মেহেদী হাসান, ২৪/৯/২০১৩
জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের বিরোধীতা করে আসামী পক্ষের শুনানী শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজ প্রথম দিন শুনানী পেশ করেন ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক ও অ্যাডভোকেট শিশির মো : মনির।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল-১ শুনানী গ্রহণ করেন।
প্রথমে অ্যাডভোকেট শিশির মো: মনির শুনানী পেশ করেন। চার্জ গঠনের বিরোধীতা করে শিশির মনির বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলমের বিরুদ্ধে চার নং অভিযোগে বলা হয়েছে ১৯৭১ সালে তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘের রংপুর শাখার সভাপতি ছিলেন। সেই হিসেবে পাকিস্তান আর্মির সাথে তার সখ্যতা ও যোগাযোগ ছিল। পাকিস্তান আর্মির সাথে তার সখ্যতা ও যোগাযোগ ছিল বিধায় তার বিরুদ্ধে সুপিরিয়ার কমান্ড রেসপনসিবিলিটি বা উর্দ্ধতন নেতৃত্বের দায় দায়িত্বের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই একই কারনে তার বিরুদ্ধে আনিত সবগুলো অভিযোগে (মোট ৬টি) কমান্ড রেসপনসিবিলিটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
শিশির মনির বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আনিত সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটির ভিত্তি হল পাকিস্তান আর্মির সাথে এটিএম আজহারের সখ্যতা এবং যোগাযোগ। এটা কোন কারণ হতে পারেনা। এটিএম আজহার ছাত্রসংঘের রংপুর শাখার সভাপতি ছিলেন এটা কোন অপরাধ হতে পারেনা। এটাকে অপরাধ প্রমান করতে হলে এবং এটার ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটির অভিযোগ আনতে হলে আসামী পক্ষের বলতে হবে এবং দেখাতে হবে যে, এটিএম আজহারুলে ইসলাম কর্তৃক যাদের ওপর নিয়ন্ত্রন ছিল তাদের দিয়ে কোন অপরাধ তিনি করিয়েছেন অথবা তার অধীনস্তরা কোন অপরাধ করেছে কিন্তু তিনি তাদেরকে অপরাধ থেকে বিরত রাখার কোন ব্যবস্থা নেয়নি বা তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
কিন্তু আসামী পক্ষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগে এ জাতীয় কোন ঘটনা এবং প্রমান হাজির করতে পারেনি।
শিশির মনির বলেন, তিনি যদি কোন কমান্ডের প্রধান থাকতেন তাহলে তার অধীনস্ত কারা ছিল তাদের পরিচয় দিতে হবে এবং তাদের দ্বারা কৃত অপরাধমূলক কর্মকান্ডেরও সুনির্দিষ্টি বিবরন তুলে ধরতে হবে। কিন্তু এর কোন কিছুই নেই চার্জে।
এরপর ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক শুনানী পেশের সময় পাকিস্তান আর্মি কর্তৃক কয়েকটি হত্যার ঘটনা বিষয়ে বলেন, ১৮ বছরের যুবক এটিএম আজহারুল ইসলামের র্নিদেশে পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তারা এসব অপরাধ পরিচালনা করবে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
এরপর শুনানী আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। গত দুই সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ চার্জ গঠনের ওপর শুনানী পেশ শেষ করে।
শুনানীতে আসামী পক্ষের অন্যান্য আইনজীবীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট রায়হান উদ্দিন
আজহারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে। ১৮ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ ফরমাল চার্জ দাখিল করে এবং ২৫ জুলাই অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
গত বছর ২২ আগস্ট এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ওইদিনই তাকে তাকে তার মগবাজারস্থ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকে তিনি বন্দী রয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন