মেহেদী হাসান, ১৩/৫/২০১৩
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা এ কে এম ইউসুফের পক্ষে করা জামিন আবেদনের ওপর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানী শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার আদেশের জন্য ধার্য্য করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জামিন আবেদন শুনানীতে অংশ নেন আসামী পক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক শুনানীতে অংশ নিয়ে বলেন, রোববার মাওলানা ইউসুফের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হল। আমরা বলেছিলাম সোমবার আমরা তাকে স্বেচ্ছায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করব। ট্রাইব্যুনালও বলেছিলেন আমরা সে সুযোগ পাব। কিন্তু সে সুযোগ পেলাম কোথায়? কোর্টের আদেশের পর লিখিত ওয়ারেন্ট কপি পাবার আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করল।
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা সিরিয়াস অবজেকশন জানচ্ছি এর বিরুদ্ধে। কোর্টের সই করা লিখিত পরোয়ানা কপি ছাড়া কি করে তাকে গ্রেফতার করা হল? এর মাধ্যমে কোর্টের আদেশ এবং আইন ভঙ্গ করা হয়েছে। তাই এ জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
জামিন আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তার বয়স ৮৭ বছর। অনেকবার অপারেশন হয়েছে। তাকে হয় জামিন দেয়া হোক, অথবা বাসায় গৃহবন্দী রাখা হোক, অথবা অধ্যাপক গোলাম আযমের মত হাসপাতালে রাখা হোক।
রাষ্ট্রপক্ষ জামিন আবেদনের বিরোধীতা করে বলেন, মাওলানা উইসুফ জামায়াতের নায়েবে আমির। তিনি রাজনীতির সাথে জড়িত। নায়েবে আমিরের দায়িত্ব যিনি পালন করতে পারেন তার ক্ষেত্রে অসুস্থতার কারণ খাটেনা।
জবাবে আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, মাওলানা ইউসুফ জামায়াতের নায়েবে আমির সত্য কিন্তু এটা একটা অর্নামেন্টাল পোস্ট হিসেবে তাকে রাখা হয়েছে এ পদে। তিনি গত কয়েক বছর ধরে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশ নেননি। কোন মিটিংয়েও অংশ নেননি। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, গত এক বছর ধরে তিনি গৃহবন্দী রয়েছেন। আমরা তাকে কোর্টে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। তিনি কোর্টে আসার জন্য রেডি ছিলেন। কিন্তু তারপরও কোর্টের আদেশ হওয়া মাত্র লিখিত কপি ছাড় করার আগেই তাকে গ্রেফতার করে আনা হয়েছে রাজনৈতিক কারনে।
তাজুল ইসলাম শুনানী শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জামায়াতের নেতা হওয়া এবং জামায়াতের কর্মী হওয়া এখন অপরাধ হয়ে দাড়িয়েছে এবং সেই অপরাধের কারনেই রাজনৈতিক উদ্দেশে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদেশ কপি সাইন করার আগেই আমরা টিভিতে খরব দেখতে পেলাম মাওলানা ইউসুফ গ্রেফতার। এটা নজিরবিহীন। তাকে এভাবে গ্রেফতার করা অবৈধ।
জামিন আবেদনের বিরোধীতা করে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন সৈয়দ হায়দার আলী ও ঋষিকেষ সাহা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন