সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

কাদের মোল্লা মামলায় চূড়ান্ত রায় আগামীকাল


 16/9/2013
আব্দুল কাদের মোল্লা মামলায় আগামীকাল চূড়ান্ত রায় ঘোষনা করা হবে। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষনা করতে যাচ্ছে। আপিল বিভাগের আগামীকালের মামলার কার্য তালিকায় এক নম্বরে আব্দুল  কাদের মোল্লা মামলার  রায় ঘোষনার বিষয়টি রাখা  হয়েছে  ।

১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে গত ৫ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। রায়ের এক মাসের মাথায় আসামী পক্ষ এবং     রাষ্ট্রপক্ষ থেকে  রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হয়।  গত ২৩ জুলাই দীর্ঘ শুনানী শেষে আপিল বিভাগ মামলার রায় অপেক্ষমান ঘোষনা করে।

ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন রায়কে কেন্দ্র করে শাহবাগকেন্দ্রিক আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হয় সরকার পক্ষের জন্য আপিলের বিধান রেখে।  ট্রাইব্যুনালের যাবজ্জীবন রায়ের পরিবর্তে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগকেন্দ্রিক আন্দোলনের ফলে দেশজুড়ে একটি আলোচিত মামলায় পরিণত হয় এটি।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগে সাজা দেয়া হয় কাদের মোল্লাকে। একটি অভিযোগ থেকে খালাস দেয়া হয়। যে পাঁচটি অভিযোগে সাজা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে দুটি অভিযোগে যাবজ্জীবন এবং তিনটি অভিযোগে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
রায় ঘোষনার পরপরই কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগকেন্দ্রিক ্র আন্দোলন গড়ে ওঠে। আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৮ ফেব্রুয়ারি আইন সংশোধন করা হয় । আইন সংশোধনের পর সরকার আব্দুল কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করে আপিল আবেদন করে।  এছাড়া যে একটি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল থেকে খালাস দেয়া হয়েছে সেটিতেও শাস্তি দাবি করা হয় সরকার পক্ষ থেকে।

ট্রাইব্যুনাল আইনে পূর্বের বিধান ছিল আসামী পক্ষ সাজার বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে। আসামীর সাজা হলে রাষ্ট্রপক্ষের জন্য আপিলের বিধান ছিলনা। আসামীকে খালাস দেয়া হলে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের জন্য আপিলের বিধান ছিল। ১৮ ফেব্রুয়ারি আইন সংশোধন করে উভয় পক্ষকে আপিলের সমান সুযোগ দেয়া হয় এবং আইনের সংশোধনীকে  ২০০৯ সাল থেকে কার্যাকারিতা  প্রদান করা হয়।
আইনের সংশোধনীর কারনে আব্দুল কাদের মোল্লার আপিল শুনানী শেষ পর্যন্ত অ্যামিকাস কিউরি পর্যন্ত গড়ায়। ১৮ ফেব্রুয়ারি আইনের যে সংশোধন করা হয়েছে তা আব্দুল কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কি-না এবং প্রচলিত আন্তর্জাতিক আইন এ বিচারে প্রযোজ্য হবে  কি-না জানতে চেয়ে ২০ জুলাই সুপ্রীম কোর্টের সাতজন বিশিষ্ট আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দেয় আপিল বিভাগ।

গত ৩১ মার্চ প্রধান বিচারপতি মো : মোজাম্মেল হোসেন এর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ গঠন করা হয় আপিল আবেদন শুনানীর জন্য। ১ এাপ্রিল থেকে শুনানী শুরু হয়। তবে বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান আব্দুল কাদের মোল্লা মামলার  শুনানী শেষ হবার আগেই অবসরে চলে গেছেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ কাদের মোল্লা মামলার আপিল শুনানী গ্রহণ করেন শেষ পর্যন্ত। প্রধান বিচারপতি ছাড়া অপর চার বিচারপতি হলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দীন চৌধুরী।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন