মেহেদী হাসান, ৩/৭/২০১২
সাক্ষী মুনতাসির মামুন জেরায় বলেছেন তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বিষয়ে কোন গবেষনা করেননি। মুনতাসির মামুন অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার সময় বলেছিলেন তার গবেষনার বিষয় হল তৎকালীন পূর্ববঙ্গ, বর্তমান বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতি, রাজনীতি, নগরায়ন এবং বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ।
অধ্যাপক গোলাম আযমের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম তার গবেষনার এ বিষয়গুলো উল্লেখ করে প্রশ্ন করেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি এসব বিষয়ের বাইরে?
জবাবে মুনতাসির মামুন বলেন, না বাইরে নয়।
আজ মুনতাসির মামুনকে দিনব্যাপী জেরা করেন আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। জেরায় মুনতাসির মামুন একের পর এক অসংখ্য প্রশ্নের জবাব দেন ‘বই দেখে’, ‘কাগজ পত্র না দেখে বলতে পারবনা’ বলে। তখন এক পর্যায়ে মিজানুল ইসলাম আদালতের কাছে আবেদন করেন ওনাকে বই দেয়া হোক। উনি বই দেখে উত্তর দিক। কারণ আমার বিশ্বাস উনি প্রশ্নের উত্তর জানা সত্ত্বেও গোপন করছেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল এ আবেদন গ্রহণ করেননি।
এদিকে সাক্ষ্য দেয়ার পরপরই মুনতাসির মামুন ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড করা তার সাক্ষের কিছু অংশ অস্বীকার করেন। প্রসঙ্গক্রমে তার সাক্ষ্যের অংশবিশেষ পড়ে শোনানো হলে তিনি বলেন, আমি একথা বলিনি। এ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘ বিতর্ক চলে আজ ।
মুনতাসির মামুনকে প্রশ্ন করা হয় চাপাইনবাবগঞ্জ মহকুমার শান্তি কমিটির প্রধানের নাম এবং তিনি কোন দলের লোক ছিলেন তা বলতে পারবেন? তিনি জবাব দেন বই না দেখে কোন কিছু বলতে পারবনা।
এরপর প্রশ্ন করা হয় চাপাইনবাবগঞ্জের শান্তি কমিটির কাউকে গোলাম আযম কোন লিখিত নির্দেশনা দিয়েছিলেন কি-না
ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে এর জবাবে লেখা হয়- বই না দেখে বলতে পারবনা।
এরপর তাকে প্রশ্ন করা হয় চাপাইনবাবগঞ্জের শান্তি কমিটির কেউ একক বা যৌথভাবে অধ্যাপক গোলাম আযমের সাথে দেখা করেছিলেন কি-না
এর জবাব ট্রাইব্যুনালে রেকর্ডে লেখা হয়- বই না দেখে কিছুই বলতে পারবনা।
এ প্রশ্নগুলো করার পর মিজানুল ইসলাম রাজশাহী বিষয়েও এসব প্রশ্ন করা শুরু করলে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আপনি কি সারা দেশের সব জেলা সম্পর্কে এ প্রশ্ন করতে চান?
অপর বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন, আমি তো বলতে চেয়েছিলাম উপজেলা ইউনিয়ন বিষয়েও এ প্রশ্ন করতে চান কিনা।
তখন মিজানুল ইসলাম বলেন, যেহেতু অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত এবং যেহেতু তার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ হত্যার সহযোগিতার অভিযোগ তাই সবজেলা বিষয়ে প্রশ্ন করাই স্বাভাবিক।
তখন বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, তার দরকার নেই। যেহেতু চপাইনবাবগঞ্জ বিষয়ে প্রশ্ন করছেন তাই এটাকে টেস্ট কেস হিসেবে ধরে নেয়া যায়। অন্য জেলা বিষয়েও এসব প্রশ্নের জবাব একই আসবে বলা যায়। তাই সব মহাকুমা বিষয়ে একসাথে একটি প্রশ্ন করে ফেলেন।
মিজানুল ইসলাম তখন প্রশ্ন করেন “অনুরূপভাবে ঐ সময় প্রত্যেক জেলা, মহাকুমার প্রধান কে ছিলেন, তারা কোন দলের লোক ছিলেন, তাদেরকে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির পক্ষ থেকে বা গোলাম আযম কোন নির্দেশনা দিয়েছিলেন কিনা, শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ বা গোলাম আযম প্রতি জেলা বা মহকুমায় গিয়েছিলেন কি-না, প্রতি জেলা বা মহাকুমার লোকজন গোলাম আযম বা শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন কি-না তাও আপনি বই না দেখে বলতে পারবেননা?”
তখন মুনতাসির মামুন বলেন, গোলাম আযম তাদের সাথে দেখা করেছিল কি-না বা জেলা মহাকুমা থেকে তারা গোলাম আযমের সাথে দেখা করেছিলেন কিনা এ প্রশ্নের জবাব আগের সাথে মিলিয়ে সব জেলার ক্ষেত্রে একই উত্তর লেখা যাবেনা।
শান্তি কমিটির কেন্দ্রের যেকোন সার্কুলার জেলায় মহাকুমায় যেতে পারে এবং জেলা মহাকুমা থেকে মান্তি কমিটির লোকজন গোলাম আযম বা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে এসে সাক্ষাৎ করতে পারে এটাই স্বাভাবিক। আর গোলাম আযম বা শান্তি কমিটির অন্যান্য লোকজনও গিয়ে তাদের সাথে দেখা করতে পারেন এটাও স্বাভাবিক। কাজেই সবগুলোর ক্ষেত্রে একই উত্তর লেখা যাবেনা।
তখন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুর হক বলেন, চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে এজাতীয় প্রশ্নের উত্তর আপনি কি দিয়েছিলেন তা একটু মিলিয়ে নেই। তখন চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো তিনি পড়ে শোনান। পড়ে শোনানো শেষ হলে মুনতাসির মামুন বলেন, শেষের তিনটি প্রশ্নের যে উত্তর লেখা হয়েছে তা আমি বলিনি।
এরপর আবারো তাকে একটি একটি করে চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রশ্ন পড়ে শোনান। তখনো মুনতাসির মামুন একই কথা বলেন। তিনি ঐকথা বলেননি বলে জবাব দেন। তখন ট্রাইব্যুনালও বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, এটি তাহলে রেকর্ড হল কি করে।
বিচারপতি নিজামুল হক এ পর্যায়ে চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রশ্ন আবারো পড়ে শোনান এবং তার উত্তর নতুন করে মুনতাসির মামুনের কাছে জানতে চান। তিনি উত্তর দিতে থাকেন। শেষের দুটি প্রশ্নের উত্তর ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে যা লেখা আছে তার থেকে তিনি ভিন্ন উত্তর দেন। বাকীগুলোর উত্তর একই থাকে।
চাপাইনবাগঞ্জের শান্তি কমিটির সভাপতিকে গোলাম আযম কোন লিখিত নির্দেশনা দিয়েছিল কি-না এবং চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে কেউ তার সাথে দেখা করেছিল কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন্দ্রের দিকনির্দেশনা মূলক সার্কলার তারা পেতেই পারে এবং তারাও শান্তি কমিটির লোক হিসেবে গোলাম আযমের সাথে দেখা করতে পারে এটাই স্বাভাবিক। এজাতীয় উত্তর দেন তিনি।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেন যে, নিয়ম হল সাক্ষী সাক্ষ্য দেয়ার পর তাতে স্বাক্ষর করবেন। সাক্ষর দেয়ার সময় তিনি যদি মনে করেন তিনি কোন কথা ভুল বলেছেন, বা তার কোন বক্তব্য সঠিকভাবে আসেনি তাহলে তিনি আপত্তি তুলতে পারেন। কোর্টও সেটি বিবেনা করবে। এটি তার অধিকার। কিন্তু যেহেতু তার নামে জেরায় প্রশ্নের জবাবে ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে ঐ কথাগুলো লেখা আছে তাই সেগুলো বাদ দেয়া যাবেনা। তিনি ঐ প্রশ্নের জবাবে ‘পরবর্তীতে একথা বলেন’ মর্মে নতুন উত্তর লিপিবদ্ধ হবে।
এ পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কোর্টের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু ট্রাইব্যুনালের এ প্রস্তাবের পক্ষে বলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের অপর আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম দাড়িয়ে বলেন, যেহেতু সাক্ষী বলছেন তিনি উক্ত কথা বলেননি তাই সেকথা বাদ দেয়া হোক এবং নতুন করে তার উত্তর লেখা হোক।
তখন ট্রাইব্যুনাল জেয়াদ আল মালুমের প্রতি বেশ উষ্মা প্রকাশ করেন।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, কোর্টের কিছু নিয়ম কানুন আছে। আমরা তার নামে যে কথা লিখেছি সেগুলোর কিহবে?। তা বাদ দেয়া যাবেনা।
অধ্যাপক গোলাম আযমের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনাল মুনতাসির মামুনকে পুনরায় প্রশ্ন করে নতুন করে উত্তর লেখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে আমাদের আপত্তি আছে এ বিষয়টি লিপিবদ্ধ করা হোক।
শেষে এভাবেই চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে শেষের দুটি প্রশ্ন ট্রাইব্যুনাল নতুন করে পড়ে শোনান এবং তিনি যে উত্তর বলেন, তা নতুন করে সংযুক্ত করা হয়। তবে পূর্বে তার যে উত্তর লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তাও বহাল রাখা হয়েছে।
মুনতাসির মামুনকে জেরা
প্রশ্ন : পুর্ববঙ্গ বঞ্চনার শীকার এর কথা বলেছেন আপনি। ৪৭ পূর্ব থেকে মোঘল আমল পর্যন্ত এ বঞ্চনা ছিল কি-না।
উত্তর : মোঘল আমল আমার গবেষনার বিষয় নয়। ৪৭ এর পরে পূর্ববঙ্গের প্রতি বঞ্চনার যে কথা আমি বলেছি তার কারণ হল পাকিস্তান রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলে সাম্য প্রতিষ্ঠা। সেটা হয়নি বলেই এটা এসেছে। বঞ্চনা পৃথবীর শুরু থেকেই ছিল। পৃথিবীর শুরু থেকেই হ্যাব এবং হ্যাব নট এর যে বঞ্চনা ছিল তা ৪৭ পরবর্তী বঞ্চনার সাথে তুলনীয় নয়।
প্রশ্ন : ৪৭ এর আগে পূর্ববঙ্গের কতজন লোক ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কমিশনড অফিসার ছিল তার কোন তথ্য আছে আপনার কাছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : অনুরূপভাবে ভারতীয় সিভিল সার্ভিস, বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে পূর্ববযেঙ্গর কতজন প্রথম শ্রেণীর অফিসার ছিল তার তথ্যও নেই আপনার কাছে।
উত্তর : নাই কারণ ওটি আমার গবেষনার বিষয় নয়।
প্রশ্ন : ৪৭ আর পূর্বে পূর্ববঙ্গে কোন পাটকল ছিল?
উত্তর : আমার জানামতে ছিলনা।
প্রশ্ন : ৪৭ পূর্বে পূর্ববঙ্গে কোন ভারী শিল্পের অস্তিত্ব ছিলনা।
উত্তর : আমার জানার বিষয় নয় এটা।
প্রশ্ন : ১৯৪৬ এর নির্বাচনে এ অঞ্চলের যারা মুসলমানদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হন তারা কেউ জামায়াতে ইসলামের ছিলনা।
উত্তর : আমার জানামতে ছিলনা।
প্রশ্ন : পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কোন সময় জামায়ত ছিলনা।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রপক্ষমতায় কখনো মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ এবং কখনো সামরিক বাহিনী ছিল।
উত্তর: মুসলিম লীগ, সামরিক বাহিনী ছিল। আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্টের অংশ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষমতায় ছিল।
প্রশ্ন : পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান য:খন হয় তখন তাতে মতবিরোধ ছিল না সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ হয়?
উত্তর : মতবিরোধ ছিল তবে যখন সংসদে তা পাশ হয় তখন সর্বসম্মতভাবেই পাশ হয় ধরে নিতে হবে।
প্রশ্ন : যে পরিষদ কর্তৃক সংবিধান প্রণীত হয় তার অন্যতম সদস্য ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : মৌলিক গণতন্ত্রের অধীনে প্রেসিডেন্ট থেকে পার্লামেন্ট সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : আইউব বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন সময় পিডিএম, কপ এবং ডাক নামে রাজনৈতিক মোর্চ গঠিত হয়েছিল।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আইউব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মিস ফাতেমা জিন্নাহ কপ এর প্রার্থী ছিলেন।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এই কপের মধ্যে আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামী দুটি দলই ছিল।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : সংসদেও এ দুটি দল সংযুক্ত বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
উত্তর : আমার জানা নেই।
প্রশ্ন : পিডিএম আওয়মী লীগ এবং জামায়াত সহযোগী দল ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : আপনার সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ কোষে আপনি বিভিন্ন বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়েছেন।
উত্তর : বিভিন্ন লেখকের লেখা মুক্তি অন্তর্ভুক্ত করেছি।
প্রশ্ন : সেখানে আপনি অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের একটি লেখা দ্বিতীয় খন্ডের ৯০-৯১ পৃষ্ঠায় গোলাম আযমের আত্মজীবনীর অংশ উদ্ধৃতি করেছেন। এবং পঞ্চম খন্ডে নির্দেশিকা চাপ্টারে ৪৯১ পৃষ্ঠায় ক্রমিকে রেফারেন্স হিসেবে এনেছেন।
উত্তর : আছে। ঠিকই আছে।
প্রশ্ন : ছয় দফায় ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের কোন প্রস্তাবনা ছিলনা।
উত্তর : ছিলনা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতেও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের কোন প্রস্তাবনা ছিলন্ া
উত্তর : ছিলনা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বচান সামরিক সরকারের এলএফও’র অধীনে হয়েছে।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এলএফও’র অধীনে নির্বাচিত পরিষদের কোন নির্দিষ্ট মেয়াদ ছিলনা।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এই পরিষদের মধ্য হতে সরকার (মন্ত্রীসভা লেখা হয়) গঠন করা হবে এ ধরনের কোন প্রস্তাবনা ছিলনা।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : এই পরিষদের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব ছিল সংবিধান প্রণয়ন করা।
উত্তর : একমত নই।
প্রশ্ন : এফএলও অনুযায়ী প্রণীত সংবিধানের সাথে রাষ্ট্রপতি একমত না হলে জাতীয় পরিষদ বাতিল হয়ে যাবে মর্মে ধ”ারা ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : জাতীয় পরিষদ কর্তৃক সুনির্দিষ্ট সময়ে সংবিধান প্রণীত না হলে জাতীয় পরিষদ বাতিল হবে মর্মে ধারা ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সংবিধান প্রণীত হবে মর্মে বেশ কয়েকটি ধারা ছিল এফএলওতে।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : আপনি বলেছেন পাকিস্তান সরকারের সাথে সহযোগী হিসেবে জামায়ত মূখ্য ভূমিকা রেখেছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিরোধী দলের মধ্যে মুসলিম লীগ, জামায়ত এবং পিডিবি কারা বেশি প্রার্থী দিয়েছিল জানা আছে?
উত্তর : কাগজ না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : এদলগুলোর মধ্যে কোন দল বেশি ভোট পায়?
উত্তর : কাগজ না দেখলে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা কত ভাগ ভোট আওয়ামী লীগ পায় জানা আছে?
উত্তর : সংখ্যাতাত্ত্বিক বিষয় কগজ না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : স্বাধীনতা ঘোষনার জন্য আওয়ামী লীগ বা বঙ্গবন্ধু সমমনা কোন দলের সাথে কোন বৈঠক করেননি।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মিরপুর থেকে জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের জহির উদ্দিন।
উত্তর : নিশ্চিত নই।
প্রশ্ন : তিনি একজন উর্দুভাষী অবাঙ্গালী
উত্তর : নিশ্চিত নই।
প্রশ্ন : তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ না দিয়ে পাকিস্তান সামরিক গোষ্ঠীকে সহায়তা করেন।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের কারনে সামরিক সরকার অনেকের সদস্যপদ বাদিল করলেও জহির উদ্দিনের পদ বহাল থাকে।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ গঠন হয়।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এর সদস্য ছিলেন।
উত্তর : হ্যা ।
প্রশ্ন : যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিল তাদের ঐ পরিষদে রাখা হয়নি।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা মিথ্যা ছিল।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন: এ মামলা মিথ্যা আখ্যায়িত করে এবং বাতিলের জন্য আন্দোলন হয় তখন তাতো জানেন?
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : এ মামলা সম্পর্কে এখন অনেকে বলেছেন মামলার অভিযোগ সত্য ছিল। তার মধ্যে বর্তমান ডেপুটি স্পীকার রয়েছেন।
উত্তর : বলতে পারেন।
প্রশ্ন : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বিষয়ে আপনি কোন গবেষনা করেছেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন ” আপনি বলেছেন আপনার গবেষনার বিষয় তৎকালীন পূর্ব বঙ্গ, বর্তমান বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং মুক্তিযুদ্ধ। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি এসব বিষয়ের বাইরে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : উপমহাদেশে বর্তমানে যেসব দল চালু আছে তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা হবেনা এই মতাদর্শের মাধ্যমে মুসলিম লীগ গঠিত হয়।
উত্তর : ঠিক।
প্রশ্ন : মুসলিম লীগ জন্মলগ্ন থেকেই নির্বাচনে মুসলমানদের জন্য আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব দাবি করেছে।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : জামায়াতে ইসলামীকে কি আপনি সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মান্ধ দল মনে করেন?
উত্তর : সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মব্যবসায়ী দল মনে করি।
প্রশ্ন : মুসলিম লীগের আনুপাতিক প্রতিনিধি বিষয়ে কংগ্রেস ঘোর বিরোধী ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : কংগ্রেস নিম্নবর্নের হিন্দুদের জন্য পৃথক আসন বরাদ্দ করলেও মুসলমানদের জন্য পৃথক আসন দাবির প্রতি কখনো সমর্থন করেনি।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : শেরেবাংলার পর যুক্তফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী হন খান আতাউর রহমান। তিনি কোন দলের?
উত্তরধ যতুটুক মনে পড়ে আওয়ামী লীগের।
প্রশ্ন : তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : শেরে বাংলার ছেলে একে ফাইজুল হক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ছিলেন।
উত্তর : স্মরনে নেই।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে তার ভূমিকা সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা নেই।
উত্তর : নাই।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরোধীতা করে জামায়ত কোন বিবৃতি দিয়েছিল কিনা?
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : জুলফিকার আলী ভুট্টো দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দিয়েছেন।
উত্তর : যতদূর মনে পড়ে কাগজে এরকম পড়েছিলাম।
প্রশ্ন : দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার ছিলেন তিনি নিজে।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের ওপর আক্রমনের পরিকল্পনা জেনারেল ইয়াহিয়া খান আগেই করে রেখেছিলেন।
উত্তর : থাকতেক পারেন।
প্রশ্ন : অপারেশন সার্চ লাইটের আগে গোলাম আযমের সাথে ভুট্টো এবং ইয়াহিয়া দেখা করেছিলেন এ মর্মে কোন খবর পড়েছেন?
উত্তর : স্মরন নেই।
প্রশ্ন : আপনার দীর্ঘ গবেষনায় এ সংক্রান্ত কোন খবর আপনার নজরে আসেনি।
উত্তর : স্মরন নেই।
প্রশ্ন : অপারেশন সার্চ লাইটে কে কে জড়িত?
উত্তর : পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
প্রশ্ন : কোন সিভিলিয়ান জড়িত ছিল?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : পাকিস্তান আর্মির নিয়ন্ত্রনে কোন বেসামরিক ব্যক্তি ছিলনা।
উত্তর : প্রভাবান্বিত করতেন।
প্রশ্ন : নিয়ন্ত্রন এবং প্রভাবান্বিত দুটি ভিন্ন শব্দ এবং ভিন্ন অর্থ।
উত্তর : আমার কাছে তাই মনে হয়।
প্রশ্ন : (শান্তি কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় ২৫ জন নেতার নাম পড়ে শোনানো হয় মুনতাসির মামুনের বই থেকে। ) এদের মধ্যে মাত্র দুজন জামায়াতের ছিলেন।
উত্তর : গোলাম আযমের বিষয়ে নিশ্চিত। অন্যদের বিষয়ে কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা। তবে তারা বিভিন্ন দলের ছিলেন।
এরপর শান্তিকমিটি বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মুনতাসির মামুন কাগজপত্র না দেখে বই না দেখে বলতে পারবনা মর্মে জবাব দেন। এর এক পর্যায়ে মিজানুল ইসলাম তাকে বই সরবরাহের প্রস্তাব করেন। এরপর চাপাইনববাগঞ্জ শান্তি কমিটি প্রসঙ্গের অবতারনা হয়।
আজ মিজানুল ইসলামকে জেরায় সহায়তা করেন অ্যডভোকেট মনজুর আহমেদ আনছারী, ব্যারিস্টার এমরান এ সিদ্দিক, শিশির মো: মনির, আবু বকর সিদ্দিক, হাসানুল বান্না সোহাগ, রায়হান উদ্দিন প্রমুখ।
সাক্ষী মুনতাসির মামুন জেরায় বলেছেন তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বিষয়ে কোন গবেষনা করেননি। মুনতাসির মামুন অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার সময় বলেছিলেন তার গবেষনার বিষয় হল তৎকালীন পূর্ববঙ্গ, বর্তমান বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতি, রাজনীতি, নগরায়ন এবং বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ।
অধ্যাপক গোলাম আযমের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম তার গবেষনার এ বিষয়গুলো উল্লেখ করে প্রশ্ন করেন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি এসব বিষয়ের বাইরে?
জবাবে মুনতাসির মামুন বলেন, না বাইরে নয়।
আজ মুনতাসির মামুনকে দিনব্যাপী জেরা করেন আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। জেরায় মুনতাসির মামুন একের পর এক অসংখ্য প্রশ্নের জবাব দেন ‘বই দেখে’, ‘কাগজ পত্র না দেখে বলতে পারবনা’ বলে। তখন এক পর্যায়ে মিজানুল ইসলাম আদালতের কাছে আবেদন করেন ওনাকে বই দেয়া হোক। উনি বই দেখে উত্তর দিক। কারণ আমার বিশ্বাস উনি প্রশ্নের উত্তর জানা সত্ত্বেও গোপন করছেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল এ আবেদন গ্রহণ করেননি।
এদিকে সাক্ষ্য দেয়ার পরপরই মুনতাসির মামুন ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড করা তার সাক্ষের কিছু অংশ অস্বীকার করেন। প্রসঙ্গক্রমে তার সাক্ষ্যের অংশবিশেষ পড়ে শোনানো হলে তিনি বলেন, আমি একথা বলিনি। এ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘ বিতর্ক চলে আজ ।
মুনতাসির মামুনকে প্রশ্ন করা হয় চাপাইনবাবগঞ্জ মহকুমার শান্তি কমিটির প্রধানের নাম এবং তিনি কোন দলের লোক ছিলেন তা বলতে পারবেন? তিনি জবাব দেন বই না দেখে কোন কিছু বলতে পারবনা।
এরপর প্রশ্ন করা হয় চাপাইনবাবগঞ্জের শান্তি কমিটির কাউকে গোলাম আযম কোন লিখিত নির্দেশনা দিয়েছিলেন কি-না
ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে এর জবাবে লেখা হয়- বই না দেখে বলতে পারবনা।
এরপর তাকে প্রশ্ন করা হয় চাপাইনবাবগঞ্জের শান্তি কমিটির কেউ একক বা যৌথভাবে অধ্যাপক গোলাম আযমের সাথে দেখা করেছিলেন কি-না
এর জবাব ট্রাইব্যুনালে রেকর্ডে লেখা হয়- বই না দেখে কিছুই বলতে পারবনা।
এ প্রশ্নগুলো করার পর মিজানুল ইসলাম রাজশাহী বিষয়েও এসব প্রশ্ন করা শুরু করলে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আপনি কি সারা দেশের সব জেলা সম্পর্কে এ প্রশ্ন করতে চান?
অপর বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন, আমি তো বলতে চেয়েছিলাম উপজেলা ইউনিয়ন বিষয়েও এ প্রশ্ন করতে চান কিনা।
তখন মিজানুল ইসলাম বলেন, যেহেতু অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত এবং যেহেতু তার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ হত্যার সহযোগিতার অভিযোগ তাই সবজেলা বিষয়ে প্রশ্ন করাই স্বাভাবিক।
তখন বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, তার দরকার নেই। যেহেতু চপাইনবাবগঞ্জ বিষয়ে প্রশ্ন করছেন তাই এটাকে টেস্ট কেস হিসেবে ধরে নেয়া যায়। অন্য জেলা বিষয়েও এসব প্রশ্নের জবাব একই আসবে বলা যায়। তাই সব মহাকুমা বিষয়ে একসাথে একটি প্রশ্ন করে ফেলেন।
মিজানুল ইসলাম তখন প্রশ্ন করেন “অনুরূপভাবে ঐ সময় প্রত্যেক জেলা, মহাকুমার প্রধান কে ছিলেন, তারা কোন দলের লোক ছিলেন, তাদেরকে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির পক্ষ থেকে বা গোলাম আযম কোন নির্দেশনা দিয়েছিলেন কিনা, শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ বা গোলাম আযম প্রতি জেলা বা মহকুমায় গিয়েছিলেন কি-না, প্রতি জেলা বা মহাকুমার লোকজন গোলাম আযম বা শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন কি-না তাও আপনি বই না দেখে বলতে পারবেননা?”
তখন মুনতাসির মামুন বলেন, গোলাম আযম তাদের সাথে দেখা করেছিল কি-না বা জেলা মহাকুমা থেকে তারা গোলাম আযমের সাথে দেখা করেছিলেন কিনা এ প্রশ্নের জবাব আগের সাথে মিলিয়ে সব জেলার ক্ষেত্রে একই উত্তর লেখা যাবেনা।
শান্তি কমিটির কেন্দ্রের যেকোন সার্কুলার জেলায় মহাকুমায় যেতে পারে এবং জেলা মহাকুমা থেকে মান্তি কমিটির লোকজন গোলাম আযম বা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে এসে সাক্ষাৎ করতে পারে এটাই স্বাভাবিক। আর গোলাম আযম বা শান্তি কমিটির অন্যান্য লোকজনও গিয়ে তাদের সাথে দেখা করতে পারেন এটাও স্বাভাবিক। কাজেই সবগুলোর ক্ষেত্রে একই উত্তর লেখা যাবেনা।
তখন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুর হক বলেন, চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে এজাতীয় প্রশ্নের উত্তর আপনি কি দিয়েছিলেন তা একটু মিলিয়ে নেই। তখন চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো তিনি পড়ে শোনান। পড়ে শোনানো শেষ হলে মুনতাসির মামুন বলেন, শেষের তিনটি প্রশ্নের যে উত্তর লেখা হয়েছে তা আমি বলিনি।
এরপর আবারো তাকে একটি একটি করে চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রশ্ন পড়ে শোনান। তখনো মুনতাসির মামুন একই কথা বলেন। তিনি ঐকথা বলেননি বলে জবাব দেন। তখন ট্রাইব্যুনালও বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। ট্রাইব্যুনাল বলেন, এটি তাহলে রেকর্ড হল কি করে।
বিচারপতি নিজামুল হক এ পর্যায়ে চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রশ্ন আবারো পড়ে শোনান এবং তার উত্তর নতুন করে মুনতাসির মামুনের কাছে জানতে চান। তিনি উত্তর দিতে থাকেন। শেষের দুটি প্রশ্নের উত্তর ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে যা লেখা আছে তার থেকে তিনি ভিন্ন উত্তর দেন। বাকীগুলোর উত্তর একই থাকে।
চাপাইনবাগঞ্জের শান্তি কমিটির সভাপতিকে গোলাম আযম কোন লিখিত নির্দেশনা দিয়েছিল কি-না এবং চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে কেউ তার সাথে দেখা করেছিল কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন্দ্রের দিকনির্দেশনা মূলক সার্কলার তারা পেতেই পারে এবং তারাও শান্তি কমিটির লোক হিসেবে গোলাম আযমের সাথে দেখা করতে পারে এটাই স্বাভাবিক। এজাতীয় উত্তর দেন তিনি।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেন যে, নিয়ম হল সাক্ষী সাক্ষ্য দেয়ার পর তাতে স্বাক্ষর করবেন। সাক্ষর দেয়ার সময় তিনি যদি মনে করেন তিনি কোন কথা ভুল বলেছেন, বা তার কোন বক্তব্য সঠিকভাবে আসেনি তাহলে তিনি আপত্তি তুলতে পারেন। কোর্টও সেটি বিবেনা করবে। এটি তার অধিকার। কিন্তু যেহেতু তার নামে জেরায় প্রশ্নের জবাবে ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে ঐ কথাগুলো লেখা আছে তাই সেগুলো বাদ দেয়া যাবেনা। তিনি ঐ প্রশ্নের জবাবে ‘পরবর্তীতে একথা বলেন’ মর্মে নতুন উত্তর লিপিবদ্ধ হবে।
এ পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কোর্টের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু ট্রাইব্যুনালের এ প্রস্তাবের পক্ষে বলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের অপর আইনজীবী জেয়াদ আল মালুম দাড়িয়ে বলেন, যেহেতু সাক্ষী বলছেন তিনি উক্ত কথা বলেননি তাই সেকথা বাদ দেয়া হোক এবং নতুন করে তার উত্তর লেখা হোক।
তখন ট্রাইব্যুনাল জেয়াদ আল মালুমের প্রতি বেশ উষ্মা প্রকাশ করেন।
বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, কোর্টের কিছু নিয়ম কানুন আছে। আমরা তার নামে যে কথা লিখেছি সেগুলোর কিহবে?। তা বাদ দেয়া যাবেনা।
অধ্যাপক গোলাম আযমের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনাল মুনতাসির মামুনকে পুনরায় প্রশ্ন করে নতুন করে উত্তর লেখার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে আমাদের আপত্তি আছে এ বিষয়টি লিপিবদ্ধ করা হোক।
শেষে এভাবেই চাপাইনবাবগঞ্জের ক্ষেত্রে শেষের দুটি প্রশ্ন ট্রাইব্যুনাল নতুন করে পড়ে শোনান এবং তিনি যে উত্তর বলেন, তা নতুন করে সংযুক্ত করা হয়। তবে পূর্বে তার যে উত্তর লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তাও বহাল রাখা হয়েছে।
মুনতাসির মামুনকে জেরা
প্রশ্ন : পুর্ববঙ্গ বঞ্চনার শীকার এর কথা বলেছেন আপনি। ৪৭ পূর্ব থেকে মোঘল আমল পর্যন্ত এ বঞ্চনা ছিল কি-না।
উত্তর : মোঘল আমল আমার গবেষনার বিষয় নয়। ৪৭ এর পরে পূর্ববঙ্গের প্রতি বঞ্চনার যে কথা আমি বলেছি তার কারণ হল পাকিস্তান রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলে সাম্য প্রতিষ্ঠা। সেটা হয়নি বলেই এটা এসেছে। বঞ্চনা পৃথবীর শুরু থেকেই ছিল। পৃথিবীর শুরু থেকেই হ্যাব এবং হ্যাব নট এর যে বঞ্চনা ছিল তা ৪৭ পরবর্তী বঞ্চনার সাথে তুলনীয় নয়।
প্রশ্ন : ৪৭ এর আগে পূর্ববঙ্গের কতজন লোক ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কমিশনড অফিসার ছিল তার কোন তথ্য আছে আপনার কাছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : অনুরূপভাবে ভারতীয় সিভিল সার্ভিস, বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে পূর্ববযেঙ্গর কতজন প্রথম শ্রেণীর অফিসার ছিল তার তথ্যও নেই আপনার কাছে।
উত্তর : নাই কারণ ওটি আমার গবেষনার বিষয় নয়।
প্রশ্ন : ৪৭ আর পূর্বে পূর্ববঙ্গে কোন পাটকল ছিল?
উত্তর : আমার জানামতে ছিলনা।
প্রশ্ন : ৪৭ পূর্বে পূর্ববঙ্গে কোন ভারী শিল্পের অস্তিত্ব ছিলনা।
উত্তর : আমার জানার বিষয় নয় এটা।
প্রশ্ন : ১৯৪৬ এর নির্বাচনে এ অঞ্চলের যারা মুসলমানদের প্রতিনিধি নির্বাচিত হন তারা কেউ জামায়াতে ইসলামের ছিলনা।
উত্তর : আমার জানামতে ছিলনা।
প্রশ্ন : পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কোন সময় জামায়ত ছিলনা।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রপক্ষমতায় কখনো মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ এবং কখনো সামরিক বাহিনী ছিল।
উত্তর: মুসলিম লীগ, সামরিক বাহিনী ছিল। আওয়ামী লীগ যুক্তফ্রন্টের অংশ হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষমতায় ছিল।
প্রশ্ন : পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান য:খন হয় তখন তাতে মতবিরোধ ছিল না সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ হয়?
উত্তর : মতবিরোধ ছিল তবে যখন সংসদে তা পাশ হয় তখন সর্বসম্মতভাবেই পাশ হয় ধরে নিতে হবে।
প্রশ্ন : যে পরিষদ কর্তৃক সংবিধান প্রণীত হয় তার অন্যতম সদস্য ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : মৌলিক গণতন্ত্রের অধীনে প্রেসিডেন্ট থেকে পার্লামেন্ট সকল নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নেয়।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : আইউব বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্ন সময় পিডিএম, কপ এবং ডাক নামে রাজনৈতিক মোর্চ গঠিত হয়েছিল।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আইউব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মিস ফাতেমা জিন্নাহ কপ এর প্রার্থী ছিলেন।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এই কপের মধ্যে আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামী দুটি দলই ছিল।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : সংসদেও এ দুটি দল সংযুক্ত বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।
উত্তর : আমার জানা নেই।
প্রশ্ন : পিডিএম আওয়মী লীগ এবং জামায়াত সহযোগী দল ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : আপনার সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ কোষে আপনি বিভিন্ন বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়েছেন।
উত্তর : বিভিন্ন লেখকের লেখা মুক্তি অন্তর্ভুক্ত করেছি।
প্রশ্ন : সেখানে আপনি অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের একটি লেখা দ্বিতীয় খন্ডের ৯০-৯১ পৃষ্ঠায় গোলাম আযমের আত্মজীবনীর অংশ উদ্ধৃতি করেছেন। এবং পঞ্চম খন্ডে নির্দেশিকা চাপ্টারে ৪৯১ পৃষ্ঠায় ক্রমিকে রেফারেন্স হিসেবে এনেছেন।
উত্তর : আছে। ঠিকই আছে।
প্রশ্ন : ছয় দফায় ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের কোন প্রস্তাবনা ছিলনা।
উত্তর : ছিলনা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতেও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের কোন প্রস্তাবনা ছিলন্ া
উত্তর : ছিলনা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বচান সামরিক সরকারের এলএফও’র অধীনে হয়েছে।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এলএফও’র অধীনে নির্বাচিত পরিষদের কোন নির্দিষ্ট মেয়াদ ছিলনা।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এই পরিষদের মধ্য হতে সরকার (মন্ত্রীসভা লেখা হয়) গঠন করা হবে এ ধরনের কোন প্রস্তাবনা ছিলনা।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : এই পরিষদের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব ছিল সংবিধান প্রণয়ন করা।
উত্তর : একমত নই।
প্রশ্ন : এফএলও অনুযায়ী প্রণীত সংবিধানের সাথে রাষ্ট্রপতি একমত না হলে জাতীয় পরিষদ বাতিল হয়ে যাবে মর্মে ধ”ারা ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : জাতীয় পরিষদ কর্তৃক সুনির্দিষ্ট সময়ে সংবিধান প্রণীত না হলে জাতীয় পরিষদ বাতিল হবে মর্মে ধারা ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে সংবিধান প্রণীত হবে মর্মে বেশ কয়েকটি ধারা ছিল এফএলওতে।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : আপনি বলেছেন পাকিস্তান সরকারের সাথে সহযোগী হিসেবে জামায়ত মূখ্য ভূমিকা রেখেছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিরোধী দলের মধ্যে মুসলিম লীগ, জামায়ত এবং পিডিবি কারা বেশি প্রার্থী দিয়েছিল জানা আছে?
উত্তর : কাগজ না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : এদলগুলোর মধ্যে কোন দল বেশি ভোট পায়?
উত্তর : কাগজ না দেখলে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের শতকরা কত ভাগ ভোট আওয়ামী লীগ পায় জানা আছে?
উত্তর : সংখ্যাতাত্ত্বিক বিষয় কগজ না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : স্বাধীনতা ঘোষনার জন্য আওয়ামী লীগ বা বঙ্গবন্ধু সমমনা কোন দলের সাথে কোন বৈঠক করেননি।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মিরপুর থেকে জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের জহির উদ্দিন।
উত্তর : নিশ্চিত নই।
প্রশ্ন : তিনি একজন উর্দুভাষী অবাঙ্গালী
উত্তর : নিশ্চিত নই।
প্রশ্ন : তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ না দিয়ে পাকিস্তান সামরিক গোষ্ঠীকে সহায়তা করেন।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের কারনে সামরিক সরকার অনেকের সদস্যপদ বাদিল করলেও জহির উদ্দিনের পদ বহাল থাকে।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ গঠন হয়।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এর সদস্য ছিলেন।
উত্তর : হ্যা ।
প্রশ্ন : যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিল তাদের ঐ পরিষদে রাখা হয়নি।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা মিথ্যা ছিল।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন: এ মামলা মিথ্যা আখ্যায়িত করে এবং বাতিলের জন্য আন্দোলন হয় তখন তাতো জানেন?
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : এ মামলা সম্পর্কে এখন অনেকে বলেছেন মামলার অভিযোগ সত্য ছিল। তার মধ্যে বর্তমান ডেপুটি স্পীকার রয়েছেন।
উত্তর : বলতে পারেন।
প্রশ্ন : আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বিষয়ে আপনি কোন গবেষনা করেছেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন ” আপনি বলেছেন আপনার গবেষনার বিষয় তৎকালীন পূর্ব বঙ্গ, বর্তমান বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং মুক্তিযুদ্ধ। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি এসব বিষয়ের বাইরে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : উপমহাদেশে বর্তমানে যেসব দল চালু আছে তার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা হবেনা এই মতাদর্শের মাধ্যমে মুসলিম লীগ গঠিত হয়।
উত্তর : ঠিক।
প্রশ্ন : মুসলিম লীগ জন্মলগ্ন থেকেই নির্বাচনে মুসলমানদের জন্য আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব দাবি করেছে।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : জামায়াতে ইসলামীকে কি আপনি সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মান্ধ দল মনে করেন?
উত্তর : সাম্প্রদায়িক এবং ধর্মব্যবসায়ী দল মনে করি।
প্রশ্ন : মুসলিম লীগের আনুপাতিক প্রতিনিধি বিষয়ে কংগ্রেস ঘোর বিরোধী ছিল।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : কংগ্রেস নিম্নবর্নের হিন্দুদের জন্য পৃথক আসন বরাদ্দ করলেও মুসলমানদের জন্য পৃথক আসন দাবির প্রতি কখনো সমর্থন করেনি।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : শেরেবাংলার পর যুক্তফ্রন্টের মুখ্যমন্ত্রী হন খান আতাউর রহমান। তিনি কোন দলের?
উত্তরধ যতুটুক মনে পড়ে আওয়ামী লীগের।
প্রশ্ন : তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
উত্তর : বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : শেরে বাংলার ছেলে একে ফাইজুল হক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ছিলেন।
উত্তর : স্মরনে নেই।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে তার ভূমিকা সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা নেই।
উত্তর : নাই।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরোধীতা করে জামায়ত কোন বিবৃতি দিয়েছিল কিনা?
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : জুলফিকার আলী ভুট্টো দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দিয়েছেন।
উত্তর : যতদূর মনে পড়ে কাগজে এরকম পড়েছিলাম।
প্রশ্ন : দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার ছিলেন তিনি নিজে।
উত্তর : কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা।
প্রশ্ন : ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের ওপর আক্রমনের পরিকল্পনা জেনারেল ইয়াহিয়া খান আগেই করে রেখেছিলেন।
উত্তর : থাকতেক পারেন।
প্রশ্ন : অপারেশন সার্চ লাইটের আগে গোলাম আযমের সাথে ভুট্টো এবং ইয়াহিয়া দেখা করেছিলেন এ মর্মে কোন খবর পড়েছেন?
উত্তর : স্মরন নেই।
প্রশ্ন : আপনার দীর্ঘ গবেষনায় এ সংক্রান্ত কোন খবর আপনার নজরে আসেনি।
উত্তর : স্মরন নেই।
প্রশ্ন : অপারেশন সার্চ লাইটে কে কে জড়িত?
উত্তর : পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
প্রশ্ন : কোন সিভিলিয়ান জড়িত ছিল?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : পাকিস্তান আর্মির নিয়ন্ত্রনে কোন বেসামরিক ব্যক্তি ছিলনা।
উত্তর : প্রভাবান্বিত করতেন।
প্রশ্ন : নিয়ন্ত্রন এবং প্রভাবান্বিত দুটি ভিন্ন শব্দ এবং ভিন্ন অর্থ।
উত্তর : আমার কাছে তাই মনে হয়।
প্রশ্ন : (শান্তি কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় ২৫ জন নেতার নাম পড়ে শোনানো হয় মুনতাসির মামুনের বই থেকে। ) এদের মধ্যে মাত্র দুজন জামায়াতের ছিলেন।
উত্তর : গোলাম আযমের বিষয়ে নিশ্চিত। অন্যদের বিষয়ে কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবনা। তবে তারা বিভিন্ন দলের ছিলেন।
এরপর শান্তিকমিটি বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মুনতাসির মামুন কাগজপত্র না দেখে বই না দেখে বলতে পারবনা মর্মে জবাব দেন। এর এক পর্যায়ে মিজানুল ইসলাম তাকে বই সরবরাহের প্রস্তাব করেন। এরপর চাপাইনববাগঞ্জ শান্তি কমিটি প্রসঙ্গের অবতারনা হয়।
আজ মিজানুল ইসলামকে জেরায় সহায়তা করেন অ্যডভোকেট মনজুর আহমেদ আনছারী, ব্যারিস্টার এমরান এ সিদ্দিক, শিশির মো: মনির, আবু বকর সিদ্দিক, হাসানুল বান্না সোহাগ, রায়হান উদ্দিন প্রমুখ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন