মেহেদী হাসান, ২৩/৫/২০১২, বুধবার
মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াত নেতাদের পক্ষে প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ১৫ সাক্ষীর বিষয়ে আমরা যে অভিযোগ করেছি তদন্ত কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে তার জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীবৃন্দ) ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী উষারানী মালাকার নামে এক সাক্ষীর ব্যাপারে আজ স্বীকার করেছেন যে, প্রয়োজন হলে তিনি এসে কোর্টে সাক্ষ্য দেবেন।
এ থেকে প্রমান হয় যে, সাক্ষী হাজির করা সম্ভব নয় বলে তারা যে কারণ দেখিয়েছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযোগ করেছি তা সত্য। সাক্ষীরা আসতে চায় কিন্তু তাদের আনা হচ্ছেনা কারণ তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি হচ্ছেননা।
গত ২৯ মার্চ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে ট্রাইব্যুনাল-১। এ আদেশ বিষয়ে ডিফেন্স টিমের (আসামী পক্ষের আইনজীবীবৃন্দ) পক্ষ থেকে রিভিউি পিটিশন দায়ের করা হয়। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে ডিফেন্স টিমের পক্ষ থেকে বক্তব্য পেশ করা হয় ট্রাইব্যুনালে। গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের জবাব দেয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল এবং প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ) সৈয়দ হায়দার আলী সকালে মৌখিক জবাব দিয়েছেন।
গতকালের শুনানী শেষে ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, দুই সপ্তাহ আগে আমরা আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু আজো (বুধবার) তারা এর কোন জবাব দেয়নি। তারা মৌখিক বক্তব্য রাখার পরে কোর্ট তাদের বলেছেন, অভিযোগ বিষয়ে তারা কোন লিখিত জবাব দেবেন কি-না। তারা বলেছেন দেবেন। এজন্য আগামী মঙ্গলবার ধার্য্য করা হয়েছে তাদের লিখিত জবাব প্রদানের জন্য। আমরা কোর্টকে বলেছি লিখিত জবাব দেয়ার জন্য তাদেরকে বলা না হলে তারা লিখিত জবাব দিতনা। তারা লিখিত জবাব না দিলে আমাদের ফ্যাক্টসগুলো থেকে যেত। কোর্ট তাদের লিখিত জবাবের বিষয়ে বলে দেয়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আর তারা লাভবান হয়েছেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমরা চারজন সাক্ষীর টিভি সাক্ষাৎকারের ভিডিও কোর্টে উপস্থান করেছি প্রতিকী আকারে। প্রকৃত পক্ষে ১৫ সাক্ষীর বাকীদেরও আনা সম্ভব ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষী হাজির না করা বিষয়ে যে কারণ দেখিয়েছে তার বিরুদ্ধে আমরা এতবড় মারাত্মক অভিযোগ দিলাম আর তারা এর কোন জবাব দিলনা। এটা কি তাদের দায়িত্ব ছিলনা? তারা কোর্টে মুখস্ত বলে দিল আমাদের অভিযোগ সঠিক নয়!
এ থেকে প্রমানিত হয় আমাদের অভিযোগ সত্য। ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ফলে আমরা আদালতে ১৫ সাক্ষী বিষয়ে এসব প্রমান হাজির করতে পেরেছি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে প্রসিকিউশন কিছু মন্তব্য করেছেন। আমরা বলব তারা এ রিপোর্ট করে ভুল কিছু করেননি।
গত ২০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে তালিকাভুক্ত ৪৬ জন সাক্ষীর একটি তালিকা দিয়ে আদালতে দরখাস্ত করে বলা হয় এদের হাজির করা আদৌ সম্ভব নয়। কেন
হাজির করা সম্ভব নয় সে বিষয়ে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আবেদনে বলা হয় তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন তা সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হোক। এদের মধ্যে ১৫ জনের জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন আদালত।
(যেসব সাক্ষীদের আদালতে আদৌ হাজির করা সম্ভব নয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে দরখাস্ত দিয়ে কোর্টে বলা হযেছিল সে বিষয়ে ১২ এপ্রিল দৈনিক আমার দেশ এবং ২৭ মার্চ দৈনিক নয়া দিগন্তে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রসিকিউশনের সেফ হাউজের রেজিষ্ট্রেশন খাতার তথ্য তুলে ধরে আমার দেশে রিপোর্ট করা হয়েছে কোন সাক্ষী কতদিন তাদের হেফাজতে ছিল। অনুসন্ধানী এসব রিপোর্ট ডিফেন্স টিমের পক্ষ থেকে আদালতে রেফারেন্স হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে আবেদনের সাথে)
রাষ্ট্রপক্ষের জবাব:
সকালে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী শুনানীতে অংশ নেন। তিনি বলেন, ১৫ সাক্ষীর বিষয়ে আদেশ পাশের বিষয়ে পূর্বে আসামী পক্ষ থেকে যে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছিল এখনো প্রায় সেই একই বক্তব্য রাখা হয়েছে। দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত সাক্ষীদের সাথে কথাপোকথন বিষয়ে কোর্ট বলেছিলেন এ রিপোর্ট ছিল উচ্চমাত্রায় অবমাননার শামীল। বিচার চলাকালে কি করে একজন সাংবাদিক সাক্ষীর সাথে কথা বলে রিপোর্ট করতে পারে?
আমারা যে কারনে সাক্ষী হাজির করা সম্ভব নয় বলেছি তা এখনো বিদ্যমান। তারা বলেছে দৈনিক আমার দেশে সাক্ষীদের বিষয়ে যে রিপোর্ট ছাপা হয়েছে তার কোন প্রতিবাদ দেইনি। প্রতিবাদ দেয়া আমাদের কাজ নয়। আমরা সেদিনই বলেছিলাম এটা হওয়া উচিত নয়।
আপনারা ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করেছেন তা বিবেচনার জন্য। এখানে আইনের কোন ব্যত্যয় হয়নি।
তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের সাথে প্রতারান করেছেন এ ধরনের বক্তব্য ব্যারিস্টার রাজ্জাক সাহেবের মত সিনিয়র আইনজীবীর কাছ থেকে কাম্য নয়। এটা সম্পূর্ণ বেআইনী, অবধৈ। ওনার কাছ থেকে এটা আশা করিনি।
সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, আত্মীয়ের বাসায় যাবার কথা বলে কোন সাক্ষী যদি কোথাও চলে যায় সেখানে আমরা কি করতে পারি। এটা মুক্ত যুগ। আমরা তো তাদের বন্দী করে রাখিনি। আমরা তো বলছি তারা আমাদের এসেছিল। কিন্তু পরে চলে গেছে এটাই বাস্তব।
তারা কতদিন আমাদের কাছে ছিল, কবে চলে গেছে এসব বিষয়ে যে তথ্য দিয়েছেন তা ঠিক নয়। একটি পত্রিকার রিপোর্ট থেকে তারা এ তথ্য দিয়েছেন। অফিসিয়াল সিকরেট এ্যাক্ট তো এখনো আছে।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক : সাক্ষীরা কোথায় আছে তা তারা জানল কি করে?
সৈয়দ হায়দার আলী : এটা (আমার দেশের রিপোর্ট) সঠিক রিপোর্ট নয়।
চেয়ারম্যান: যদি রিপোর্ট সঠিক হয়?
এসময় অপর বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বলেন, আপনরা বলছেন ফেব্রুয়ারি মাসে তিন সাক্ষী নিখোঁজ হয়ে গেছে। ওনারা নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে বলছেন যে, ১৬ মার্চ তারা আপনাদের হেফাজতে ছিল।
চেয়ারম্যান: রেজিস্ট্রেশন ডায়েরি থাকল কেন? থাকলেও তারা এটা জানল কি করে?
জহির আহমেদ : উষারানী মালাকার সম্পর্কে আপনারা বললেন তিনি শয্যাশায়ী, স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়েছে। কিন্তু ওনারা যে ভিডিও দেখাল তাতে দেখা যাচ্ছে তিনি কথা বলতেছে, দেখে মনে হচ্ছে পান খাচ্ছেন।
চেয়ারম্যান: ওনারা তো বলছেন ইনভেস্টিগেশন জার্নালিজমের মাধ্যমে তারা এটা করেছে। দে এবিউজড দি ওয়ার্ড ইনভেস্টিগেশন। আপনারা বলছেন এ রিপোর্ট সঠিক নয়। তাহলে তা লিখে দেন আমাদের।
সৈয়দ হায়দার আলী: ১৫ দিন, ৪৭ দিন আমাদের হেফাজতে ছিল বলে যে কথা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়।
এ ধরনের ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্ট করা তাদের দায়িত্ব ছিল কিনা এবং এটা করার অধিকার কি তাদের আছে?
কাল যে ভিডিও দেখানো হয়েছে তা দেখেতো তাকে সুস্থ মনে হয়নি। তাছাড়া এ ভিডিও কবে কিভাবে কোথায় বসে করল?
চেয়ারম্যান : ভিডিওতে তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে এটি আমাদের অর্ডার পাস করার পর ধারন করা হয়েছে।
সৈয়দ হায়দার আলী : অবস্থার উন্নতি হলে হয়েছে।
জহির আহমেদ: আপনি বলেছিলেন স্মরন শক্তি লোপ পেয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উষারানী পান খাচ্ছে। স্মরনশক্তি লোপ পাওয়া ব্যক্তি তো পান খেতে পারেনা।
সৈয়দ হায়দার আলী: স্মরন শক্তি লোপ অনেক ধরনের হতে পারে। কেউ পেছনের স্মৃতি বলতে পারেনা। কেউ কিছু মনে রাখতে পারেনা।
আমরা তো বলছি তিনজন সাক্ষী আমাদের কাছে আসছিল। তারা চলে গেছে।
এ পর্যায়ে সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা রিভিউ করার কোন সুযোগ নেই।
বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বলেন, ১৯ (২) ধারার তিনটি অপশন আছে। সাক্ষী মৃত হতে হবে, তাকে আনা সময় সাপেক্ষ এবং আরেকটি হল ব্যয়বহুল হতে হবে।
উষারানী মালাকার মৃত নন। তাকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি চলৎশক্তিহীন নন। কথা বলছেন। পিরোজপুরে আছেন। তাকে আনা ব্যয়বহুলও নয়। এখন এ সাক্ষীর জবানবন্দী আইনের ১৯ (২) ধারায় থাকবে কি থাকবেনা বলেন।
সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, মনে হয় আপনারা ভিডিও রিপোর্ট সঠিক ধরে নিয়েছেন এবং বিশ্বাস করেছেন।
বিচারপতি জহির আহমেদ বলেন আমাদের বিশ্বাস অবিশ্বাস বিষয় নয়। আমি আপনার কাছে জবাব চাচ্ছি।
সৈয়দ হায়দার আলী : তার স্মৃতিশক্তি ফিরে এলে তো আমাদেরই লাভ।
চেয়ারম্যান : নতুন তথ্য হাজিরের পর ডিফেন্স তো সেই গ্রাউন্ডেও রিভিউ আবেদন করতে পারে।
সৈয়দ হায়দার আলী : তিনি (উষারানী মালাকার) যদি সক্ষম হন এসে সাক্ষ্য দেবেন।
একটি সরকারি অফিসের ডায়রিতে কি আছে তা বের করে এনে রিপোর্ট করা কোন ধরনের ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট?
চেয়ারম্যান : ওনারা তো গ্যালপের নিচে আছেন। ধরে নেন ওনরা চুরি করেছেন। প্রশ্ন হল সরকারি কাগজ বাইরে গেল কি করে?
জহির আহমেদ : সাক্ষীরা যে আপনাদের কাছে আসছিল সে কথাতো আসামী পক্ষের আইনজীবীরাও বলছেন। কিন্তু বিষয় হল আপনরা বলছেন তারা চলে গেছে। আপনারা খুজে পাচ্ছেননা। আর তারা বলছেন সাক্ষীরা আপনাদের হেফাজতে ছিল। খুবই মারাত্মক অভিযোগ।
চেয়ারম্যান : ওনাদের দরখাস্তে যে সংযুক্তি আছে আপনারা কি তার জবাব দেবেন? ইয়েস অর নো বলেন।
সৈয়দ হায়দার আলী : আমরা জবাব দেব।
এরপর মঙ্গলবার জবাবের জন্য ধার্য্য করা হয়।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের পাল্টা জবাব
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আপনারা যদি লিখিত জবাব দেয়ার বিষয়ে জিজ্ঞস না করতেন তাহলে তারা লিখিত জবাব দিতনা। ফলে আমাদের অভিযোগগুলো এভাবে থেকে যেত। আপনাদের এই বলে দেয়ার মাধ্যমে আমারা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। আর ওনারা লাভবান হলেন।
আমাদের অভিযোগ খুব স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট। তারা এসবের কোন জবাব দিলেননা। তারা আজ কোর্টে এসেছেন কোন জবাব তৈরি ছাড়াই।
এসময় চেয়ারম্যান বলেন, তারা মৌখিক জবাব দিয়েছেন। আপনাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। লিখিত জবাবের বিষয়ে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের অভিযোগ বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আপনারা লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। ওনারা আজ মৌখিক বলেছেন। আমারা আজ অর্ডার দেবনা। পরে অর্ডার দেব। লিখিত অর্ডারে দুই পক্ষের বক্তব্য থাকতে হবে। ওনারা আজ মুখে কি বলল তাতো আমাদের মনে থাকবেনা পরে। সেজন্য লিখিত থাকা দরকার।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমার লার্নেড ফ্রেন্ড স্বীকার করে ফেলেছেন যে, উষারানী মালাকার প্রয়োজনে এসে সাক্ষ্য দেবেন। কিন্তু ১৫ সাক্ষীর আদেশ থাকা অবস্থায় কি করে তিনি সাক্ষ্য দেবেন?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক সৈয়দ হায়দার আলীর বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, উনি মুখস্ত বলে দিলেন আমি নাকি বেআইনী কথা বলেছি। আইনসম্মত কথা বলিনি। উনি যদি বলে দিতেন আমার কোন কথাটা, কোন আইনের লঙ্ঘন এবং কোন আইন অনুযায়ী বেআইনী হয়েছে তাহলে তা আমার জন্য শিক্ষনীয় হতে পারত। কিন্তু তিনি তা বলেননি।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমি আমার কথা শুরুই করেছি ভারত, বাংলাদেশসহ তিনটি দেশের সংবিধান এর রেফারেন্স দিয়ে। এছাড়া ডিএলআর রেফারেন্স দিয়েছি। আমি সম্পূর্ণ আইন এবং যুক্তি দিয়ে কথা বলেছি। কোন রাজনৈতিক কথা বলিনি। কোর্টে আমি কোন রাজনৈতিক কথা বলিনা। আমার আরেকটি পরিচয় আছে কিন্তু আমি তা কোর্টে কোনদিন ব্যবহার করিনা। আই হেট টুৃ মেক পলিটিক্যাল সাবমিশন ইন কোর্ট। আমি আইন দিয়ে লড়াই করি কোর্টে। রাজনীতি দিয়ে নয়।
আমার বন্ধু আইনজীবীর সুবিধা হল তিনি একটা কিছু বলে দিতে পারেন কোন রেফারেন্স ছাড়া। কিন্তু আমি যখন কথা বলি তখন রেফারেন্স দিয়ে কথা বলি।
চারজন সাক্ষীর টিভি সাক্ষাৎকার দেখানো কিভাবে বেআইনী হল? অনুসন্ধানী রিপোর্ট করা কিভাবে বেআইনী? আপনারা ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারীর কথা জানেন। এ রিপোর্টের ফলে কি পরিণতি হয়েছিল। (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সনকেক পদত্যাক করতে হয়েছিল। )
এরপর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, কোর্ট না বললে আমরা লিখিত জবাব দিতামনা এটা সঠিক নয়।
মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াত নেতাদের পক্ষে প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ১৫ সাক্ষীর বিষয়ে আমরা যে অভিযোগ করেছি তদন্ত কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে তার জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীবৃন্দ) ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী উষারানী মালাকার নামে এক সাক্ষীর ব্যাপারে আজ স্বীকার করেছেন যে, প্রয়োজন হলে তিনি এসে কোর্টে সাক্ষ্য দেবেন।
এ থেকে প্রমান হয় যে, সাক্ষী হাজির করা সম্ভব নয় বলে তারা যে কারণ দেখিয়েছেন তা সম্পূর্ন মিথ্যা ছিল। তাদের বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযোগ করেছি তা সত্য। সাক্ষীরা আসতে চায় কিন্তু তাদের আনা হচ্ছেনা কারণ তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি হচ্ছেননা।
গত ২৯ মার্চ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য তাদের অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে ট্রাইব্যুনাল-১। এ আদেশ বিষয়ে ডিফেন্স টিমের (আসামী পক্ষের আইনজীবীবৃন্দ) পক্ষ থেকে রিভিউি পিটিশন দায়ের করা হয়। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে ডিফেন্স টিমের পক্ষ থেকে বক্তব্য পেশ করা হয় ট্রাইব্যুনালে। গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের জবাব দেয়ার জন্য নির্ধারিত ছিল এবং প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ) সৈয়দ হায়দার আলী সকালে মৌখিক জবাব দিয়েছেন।
গতকালের শুনানী শেষে ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, দুই সপ্তাহ আগে আমরা আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু আজো (বুধবার) তারা এর কোন জবাব দেয়নি। তারা মৌখিক বক্তব্য রাখার পরে কোর্ট তাদের বলেছেন, অভিযোগ বিষয়ে তারা কোন লিখিত জবাব দেবেন কি-না। তারা বলেছেন দেবেন। এজন্য আগামী মঙ্গলবার ধার্য্য করা হয়েছে তাদের লিখিত জবাব প্রদানের জন্য। আমরা কোর্টকে বলেছি লিখিত জবাব দেয়ার জন্য তাদেরকে বলা না হলে তারা লিখিত জবাব দিতনা। তারা লিখিত জবাব না দিলে আমাদের ফ্যাক্টসগুলো থেকে যেত। কোর্ট তাদের লিখিত জবাবের বিষয়ে বলে দেয়ায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আর তারা লাভবান হয়েছেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমরা চারজন সাক্ষীর টিভি সাক্ষাৎকারের ভিডিও কোর্টে উপস্থান করেছি প্রতিকী আকারে। প্রকৃত পক্ষে ১৫ সাক্ষীর বাকীদেরও আনা সম্ভব ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাক্ষী হাজির না করা বিষয়ে যে কারণ দেখিয়েছে তার বিরুদ্ধে আমরা এতবড় মারাত্মক অভিযোগ দিলাম আর তারা এর কোন জবাব দিলনা। এটা কি তাদের দায়িত্ব ছিলনা? তারা কোর্টে মুখস্ত বলে দিল আমাদের অভিযোগ সঠিক নয়!
এ থেকে প্রমানিত হয় আমাদের অভিযোগ সত্য। ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ফলে আমরা আদালতে ১৫ সাক্ষী বিষয়ে এসব প্রমান হাজির করতে পেরেছি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে প্রসিকিউশন কিছু মন্তব্য করেছেন। আমরা বলব তারা এ রিপোর্ট করে ভুল কিছু করেননি।
গত ২০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে তালিকাভুক্ত ৪৬ জন সাক্ষীর একটি তালিকা দিয়ে আদালতে দরখাস্ত করে বলা হয় এদের হাজির করা আদৌ সম্ভব নয়। কেন
হাজির করা সম্ভব নয় সে বিষয়ে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আবেদনে বলা হয় তারা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে জবানবন্দী দিয়েছেন তা সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হোক। এদের মধ্যে ১৫ জনের জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেন আদালত।
(যেসব সাক্ষীদের আদালতে আদৌ হাজির করা সম্ভব নয় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে দরখাস্ত দিয়ে কোর্টে বলা হযেছিল সে বিষয়ে ১২ এপ্রিল দৈনিক আমার দেশ এবং ২৭ মার্চ দৈনিক নয়া দিগন্তে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রসিকিউশনের সেফ হাউজের রেজিষ্ট্রেশন খাতার তথ্য তুলে ধরে আমার দেশে রিপোর্ট করা হয়েছে কোন সাক্ষী কতদিন তাদের হেফাজতে ছিল। অনুসন্ধানী এসব রিপোর্ট ডিফেন্স টিমের পক্ষ থেকে আদালতে রেফারেন্স হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে আবেদনের সাথে)
রাষ্ট্রপক্ষের জবাব:
সকালে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী শুনানীতে অংশ নেন। তিনি বলেন, ১৫ সাক্ষীর বিষয়ে আদেশ পাশের বিষয়ে পূর্বে আসামী পক্ষ থেকে যে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছিল এখনো প্রায় সেই একই বক্তব্য রাখা হয়েছে। দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত সাক্ষীদের সাথে কথাপোকথন বিষয়ে কোর্ট বলেছিলেন এ রিপোর্ট ছিল উচ্চমাত্রায় অবমাননার শামীল। বিচার চলাকালে কি করে একজন সাংবাদিক সাক্ষীর সাথে কথা বলে রিপোর্ট করতে পারে?
আমারা যে কারনে সাক্ষী হাজির করা সম্ভব নয় বলেছি তা এখনো বিদ্যমান। তারা বলেছে দৈনিক আমার দেশে সাক্ষীদের বিষয়ে যে রিপোর্ট ছাপা হয়েছে তার কোন প্রতিবাদ দেইনি। প্রতিবাদ দেয়া আমাদের কাজ নয়। আমরা সেদিনই বলেছিলাম এটা হওয়া উচিত নয়।
আপনারা ১৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করেছেন তা বিবেচনার জন্য। এখানে আইনের কোন ব্যত্যয় হয়নি।
তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের সাথে প্রতারান করেছেন এ ধরনের বক্তব্য ব্যারিস্টার রাজ্জাক সাহেবের মত সিনিয়র আইনজীবীর কাছ থেকে কাম্য নয়। এটা সম্পূর্ণ বেআইনী, অবধৈ। ওনার কাছ থেকে এটা আশা করিনি।
সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, আত্মীয়ের বাসায় যাবার কথা বলে কোন সাক্ষী যদি কোথাও চলে যায় সেখানে আমরা কি করতে পারি। এটা মুক্ত যুগ। আমরা তো তাদের বন্দী করে রাখিনি। আমরা তো বলছি তারা আমাদের এসেছিল। কিন্তু পরে চলে গেছে এটাই বাস্তব।
তারা কতদিন আমাদের কাছে ছিল, কবে চলে গেছে এসব বিষয়ে যে তথ্য দিয়েছেন তা ঠিক নয়। একটি পত্রিকার রিপোর্ট থেকে তারা এ তথ্য দিয়েছেন। অফিসিয়াল সিকরেট এ্যাক্ট তো এখনো আছে।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক : সাক্ষীরা কোথায় আছে তা তারা জানল কি করে?
সৈয়দ হায়দার আলী : এটা (আমার দেশের রিপোর্ট) সঠিক রিপোর্ট নয়।
চেয়ারম্যান: যদি রিপোর্ট সঠিক হয়?
এসময় অপর বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বলেন, আপনরা বলছেন ফেব্রুয়ারি মাসে তিন সাক্ষী নিখোঁজ হয়ে গেছে। ওনারা নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে বলছেন যে, ১৬ মার্চ তারা আপনাদের হেফাজতে ছিল।
চেয়ারম্যান: রেজিস্ট্রেশন ডায়েরি থাকল কেন? থাকলেও তারা এটা জানল কি করে?
জহির আহমেদ : উষারানী মালাকার সম্পর্কে আপনারা বললেন তিনি শয্যাশায়ী, স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়েছে। কিন্তু ওনারা যে ভিডিও দেখাল তাতে দেখা যাচ্ছে তিনি কথা বলতেছে, দেখে মনে হচ্ছে পান খাচ্ছেন।
চেয়ারম্যান: ওনারা তো বলছেন ইনভেস্টিগেশন জার্নালিজমের মাধ্যমে তারা এটা করেছে। দে এবিউজড দি ওয়ার্ড ইনভেস্টিগেশন। আপনারা বলছেন এ রিপোর্ট সঠিক নয়। তাহলে তা লিখে দেন আমাদের।
সৈয়দ হায়দার আলী: ১৫ দিন, ৪৭ দিন আমাদের হেফাজতে ছিল বলে যে কথা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়।
এ ধরনের ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্ট করা তাদের দায়িত্ব ছিল কিনা এবং এটা করার অধিকার কি তাদের আছে?
কাল যে ভিডিও দেখানো হয়েছে তা দেখেতো তাকে সুস্থ মনে হয়নি। তাছাড়া এ ভিডিও কবে কিভাবে কোথায় বসে করল?
চেয়ারম্যান : ভিডিওতে তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে এটি আমাদের অর্ডার পাস করার পর ধারন করা হয়েছে।
সৈয়দ হায়দার আলী : অবস্থার উন্নতি হলে হয়েছে।
জহির আহমেদ: আপনি বলেছিলেন স্মরন শক্তি লোপ পেয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উষারানী পান খাচ্ছে। স্মরনশক্তি লোপ পাওয়া ব্যক্তি তো পান খেতে পারেনা।
সৈয়দ হায়দার আলী: স্মরন শক্তি লোপ অনেক ধরনের হতে পারে। কেউ পেছনের স্মৃতি বলতে পারেনা। কেউ কিছু মনে রাখতে পারেনা।
আমরা তো বলছি তিনজন সাক্ষী আমাদের কাছে আসছিল। তারা চলে গেছে।
এ পর্যায়ে সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দী সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা রিভিউ করার কোন সুযোগ নেই।
বিচারপতি একেএম জহির আহমেদ বলেন, ১৯ (২) ধারার তিনটি অপশন আছে। সাক্ষী মৃত হতে হবে, তাকে আনা সময় সাপেক্ষ এবং আরেকটি হল ব্যয়বহুল হতে হবে।
উষারানী মালাকার মৃত নন। তাকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি চলৎশক্তিহীন নন। কথা বলছেন। পিরোজপুরে আছেন। তাকে আনা ব্যয়বহুলও নয়। এখন এ সাক্ষীর জবানবন্দী আইনের ১৯ (২) ধারায় থাকবে কি থাকবেনা বলেন।
সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, মনে হয় আপনারা ভিডিও রিপোর্ট সঠিক ধরে নিয়েছেন এবং বিশ্বাস করেছেন।
বিচারপতি জহির আহমেদ বলেন আমাদের বিশ্বাস অবিশ্বাস বিষয় নয়। আমি আপনার কাছে জবাব চাচ্ছি।
সৈয়দ হায়দার আলী : তার স্মৃতিশক্তি ফিরে এলে তো আমাদেরই লাভ।
চেয়ারম্যান : নতুন তথ্য হাজিরের পর ডিফেন্স তো সেই গ্রাউন্ডেও রিভিউ আবেদন করতে পারে।
সৈয়দ হায়দার আলী : তিনি (উষারানী মালাকার) যদি সক্ষম হন এসে সাক্ষ্য দেবেন।
একটি সরকারি অফিসের ডায়রিতে কি আছে তা বের করে এনে রিপোর্ট করা কোন ধরনের ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট?
চেয়ারম্যান : ওনারা তো গ্যালপের নিচে আছেন। ধরে নেন ওনরা চুরি করেছেন। প্রশ্ন হল সরকারি কাগজ বাইরে গেল কি করে?
জহির আহমেদ : সাক্ষীরা যে আপনাদের কাছে আসছিল সে কথাতো আসামী পক্ষের আইনজীবীরাও বলছেন। কিন্তু বিষয় হল আপনরা বলছেন তারা চলে গেছে। আপনারা খুজে পাচ্ছেননা। আর তারা বলছেন সাক্ষীরা আপনাদের হেফাজতে ছিল। খুবই মারাত্মক অভিযোগ।
চেয়ারম্যান : ওনাদের দরখাস্তে যে সংযুক্তি আছে আপনারা কি তার জবাব দেবেন? ইয়েস অর নো বলেন।
সৈয়দ হায়দার আলী : আমরা জবাব দেব।
এরপর মঙ্গলবার জবাবের জন্য ধার্য্য করা হয়।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের পাল্টা জবাব
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আপনারা যদি লিখিত জবাব দেয়ার বিষয়ে জিজ্ঞস না করতেন তাহলে তারা লিখিত জবাব দিতনা। ফলে আমাদের অভিযোগগুলো এভাবে থেকে যেত। আপনাদের এই বলে দেয়ার মাধ্যমে আমারা ক্ষতিগ্রস্ত হলাম। আর ওনারা লাভবান হলেন।
আমাদের অভিযোগ খুব স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট। তারা এসবের কোন জবাব দিলেননা। তারা আজ কোর্টে এসেছেন কোন জবাব তৈরি ছাড়াই।
এসময় চেয়ারম্যান বলেন, তারা মৌখিক জবাব দিয়েছেন। আপনাদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। লিখিত জবাবের বিষয়ে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের অভিযোগ বিষয়ে বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আপনারা লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। ওনারা আজ মৌখিক বলেছেন। আমারা আজ অর্ডার দেবনা। পরে অর্ডার দেব। লিখিত অর্ডারে দুই পক্ষের বক্তব্য থাকতে হবে। ওনারা আজ মুখে কি বলল তাতো আমাদের মনে থাকবেনা পরে। সেজন্য লিখিত থাকা দরকার।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমার লার্নেড ফ্রেন্ড স্বীকার করে ফেলেছেন যে, উষারানী মালাকার প্রয়োজনে এসে সাক্ষ্য দেবেন। কিন্তু ১৫ সাক্ষীর আদেশ থাকা অবস্থায় কি করে তিনি সাক্ষ্য দেবেন?
ব্যারিস্টার রাজ্জাক সৈয়দ হায়দার আলীর বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, উনি মুখস্ত বলে দিলেন আমি নাকি বেআইনী কথা বলেছি। আইনসম্মত কথা বলিনি। উনি যদি বলে দিতেন আমার কোন কথাটা, কোন আইনের লঙ্ঘন এবং কোন আইন অনুযায়ী বেআইনী হয়েছে তাহলে তা আমার জন্য শিক্ষনীয় হতে পারত। কিন্তু তিনি তা বলেননি।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, আমি আমার কথা শুরুই করেছি ভারত, বাংলাদেশসহ তিনটি দেশের সংবিধান এর রেফারেন্স দিয়ে। এছাড়া ডিএলআর রেফারেন্স দিয়েছি। আমি সম্পূর্ণ আইন এবং যুক্তি দিয়ে কথা বলেছি। কোন রাজনৈতিক কথা বলিনি। কোর্টে আমি কোন রাজনৈতিক কথা বলিনা। আমার আরেকটি পরিচয় আছে কিন্তু আমি তা কোর্টে কোনদিন ব্যবহার করিনা। আই হেট টুৃ মেক পলিটিক্যাল সাবমিশন ইন কোর্ট। আমি আইন দিয়ে লড়াই করি কোর্টে। রাজনীতি দিয়ে নয়।
আমার বন্ধু আইনজীবীর সুবিধা হল তিনি একটা কিছু বলে দিতে পারেন কোন রেফারেন্স ছাড়া। কিন্তু আমি যখন কথা বলি তখন রেফারেন্স দিয়ে কথা বলি।
চারজন সাক্ষীর টিভি সাক্ষাৎকার দেখানো কিভাবে বেআইনী হল? অনুসন্ধানী রিপোর্ট করা কিভাবে বেআইনী? আপনারা ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারীর কথা জানেন। এ রিপোর্টের ফলে কি পরিণতি হয়েছিল। (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সনকেক পদত্যাক করতে হয়েছিল। )
এরপর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, কোর্ট না বললে আমরা লিখিত জবাব দিতামনা এটা সঠিক নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন