মেহেদী হাসান
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে অপহরনের শিকার সুখরঞ্জন বালী বলেছেন, আমার ভাইকে হত্যার সময় সাঈদী সাহেব ছিলেন বলে কখনো শুনিনাই। মিলিটারি এবং দেশীয় যেসব লোক আমাদের বাড়ি থেকে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায় সেদিন সাঈদী সাহেব সেখানে ছিলেননা, তাকে দেখিনাই।
রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও সাক্ষ্য দিতে না আসা প্রসঙ্গে সুখরঞ্জন বালী বলেছেন, মামলার বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার আমাকে বলতে বলে সাঈদী সাহেব ছিল এই কথা বলবা। আমাকে দিয়া তারা মিথ্যা কথা বলানোর জন্য চেষ্টা করছে । তাতে রাজি না হওয়ায় আমারে তারা আনেনাই। আমিও হেদিকে যাই নাই ।
ঢাকায় আসার পর অপহরনের একদিন পূর্বে দৈনিক নয়া দিগন্তের সাথে সাক্ষাৎকারে সুখরঞ্জন বালী উপরোক্ত কথা বলেন। রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার বিনিময়ে তাকে একটি বাড়ি একটি খামার এবং নগদ অর্থও দিতে চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন সুখরঞ্জন বালী।
১৯৭১ সালে পিরোজপুরে উমেদপুরে বিশাবালী নামে এক ব্যক্তিকে নারকেল গাছের সাথে বেঁধে মাওলানা সাঈদীর নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ আনা হয়েছে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে। সেই বিশাবালীর ছোট ভাই সুখরঞ্জন বালীকে সাক্ষী করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। তবে তিনি রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে সাক্ষ্য দিতে না এসে মাওলানা সাঈদীপর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন গত পাঁচ নভেম্বর। সেদিন তাকে গোয়েন্দা পুলিশ অপহরন করে নিয়ে যায় ট্রাইব্যুালের গেট থেকে।
বিশাবালী নিহত হওয়া বিষয়ে সুখরঞ্জন বালী বলেন, ১৯৭১ সালের জৈষ্ঠ্য মাসের মাঝামাঝি সময় হবে। আমার ভাই বিশাবালী অসুস্থ ছিলেন । ঘটনার দিন মিলিটারি আসার খবর এবং চিৎকার টের পেয়ে আমি আমার মাকে নিয়ে বাড়ির পাশে বাগানে যাই। আমার অসুস্থ ভাই ঘরে থাকে। ১৫/১৬ জন মিলিটারি আসে। তাদের সাথে রাজ্জাক, সেকেন্দার শিকদার, দানেশ মোল্লা, গনি গাজি, মোসলেম মওলানা, মোহসিন ও মোমিন ও মুন্সি এরা ছিল । সাঈদী সাহেব ছিলেন না। তারে আমরা ভালোভাবেই চিনি। তার শ্বশুরের কাপড়ের দোকান ছিল পাড়েরহাটে। সে কারনে তার সাথে আমাদের পরিচয় ছিল। ঘটনার দিন তিনি থাকলে আমরা চিনতাম। তিনি ছিলেন না, তারে আমরা দেখি নাই।
সুখরঞ্জন বালী বলেন, মিলিটারি এবং তাদের সাথে থাকা দেশী মানুষ আমাদের ঘরে উইড্যা আমার অসুস্থ ভাই বিশাবালীকে ঘর থেকে নামাইয়া রাইফেলের কোন্দা দিয়া পিডায়। পিডাইয়া তারে বাইন্দা ছাইন্দা নিয়া যায়। পরদিন সকাল বেলা শুনি পিরোজপুর বলেশ্বর নদীর পাড়ে নিয়া আমার ভাই ও হোগলাবুনিয়ার যে ৫/৬ জন লোক ধরছে তাদেরকে একত্র করিয়া বলেশ্বর নদীর ঘাটে নিয়া গুল্লি কইরা হত্যা করছে। আমার ভাইকে হত্যার সময় সাঈদী সাহেব ছিলেন বলে কখনো শুনিনাই।
রাষ্ট্রপক্ষের তালিকাভুক্ত সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও আপনি তাদের পক্ষে কেন সাক্ষ্য দিতে আসলেননা সে প্রশ্নের জবাবে সুখরঞ্জন বালী জানান, আসি নাই কারন আমি সত্য সাক্ষী দিতে চাই। কিন্তু তারা আমারে বলতে বলে সাঈদী সাহেব ছিল এই কথা বলবা। আমাকে দিয়া তারা মিথ্যা কথা বলানোর জন্য চেষ্টা করছে । আমি বলছি, না আমি বলতে পারবো না। আমি মিথ্যা কথা বলবো না। যারে আমি দেহি নাই তার নামে কিভাবে মিথ্যা বলব। এজন্য আমি হেদিকে যাই নাই। এদিকে আমারে আনছে। তারা আমারে আনে নাই।
রাষ্ট্রপক্ষের কথামত সাক্ষ্য দিতে চাপ সৃষ্টি প্রসঙ্গে সুখরঞ্জন বালী বলেন, ট্রাইব্যুনালের পক্ষে লোক গেছিলো আমার বাড়িতে। তখন মাহবুব (মামলার বাদী) আমার বাড়িতে যাইয়া বলে তুমি সাক্ষী দিতে যাবা একটু পাড়ের হাট। আমি বলছি, ঠিক আছে আমি যা জানি সেই সত্য কথাই বলব। সে বলে, ঠিক আছে যাবা আমার সাথে এহন চলো। হেরপর, আমারে নিয়া পাড়েরহাট রাজলক্ষী স্কুলের দোতলায় বইস্যা আমার সাক্ষী নেয়া শুরু করছে। আমি যেডুক জানি আমার ভাই সমন্ধে তা বলি। আমার ভাইরে কে মারছে এই কথা আমি বলা শুরু করছি । আমি বলি অমুক অমুক ছিল, তখন মাহবুব বলে যে, না ঐসব বাদ দিয়ে তুমি সাঈদীর কথা বলবা। আমি বলছি আমি পারবনা। তখন আমার পেট পাছাইয়া চিমটি মারে, আমার পিঠে আঙুল দিয়া গুতা মারে মানিক (মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী এবং পিরোজপুরে দায়ের করা মামলার বাদী) ও মাহবুব।
এসময় ঢাকা থেকে যাওয়া এক লোক বলে , মাহবুব সাহেব আপনি যে সাক্ষী আনছেন, এই সাক্ষীতে আপনার সর্বনাশ হইয়া যাইতেছে, আপনার সাক্ষী হয় না। এরপর ঐখান দিয়া মাহবুব আর মানিক আমারে উঠাইয়া দেয়। আমি চইল্লা আসি ।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে গত মার্চ মাসে ট্রাইব্যুালে অভিযোগ করা হয়েছে আপনিসহ আরো অনেক সাক্ষীকে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হুমকি ধামকি দিয়েছে। সে কারনে আপনি চার মাস ধরে নিখোঁজ। তারা আপনাকে খুঁজে পাচ্ছেনা এবং ট্রাইব্যুনালেও হাজির করতে পারছেনা। এ প্রশ্নের জবাবে সুখরঞ্জন বালী বলেন, কোনদিন আমার সাথে হেদের কেউ দেখাও করে নাই, হুমকি ধামকিও দেয় নাই। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যে মাহবুব আর মানিক হেরা আমারে হুমকি ধামকি করতেছে। আমাকে আর একদিন বলছে তোমারে একটি বাড়ি একটি খামার দেব আর দেড় লাখ টাকা দেব, তুমি সাঈদী সাহেবের নামের কথা বলবা। আমি বলছি না, আমার মরা ভাইকে আমি বেচতে আমি স্বিকার নাই। আমি মিথ্যা কথা কইতাম না। যারে না দেখছি আমি কেউর নামের কথা বলতে পারব না।
সাঈদী সাহেবের লোকজন কর্তৃক ভয়ভীতি দেখানো এবং আপনার নিখোঁজ হওয়া বিষয়ে আপনার মেয়ে একটি জিডি করেছে বলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ প্রশ্নের জবাবে সুখরঞ্জন বালী বলেন, আমি রাজি না হওয়ায় মাহবুব আর মানিক আমারে লোকজন দিয়া রগকাটার হুমকি দিছে। ওরা বাড়িতে যাইয়া গালাগালি করছে।
হেরপর একদিন আমার সাথে দেখার পরে বলে তুমি একটি বাড়ি একটি খামার নিবা নাইলে তুমি এই দেশে থাকতে পারবা না। তারপরে আমি বাড়ি থেকে চইল্লা গেছি। চইল্লা যাওয়ার পরে আমার মেয়ে, মেয়েরে এসে হুমকি ধামকি দিছে, তোর বাবার নামে তুই গুম কেস করবি। । আমার মেয়ে বলছে, আমার বাবার নামে গুম কেস করা লাগবে না। আমার স্ত্রী বলছে, হেয় যেখানে থাকুক না কেন আমাগো সাথে কথা বার্তা চলে, আমরা কারো নামে গুম কেস করতে পারব না। শেষ মেষ বলে জোর করে আমার মেয়েকে ১০০০/- এক হাজার
টাকা দিয়া একটা সাদা কাগজে সই নিছে। তারপর ঐ সই করা কাগজ দিয়া তারা কি করছে না করছে তা আমি বলতে পারব না।
বিশাবালী হত্যা বিষয়ে অভিযোগ : মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যে ২০ টি অভিযোগে বিচার চলছে তার মধ্যে একটি হল তার নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে বিশাবালী নামে একজনকে নারকেল গাছের সাথে বেঁধে হত্যা করা হয়। এ অভিযোগ বিষয়ে মামলার বাদী এবং প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম গত বছর ৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দী প্রদানের সময় বলেন,
২ জুন সকাল বেলা আমি নিজ বাড়িতে ছিলাম। লোকদের কাছ থেকে জানতে পারি অনুমান সকাল ১০টায় পারের হাটের শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী দানশ আলী মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মোমিন হাওলাদার, হাকিম কাজী, হাবিবুর রহমান মুন্সী পাক হানাদার বাহিনী সঙ্গে নিয় উমেদপুর গ্রামে আমার বাড়ির নিকটস্থ হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ চালিয়েছে। ২৫/৩০টি ঘর লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বিশাবালী অসুস্থ থাকায় তাকে ধরে ফেলে এবং একটি নারিকেল গাছের সাথে বেঁেধ মারমিট করে। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নির্দেশক্রমে বলে যে, ওটাকে যখন পেয়েছি ওটাকে গুলি কর। জনৈক রাজাকার গুলি করে বিশাবালীকে হত্যা করে।
মাওলানা সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে অপহরনের শিকার সুখরঞ্জন বালী বলেছেন, আমার ভাইকে হত্যার সময় সাঈদী সাহেব ছিলেন বলে কখনো শুনিনাই। মিলিটারি এবং দেশীয় যেসব লোক আমাদের বাড়ি থেকে আমার ভাইকে ধরে নিয়ে যায় সেদিন সাঈদী সাহেব সেখানে ছিলেননা, তাকে দেখিনাই।
রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও সাক্ষ্য দিতে না আসা প্রসঙ্গে সুখরঞ্জন বালী বলেছেন, মামলার বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার আমাকে বলতে বলে সাঈদী সাহেব ছিল এই কথা বলবা। আমাকে দিয়া তারা মিথ্যা কথা বলানোর জন্য চেষ্টা করছে । তাতে রাজি না হওয়ায় আমারে তারা আনেনাই। আমিও হেদিকে যাই নাই ।
ঢাকায় আসার পর অপহরনের একদিন পূর্বে দৈনিক নয়া দিগন্তের সাথে সাক্ষাৎকারে সুখরঞ্জন বালী উপরোক্ত কথা বলেন। রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার বিনিময়ে তাকে একটি বাড়ি একটি খামার এবং নগদ অর্থও দিতে চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন সুখরঞ্জন বালী।
১৯৭১ সালে পিরোজপুরে উমেদপুরে বিশাবালী নামে এক ব্যক্তিকে নারকেল গাছের সাথে বেঁধে মাওলানা সাঈদীর নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ আনা হয়েছে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে। সেই বিশাবালীর ছোট ভাই সুখরঞ্জন বালীকে সাক্ষী করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। তবে তিনি রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে সাক্ষ্য দিতে না এসে মাওলানা সাঈদীপর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন গত পাঁচ নভেম্বর। সেদিন তাকে গোয়েন্দা পুলিশ অপহরন করে নিয়ে যায় ট্রাইব্যুালের গেট থেকে।
বিশাবালী নিহত হওয়া বিষয়ে সুখরঞ্জন বালী বলেন, ১৯৭১ সালের জৈষ্ঠ্য মাসের মাঝামাঝি সময় হবে। আমার ভাই বিশাবালী অসুস্থ ছিলেন । ঘটনার দিন মিলিটারি আসার খবর এবং চিৎকার টের পেয়ে আমি আমার মাকে নিয়ে বাড়ির পাশে বাগানে যাই। আমার অসুস্থ ভাই ঘরে থাকে। ১৫/১৬ জন মিলিটারি আসে। তাদের সাথে রাজ্জাক, সেকেন্দার শিকদার, দানেশ মোল্লা, গনি গাজি, মোসলেম মওলানা, মোহসিন ও মোমিন ও মুন্সি এরা ছিল । সাঈদী সাহেব ছিলেন না। তারে আমরা ভালোভাবেই চিনি। তার শ্বশুরের কাপড়ের দোকান ছিল পাড়েরহাটে। সে কারনে তার সাথে আমাদের পরিচয় ছিল। ঘটনার দিন তিনি থাকলে আমরা চিনতাম। তিনি ছিলেন না, তারে আমরা দেখি নাই।
সুখরঞ্জন বালী বলেন, মিলিটারি এবং তাদের সাথে থাকা দেশী মানুষ আমাদের ঘরে উইড্যা আমার অসুস্থ ভাই বিশাবালীকে ঘর থেকে নামাইয়া রাইফেলের কোন্দা দিয়া পিডায়। পিডাইয়া তারে বাইন্দা ছাইন্দা নিয়া যায়। পরদিন সকাল বেলা শুনি পিরোজপুর বলেশ্বর নদীর পাড়ে নিয়া আমার ভাই ও হোগলাবুনিয়ার যে ৫/৬ জন লোক ধরছে তাদেরকে একত্র করিয়া বলেশ্বর নদীর ঘাটে নিয়া গুল্লি কইরা হত্যা করছে। আমার ভাইকে হত্যার সময় সাঈদী সাহেব ছিলেন বলে কখনো শুনিনাই।
রাষ্ট্রপক্ষের তালিকাভুক্ত সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও আপনি তাদের পক্ষে কেন সাক্ষ্য দিতে আসলেননা সে প্রশ্নের জবাবে সুখরঞ্জন বালী জানান, আসি নাই কারন আমি সত্য সাক্ষী দিতে চাই। কিন্তু তারা আমারে বলতে বলে সাঈদী সাহেব ছিল এই কথা বলবা। আমাকে দিয়া তারা মিথ্যা কথা বলানোর জন্য চেষ্টা করছে । আমি বলছি, না আমি বলতে পারবো না। আমি মিথ্যা কথা বলবো না। যারে আমি দেহি নাই তার নামে কিভাবে মিথ্যা বলব। এজন্য আমি হেদিকে যাই নাই। এদিকে আমারে আনছে। তারা আমারে আনে নাই।
রাষ্ট্রপক্ষের কথামত সাক্ষ্য দিতে চাপ সৃষ্টি প্রসঙ্গে সুখরঞ্জন বালী বলেন, ট্রাইব্যুনালের পক্ষে লোক গেছিলো আমার বাড়িতে। তখন মাহবুব (মামলার বাদী) আমার বাড়িতে যাইয়া বলে তুমি সাক্ষী দিতে যাবা একটু পাড়ের হাট। আমি বলছি, ঠিক আছে আমি যা জানি সেই সত্য কথাই বলব। সে বলে, ঠিক আছে যাবা আমার সাথে এহন চলো। হেরপর, আমারে নিয়া পাড়েরহাট রাজলক্ষী স্কুলের দোতলায় বইস্যা আমার সাক্ষী নেয়া শুরু করছে। আমি যেডুক জানি আমার ভাই সমন্ধে তা বলি। আমার ভাইরে কে মারছে এই কথা আমি বলা শুরু করছি । আমি বলি অমুক অমুক ছিল, তখন মাহবুব বলে যে, না ঐসব বাদ দিয়ে তুমি সাঈদীর কথা বলবা। আমি বলছি আমি পারবনা। তখন আমার পেট পাছাইয়া চিমটি মারে, আমার পিঠে আঙুল দিয়া গুতা মারে মানিক (মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী এবং পিরোজপুরে দায়ের করা মামলার বাদী) ও মাহবুব।
এসময় ঢাকা থেকে যাওয়া এক লোক বলে , মাহবুব সাহেব আপনি যে সাক্ষী আনছেন, এই সাক্ষীতে আপনার সর্বনাশ হইয়া যাইতেছে, আপনার সাক্ষী হয় না। এরপর ঐখান দিয়া মাহবুব আর মানিক আমারে উঠাইয়া দেয়। আমি চইল্লা আসি ।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে গত মার্চ মাসে ট্রাইব্যুালে অভিযোগ করা হয়েছে আপনিসহ আরো অনেক সাক্ষীকে মাওলানা সাঈদীর পক্ষে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হুমকি ধামকি দিয়েছে। সে কারনে আপনি চার মাস ধরে নিখোঁজ। তারা আপনাকে খুঁজে পাচ্ছেনা এবং ট্রাইব্যুনালেও হাজির করতে পারছেনা। এ প্রশ্নের জবাবে সুখরঞ্জন বালী বলেন, কোনদিন আমার সাথে হেদের কেউ দেখাও করে নাই, হুমকি ধামকিও দেয় নাই। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যে মাহবুব আর মানিক হেরা আমারে হুমকি ধামকি করতেছে। আমাকে আর একদিন বলছে তোমারে একটি বাড়ি একটি খামার দেব আর দেড় লাখ টাকা দেব, তুমি সাঈদী সাহেবের নামের কথা বলবা। আমি বলছি না, আমার মরা ভাইকে আমি বেচতে আমি স্বিকার নাই। আমি মিথ্যা কথা কইতাম না। যারে না দেখছি আমি কেউর নামের কথা বলতে পারব না।
সাঈদী সাহেবের লোকজন কর্তৃক ভয়ভীতি দেখানো এবং আপনার নিখোঁজ হওয়া বিষয়ে আপনার মেয়ে একটি জিডি করেছে বলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ প্রশ্নের জবাবে সুখরঞ্জন বালী বলেন, আমি রাজি না হওয়ায় মাহবুব আর মানিক আমারে লোকজন দিয়া রগকাটার হুমকি দিছে। ওরা বাড়িতে যাইয়া গালাগালি করছে।
হেরপর একদিন আমার সাথে দেখার পরে বলে তুমি একটি বাড়ি একটি খামার নিবা নাইলে তুমি এই দেশে থাকতে পারবা না। তারপরে আমি বাড়ি থেকে চইল্লা গেছি। চইল্লা যাওয়ার পরে আমার মেয়ে, মেয়েরে এসে হুমকি ধামকি দিছে, তোর বাবার নামে তুই গুম কেস করবি। । আমার মেয়ে বলছে, আমার বাবার নামে গুম কেস করা লাগবে না। আমার স্ত্রী বলছে, হেয় যেখানে থাকুক না কেন আমাগো সাথে কথা বার্তা চলে, আমরা কারো নামে গুম কেস করতে পারব না। শেষ মেষ বলে জোর করে আমার মেয়েকে ১০০০/- এক হাজার
টাকা দিয়া একটা সাদা কাগজে সই নিছে। তারপর ঐ সই করা কাগজ দিয়া তারা কি করছে না করছে তা আমি বলতে পারব না।
বিশাবালী হত্যা বিষয়ে অভিযোগ : মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে যে ২০ টি অভিযোগে বিচার চলছে তার মধ্যে একটি হল তার নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে বিশাবালী নামে একজনকে নারকেল গাছের সাথে বেঁধে হত্যা করা হয়। এ অভিযোগ বিষয়ে মামলার বাদী এবং প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম গত বছর ৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দী প্রদানের সময় বলেন,
২ জুন সকাল বেলা আমি নিজ বাড়িতে ছিলাম। লোকদের কাছ থেকে জানতে পারি অনুমান সকাল ১০টায় পারের হাটের শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী দানশ আলী মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মোমিন হাওলাদার, হাকিম কাজী, হাবিবুর রহমান মুন্সী পাক হানাদার বাহিনী সঙ্গে নিয় উমেদপুর গ্রামে আমার বাড়ির নিকটস্থ হিন্দু পাড়ায় আক্রমণ চালিয়েছে। ২৫/৩০টি ঘর লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বিশাবালী অসুস্থ থাকায় তাকে ধরে ফেলে এবং একটি নারিকেল গাছের সাথে বেঁেধ মারমিট করে। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নির্দেশক্রমে বলে যে, ওটাকে যখন পেয়েছি ওটাকে গুলি কর। জনৈক রাজাকার গুলি করে বিশাবালীকে হত্যা করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন