব? এ আদেশ ন্যায় বিচারের কবর রচনা করবে। এ আদেশ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার বহির্ভূত। আইন বহির্ভূত। এ
ধরনের আদেশ পাশের এখতিয়ার আইনে নেই। এ ধরনের আদেশ দিলে আমাদের এখান থেকে চলে যেতে হবে।
এসময় ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আপনারা ১০ হাজার সাক্ষীর তালিকা জমা দেবেন আর আমরা তা মেনে নেব?
তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের ১০ হাজার সাক্ষীর তালিকা জমা দেয়ার এখতিয়ার আছে। আপনারা সাক্ষী হাজিরের সময় যদি মনে করতেন এত সাক্ষীর দরকার নেই তখন ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু আগেই কেন এবং কোন আইনের বলে আমাদের সাক্ষীর সংখ্যা আপনারা নির্ধারন করে দিলেন? আপনারা কিভাবে বুঝলেন ২০ সাক্ষীই যথেষ্ট আসামীর জন্য? তাছাড়া সাঈদীর সাহেবের পক্ষে আমরা ১০ হাজার সাক্ষীর তালিকা দেইনি। দিয়েছি মাত্র ৪৮ জন।
তাজুল ইসলাম বলেন, এভাবে সাক্ষী নির্ধারন করে আদেশ দিলে তা দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপক্ষ আনবে যে কয়জন আমাদেরও ততজন আনতে হবে ভবিষ্যতে।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আমাদের ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস রাখেন। ধৈর্য্য ধরেন। আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেননা। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর জেরায় আমরা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আপনাদের প্রয়োজনে সময় বাড়িয়ে দেইনি? দিয়েছি। এখানেও প্রয়োজন হলে আমরা দেখব বিবেচনা করে।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমি আপনাদের অনুরোধ করছি আজ এ আদেশ স্থগিত রাখেন। এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হবে। আপনারা প্রায়ই বলেন আমরা বাইরে গিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেই। আমাদেরকে বাইরে গিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দিয়েননা। আমি অনুরোধ করছি আদেশটি আজ দিয়েননা। আমাদের ওপর এভাবে গিলোটিন প্রয়োগ করবেননা। মন্ত্রীরা বলছেন আসামী পক্ষে সাক্ষী দিতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে দালাল আইনে মামলা হবে। এখন তো আমরা আর কোন সাক্ষীই পাবনা।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বলেন, আদেশ যা দিয়েছি তা বহাল থাকবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য তাদের অনুপস্থিতিতে জবানবন্দী হিসেবে গ্রহণ করেছেন আপনারা। কাজেই তাদের ঘটনার সাক্ষী ২০জন এটাও ঠিক নয়।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, এটি পরে বিবেচনা করব আমরা।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক ছাড়া অপর দুই সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক এবং বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আসামীকে তার পক্ষে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আসমী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের শেষে নির্ধারণ করলেও তার তীব্র আপত্তি জানান তাজুল ইসলাম। তাজুল ইসলাম দাবি জানান আসামী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের পূর্বে তাকে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হোক। এ নিয়েও ট্রাইব্যুনালে তীব্র বাক্য বিনিময় চলে।
ট্রাইব্যুনাল বলেন বিচার চলা অবস্থায় অভিযুক্তর ব্যাখ্যা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে আইনে । তাই আমরা বিচার চলা অবস্থায় আসামী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তার বক্তব্য নেব। এটি নির্ধারনের অধিকার আমাদের রয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার চলাঅবস্থায় মানে আসামী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের শেষে বলা হয়নি। শেষে গ্রহণ করলে তার একটা কারন থাকতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শেষে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ আদেশ আসামীকে জবাই করার শামিল। ন্যায় বিচারের কবর রচনার শামিল। আমাদের এখন চলে গেলেই সবচেয়ে ভাল হয়। এ আদেশ একটি ভুল আদেশ। খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২১ জন সাক্ষীর তালিকা দিয়েছিল আমাদের আসামীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ৬৮ জন ছিল ঘটনার সাক্ষী। তাদের জবানবন্দী ছিল। আমরা তার বিপরীতে মাত্র ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছি। সেখান থেকেও আমাদের জন্য ২০ জন নির্ধারন করে দেয়া হল।
আজ মাওলানা সাঈদীর সাথে জেলখানায় তার আইনজীবীদের সাক্ষাতের তারিখ নির্ধারণ নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। তাজুল ইসলাম এবং ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিনকে জেল খানায় সাক্ষাতের জন্য ২১ আগস্ট নির্ধারন করেন ট্রাইব্যুনাল।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা ঈদের সময় বাড়ি যাব। ২৪ তারিখ দেন আমাদের জন্য।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, এ ধরনের সাক্ষাৎ করতে হয় কোর্ট বন্ধ থাকা অবস্থায়। হয় ২১ তারিখ নিতে হবে না হয় ২১ তারিখের আগে যেকোন তারিখে দেখা করতে হবে।
তাজুল ইসলাম এবং ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন বলেন, অন্য সময়ের বন্ধ এবং ঈদের সময়ের বন্ধের মধ্যে পার্থক্য আছে। মানুষ ঈদের সময় বন্ধে বাড়ি যায়। কাজেই এ বন্ধের সময় দেখা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা কি বাড়িতে যাবনা? ঈদের পর দিন বাড়ি থেকে এসে দেখা করা কি সম্ভব? এটা মানবিক নয়। এ নিয়ে বিতর্কের এক পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বলেন ২১ তারিখ অথবা তার আগে না নিলে আবেদন বাতিল হবে। তখন তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের তাহলে এ আদেশ দরকার নেই। আমরা দেখা করবনা। কারণ আমরা ঈদের বন্ধে বাড়ি যাব।
এরপর ট্রাইব্যুনাল ২৩ তারিখ দেখা করার জন্য নির্ধারন করেন।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে ২০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে পারবেন। সাঈদীর পক্ষে ২০ জন সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারন করে দিয়ে আজ ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়েছেন।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে অইনজীবী তাজুল ইসলাম আদেশ পাশের সাথে সাথে তীব্র আপত্তি জানান ট্রাইব্যুনালে। তিনি বলেন, এ আদেশ অন্যায়। এ আদেশের ফলে ন্যায় বিচারের কবর রচনা হবে। এ ধরনের আদেশ প্রদানের পর আমাদের আর এখানে থাকার কোন অর্থ হয়না। আমাদের চলে যাওয়াই ভাল।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে ২০ জন সাক্ষী নির্ধারন করে প্রদান করা আদেশে ট্রাইব্যুনাল বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ মাওলানা সাঈদীর পক্ষে মোট ২৮ জন সাক্ষী হাজির করেছেন। এর মধ্যে সাতজন হলেন জব্দ তালিকার সাক্ষী। একজন তদন্ত কর্মকর্তা। বাকী ২০ জন সাক্ষী হলেন ঘটনার সাক্ষী। আমরা মনে করি ন্যায় বিচারের জন্য আসামী পক্ষেও ২০ জন সাক্ষী যথেষ্ট।
আগামী ২৩ আগস্ট আসামী পক্ষকে ২০ জন সাক্ষীর তালিকা ট্রাইব্যুনালে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ২৮ আগস্ট আসামী পক্ষের সাক্ষী হাজিরের জন্য ধার্য্য করা হয়েছে।
তাজুল ইসলামের তীব্র প্রতিকৃয়া:
আদেশ পাশের সাথে সাথে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে আইনজীবী তাজুল ইসলাম ভিষন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি প্রতিবাদ করার ভাষা খুজে পাচ্ছিলেননা। এরপর তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে বলেন, এ আদেশ অন্যায়। কোন আইনের বলে কিভাবে এ আদেশ আপনারা পাশ করলেন আপনারা? তার চেয়ে ভাল জাজমেন্ট দিয়ে দেন এখনই । আমাদের আর আসার দরকার নেই এখানে। ।
তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ অনেক সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছে। তারা সেসব সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। এটা তাদের ব্যর্থতা। তারা ২০ জন ঘটনার সাক্ষী হাজির করছে বলে আমাদেরও কেন ২০ জন নির্ধারন করে দেয়া হবে? তাদের ব্যর্থতার দায় আমরা কেন নেব? তাজুল ইসলাম বলেন, আপানদের এতটা যান্ত্রিক হলে চলবেনা। আপনারা এখানে ন্যায় বিচার করার জন্য বসেছেন। এ ধরনের আদেশ দিলে বিচারের কি দরকার ছিল? প্রথম দিন বলে দিতে পারতেন তোমরা চলে যাওয়। আমরা চলে যেতাম। আমাদের এখানে থাকার দরকার নেই।
তাজুল ইসলাম বলেন, সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে ২০ টি অভিযোগ আনা হয়েছে। হত্যা, ধর্ষন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মত অভিযোগ রয়েছে। আমরা সাঈদী সাহেবের পক্ষে ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছি। তার মধ্য থেকে মাত্র ২০ জন আপনারা কিভাবে নির্ধারন করে দিতে পারেন? আমরা আইন অনুযায়ী অনেক আগেই সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছি। এখন আবার কেন ২০ জন জমা দেব? এ আদেশ ন্যায় বিচারের কবর রচনা করবে। এ আদেশ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার বহির্ভূত। আইন বহির্ভূত। এ
ধরনের আদেশ পাশের এখতিয়ার আইনে নেই। এ ধরনের আদেশ দিলে আমাদের এখান থেকে চলে যেতে হবে।
এসময় ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আপনারা ১০ হাজার সাক্ষীর তালিকা জমা দেবেন আর আমরা তা মেনে নেব?
তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের ১০ হাজার সাক্ষীর তালিকা জমা দেয়ার এখতিয়ার আছে। আপনারা সাক্ষী হাজিরের সময় যদি মনে করতেন এত সাক্ষীর দরকার নেই তখন ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু আগেই কেন এবং কোন আইনের বলে আমাদের সাক্ষীর সংখ্যা আপনারা নির্ধারন করে দিলেন? আপনারা কিভাবে বুঝলেন ২০ সাক্ষীই যথেষ্ট আসামীর জন্য? তাছাড়া সাঈদীর সাহেবের পক্ষে আমরা ১০ হাজার সাক্ষীর তালিকা দেইনি। দিয়েছি মাত্র ৪৮ জন।
তাজুল ইসলাম বলেন, এভাবে সাক্ষী নির্ধারন করে আদেশ দিলে তা দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপক্ষ আনবে যে কয়জন আমাদেরও ততজন আনতে হবে ভবিষ্যতে।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আমাদের ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস রাখেন। ধৈর্য্য ধরেন। আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেননা। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর জেরায় আমরা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আপনাদের প্রয়োজনে সময় বাড়িয়ে দেইনি? দিয়েছি। এখানেও প্রয়োজন হলে আমরা দেখব বিবেচনা করে।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমি আপনাদের অনুরোধ করছি আজ এ আদেশ স্থগিত রাখেন। এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হবে। আপনারা প্রায়ই বলেন আমরা বাইরে গিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেই। আমাদেরকে বাইরে গিয়ে ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দিয়েননা। আমি অনুরোধ করছি আদেশটি আজ দিয়েননা। আমাদের ওপর এভাবে গিলোটিন প্রয়োগ করবেননা। মন্ত্রীরা বলছেন আসামী পক্ষে সাক্ষী দিতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে দালাল আইনে মামলা হবে। এখন তো আমরা আর কোন সাক্ষীই পাবনা।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বলেন, আদেশ যা দিয়েছি তা বহাল থাকবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য তাদের অনুপস্থিতিতে জবানবন্দী হিসেবে গ্রহণ করেছেন আপনারা। কাজেই তাদের ঘটনার সাক্ষী ২০জন এটাও ঠিক নয়।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, এটি পরে বিবেচনা করব আমরা।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক ছাড়া অপর দুই সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক এবং বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আসামীকে তার পক্ষে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আসমী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের শেষে নির্ধারণ করলেও তার তীব্র আপত্তি জানান তাজুল ইসলাম। তাজুল ইসলাম দাবি জানান আসামী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের পূর্বে তাকে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হোক। এ নিয়েও ট্রাইব্যুনালে তীব্র বাক্য বিনিময় চলে।
ট্রাইব্যুনাল বলেন বিচার চলা অবস্থায় অভিযুক্তর ব্যাখ্যা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে আইনে । তাই আমরা বিচার চলা অবস্থায় আসামী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তার বক্তব্য নেব। এটি নির্ধারনের অধিকার আমাদের রয়েছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বিচার চলাঅবস্থায় মানে আসামী পক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনের শেষে বলা হয়নি। শেষে গ্রহণ করলে তার একটা কারন থাকতে হবে।
ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শেষে তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ আদেশ আসামীকে জবাই করার শামিল। ন্যায় বিচারের কবর রচনার শামিল। আমাদের এখন চলে গেলেই সবচেয়ে ভাল হয়। এ আদেশ একটি ভুল আদেশ। খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। রাষ্ট্রপক্ষ মোট ১২১ জন সাক্ষীর তালিকা দিয়েছিল আমাদের আসামীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ৬৮ জন ছিল ঘটনার সাক্ষী। তাদের জবানবন্দী ছিল। আমরা তার বিপরীতে মাত্র ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছি। সেখান থেকেও আমাদের জন্য ২০ জন নির্ধারন করে দেয়া হল।
আজ মাওলানা সাঈদীর সাথে জেলখানায় তার আইনজীবীদের সাক্ষাতের তারিখ নির্ধারণ নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। তাজুল ইসলাম এবং ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিনকে জেল খানায় সাক্ষাতের জন্য ২১ আগস্ট নির্ধারন করেন ট্রাইব্যুনাল।
তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা ঈদের সময় বাড়ি যাব। ২৪ তারিখ দেন আমাদের জন্য।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, এ ধরনের সাক্ষাৎ করতে হয় কোর্ট বন্ধ থাকা অবস্থায়। হয় ২১ তারিখ নিতে হবে না হয় ২১ তারিখের আগে যেকোন তারিখে দেখা করতে হবে।
তাজুল ইসলাম এবং ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন বলেন, অন্য সময়ের বন্ধ এবং ঈদের সময়ের বন্ধের মধ্যে পার্থক্য আছে। মানুষ ঈদের সময় বন্ধে বাড়ি যায়। কাজেই এ বন্ধের সময় দেখা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা কি বাড়িতে যাবনা? ঈদের পর দিন বাড়ি থেকে এসে দেখা করা কি সম্ভব? এটা মানবিক নয়। এ নিয়ে বিতর্কের এক পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বলেন ২১ তারিখ অথবা তার আগে না নিলে আবেদন বাতিল হবে। তখন তাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের তাহলে এ আদেশ দরকার নেই। আমরা দেখা করবনা। কারণ আমরা ঈদের বন্ধে বাড়ি যাব।
এরপর ট্রাইব্যুনাল ২৩ তারিখ দেখা করার জন্য নির্ধারন করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন