মেহেদী হাসান, ৪/১/২০১২
নবম সাক্ষী আলতাফ হাওলাদারকে জেরার সময় মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী পারেরহাট এলাকার দুই তিনজন রাজাকারের নাম বলতে বলেন সাক্ষীকে । সাক্ষী ‘মনে পড়েনা’ বলে জবাব দেন। এমনকি পারেরহাট রাজকার কমান্ডার কে ছিলেন তাও বলতে পারেননি।
আদালতে জবানবন্দী প্রদানের সময় মাওলানা সাঈদীসহ অন্যান্য অনেক রাজাকার, শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং পাক আর্মি পারেরহাট বাজারে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে বলে সাক্ষ্য দেন আলতাফ । । কিন্তু পারেরহাট বাজারে কোন রাজাকার বা রাজাকার কমান্ডের নাম বলতে পারলেননা তিনি।
পিরোজপুর জেলার ইতিহাস বিষয়ক বই রচনার জন্য পিরোজপুর জেলার পরিচিত সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, সমাজকর্মী সমন্বয়ে ১৬ সদস্যের প্রকাশনা পরিষদ গঠন করা হয়। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়েএ কমিটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তথ্য প্রদানের জন্য প্রচার চালায়। তাদের কেউ তার কাছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে জানতে চেয়েছিল কি-না তাও বলতে পারলেননা সাক্ষী। তাছাড়া প্রকাশনা পরিষদের ১৬ জন পরিচিত ব্যক্তির কাউকেই তিনি চেনননা বলে জানান। তবে দুই তিন জনের নাম শুনেছেন বলে উত্তর দেন।
আজ দুপুরের বিরতির আগে নবম সাক্ষীর জেরা শেষ হয়। এরপর দশম সাক্ষী হিসেবে মোখলেছ পসারীর জবানবন্দী দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ায় বাড়ি চলে গেছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী। রাষ্ট্রপক্ষের দেয়া তালিকা অনুযায়ী পরবর্তী সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করা হয় আব্দুল লতিফ হাওলাতারকে। তবে তিনিও অসুস্থ বলে আদালতকে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। আরেকজন সাক্ষী আজ রাতে ঢাকা এসে পৌছার কথা। কিন্তু তিনি আগামীকাল সাক্ষী দিতে পারবেন কিনা তা নিশ্চিত না হওয়ায় আদালত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচার রোববার পর্যন্ত মুলতবী করেন।
নবম সাক্ষীর অসমাপ্ত জেরা
আইনজীবী: আপনি লেখাপড়া কতদূর করেছেন?
সাক্ষী: ফ্রি প্রাইমারী পাশ।
আইনজীবী: ১৯৭১ সালে আপনার পেশা কি ছিল?
সাক্ষী: বড় ভাইর সাথে চাষবাষ করতাম।
আইনজীবী: পারেরহাট বাজারে হিন্দুদের ঘর লুটপাটের পর পাক আর্মি ক্যাম্প স্থাপন করেছে একথা আপনি বলেছেন। কয়টি ঘর লুটপাট হয়?
সাক্ষী: ৩০/৩৫টি।
আইনজীবী: যাদের ঘর লুটপাট হয় তাদের চার/পাঁচ জনের নামস বলতে পারবেন?
সাক্ষী: গাজী খাঁ, মুকুন্দু খাঁ, নারায়ন সাহা, বিপদ সাহা।
আইনজীবী: লুটপাট করে মালামাল করা কোথায় নিয়ে গেল?
সাক্ষী: রাজাকাররা মালামাল নিল। কোথায় নিল তা বলতে পারবনা।
আইনজীবী: রাজাকারদের পোশাক কি ছিল খাকী?
সাক্ষী: যার যার পোশাক পরেছে। যার যা পরনে ছিল তা পরে আইছে। পরে কি পোশাক পরেছে বলতে পারবনা।
আইনজীবী: এদের হাতে কি অস্ত্র ছিল?
সাক্ষী: রাইফেল দেখেছি।
আইনজীবী: রাজাকার গঠনের সময় পারেরহাট চেয়ারম্যান কে ছিলেন?
সাক্ষী: আমজাদ হোসেন গাজী।
আইনজীবী: তাকে কোনদিন রাজাকার অফিসে দেখেছেন?
সাক্ষী: ঐ অফিসে আমি যেতামনা। আমজাদ গেছে কি-না তাও জানিনা।
আইনজীবী: পারেরহাটে আপনি নিয়মিত, প্রতিদিনি, হাটের দিন, না মাঝে মাঝে যেতেন?
সাক্ষী: সাধারণত হাটের দিন যেতাম।
আইনজীবী: বাড়ির হাটবাজার আপনার বড় ভাই করত না আপনি করতেন?
সাক্ষী: সেও করত আমিও করতাম
আইনজীবী: আপনার বক্তব্য শন্তি কমিটির গঠনের ২/৩দিন পর পারেরহাটে যে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হল সেই রাজাকাররা কি সব স্থানীয় লোক ছিল?
সাক্ষী: না । বিভিন্ন স্থানের লোক ছিল।
আইনজীবী: পারেরহাট এলাকার বাইরের ২/৩জন রাজাকারের নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী: টগরার সুলতান। খলিল (বাড়ি কোথায় মনে পড়েনা)।
আইনজীবী: পারেরহাট এলাকার ২/৩ জন রাজাকারের নাম বলেন।
সাক্ষী: মনে পড়েনা।
আইনজীবী: ৭ মে পাক আর্মি আসার আগে রুহুল আমিন নবিন এলাকায় ছিল?
সাক্ষী: না। ৭ মে’র আগেই রুহুল আমিন নবিন এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ঐ তারিখে ছিলনা।
আইনজীবী: ১৬ ডিসেম্বরের আগে না পরে পারেরহাট শত্রু মুক্তি হয়?
সাক্ষী: ২দিন পর ১৮ ডিসেম্বর।
আইনজীবী: রুহুল আমিন নবিন সুন্দরবন থেকে এসে শত্রুমুক্ত করল?
সাক্ষী: নবিনসহ আরো অনেকে ছিলেন।
আইনজীবী: নবিন ছাড়া আরো দুয়েকজন নেতৃস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধার নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী: আব্দুস সালাম হাওলাদার, সালাম তালুকদার, গৌতম হালদার।
আইনজীবী: দানেশ আলী মোল্লা, দেলোয়ার হোসেন মল্লিককে স্বাধীনতার পর গ্রেফতার করা হয় জানেন?
সাক্ষী: জানা নেই। দেলোয়ার হোসেন মল্লিক নামে কোন রাজাকারের নাম শুনিনাই।
আইনজীবী: আপনার জন্ম তারিখ কত?
সাক্ষী: বলতে পারছিনা।
আইনজীবী: আপনি ২০০৮ সালে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: সেখানে আপনার পেশা জন্মতারিখ উল্লেখ করেছেন?
সাক্ষী: মনে নেই।
আইনজীবী: আপনি কতদিন ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি?
সাক্ষী: বলতে পারবনা।
আইনজীবী: মাওলানা সাঈদী সাহেবকে কোন তারিখে বা কোন মাসে গ্রেফতার করা হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী: মনে নেই।
আইনজীবী: বিডিআর বিদ্রোহের তারিখ মনে আছে?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: পারেরহাট রাজাকার কমান্ডার কে ছিল ?
সাক্ষী: জানা নেই।
এ পর্যায়ে পিরোজপুর জেলার বেশ কয়েকজন সাংবাদিক যারা বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা, টিভি এবং সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশপাশি স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সাথে জড়িত এবং পিরোজপুরে পরিচিত মুখ তাদের নাম একজন একজন করে জিজ্ঞোস করা হয় তাদের সাক্ষী চেনেন কিনা। যেসব সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করা হয় তাদের মধ্যে রয়েছেন ইত্তেফাক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান, নিউ নেশনের জিয়াউল আহসান, ইউএনবির হোসেন শুকুর, দরপত্র সম্পাদক গৌতম চৌধুরী, যুগান্তরের এসএম পারভেজ, সংবাদের রঞ্জন বকসি। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডের কমান্ডার জামালুল হক মনু, সাহিত্যিক সাংবাদিক খান মো: মোসলেহ উদ্দিন, মনিকা মন্ডল, সাংবাদিক এম এ রব্বানী, শহীদুল্লাহ খান, সমাজকর্মী অগ্রজ কুমার রায়, সহ মোট ১৬ জনের নাম জিজ্ঞেস করা হয়। তাদের কারো কারো নাম তিনি শুনেছেন বলে জানান। তবে কাউকেই তিনি চেনননা বলে জানান।
এরপর মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন।
আইনজীবী: যাদের নাম বলা হল এদের মধ্যে কেউ কি ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে আপনার কাছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কিছু জানতে চেয়েছিল?
সাক্ষী: মনে পড়েনা।
আইনজীবী: পিরোজপুর জেলার ইতিহাস বই রচনার জন্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে এই লোকজনের সমন্বয়ে প্রকাশনা পরিষদ গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ঘটনা জানানোর আহবান জানিয়ে তারা তখন লিফলেট প্রচার করে, স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও প্রকাশ করে। তা কি আপনি জানতেন?
সাক্ষী: জানি কি-না মনে পড়েনা।
আইনজীবী: ঐ কমিটি তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিধি ঠিক করে এবং আপনার এলাকার প্রতিনিধি ছিলেন জামালুল মনু তা কি জানতেন
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: আপনি আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য নয় বিধায় এবং তাদের প্রকাশিত পিরোজপুর জেলার ইতিহাস বইয়ে মাওলানা সাঈদীর নাম না থাকায় আপনি সত্য গোপন করছেন।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: বিশাবালীর বাড়ির অন্য কাউকে আপনি চিনতেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: বিশাবালীর বাড়ির আশপাশে জঙ্গল, ঝোপ ঝাপ ছিলনা। সেজন্য তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দীতে আপনি আড়ালে থেকে বিশাবালীকে হত্যা করতে দেখার কথা বলেননি।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: বিশাবালীর অপর দুই ভাই নিরঞ্জন বালী এবং পবিত্রবালীর সাথে পরিচয় ছিল?
সাক্ষী: খেয়াল নেই।
আইনজীবী: বিশাবালীকে ভিন্ন তারিখে ভিন্নভাব বলেশ্বর নদীতে হত্যা করা হয়। আপনি বিশাবালীকে হত্যার যে বর্ণনা দিয়েছেন তা সত্য নয়।
সাক্ষী: আমার বর্নিত ঘটনা সত্য।
আইনজীবী: মাওলানা সাঈদী স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর আগ থেকে জুলাইর মাঝামাঝি পর্যন্ত এলাকায় ছিলেননা।
সাক্ষী: এলাকায়ই ছিল।
নবম সাক্ষী আলতাফ হাওলাদারকে জেরার সময় মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী পারেরহাট এলাকার দুই তিনজন রাজাকারের নাম বলতে বলেন সাক্ষীকে । সাক্ষী ‘মনে পড়েনা’ বলে জবাব দেন। এমনকি পারেরহাট রাজকার কমান্ডার কে ছিলেন তাও বলতে পারেননি।
আদালতে জবানবন্দী প্রদানের সময় মাওলানা সাঈদীসহ অন্যান্য অনেক রাজাকার, শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং পাক আর্মি পারেরহাট বাজারে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে বলে সাক্ষ্য দেন আলতাফ । । কিন্তু পারেরহাট বাজারে কোন রাজাকার বা রাজাকার কমান্ডের নাম বলতে পারলেননা তিনি।
পিরোজপুর জেলার ইতিহাস বিষয়ক বই রচনার জন্য পিরোজপুর জেলার পরিচিত সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, সমাজকর্মী সমন্বয়ে ১৬ সদস্যের প্রকাশনা পরিষদ গঠন করা হয়। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়েএ কমিটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তথ্য প্রদানের জন্য প্রচার চালায়। তাদের কেউ তার কাছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে জানতে চেয়েছিল কি-না তাও বলতে পারলেননা সাক্ষী। তাছাড়া প্রকাশনা পরিষদের ১৬ জন পরিচিত ব্যক্তির কাউকেই তিনি চেনননা বলে জানান। তবে দুই তিন জনের নাম শুনেছেন বলে উত্তর দেন।
আজ দুপুরের বিরতির আগে নবম সাক্ষীর জেরা শেষ হয়। এরপর দশম সাক্ষী হিসেবে মোখলেছ পসারীর জবানবন্দী দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ায় বাড়ি চলে গেছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী। রাষ্ট্রপক্ষের দেয়া তালিকা অনুযায়ী পরবর্তী সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করা হয় আব্দুল লতিফ হাওলাতারকে। তবে তিনিও অসুস্থ বলে আদালতকে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। আরেকজন সাক্ষী আজ রাতে ঢাকা এসে পৌছার কথা। কিন্তু তিনি আগামীকাল সাক্ষী দিতে পারবেন কিনা তা নিশ্চিত না হওয়ায় আদালত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিচার রোববার পর্যন্ত মুলতবী করেন।
নবম সাক্ষীর অসমাপ্ত জেরা
আইনজীবী: আপনি লেখাপড়া কতদূর করেছেন?
সাক্ষী: ফ্রি প্রাইমারী পাশ।
আইনজীবী: ১৯৭১ সালে আপনার পেশা কি ছিল?
সাক্ষী: বড় ভাইর সাথে চাষবাষ করতাম।
আইনজীবী: পারেরহাট বাজারে হিন্দুদের ঘর লুটপাটের পর পাক আর্মি ক্যাম্প স্থাপন করেছে একথা আপনি বলেছেন। কয়টি ঘর লুটপাট হয়?
সাক্ষী: ৩০/৩৫টি।
আইনজীবী: যাদের ঘর লুটপাট হয় তাদের চার/পাঁচ জনের নামস বলতে পারবেন?
সাক্ষী: গাজী খাঁ, মুকুন্দু খাঁ, নারায়ন সাহা, বিপদ সাহা।
আইনজীবী: লুটপাট করে মালামাল করা কোথায় নিয়ে গেল?
সাক্ষী: রাজাকাররা মালামাল নিল। কোথায় নিল তা বলতে পারবনা।
আইনজীবী: রাজাকারদের পোশাক কি ছিল খাকী?
সাক্ষী: যার যার পোশাক পরেছে। যার যা পরনে ছিল তা পরে আইছে। পরে কি পোশাক পরেছে বলতে পারবনা।
আইনজীবী: এদের হাতে কি অস্ত্র ছিল?
সাক্ষী: রাইফেল দেখেছি।
আইনজীবী: রাজাকার গঠনের সময় পারেরহাট চেয়ারম্যান কে ছিলেন?
সাক্ষী: আমজাদ হোসেন গাজী।
আইনজীবী: তাকে কোনদিন রাজাকার অফিসে দেখেছেন?
সাক্ষী: ঐ অফিসে আমি যেতামনা। আমজাদ গেছে কি-না তাও জানিনা।
আইনজীবী: পারেরহাটে আপনি নিয়মিত, প্রতিদিনি, হাটের দিন, না মাঝে মাঝে যেতেন?
সাক্ষী: সাধারণত হাটের দিন যেতাম।
আইনজীবী: বাড়ির হাটবাজার আপনার বড় ভাই করত না আপনি করতেন?
সাক্ষী: সেও করত আমিও করতাম
আইনজীবী: আপনার বক্তব্য শন্তি কমিটির গঠনের ২/৩দিন পর পারেরহাটে যে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হল সেই রাজাকাররা কি সব স্থানীয় লোক ছিল?
সাক্ষী: না । বিভিন্ন স্থানের লোক ছিল।
আইনজীবী: পারেরহাট এলাকার বাইরের ২/৩জন রাজাকারের নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী: টগরার সুলতান। খলিল (বাড়ি কোথায় মনে পড়েনা)।
আইনজীবী: পারেরহাট এলাকার ২/৩ জন রাজাকারের নাম বলেন।
সাক্ষী: মনে পড়েনা।
আইনজীবী: ৭ মে পাক আর্মি আসার আগে রুহুল আমিন নবিন এলাকায় ছিল?
সাক্ষী: না। ৭ মে’র আগেই রুহুল আমিন নবিন এলাকা ছেড়ে চলে যায়। ঐ তারিখে ছিলনা।
আইনজীবী: ১৬ ডিসেম্বরের আগে না পরে পারেরহাট শত্রু মুক্তি হয়?
সাক্ষী: ২দিন পর ১৮ ডিসেম্বর।
আইনজীবী: রুহুল আমিন নবিন সুন্দরবন থেকে এসে শত্রুমুক্ত করল?
সাক্ষী: নবিনসহ আরো অনেকে ছিলেন।
আইনজীবী: নবিন ছাড়া আরো দুয়েকজন নেতৃস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধার নাম বলতে পারবেন?
সাক্ষী: আব্দুস সালাম হাওলাদার, সালাম তালুকদার, গৌতম হালদার।
আইনজীবী: দানেশ আলী মোল্লা, দেলোয়ার হোসেন মল্লিককে স্বাধীনতার পর গ্রেফতার করা হয় জানেন?
সাক্ষী: জানা নেই। দেলোয়ার হোসেন মল্লিক নামে কোন রাজাকারের নাম শুনিনাই।
আইনজীবী: আপনার জন্ম তারিখ কত?
সাক্ষী: বলতে পারছিনা।
আইনজীবী: আপনি ২০০৮ সালে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন?
সাক্ষী: হ্যা।
আইনজীবী: সেখানে আপনার পেশা জন্মতারিখ উল্লেখ করেছেন?
সাক্ষী: মনে নেই।
আইনজীবী: আপনি কতদিন ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি?
সাক্ষী: বলতে পারবনা।
আইনজীবী: মাওলানা সাঈদী সাহেবকে কোন তারিখে বা কোন মাসে গ্রেফতার করা হয় বলতে পারবেন?
সাক্ষী: মনে নেই।
আইনজীবী: বিডিআর বিদ্রোহের তারিখ মনে আছে?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: পারেরহাট রাজাকার কমান্ডার কে ছিল ?
সাক্ষী: জানা নেই।
এ পর্যায়ে পিরোজপুর জেলার বেশ কয়েকজন সাংবাদিক যারা বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা, টিভি এবং সংবাদ সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশপাশি স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকার সাথে জড়িত এবং পিরোজপুরে পরিচিত মুখ তাদের নাম একজন একজন করে জিজ্ঞোস করা হয় তাদের সাক্ষী চেনেন কিনা। যেসব সাংবাদিকের নাম জিজ্ঞেস করা হয় তাদের মধ্যে রয়েছেন ইত্তেফাক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান, নিউ নেশনের জিয়াউল আহসান, ইউএনবির হোসেন শুকুর, দরপত্র সম্পাদক গৌতম চৌধুরী, যুগান্তরের এসএম পারভেজ, সংবাদের রঞ্জন বকসি। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডের কমান্ডার জামালুল হক মনু, সাহিত্যিক সাংবাদিক খান মো: মোসলেহ উদ্দিন, মনিকা মন্ডল, সাংবাদিক এম এ রব্বানী, শহীদুল্লাহ খান, সমাজকর্মী অগ্রজ কুমার রায়, সহ মোট ১৬ জনের নাম জিজ্ঞেস করা হয়। তাদের কারো কারো নাম তিনি শুনেছেন বলে জানান। তবে কাউকেই তিনি চেনননা বলে জানান।
এরপর মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন।
আইনজীবী: যাদের নাম বলা হল এদের মধ্যে কেউ কি ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে আপনার কাছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কিছু জানতে চেয়েছিল?
সাক্ষী: মনে পড়েনা।
আইনজীবী: পিরোজপুর জেলার ইতিহাস বই রচনার জন্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে এই লোকজনের সমন্বয়ে প্রকাশনা পরিষদ গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ঘটনা জানানোর আহবান জানিয়ে তারা তখন লিফলেট প্রচার করে, স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও প্রকাশ করে। তা কি আপনি জানতেন?
সাক্ষী: জানি কি-না মনে পড়েনা।
আইনজীবী: ঐ কমিটি তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিধি ঠিক করে এবং আপনার এলাকার প্রতিনিধি ছিলেন জামালুল মনু তা কি জানতেন
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: আপনি আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য নয় বিধায় এবং তাদের প্রকাশিত পিরোজপুর জেলার ইতিহাস বইয়ে মাওলানা সাঈদীর নাম না থাকায় আপনি সত্য গোপন করছেন।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: বিশাবালীর বাড়ির অন্য কাউকে আপনি চিনতেন?
সাক্ষী: না।
আইনজীবী: বিশাবালীর বাড়ির আশপাশে জঙ্গল, ঝোপ ঝাপ ছিলনা। সেজন্য তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া জবানবন্দীতে আপনি আড়ালে থেকে বিশাবালীকে হত্যা করতে দেখার কথা বলেননি।
সাক্ষী: সত্য নয়।
আইনজীবী: বিশাবালীর অপর দুই ভাই নিরঞ্জন বালী এবং পবিত্রবালীর সাথে পরিচয় ছিল?
সাক্ষী: খেয়াল নেই।
আইনজীবী: বিশাবালীকে ভিন্ন তারিখে ভিন্নভাব বলেশ্বর নদীতে হত্যা করা হয়। আপনি বিশাবালীকে হত্যার যে বর্ণনা দিয়েছেন তা সত্য নয়।
সাক্ষী: আমার বর্নিত ঘটনা সত্য।
আইনজীবী: মাওলানা সাঈদী স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর আগ থেকে জুলাইর মাঝামাঝি পর্যন্ত এলাকায় ছিলেননা।
সাক্ষী: এলাকায়ই ছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন