সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৩

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হলে সে তখন তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক -ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান

মেহেদী হাসান, ১৮/১১/২০১৩
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির বলেছেন কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হলে সে তখন তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হয়।  কারণ হিসেবে তিনি  বলেন, সংবিধানে ন্যায় বিচার এবং মৌলিক মানবাধিকার সংক্রান্ত কিছু ধারা তাদের বিচারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।  কাজেই তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকের জন্য আপনারা প্রথম শ্রেনির নাগরিকের সুবিধা আশা করবেন কিভাবে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মামলায় যুক্তি উপস্থাপনের সময় তিনি একথা বলেন আজ। মাওলানা নিজামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম যুক্তি উপস্থাপনের শেষ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারকের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আইন অনুযায়ী ন্যায় বিচার করতে বাধ্য। অপরদিকে আপনারা বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন সংবিধান এবং আইন সমুন্নত রাখার জন্য।  শপথ এবং সংবিধান রক্ষা করতে গেলে আপনারা এখানে ন্যায় বিচার করতে পারবেননা। আবার আইন অনুযায়ী ন্যায় বিচার করলে সংবিধান লঙ্ঘন হবে।

এসময় ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন, কথাটা বুঝলামনা মিজান সাহেব। একটু খুলে বলেন।
মিজানুল ইসলাম তখন ট্রাইব্যুনাল আইনের একটি ধারা পড়ে শুনিয়ে বলেন, এখানে আপনাদেরকে ন্যায় বিচার করার কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে  সংবিধানের ৩৫ (৩)  অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত  ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হইবেন।”

কিন্তু যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য প্রণীত আইনকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে এবং সেখানে ৪৭ক ও ৪৭ (৩) নামে দুটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের  ৩৫ (৩) ধারাটি অকার্যকর ঘোষনা করা হয়েছে  ট্রাইব্যুনালের বিচারের ক্ষেত্রে।  এছাড়া বাংলাদেশের নাগরিকরদের জন্য বিদ্যমান কয়েকটি মৌলিক মানবাধিকার  ধারাও অকর্যকর করা হয়েছে এ বিচারের ক্ষেত্রে।
মিজানুল ইসলাম বলেন, সংবিধানের ৩৫ (৩) ধারায় প্রকাশ্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের বিচারের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৩৫ (৩) ধারাটিকে অকার্যকর করে রাখা মানে  হল আপনারা   এখানে ন্যায় বিচার করতে পারবেনা। যদি ন্যায় বিচার করেন তাহলে সংবিধান লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে। আবার ট্রাইব্যুনালের আইনে বলা হয়েছে ন্যায় বিচার করতে হবে। এখন আপনারা কোনটি করবেন? সংবিধান রক্ষা করবেন  না আইন অনুযায়ী চলবেন?

তখন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির বলেন, ব্যারিস্টার  আব্দুর রাজ্জাক সাহেবও  এ প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন। আসলে বিষয় হল সংসদে যখন ১৯৭৩ সালের যুদ্ধাপরাধ বিচার সংক্রান্ত আইনটি পাশ হয় তখন তাদের একটি লক্ষ্য ছিল যে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদের বিচারের আওতায় আনা হবে তাদের ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার এবং সংবিধানের কিছু মৌলিক অধিকার  বিষয়ক  ধারা প্রযোজ্য হবেনা। তারা এসব অধিকার ভোগ করতে পারবেনা। এর ফলে যাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হবে তখনই তারা তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচিত। যখন এ বিষয়টি সামনে আসে তখন এ ট্রাইব্যুনালের অধীনে সাত/আটজন লোক বন্দী ছিলেন। ১৬ কোটি মানুষের বিপরীতে কয়েকজন লোক  তৃতীয় শ্রেনির নাগরিক হলেন। তৃতীয় শ্রেনির নাগরিক হয়ে আপনি প্রথম শ্রেনির নাগিরকের সুবিধা পাবেন কি করে? যতদিন  এ বিষয়টি সুরাহা না হয় ততদিন এ সমস্যা থাকবে।
বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির বলেন, যুদ্ধাপরাধ বিচারের ক্ষেত্রে সংবিধানে প্রকাশ্য বিচারের ধারা অকার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের আইনে প্রকাশ্য বিচারের ধারা যোগ করা হয়েছে এবং আমরা এখানে প্রকাশ্য  বিচার করছি।

বিচারপতি আনোয়রুল হক বলেন, সংবিধান সংশোধনীকে যদি আইন ধরা হয় তাহলে আমরা সে আইন অনুযায়ী বিচার করছি।

এর আগে ঘটনা বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করে মিজানুল ইসলাম বলেন, সাক্ষী শামসুল হক নান্নু বলেন, বোয়ালখালি মাদ্রাসায় মাওলানা নিজামী যখন পড়াশুনা করেছেন তখন তিনি তাকে দেখেছেন। মাওলানা নিজামী দাকিল পাশ করেছেন ১৯৫৫ সালে। আর সনদ অনুযায়ী শামসুল হক নান্নুর  জন্ম তারিখ ১৯৫৩ সাল এবং তখন তার বয়স মাত্র দেড় বছর। দেড় বছর বয়সে তিনি মাওলানা নিজামীকে দেখলেন কি করে?
সাক্ষী জহুরুল হক বলেছেন তিনি ১৯৭১ সালে রাজনারায়নপুর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। অথচ তখন রাজনাপারায়নপুর বালিকা বিদ্যালয় নামে কোন বিদ্যালয় ছিলনা। সেটা তিনি জেরায় স্বীকার করেছেন। সেখানে তখন একটি মাত্র অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল।


তাজুল ইসলামের যুক্তি উপস্থাপন

জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মামলায় আজ আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম যুক্তি পেশ করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ। এ মামলায় তিনি আইনি দিক নিয়ে যুক্তি পেশ করেন ।

মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে ইনসাইটমেন্ট বা উসকানি বিষয়ক চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে। তাজুল ইসলাম বলেন,  এ অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ চারটি মাত্র পেপার কাটিং জমা দিয়েছে এবং এর পক্ষে কোন সাক্ষী নেই তাদের।

মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে একটি উসকানির অভিযোগ হল ১৯৭১ সালে আগস্ট মাসে চট্টগ্রামে ইসলামী ছাত্রসংঘের সমাবেশে তিনি বলেছেন পাকিস্তান আল্লাহর ঘর এবং পাকিস্তান আমি অতীতে যেমন এ ঘর রক্ষা করেছে ভবিষ্যতেও তেমনি রক্ষা করবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র একসময় অনেকের কাছে স্বপ্নের একটি রাষ্ট্রছিল। এ স্বপ্নের রাষ্ট্র অর্জনের জন্য, ব্রিটিশের গোলামী থেকে মুক্তির জন্য  অনেক রক্তক্ষয় এবং ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে অনেককে। এ রাষ্ট্রের প্রতি তখনকার মানুষের অনেক মোহমায়া, স্বপ্ন ছিল।  অনেকে অনেকভাবে তার বিশ্বাস এবং স্বপ্নের কথা প্রকাশ করে থাকেন। যেমন কবি শামসুর রাহমান স্বাধীনতাকে তুলনা করেছেন পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিনের সাথে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুরিন আফরোজ বলেছেন ইসলামের জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়নি। কিন্তু কবি শামসুর রহমান স্বাধীনতাকে পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিনের সাথে তুলনা করেছেন। কিন্তু এজন্য তো তাকে  সাম্প্রদায়িক আখ্যায়িত করা হয়নি। তেমনি মাওলানা নিজামীও পাকিস্তান রাষ্ট্র ঘিরে মানুষের যে আশা আকাঙ্খা এবং স্বপ্ন ছিল সে প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় বিশ্বাসের জায়গা থেকে দেশকে পবিত্র ঘরের সাথে তুলনা করে দেশের প্রতি ভালবাসার বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এখানে উসকানির কোন বিষয় থাততে পারেনা। অনেকে দেশকে দেবী, মা দুর্গার সাথে তুলনা করে। দেশের জন্য আবেগ প্রকাশ করা কি কোন অপরাধ   হতে পারে?
এ বক্তব্যের মাধমে তিনি কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে ধ্বংস বা নিশ্চিহকরনের কথা বলেননি। কাজেই এটি কোন উসকানির অভিযোগের মধ্যে পড়েনা।
তাছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ যে পেপারকাটিং জমা দিয়েছে তাতে প্রতিদেনটি  প্রকাশের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৫  আগস্ট। চট্টগ্রাম থেকে খবর পাঠিয়েছে ৩ আগস্ট। খবরে লেখা আছে গতকাল সমাবেশ হয়েছে। তার মানে হল সমাবেশটি হয়েছে ২ আগস্ট। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ বলছে ৩ আগস্ট মাওলানা নিজামী এ বক্তব্য দিয়েছেন।  কাজেই রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ মতে তিনি ৩ আগস্ট এ জাতীয় কোন বক্তব্য দেননি। ফলে এটি কোন অভিযোগ আকারে টেকেনা। তাছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ স্বীকার করেছেন ৫ আগস্ট প্রতিবেদন প্রকাশের যে তারিখ লেখা রয়েছে তা তারা নিজেরা লিখেছে। প্রতিবেদনটিতে পত্রিকা প্রকাশের তারিখ ছাপার অক্ষরে কোথাও লেখা নেই।
কাজেই এজাতীয় ডকুমেন্ট কি করে বিশ্বাসযোগ্য  হতে পারে?

মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে উসকানির আরেকটি অভিযোগ হল যশোরে রাজাকারদের একটি সমাবেশে তিনি সুরা তওবার আয়াত পাঠ করে কোরআনের অপব্যাখ্যা করে তাদের উসকানি দিয়েছেন স্বাধীনতাবিরোধী কাজের জন্য।
এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, মাওলানা নিজামী সুরা তওবার যে আয়াত পাঠ করেন তার অর্থ হল ‘আল্লাহ মুমিনের জীবন এবং সম্পদ কিনে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। তারা মারে এবং মরে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ঈমানের সাথে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়ে  এই আয়াতের ব্যাখ্যা করা কি করে উসকানির মধ্যে পড়তে পারে? কোরআনের আয়াত তাফসির করা কি যুদ্ধাপরাধ? তিনি যদি এ আয়াত ব্যাখ্যা করে তাদেরকে খুন, হত্যার জন্য আহবান জানাতেন তাহলে তাকে উসকানি এবং উসকানির জন্য কোরআনকে ব্যবহারের অভিযোগ আনা যেতে পারত। কিন্তু তাতো তিনি করেননি।
মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে উসকানির আরেকটি অভিযোগ হল ভারতের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য। বাংলাদেশের প্রতি ভারতের বিভিন্ন বৈরি আচরন, পানি ইস্যু, সীমান্ত হত্যা, অসংখ্যবার বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ প্রভৃতি তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে বক্তব্যের জন্য যারা মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে তাদের বিরুদ্ধে সুয়োমটো রুল জারি করা উচিত ট্রাইব্যুনালের। তিনি বলেন, একটি দেশের বিরুদ্ধে বক্তব্যের কারনে যখন নিজামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় তখন বোঝা যায় কতবড় গেম এর পেছনে কাজ করছে।

মাওলানা নিজামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আরেকটি উসকানির অভিযোগে বলা হয়েছে মাদানী নামক এক ব্যক্তিকে হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তিনি আহবান জানিয়েছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, এটি তার কোন বক্তৃতা না বিবৃতি তার কিছুই উল্লেখ নেই পেপারকাটিংয়ে।  ইসলামিক একাডেমিতে তিনি এ কথা বলেছেন বলে উল্লেখ আছে  কিন্তু ইসলামিক একাডেমি কোথায় তাও উল্লেখ নেই। মাদানী কে, কি তার পরিচয়, কারা তাকে হত্যা করল তাও উল্লেখ নেই প্রতিবেদনে। যদি এমন হত যে মাদানী ছিল স্বাধীনতাবিরোধী এবং মুক্তিযোদ্ধারা তাকে হত্যা করেছে তাহলে তার হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার আহবান জানানো মানে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার আহবান জানানো হয়েছে তা বোঝা যেত। কিন্তু মাদানী কে , কারা তাকে হত্যা করল তার কোন কিছু পরিস্কার নয়। তদন্ত কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন জেরায় যে, এ বিষয়ক খবরটি তিনি পুরোপুরি জব্দ করেননি। শুধুমাত্র নিজামীর  বক্তব্যের অংশটুকু জমা দিয়েছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, এ জাতীয় ডকুমেন্ট  যদি গ্রহণ করা হয় এবং এর ওপর ভিত্তি করে যদি কাউকে অভিযুক্ত করা হয় তাহলে ন্যায় বিচার বলতে আর কিছু থাকবেনা।
তাজুল ইসলাম বলেন, উসকানির পক্ষে শুধুমাত্র চারটি পেপারকাটিং তারা জমা দিয়েছে এবং তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী তার ৭১ এর দশমাস বইয়ে লিখেছেন তখন এদেশে সংবাদ প্রকাশের ওপর কঠোর সেন্সরশীপ আরোপ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সরকার পক্ষের খবরই তখন গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হত। মাওলানা নিজামীর যেসব বক্তব্য পেপারে ছাপা হয়েছে এবং যা এখানে জমা দেয়া হয়েছে তা যে সেন্সর আকারে প্রকাশিত হয়েছে তা সহজেই ধরে নেয়া যায়।  সরকারের পক্ষে তার যে বক্তব্য ছিল তাই গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হত সেটা ধরে নেয়া যায়। তার যেসব বক্তব্য ছাপা হয়েছে এবং যা এখানে জমা দিয়েছেন তার বাইরে তিনি যে আর কোন কথা বলেননি এবং তা যে সেন্সর করা হয়নি তা আমরা কি করে বলতে পারি।  কাজেই সেন্সর করে প্রকাশিত এবং রাষ্ট্রপক্ষের দুর্বল এসব ডকুমেন্টকে  আমলে নেয়ার কোন কারণ থাকতে পারেনা।

তাজুল ইসলাম বলেন, উসকানি কিসের প্রতি (ইনসাইটমেন্ট টু হোয়াট অফেন্স)  সে বিষয়ে অভিযোগে কিছু বলা হয়নি। যেমন কোন অপরাধের প্রতি তিনি কাউকে উসকানি দিয়েছেন না কি কাউকে ভালবাসার  জন্য উসকানি দিয়েছেন সে বিষয়ে কোন কিছু উল্লেখ নেই অভিযোগে।
তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবতাবিরোধী অপরাধের উসকানি, যুদ্ধাপরাধের প্রতি উসকানি কোন উসকানির মধ্যে পড়েনা,  অপরাধের মধ্যে পড়েনা (Incitement to crimes against humanity is not an offence in international  recognised law, incitement ti war crime is not offence in internationa law) । শুধুমাত্র গনহত্যার বিরুদ্ধে উসকানি অপরাধ এবং গনহত্যা ও উসকানি বিষয়ে সেখানে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রীম কোর্টের একটি আদেশ তুলে ধরে তাজুল ইসলাম বলেন, উসকানির মধ্যে সুষ্পষ্টভাবে   ঘৃনামূলক বক্তব্য (হেইট স্পিস)  থাকতে হবে এবং তাতে বিপদের আশঙ্কা উপস্থিত থাকতে হবে। তবেই কেবল তা উসকানিমূলক বক্তব্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন