মেহেদী হাসান, ১/১১/২০১২
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলায় জেরার সময় তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী, শান্তি কমিটি, আলবদর, আল শামস প্রভৃতি বাহনীকে সহযোগী বাহিনী গণ্য করে জারি করা কোন প্রমান্য দলিল তিনি তার তদন্তকালে পাননি ।
আজ জেরার সময় তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হয় “জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, পিডিপি, নেজামে ইসলাম, শান্তি কমিটি, আলবদর, আল শামস, বাহিনীকে অক্সিলিয়ারি ফোর্স (সহযোগী বাহিনী) হিসেবে গণ্য করে পাকিস্তান আর্মির ইস্টার্ন কমান্ড বা সেন্ট্রাল কমান্ড কোন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এ মর্মে কোন ডকুমেন্ট আপনি তদন্তকালে সংগ্রহ করতে পারেননি।”
জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “সরাসরি কোন প্রামান্য দলিল আমি আমার তদন্তকালে পাইনি। তবে উক্ত সংগঠনগুলো অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে সে প্রমান আমি তদন্তকালে পেয়েছি।”
তদন্ত কমকর্তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন এবং তার উত্তর নিয়ে গতকাল ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘ বিতর্ক চলে। এছাড়া জেরা শেষ করার জন্য ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সময় বেঁধে দেয়া নিয়েও দর্ঘি বিতর্ক চলে। গতকাল ৪টা ৫০ মিনিটে শেষ হয় বিচার কার্যক্রম।
তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন অধ্যাপক গোলা আযমের পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। জেরার সময় মিজানুল ইসলাম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান আর্মির আত্মসর্পনের সময় স্বাক্ষরিত দলিল নিয়ে প্রশ্ন করলে তা নিয়েও দীর্ঘ সময় আলোচনা, বিতর্ক চলে। মিজানুল ইসলাম বলেন, আত্মসর্পনের সময় জেনারেল নিয়াজি কর্তৃক স্বাক্ষরিত ‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার’ ডকুমেন্ট ছাড়াও আরো কিছূ দলিল সম্পাদন হয় এবং তাতে তিনি স্বাক্ষর করেন। সেগুলো তদন্ত কর্মকর্তা জেনেও গোপন করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা তা অস্বীকার করেন। মিজানুল ইসলাম সে দলিল থেকে ট্রাইব্যুনালে যে তালিকা উল্লেখ করেন সেখানে পাকিস্তান বাহিনীর নিয়মিত, প্যারা, এবং বিভিন্ন সহযোগী বাহিনীর ২৬ হাজার ২৫০ জন সদস্যের পরিসংখ্যান দেয়া আছে। সে তালিকায় মুজাহিদ বাহিনী, রাজাকার বাহিনীর নাম আছে। কিন্তু আল বদর, আল শামস, শান্তি কমিটির নাম নেই সহযোগী বাহিনী হিসেবে।
রাতে এ প্রতিবেদক মিজানুল ইসলামের কাছে তার দাবিকৃত ডকুমেন্টের নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, দলিলটির নাম হল ‘ট্রুপস ইন ঢাকা এট দি টাইম অব সারেন্ডার : রেগুলোর এন্ড প্যারা।
জেরায় মিজানুল ইসলামকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, কফিল উদ্দিন চৌধুরী, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মো: মনির প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন।
বিচার কার্যক্রম করেন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
জেরা :
প্রশ্ন : আর্মি এ্যাক্ট ১৯৫২, এয়ারফোর্স এ্যাক্ট ১৯৫৩ ও নেভি অর্ডিন্যান্স ১৯৬১তে অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে কোন বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল কিনা বা অন্য কোন বাহিনীকে মেইনন্টেইন করা হতো কিনা?
উত্তর : আমার জানা নেই।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জেরারেল নিয়াজী যখন আত্মসমর্পন করেন তার সঙ্গে অক্সিলিয়ারি ফোর্সও আত্মসমর্পন করেছিল
উত্তর : অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে প্যারামিলিটারী ও সিভিল আর্মড ফোর্সেস ছিল।
প্রশ্ন : পাকিস্তান সেনাাহিনীর ইষ্টার্ণ কমান্ডার জেরারেল নিয়াজী যখন আত্মসমর্পন করেন তখন তার কোন বাহিনীর কত সদস্য ছিল এটার কোন তালিকা ছিল কিনা জানা আছে?
উত্তর : রেকর্ডে দেখা যাচ্ছেনা। আমার জানা নেই।
প্রশ্ন : ইনস্ট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার-এ স্বার করা ছাড়া অন্য কোন দলিলে জেনারেল নিযাজী স্বাক্ষর করেছেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন জেনারেল নিয়াজী ও জেনারেল অরোরা কোন দলিলে সার করেছেন এটা জানতে সংশিষ্ট কর্তৃপরে সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা?
উত্তর : যোগাযোগ করিনি।
প্রশ্ন : ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজি যখন আত্মসমর্পন করেন তখন যেসব দলিল সম্পাদন করেছেন তার মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো ছিল যা আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করেছেন। সেগুলো হল
হোডকোয়ার্টার্স ইস্টার্ন কমান্ড, এ পর্যন্ত বলার পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপত্তি উত্থাপন করে বলা হয় এটি আসামী পক্ষ প্রদর্শন করেননি ট্রাইব্যুনালে। তাছাড়া উনি ‘যেসব দলিল’ বলে সবকিছু এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছেন বলে আপত্তি করা হয় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে।
তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, এটি আপনি কি আমাদের কাছে জমা দিয়েছেন? মিজানুল ইসলাম বলেন দিয়েছি। তখন ট্রাইব্যূনালের নির্দেশে তিনটি ভলিউম আলমারি থেকে বের করা হয়। সেগুলো দেখে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি যে দলিলের কথা বলছেন তাতো আমাদের সামনে নেই। কাজেই ডকুমেন্ট না থাকলে সে বিষয়ে সাজেশন দেবেন কিভাবে?
জবাবে মিজানুল ইসলাম বলেন, আত্মসমর্পনের সময় এক পৃষ্ঠার একটি ডকুমেন্ট স্বাক্ষরিত হয় তাতে পাকিস্তান আর্মির সৈন্য সংখ্যা, কি কি সম্পদন ছিল তার উল্লেখ ছিল। আমি সাজেশন দিচ্ছি ইনস্ট্রুমেন্ট অব ডকুমেন্ট এর সাথে আরো কিছু ডকুমেন্ট ছিল সেগুলো তদন্ত কর্মকর্তা গোপন করছেন। তিনি যদি তা অস্বীকার করেন তাহলে তা প্রমানের দায়িত্ব আমার। কিন্তু আমি কেন সাজেশন দিতে পারবনা? আইনে এ বিষয়ে বাঁধা কোথায়।
তখন ট্র্ইাব্যুনাল বলেন, সাজেশনটা অন্যভাবে দেন। সেটা এভাবে হতে পারে- ওই ডকুমেন্ট এর সাথে আরো কিছু ডকুমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছিল আপনি তা জানেন কি-না।
কিন্তু এরপরও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপত্তি উত্থাপন করা হলে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, সারেন্ডার ডকুমেন্ট এর সাথে যদি অন্য ডকুমেন্ট থাকে এবং তদন্ত কর্মকর্তা তা গোপান করে থাকেন তাহলে এর বেনিফিট আসামী পক্ষকে নিতে দেবেননা কেন?
এরপর ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত দিয়ে বলেন, আমরা এ সাজেশনটি দেয়ার অনুমতি দিলাম। এরপর প্রশ্নটি নিম্নলিখিতভাবে করা হয়।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পনের সময় ইনস্ট্র্রুমেন্ট অব সারেন্ডার ডকুমেন্ট ছাড়াও অন্য কিছু দলিল সম্পাদন করা হয়। তার মধ্যে নিম্নলিখিতি বিষয়গুলো ছিল। ১. হেডকোয়ার্টাস (ক) হেডকোয়ার্টার্স ইস্টার্ন কমান্ড, (খ) রিয়ার হেডকোয়ার্টার্স ১৪ ডিভিশন, (গ) হেডকোয়ার্টাস ৩৬ ডিভিশিন, হেডকোয়ার্টার্স ইস্ট পাকিস্তান লজিস্টিক, (ঘ) স্টেশন হেডকোয়ার্টার্স, (ঙ) হেডকোয়ার্টার্স অফিসার কমান্ডিং ইস্ট পাকিস্তান, (চ) ওয়স্ট পাকিস্তান পুলিশ, (ছ) হেডকোয়ার্টাস ডিজি রাজাকার।
২. ট্রুপস রেগুলার এন্ড প্যারা। এর অধীনে ট্যাংকস, আর্টিলারি, ইনফ্যান্ট্রি, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগনাল, সার্ভিস, মুজাহিদ, রাজাকার, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশ মিলিয়ে মোট ২৬ হাজার ২৫০ জন সৈন্য সংখ্যা উল্লেখ আছে।
অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম এ বিষয়গুলো উল্লেখ করার পর ট্রাইব্যুনাল বলেন, আলাদা দুটি প্রশ্ন করেন।
প্রশ্ন : উপরোক্ত বিষয়গুলো ডকুমেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি জেনেও তা পোগন করেছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, পিডিপ, নেজামে ইসলাম, শান্তি কমিটি, আলবদর, আল শামস, বাহিনীকে অক্সিলিয়ারি ফোর্স (সহযোগী বাহিনী) হিসেবে গণ্য করে পাকিস্তান আর্মির ইস্টার্ন কমান্ড বা সেন্ট্রাল কমান্ড কোন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এ মর্মে কোন ডকুমেন্ট আপনি সংগ্রহ করতে পারেননি।
উত্তর : সরাসরি কোন প্রামান্য দলিল আমি তদন্তকালে পাইনি। তবে শান্তি কমিটি, জামায়াতে ইসলাী সারা দেশে রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন করে পাকিস্তান আর্মিকে সহায়তা করেছে এবং নিজেরাও অংশগ্রহণ করেছে এর প্রমান আমি তদন্তকালে পেয়েছি।
এ উত্তরের পর দীর্ঘ বিতর্ক চলে আসামী পক্ষ, রাষ্ট্রপক্ষ এবং ট্রাইব্যুনালের মধ্যে।
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের মামলায় জেরার সময় তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী, শান্তি কমিটি, আলবদর, আল শামস প্রভৃতি বাহনীকে সহযোগী বাহিনী গণ্য করে জারি করা কোন প্রমান্য দলিল তিনি তার তদন্তকালে পাননি ।
আজ জেরার সময় তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হয় “জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, পিডিপি, নেজামে ইসলাম, শান্তি কমিটি, আলবদর, আল শামস, বাহিনীকে অক্সিলিয়ারি ফোর্স (সহযোগী বাহিনী) হিসেবে গণ্য করে পাকিস্তান আর্মির ইস্টার্ন কমান্ড বা সেন্ট্রাল কমান্ড কোন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এ মর্মে কোন ডকুমেন্ট আপনি তদন্তকালে সংগ্রহ করতে পারেননি।”
জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “সরাসরি কোন প্রামান্য দলিল আমি আমার তদন্তকালে পাইনি। তবে উক্ত সংগঠনগুলো অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে সে প্রমান আমি তদন্তকালে পেয়েছি।”
তদন্ত কমকর্তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন এবং তার উত্তর নিয়ে গতকাল ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘ বিতর্ক চলে। এছাড়া জেরা শেষ করার জন্য ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক সময় বেঁধে দেয়া নিয়েও দর্ঘি বিতর্ক চলে। গতকাল ৪টা ৫০ মিনিটে শেষ হয় বিচার কার্যক্রম।
তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন অধ্যাপক গোলা আযমের পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। জেরার সময় মিজানুল ইসলাম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান আর্মির আত্মসর্পনের সময় স্বাক্ষরিত দলিল নিয়ে প্রশ্ন করলে তা নিয়েও দীর্ঘ সময় আলোচনা, বিতর্ক চলে। মিজানুল ইসলাম বলেন, আত্মসর্পনের সময় জেনারেল নিয়াজি কর্তৃক স্বাক্ষরিত ‘ইনস্ট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার’ ডকুমেন্ট ছাড়াও আরো কিছূ দলিল সম্পাদন হয় এবং তাতে তিনি স্বাক্ষর করেন। সেগুলো তদন্ত কর্মকর্তা জেনেও গোপন করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা তা অস্বীকার করেন। মিজানুল ইসলাম সে দলিল থেকে ট্রাইব্যুনালে যে তালিকা উল্লেখ করেন সেখানে পাকিস্তান বাহিনীর নিয়মিত, প্যারা, এবং বিভিন্ন সহযোগী বাহিনীর ২৬ হাজার ২৫০ জন সদস্যের পরিসংখ্যান দেয়া আছে। সে তালিকায় মুজাহিদ বাহিনী, রাজাকার বাহিনীর নাম আছে। কিন্তু আল বদর, আল শামস, শান্তি কমিটির নাম নেই সহযোগী বাহিনী হিসেবে।
রাতে এ প্রতিবেদক মিজানুল ইসলামের কাছে তার দাবিকৃত ডকুমেন্টের নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, দলিলটির নাম হল ‘ট্রুপস ইন ঢাকা এট দি টাইম অব সারেন্ডার : রেগুলোর এন্ড প্যারা।
জেরায় মিজানুল ইসলামকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, কফিল উদ্দিন চৌধুরী, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শিশির মো: মনির প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন।
বিচার কার্যক্রম করেন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
জেরা :
প্রশ্ন : আর্মি এ্যাক্ট ১৯৫২, এয়ারফোর্স এ্যাক্ট ১৯৫৩ ও নেভি অর্ডিন্যান্স ১৯৬১তে অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে কোন বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল কিনা বা অন্য কোন বাহিনীকে মেইনন্টেইন করা হতো কিনা?
উত্তর : আমার জানা নেই।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জেরারেল নিয়াজী যখন আত্মসমর্পন করেন তার সঙ্গে অক্সিলিয়ারি ফোর্সও আত্মসমর্পন করেছিল
উত্তর : অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে প্যারামিলিটারী ও সিভিল আর্মড ফোর্সেস ছিল।
প্রশ্ন : পাকিস্তান সেনাাহিনীর ইষ্টার্ণ কমান্ডার জেরারেল নিয়াজী যখন আত্মসমর্পন করেন তখন তার কোন বাহিনীর কত সদস্য ছিল এটার কোন তালিকা ছিল কিনা জানা আছে?
উত্তর : রেকর্ডে দেখা যাচ্ছেনা। আমার জানা নেই।
প্রশ্ন : ইনস্ট্রুমেন্ট অব সারেন্ডার-এ স্বার করা ছাড়া অন্য কোন দলিলে জেনারেল নিযাজী স্বাক্ষর করেছেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন জেনারেল নিয়াজী ও জেনারেল অরোরা কোন দলিলে সার করেছেন এটা জানতে সংশিষ্ট কর্তৃপরে সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা?
উত্তর : যোগাযোগ করিনি।
প্রশ্ন : ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজি যখন আত্মসমর্পন করেন তখন যেসব দলিল সম্পাদন করেছেন তার মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো ছিল যা আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন করেছেন। সেগুলো হল
হোডকোয়ার্টার্স ইস্টার্ন কমান্ড, এ পর্যন্ত বলার পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপত্তি উত্থাপন করে বলা হয় এটি আসামী পক্ষ প্রদর্শন করেননি ট্রাইব্যুনালে। তাছাড়া উনি ‘যেসব দলিল’ বলে সবকিছু এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছেন বলে আপত্তি করা হয় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে।
তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, এটি আপনি কি আমাদের কাছে জমা দিয়েছেন? মিজানুল ইসলাম বলেন দিয়েছি। তখন ট্রাইব্যূনালের নির্দেশে তিনটি ভলিউম আলমারি থেকে বের করা হয়। সেগুলো দেখে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি যে দলিলের কথা বলছেন তাতো আমাদের সামনে নেই। কাজেই ডকুমেন্ট না থাকলে সে বিষয়ে সাজেশন দেবেন কিভাবে?
জবাবে মিজানুল ইসলাম বলেন, আত্মসমর্পনের সময় এক পৃষ্ঠার একটি ডকুমেন্ট স্বাক্ষরিত হয় তাতে পাকিস্তান আর্মির সৈন্য সংখ্যা, কি কি সম্পদন ছিল তার উল্লেখ ছিল। আমি সাজেশন দিচ্ছি ইনস্ট্রুমেন্ট অব ডকুমেন্ট এর সাথে আরো কিছু ডকুমেন্ট ছিল সেগুলো তদন্ত কর্মকর্তা গোপন করছেন। তিনি যদি তা অস্বীকার করেন তাহলে তা প্রমানের দায়িত্ব আমার। কিন্তু আমি কেন সাজেশন দিতে পারবনা? আইনে এ বিষয়ে বাঁধা কোথায়।
তখন ট্র্ইাব্যুনাল বলেন, সাজেশনটা অন্যভাবে দেন। সেটা এভাবে হতে পারে- ওই ডকুমেন্ট এর সাথে আরো কিছু ডকুমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছিল আপনি তা জানেন কি-না।
কিন্তু এরপরও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপত্তি উত্থাপন করা হলে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, সারেন্ডার ডকুমেন্ট এর সাথে যদি অন্য ডকুমেন্ট থাকে এবং তদন্ত কর্মকর্তা তা গোপান করে থাকেন তাহলে এর বেনিফিট আসামী পক্ষকে নিতে দেবেননা কেন?
এরপর ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত দিয়ে বলেন, আমরা এ সাজেশনটি দেয়ার অনুমতি দিলাম। এরপর প্রশ্নটি নিম্নলিখিতভাবে করা হয়।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পনের সময় ইনস্ট্র্রুমেন্ট অব সারেন্ডার ডকুমেন্ট ছাড়াও অন্য কিছু দলিল সম্পাদন করা হয়। তার মধ্যে নিম্নলিখিতি বিষয়গুলো ছিল। ১. হেডকোয়ার্টাস (ক) হেডকোয়ার্টার্স ইস্টার্ন কমান্ড, (খ) রিয়ার হেডকোয়ার্টার্স ১৪ ডিভিশন, (গ) হেডকোয়ার্টাস ৩৬ ডিভিশিন, হেডকোয়ার্টার্স ইস্ট পাকিস্তান লজিস্টিক, (ঘ) স্টেশন হেডকোয়ার্টার্স, (ঙ) হেডকোয়ার্টার্স অফিসার কমান্ডিং ইস্ট পাকিস্তান, (চ) ওয়স্ট পাকিস্তান পুলিশ, (ছ) হেডকোয়ার্টাস ডিজি রাজাকার।
২. ট্রুপস রেগুলার এন্ড প্যারা। এর অধীনে ট্যাংকস, আর্টিলারি, ইনফ্যান্ট্রি, ইঞ্জিনিয়ারিং, সিগনাল, সার্ভিস, মুজাহিদ, রাজাকার, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশ মিলিয়ে মোট ২৬ হাজার ২৫০ জন সৈন্য সংখ্যা উল্লেখ আছে।
অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম এ বিষয়গুলো উল্লেখ করার পর ট্রাইব্যুনাল বলেন, আলাদা দুটি প্রশ্ন করেন।
প্রশ্ন : উপরোক্ত বিষয়গুলো ডকুমেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি জেনেও তা পোগন করেছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, পিডিপ, নেজামে ইসলাম, শান্তি কমিটি, আলবদর, আল শামস, বাহিনীকে অক্সিলিয়ারি ফোর্স (সহযোগী বাহিনী) হিসেবে গণ্য করে পাকিস্তান আর্মির ইস্টার্ন কমান্ড বা সেন্ট্রাল কমান্ড কোন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এ মর্মে কোন ডকুমেন্ট আপনি সংগ্রহ করতে পারেননি।
উত্তর : সরাসরি কোন প্রামান্য দলিল আমি তদন্তকালে পাইনি। তবে শান্তি কমিটি, জামায়াতে ইসলাী সারা দেশে রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন করে পাকিস্তান আর্মিকে সহায়তা করেছে এবং নিজেরাও অংশগ্রহণ করেছে এর প্রমান আমি তদন্তকালে পেয়েছি।
এ উত্তরের পর দীর্ঘ বিতর্ক চলে আসামী পক্ষ, রাষ্ট্রপক্ষ এবং ট্রাইব্যুনালের মধ্যে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন