তাং- ০৩-১০-২০১৩ইং
পূনরায় জেরাঃ
প্রদর্শনী ২/৫ দৈনিক সংগ্রামের ০৫-০৮-১৯৭১ তারিখের দৈনিক সংগ্রামের সংখ্যায় ৩রা আগষ্ট এ একটি ছাত্র সংগঠনের ছাত্র সূধী সমাবেশের খবর পরিবেশিত হয়েছে। এই সংবাদে বক্তাদের পরিচিতির বর্ণনায় কারও নামের পূর্বে আলবদর কথাটি লিখা নাই। এই সমাবেশে কোন সামরিক অফিসার বক্তৃতা দিয়েছেন এই মর্মে কোন উদ্ধৃতি নাই। ঐ বক্তৃতায় পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর সমালোচনা করে কোন বক্তব্য ছিল, ইহা সত্য নহে। এই বক্তব্য শুনে কোন ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট অপরাধ সংঘটিত করেছে এই মর্মে কোন তথ্য আমি আমার তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করি নাই। প্রদর্শনী- ২/৬, ২/৭, ২/৮, ২/৯ সমূহে প্রকাশিত সংবাদে নিজামী সাহেবের সাথে সংশ্লিষ্ট সংবাদের সাথে আলবদর বাহিনীর কোন সম্পর্ক নাই। প্রদর্শনী ২/১০ এ মোস্তফা আল মাদানী হত্যার প্রতিবাদে মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দেওয়া আছে তবে ঐ সংবাদের সম্পূর্ণ অংশ আমি জব্দ করি নাই, শুধুমাত্র নিজামী সাহেবের বক্তব্যের অংশটুকু আমি জব্দ করেছি। ইহা সত্য নহে যে, এই প্রদর্শনী-২/১০ পাঠ করে বলা সম্ভব নয় যে, এটি নিজামী সাহেবের বিবৃতি না কোন সভার বক্তব্য। মোস্তফা আল মাদানী সাহেব স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন কিনা ইহা আমার জানা নাই। মোস্তফা আল মাদানী সাহেবের হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে কেউ কোন বিবৃতি দিয়েছিল কিনা আমি জানি না। এই প্রদর্শনীর দ্বিতীয় পৃষ্ঠার প্রথম লাইনটি স্ক্যানের অংশ নয়, পরে টাইপ করা।
প্রদর্শনী ২/১১, ২/১২, ২/১৩, ২/১৪ সমূহ এই মামলার আসামী মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।
প্রদর্শনী ২/১৫ তে যে সংবাদের উদ্ধৃতি দেওয়া আছে তা একটি ছাত্র সংগঠনের সভায় মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের দেওয়া বক্তব্য। এই সংবাদে আলবদর সংক্রান্ত কোন বক্তব্য নাই। এই সংবাদ পাঠ করে কেউ কোন অপরাধ সংঘটিত করেছিল মর্মে কোন তথ্য আমি তদন্ত রিপোর্টে দাখিল করি নাই।
প্রদর্শনী- ২/১৬ তে দুইটি অংশ, একটি হচ্ছে ছাত্র সংগঠনের সভায় বক্তব্য দেওয়া এবং অন্যটি হচ্ছে কোরআনের তাফসির করা। এই সংবাদ পাঠ করে কেউ কোন অপরাধ সংঘটিত করেছিল মর্মে কোন তথ্য আমি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করি নাই। মতিউর রহমান নিজামী সাহেব সূরা তাওবার ১১১ এবং ১১২ নং আয়াতের কোন ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন কিনা তাহা আমি জানি না।
প্রদর্শনী- ২/১৭, ২/১৮, ২/১৯, ২/২০, ২/২১, ২/২৩, ২/২৫, ২/২৬, ২/২৭, ২/২৮, ২/২৯, ২/৩০, ২/৩১, ২/৩২, ২/৩৩ সমূহে আলবদর বাহিনীতে জড়িত থাকা সম্পর্কে নিজামী সাহেবকে জড়িয়ে কোন সংবাদ পরিবেশিত হয় নাই। প্রদর্শনী- ২/২২ মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের লেখা একটি প্রবন্ধ। এই প্রবন্ধে কোন স্থানে কিংবা লেখক পরিচিতি সম্পর্কে মতিউর রহমান নিজামী সাহেব আলবদর বাহিনীর প্রধান, সংগঠক বা প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে উল্লেখ নাই। প্রদর্শনী- ২/২৪ এ প্রদর্শিত ছবিতে নিজামী সাহেবের ছবি থাকার কথা উল্লেখ নাই। (চলবে)
পূনরায় জেরা ঃ
প্রদর্শনী- ৪ এর আইটেম নাম্বার ২২৫ দৈনিক আজাদের ১১-১২-১৯৭১ এর সংখ্যায় আলবদর বাহিনী আয়োজিত পথসভার একটি ছবি আছে তাতে আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে মতিউর রহমান নিজামী সাহেব নয়, অন্য ব্যক্তির নাম উল্লেখ আছে। আইটেম নাম্বার ২২৫ সাপ্তাহিক বিচিত্রা ১০বর্ষ প্রথম সংখ্যা ২০-০৫-১৯৮১ এর “বাংলাদেশ গণহত্যা” শিরোনামে সংবাদ জব্দ করা আছে।
প্রদর্শনী- ৪/১, ৪/২, ৪/৩, ৪/৪, ৪/৫, ৪/৬, ৪/৭, ৪/৮, ৪/৯, ৪/১০, ৪/১১, ৪/১২, ৪/১৩, ৪/১৪, ৪/১৫, ৪/১৬, ৪/১৭, ৪/১৮, ৪/১৯, ৪/২০, ৪/২১, ৪/২২, ৪/২৩, ৪/২৪ সমূহে নিজামী সাহেবের নামের সাথে আলবদর শব্দটি নাই।
প্রদর্শনী-৮ হচ্ছে একটি জব্দ তালিকা, প্রদর্শনী- ৮/১ দৈনিক ইত্তেফাক ১৭-১১-১৯৭১। প্রদর্শনী-৩ শাহরিয়ার কবীর কর্তৃক লিখিত “বাংলাদেশে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা” বই এর ৬৯ পৃষ্ঠায় “তাদের পরিবারের সদস্যরা সেদিনই জানতে পেরেছিলেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর ক্যাপ্টেন তাহের ও মেজর আসলামের নির্দেশে কারফিউ জারী করা হয়েছিল। আজহারুল হক ও হুমায়ুন কবীর ধরা পড়ার পর পরই কারফিউ তুলে নেওয়া হয়।”- এই কথাগুলো লিখা আছে। প্রদর্শনী- ৮/১ অনুযায়ী জানা যায় যে, ঐ দুই ডাক্তার সাহেবের হত্যাকান্ডের কারণে রমনা থানায় একটি মামলা হয়েছিল। প্রদর্শনী-৩০ এর ৬৮ নম্বর পৃষ্ঠার শেষ প্যারায় “ডা: আজহারুল হক আর ডা: হুমায়ুন কবীরকে আলবদর বাহিনীর হাতে যে তুলে দিয়েছিল সেই ব্যক্তিই ছিল পেশায় চিকিৎসক। তার নাম এহসানুল করিম খান। ১৬ ডিসেম্বরের পর পালাতে গিয়ে কলকাতার দমদম বিমান বন্দরে ধরা পড়েছিল। কিন্তু একদিন পরই তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে আরেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ঘাতক এহসানুলের ভাই। সালমা হক জানিয়েছেন, সম্ভবতঃ এই লোক এখন বেলজিয়াম অথবা মধ্যপ্রাচ্যের কোথাও আছে।”- এই কথাগুলো উল্লেখ আছে। উল্লেখিত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের নাম শাহরিয়ার কবীর সাহেবের নিকট জানতে চাই নাই, তবে সালমা হক সাহেবার নিকট জানতে চেয়েছিলাম কিন্তু তিনি তা জানাতে পারেন নাই। ১৫ই নভেম্বর ১৯৭১ তারিখে ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের টেকনিশিয়ান জনাব আহসান সাহেবের ছেলেকেও ধরে নিয়ে গিয়েছিল মর্মে সালমা হক আমাকে জানিয়েছিলেন। আহসান সাহেব বা তার ছেলের সাথে যোগাযোগের কোন চেষ্টা আমি করি নাই। ডাঃ আজহারুল হক এবং ডাঃ হুমায়ুন কবীর সাহেবের হত্যাকান্ডের বিষয়ে রমনা থানায় যে মামলা হয়েছিল সেই বিষয়ে রমনা থানায় যোগাযোগ করেছি কিন্তু রমনা থানায় ১৯৭১ সালের মামলা সংক্রান্ত কোন নথি না থাকায় এই মামলার ফলাফলের বিষয়ে আমি জানতে পারি নাই। ঢাকার সংশ্লিষ্ট আদালতে এই মামলার তথ্য জানার জন্য আমি যাই নাই। অন্য দুই জায়গায় মামলার এজাহার সমূহের কপি থাকার কথা অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট পুলিশ সার্কেল অফিস এবং এসপি, এসবির নিকট থাকার কথা সেখানে আমি তাহা সংগ্রহের জন্য যাই নাই। ডা: আজহারুল হক সাহেব এবং ডা: হুমায়ুন কবীর সাহেবের হত্যাকান্ডের বিষয়টি এই মামলার তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের পূর্বে আমি অবগত ছিলাম, ইহা সত্য নহে। ইহা সত্য নহে যে, আমি ইচ্ছাকৃতভাবে ডা: আজহারুল হক সাহেব এবং ডা: হুমায়ুন কবীর সাহেবের হত্যাকান্ড সংক্রান্ত মামলার তথ্য গোপন করেছি।
আলবদর মূল বইটি উর্দুতে লিখা। উহার বাংলা অনুবাদ “আলবদর” নামক বইটি প্রদর্শনী ২৮/২ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। যে ব্যক্তি এই বইটির বাংলা অনুবাদ করেছে তার নাম প্রদর্শনী ২৮/২ বইয়ে উল্লে খ নাই। এই অনুবাদ গ্রন্থটি বাজারে পাওয়া যায়না। প্রদর্শনী ২৮/২ এর ২৫৬ পৃষ্ঠায় মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের বক্তব্যের দুইটি উদ্ধৃতি দেওয়া আছে। উক্ত উদ্ধৃতি দুইটির একটিতে আবদুল মালেকের ব্যক্তিগত জীবনের অর্থনৈতিক অবস্থার বর্ণনা আছে এবং অন্যটিতে নিজামী সাহেবের সাথে মালেক সাহেবের ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা আছে। উর্দূতে লেখা আলবদর বইটি আমি বিজ্ঞ প্রসিকিটরের নিকট দিয়েছি, কিন্তু তিনি উহা ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছেন কিনা তাহা আমার জানা নাই। আলবদর বইয়ের লেখক সেলিম মানসুর খালেক ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ছিলেন কিনা তাহা আমার জানা নাই। প্রদর্শনী ২৮/২ এ সেলিম মানসুর খালেদের প্রদর্শনী ২৮/২ এ সেলিম মানসুর খালেদের পরিচিতি উল্লেখ নাই। ইহা সত্য নহে যে, কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই আলবদর বইটি ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছি। প্রদর্শনী ২৮/২ বইয়ে ২৫৬ নাম্বার পৃষ্ঠায় যেখানে মতিউ রহমান নিজামী সাহেবের নাম উল্লেখ আছে সেখানে তার নামের পূর্বে তার পরিচিতি হিসাবে আলবদর শব্দটি উল্লেখ নাই।
দি ভ্যানগার্ড অব দি ইসলামিক রেভুলেশন (প্রদর্শনী- ২৮) এর ৬৬ নাম্বার পৃষ্ঠার শেষ লাইনের আগের লাইনে “উযধশধ টহরাবৎংরঃু৩৮” লেখা আছে। ঐ বইয়ের ২৩৭ নাম্বার পৃষ্ঠায় ৩৮ নাম্বার ক্রমিকে “ওহঃবৎারবি রিঃয গঁঃর দঁ’ ১-জধযসধহ ঘরুধসর রহ তঠঘঅঞ, ঠড়ষ. ২, ২৩৪-৩৫” লেখা রয়েছে। উক্ত বইয়ের প্রথম দিকে ীীরর পৃষ্ঠায় ঔঠঘঅঞ এর পূর্ণাঙ্গ শব্দ হিসাবে “ঝধুুরফ গঁমধয়য়রঁ’ ১-জধযসধহ ধহফ ঝধষরস গধহংঁৎ কযধষরফ, বফং, ঔধন ঠঁয-ঘধুরস-র অ’ষধ ঃযব, ২ াড়ষ. (খধযড়ৎব: ওফধৎধযর গধঃনঁ’ধঃ-র ঞধষধনধয, ১৯৮১)” উল্লেখ আছে। ঔঠঘঅঞ াড়ষ. ২, ২৩৪-৩৫ পৃষ্ঠায় কি লেখা আছে তাহা আমি দেখি নাই। ইহা সত্য নহে যে, উল্লেখিত ২৩৪-৩৫ পৃষ্ঠায় নিজামী সাহেবের সাক্ষাৎকারের যে বক্তব্য আছে তাহার উদ্ধৃতি না দিয়ে প্রদর্শনী- ২৮ এ ভুল উদ্ধৃতি দেওয়া আছে তাহা আমি জানার কারণে ঐ বইটি না পড়ার কথা বলছি।
“পাবনা জেলার মুক্তিযুদ্ধের কথা” (প্রদর্শনী ৩৩) নামক বইয়ের ৭৩ পৃষ্ঠার ২৭শে নভেম্বর সাঁথিয়া থানার ধূলাউড়ি হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেওয়া আছে, ৬৮ পৃষ্ঠায় ডেমরা ও রূপসী গ্রামে গণহত্যার বর্ণনা আছে, ২১০ পৃষ্ঠায় মাওলানা কাছিম উদ্দিন হত্যাকান্ডের বর্ণনা আছে। এই বর্ণনা সমূহে পাকিস্তান আর্মির স্থানীয় সহযোগিদের নাম উল্লেখ থাকলেও মতিউর রহমান নিজামী সাহেবের নাম উল্লেখ নাই। এই উল্লেখিত বইয়ের লেখক মো: জহুরুল ইসলাম বিশু জীবিত আছেন। ড. আবদুল আলিম নামে পাবনা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ে কোন গবেষক আছেন কিনা তাহা আমি জানিনা। (চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন