সোমবার, ২৭ মে, ২০১৩

মাওলানা নিজামীকে সালাম দিলেন সাক্ষী //সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

মেহেদী হাসান
২৬/৫/২০১৩
জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের নবম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ নিজামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন মোঃ আইনুল হক। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামীকে শনাক্ত করার জন্য সাক্ষীকে নিজামীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সাক্ষী আইনুল হক ট্রাইব্যুনালে কাঠগড়ায় বসে থাকা নিজামীকে দেখে সালাম দেন। মাওলানা নিজামীও সালাম গ্রহণ করেন। এরপর সাক্ষী ডকে ফিরে এসে বলেন, তিনি আসামীকে চিনতে পেরেছেন। 

জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, ১৯৬৪ সালে আমি এসএসসি পাস করি। গ্রামে আমাকে বিবিসি নামে ডাকে। আমি শিক্ষকতা করি, এখন অবসরে। ১৯৭০-’৭১ সালের পত্রিকায় দেখেছিলাম নিজামী সাহেব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি। সাক্ষী আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মে মাসের ১০ তারিখে স্কুলের হেড মাস্টারের রুমে ১০-১২জন লেক দেখি। পরে হেডমাস্টারের কাছে জানতে পারি পিস কমিটি গঠনের জন্য তারা এসেছে। হেডমাস্টার বলেন, একজন মতিউর রহমান নিজামী। এরপর সাক্ষী মামা আসগর আলী, চাচা একেএম পরা মানিক খালাতো ভাইসহ প্রায় ৩০০ মানুষকে পাকিস্তান আর্মি কর্তৃক হত্যা করার ঘটনার বর্ণনা দেন। 

জবানবন্দী শেষে জেরায় সাক্ষীকে একটি প্রশ্ন করেন জুনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম। এরপর সোমবার পর্যন্ত জেরা মূলতবি করা হয়। হরতালের কারনে  আসামী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবীরা যাননি ট্রাইব্যুনালে।

সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী এমপির বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম। জবানবন্দী অসমপ্ত অবস্থায় আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত মূলতবি করা হয়েছে।
এছাড়া সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া মৃত ৩ জনসহ নতুন ৮ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ বলেন, যে সব সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা সম্ভব নয় তাদের ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের কাছে এ আবেদন করা হয়েছে।
২৮ মে এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
অন্যদিকে সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে তার মামলা বাতিল করে দেয়ার ট্রাইব্যুনালের আদেশ (রিকল) পূর্ণ বিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। এ বিষয়ে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা  একটি আবেদন ট্রাইব্যুনালের কাছে দাখিল করেছি যে  বিচারপতি নিজামুল হক ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় মামলা বাতিলের আবেদন সংক্রান্ত বিষয়টি খারিজ করেছেন।
কিন্তু ওই আদেশের সাবেক সদস্য বিচারক একেএম জহির আহমেদ দ্বিমত পোষণ করেছিলেন। অন্য দুই বিচারপতি ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান এটিএম ফজলে কবীর ও  নিজামুল হক নিজে। নিজামুল হক স্বাইপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাই তিনি পদত্যাগ করেছেন। সদস্য বিচারক একেএম জহির আহমেদ পদত্যাগ করেছন। ওই বিচারিক প্যানেলের বর্তমান চেয়ারম্যান শুধুমাত্র রয়েছেন। সেহেতু সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলা বাতিল চেয়ে করা আবেদন খারিজ করার পরেও  আমরা তার আদেশ রিকল পূর্ণ বিবেচনার জন্য  আবেদন করেছি। এ বিষয়ে শুনানির ধার্য না করে মামলার কার্যক্রম আগামী ২৮ মে পর্যন্ত মুলতি করেন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন