১৯/১১/২০১২
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী আজ চতুর্থ সেশনের মত তার পিতার পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (১)। সেনাশাসনামলে কিভাবে গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রন আরোপ করা হয় সে বিষয়ে তিনি তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে বর্ননা করেন গতকালের সাক্ষ্যে ।
হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের সেনা শাসনামলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং রেডিও বাংলাদেশে নিযুক্ত ছিলেন একজন কনিষ্ঠ সেনা অফিসার হিসেবে। তখন কিভাবে খবরসহ সকল প্রচারিত বিষয়সমূহ নজরদারি করা হত সে বিষয়ে তিনি তার সাক্ষ্যে তুলে ধরেন।
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, সেনা শাসনামলে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সকল সরকারি বেসরকারি ইলেট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রন আরোপ করা হয়।
কোন অবস্থাতেই যাতে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে কোন কিছু প্রচারিত বা প্রকাশিত হতে না পারে সে বিষয়ে কঠোরভাবে নজরদারি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সামরিক সরকারের স্বার্থের পরিপন্থী কোন সংবাদ প্রচার বা প্রকাশ করে জনসাধারনের মধ্যে যাতে কোন গণমাধ্যম বিদ্বেষ ছড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়। ১৯৭১ সালেও সামরিক সরকার গণমাধ্যমের ওপর বিধি নিষেধ আরোপের মাধ্যমে কঠোর নিয়ন্ত্রন আরোপ করেছিল। সেই নিয়ন্ত্রনের আলোকে ১৯৮২-৮৩ সালে আমি বিটিভি এবং রেডিও বাংলাদেশে আমার দায়িত্ব পালনকালে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রনের কাজ সম্পাদন করেছি। তখন আমি সেকেন্ড লে:/লে: হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। একজন কনিষ্ঠ অফিসার হিসেবে এসব কর্মকান্ড আমি আমার সুপিরিয়র অফিসার বা কমান্ডারের সরাসরি নির্দেশে সম্পাদন করি।
কিভাবে খবরসহ যাবতীয় বিষয়াদি নজরদারি করা হত সে বিষয়ে তিনি বাস্তব উদাহরন পেশ করে বলেন, তখন বিটিভিতে কোন লাইভ অনুষ্ঠান হলে সেখানে বসে থাকা হত যাতে সরকার বিরোধী কোন বক্তব্য না আসে সেটি নিশ্চিত করার জন্য। খবরসহ সকল বিনোদন, নাটক প্রভৃতির সকল স্ক্রিপ্ট প্রচারের আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তিনি পড়ে দিতেন যাতে তাতে সরকারের বিরুদ্ধে কোন কিছু না থাকে। দৈনিক যেসব অনুষ্ঠান প্রচার হত তা আগেই তার মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে নিতে হতে প্রগ্রাম অফিসারকে। আব্দুল্লাহিল আমান জানান কোন কিছুতে তার কোন ধরনের সংশয় হলে তিনি তা তার সুপিরিয়র অফিসার বা কমান্ডারকে জানাতেন। স্পর্শকাতর কোন বিষয় অনুমোদন সাপেক্ষে প্রচার করা হলে নিয়ন্ত্রন কক্ষে তাকে বসে থাকতে হত।
এরপর তিনি ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ৪৭ পরবর্তী প্রতিবেশি বিভিন্ন স্বাধীন রাজ্য এবং দেশের প্রতি ভারতের মনোভাবের কিছু কিছু বিবরন দেন তিনি। এছাড়া ১৯৭১ সালে ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্ক বিষয়ে তুলে ধরতে চাইলে তাতে রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি তোলেন। শেষে ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত দেন এ বিষয়ে বলা যাবেনা কারণ অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত। আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, ১৯৭১ পরবর্তী কিছু বিষয় তুলে ধরা এ কারনে প্রয়োজন যে, অভিযুক্ত যে কারনে ১৯৭১ সালে ভারতকে বিশ্বাস করতে পারেননি এবং পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন তা জাস্টিফাইড করার জন্য। চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন আপনারা তা আর্গুমেন্টের সময় আইনজীবীর মাধ্যমে বলতে পারবেন।
এরপর আজকের মত বিচার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
এদিকে সকালের সেশনে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলামের যুক্তি উপস্থাপন অব্যাহত ছিল।
আব্দুল্লাহিল আমান বলেন, ভারত বিভক্ত হোক তা কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ কখনোই চাননি। এদেশে বৃটিশ রাজের সমাপ্তি লগ্নে কংগ্রেস, ভারতের নেতৃবৃন্দ সমগ্র ভারত বর্ষকে তাদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে চেয়েছিলেন এটা ঐতিহাসিক সত্য। যেহেতু তৎকালীন পূর্ব বাংলা বর্তমান বাংলাদেশের মুসলামনারা বুঝতে পেরেছিল যে, ভারত বর্ষ ভাগ না হলে তাদেরকে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের প্রজা হিসেবে থাকতে হবে সেজন্য অধিকাংশ মুসলমানদের ভোটে মুসলমনাদের জন্য আলাদা আবাসভূমির অনুমোদন দেয় বৃটিশ সরকার। দেশ বিভাগের পরপরই ভারত তার সম্প্রসারনবাদী মনোভাবের বহিপ্রকাশ ঘটায় গোয়া, মানভাদর এবং হায়দ্রাবাদ দখলের মাধ্যমে। পন্ডিত জওয়াহারলাল নেহেরু বলেছিলেন যখন এবং যেভাবে প্রয়োজন মনে করব হায়দ্রাবাদ দখল করব। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার উইনস্টন চার্চিল তার এ বক্তব্যকে দাম্ভিক আখ্যায়িত করে ১৯৪৮ সালের ৩০ জুলাই হাউজ অব কমনস-এ বলেছিলেন “পন্ডিত নেহেরুর এই আগ্রাসী বক্তব্য হিটলার কর্তৃক অস্ট্রিয়া দখলের পূর্বে যেরূপ উক্তি করেছিল সেরূপ। ”
আযমী বলেন, ১৯৪৮ সালে কায়েদে আযমের মৃত্যুর পরপরই ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত হায়দ্রাবাদ দখল করে। হায়দ্রাবাদ তখন স্বাধীন দেশ ছিল, নিজস্ব পতাকা ছিল। কিন্তু তারপরও ভারতের এই সম্প্রসারনবাদ থেমে থাকেনি। ভারতীয় বুদ্ধিজীবী নিরোদ চৌধুরী বলেছেন “১৯৪৭-১৯৫০ পর্যন্ত সময়ে ভারত তিনবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান দখলের পরিকল্পনা করেছিল। ” এ ধরনের অসংখ্য বর্ননা ইতিহাসে রয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী আজ চতুর্থ সেশনের মত তার পিতার পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (১)। সেনাশাসনামলে কিভাবে গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রন আরোপ করা হয় সে বিষয়ে তিনি তার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে বর্ননা করেন গতকালের সাক্ষ্যে ।
হুসাইন মুহম্মদ এরশাদের সেনা শাসনামলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং রেডিও বাংলাদেশে নিযুক্ত ছিলেন একজন কনিষ্ঠ সেনা অফিসার হিসেবে। তখন কিভাবে খবরসহ সকল প্রচারিত বিষয়সমূহ নজরদারি করা হত সে বিষয়ে তিনি তার সাক্ষ্যে তুলে ধরেন।
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, সেনা শাসনামলে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সকল সরকারি বেসরকারি ইলেট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রন আরোপ করা হয়।
কোন অবস্থাতেই যাতে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে কোন কিছু প্রচারিত বা প্রকাশিত হতে না পারে সে বিষয়ে কঠোরভাবে নজরদারি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সামরিক সরকারের স্বার্থের পরিপন্থী কোন সংবাদ প্রচার বা প্রকাশ করে জনসাধারনের মধ্যে যাতে কোন গণমাধ্যম বিদ্বেষ ছড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়। ১৯৭১ সালেও সামরিক সরকার গণমাধ্যমের ওপর বিধি নিষেধ আরোপের মাধ্যমে কঠোর নিয়ন্ত্রন আরোপ করেছিল। সেই নিয়ন্ত্রনের আলোকে ১৯৮২-৮৩ সালে আমি বিটিভি এবং রেডিও বাংলাদেশে আমার দায়িত্ব পালনকালে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রনের কাজ সম্পাদন করেছি। তখন আমি সেকেন্ড লে:/লে: হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। একজন কনিষ্ঠ অফিসার হিসেবে এসব কর্মকান্ড আমি আমার সুপিরিয়র অফিসার বা কমান্ডারের সরাসরি নির্দেশে সম্পাদন করি।
কিভাবে খবরসহ যাবতীয় বিষয়াদি নজরদারি করা হত সে বিষয়ে তিনি বাস্তব উদাহরন পেশ করে বলেন, তখন বিটিভিতে কোন লাইভ অনুষ্ঠান হলে সেখানে বসে থাকা হত যাতে সরকার বিরোধী কোন বক্তব্য না আসে সেটি নিশ্চিত করার জন্য। খবরসহ সকল বিনোদন, নাটক প্রভৃতির সকল স্ক্রিপ্ট প্রচারের আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তিনি পড়ে দিতেন যাতে তাতে সরকারের বিরুদ্ধে কোন কিছু না থাকে। দৈনিক যেসব অনুষ্ঠান প্রচার হত তা আগেই তার মাধ্যমে অনুমোদন করিয়ে নিতে হতে প্রগ্রাম অফিসারকে। আব্দুল্লাহিল আমান জানান কোন কিছুতে তার কোন ধরনের সংশয় হলে তিনি তা তার সুপিরিয়র অফিসার বা কমান্ডারকে জানাতেন। স্পর্শকাতর কোন বিষয় অনুমোদন সাপেক্ষে প্রচার করা হলে নিয়ন্ত্রন কক্ষে তাকে বসে থাকতে হত।
এরপর তিনি ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ৪৭ পরবর্তী প্রতিবেশি বিভিন্ন স্বাধীন রাজ্য এবং দেশের প্রতি ভারতের মনোভাবের কিছু কিছু বিবরন দেন তিনি। এছাড়া ১৯৭১ সালে ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্ক বিষয়ে তুলে ধরতে চাইলে তাতে রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি তোলেন। শেষে ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত দেন এ বিষয়ে বলা যাবেনা কারণ অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত। আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, ১৯৭১ পরবর্তী কিছু বিষয় তুলে ধরা এ কারনে প্রয়োজন যে, অভিযুক্ত যে কারনে ১৯৭১ সালে ভারতকে বিশ্বাস করতে পারেননি এবং পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন তা জাস্টিফাইড করার জন্য। চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন আপনারা তা আর্গুমেন্টের সময় আইনজীবীর মাধ্যমে বলতে পারবেন।
এরপর আজকের মত বিচার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
এদিকে সকালের সেশনে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলামের যুক্তি উপস্থাপন অব্যাহত ছিল।
আব্দুল্লাহিল আমান বলেন, ভারত বিভক্ত হোক তা কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ কখনোই চাননি। এদেশে বৃটিশ রাজের সমাপ্তি লগ্নে কংগ্রেস, ভারতের নেতৃবৃন্দ সমগ্র ভারত বর্ষকে তাদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে চেয়েছিলেন এটা ঐতিহাসিক সত্য। যেহেতু তৎকালীন পূর্ব বাংলা বর্তমান বাংলাদেশের মুসলামনারা বুঝতে পেরেছিল যে, ভারত বর্ষ ভাগ না হলে তাদেরকে কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের প্রজা হিসেবে থাকতে হবে সেজন্য অধিকাংশ মুসলমানদের ভোটে মুসলমনাদের জন্য আলাদা আবাসভূমির অনুমোদন দেয় বৃটিশ সরকার। দেশ বিভাগের পরপরই ভারত তার সম্প্রসারনবাদী মনোভাবের বহিপ্রকাশ ঘটায় গোয়া, মানভাদর এবং হায়দ্রাবাদ দখলের মাধ্যমে। পন্ডিত জওয়াহারলাল নেহেরু বলেছিলেন যখন এবং যেভাবে প্রয়োজন মনে করব হায়দ্রাবাদ দখল করব। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার উইনস্টন চার্চিল তার এ বক্তব্যকে দাম্ভিক আখ্যায়িত করে ১৯৪৮ সালের ৩০ জুলাই হাউজ অব কমনস-এ বলেছিলেন “পন্ডিত নেহেরুর এই আগ্রাসী বক্তব্য হিটলার কর্তৃক অস্ট্রিয়া দখলের পূর্বে যেরূপ উক্তি করেছিল সেরূপ। ”
আযমী বলেন, ১৯৪৮ সালে কায়েদে আযমের মৃত্যুর পরপরই ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত হায়দ্রাবাদ দখল করে। হায়দ্রাবাদ তখন স্বাধীন দেশ ছিল, নিজস্ব পতাকা ছিল। কিন্তু তারপরও ভারতের এই সম্প্রসারনবাদ থেমে থাকেনি। ভারতীয় বুদ্ধিজীবী নিরোদ চৌধুরী বলেছেন “১৯৪৭-১৯৫০ পর্যন্ত সময়ে ভারত তিনবার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান দখলের পরিকল্পনা করেছিল। ” এ ধরনের অসংখ্য বর্ননা ইতিহাসে রয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন