মেহেদী হাসান, ২১/১০/২০১৩
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদিনসহ আরো বেশ কয়েকজন আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করায় আজ ট্রাইব্যুনালের সামনে গেট আটকে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছেন তারা । একঘন্টা পর্যন্ত চলা অবস্থান কর্মসূচীর সময় ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারকও মেইন গেট দিয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে সমস্যায় পড়েন এবং তাকে গাড়ি ঘুরিয়ে ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রাইব্যুনালে।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক দুইবার নির্বাচিত সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জারি করা আদালত অবমাননা বিষয়ক মামলার তারিখ ধার্য্য ছিল আজ । তার পক্ষে এ্যাডভোকে জয়নুল আবেদিন সুপ্রীম কোর্ট বারের এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামসহ ১০/১২ জন আইনজীবী নিয়ে সকাল সোয়া দশটার দিকে ট্রাইব্যুনালের সামনে আসেন। কিন্তু তখন তাদের ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে বাঁধা দেয়া হলে এর প্রতিবাদে তারা গেটের সামনে দাড়িয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন শুরু করেন।
কর্মসূচীর ৪০ মিনিটের মাথায় ট্রাইব্যুনালের গেটে একজন বিচারকের গাড়ি আসে। বিচারকের গাড়ির সামনে থাকা পুলিশের গাড়ি থেকে পুলিশ সদস্যরা নেমে আসেন। পুলিশ তাদের অনুরোধ করেন গেট থেকে সরে যাবার জন্য। কিন্ত জয়নুল আবেদিন তাদের বলেন, আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে না দিলে আমরা এখান থেকে সরবনা। আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হোক আমরা সরে যাব। এসময় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ সেখানে আসেন এবং তাদের সরে যেতে অনুরোধ করেন। জয়নুল আবেদিন বলেন, আমরা ৪০ মিনিট পর্যন্ত এখানে দাড়িয়ে আছি। আপনি আমাদের ঢকুতে দিচ্ছেননা কেন? ট্রাইব্যুনালের কোন আইনে আছে যে, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করতে পারবেনা আমাদের দেখান। আপনি নাকি বলেছেন আমাদের ভেতরে যাবার দরকার নেই। নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, আপনাদের টাইম প্রেয়ারের দরখাস্ত গতকাল আমি পেয়েছি। আমি একটু আগে আপনাদের এখানে যারা এসেছেন তাদের তালিকা নিয়েছি। সেখান থেকে যাচাই বাছাই করে প্রবেশের ব্যবস্থা করব। কিন্তু তার আগে আপনারা গেটটা একটু ছেড়ে দেন। জাজ সাহেবকে ভেতরে যেতে দিন। জয়নুল আবেদিন বলেন, আমাদের ভেতরে যেতে দিন। আমরা এুনি সরে যাব। এরপর নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, অন্তত পাঁচ মিনিটের জন্য গেটটা ছাড়েন। জজ সাহেব যাক তারপর আপনাদের ব্যবস্থা করব। এসময় জয়নুল আবেদন তাকে পাঁচ মিনিট সময় দেন। কিন্তু ততক্ষনে বিচারক চলে গেছেন গাড়ি ঘুরিয়ে। এরপর রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ ভেতরে চলে যান। কিন্তু ১৫ মিনিট পার হয়ে গেলেও কারা প্রবেশ করতে পারবে সে বিষয়ে কোন তালিকা না আসায় জয়নুল আবেদিন বলেন, আমরা আর ভেতরে প্রবেশ করবনা আজ। ৫ মিনিটের কথা বলে রেজিস্ট্রার চলে গেছেন কিন্তু এখন ১৫ মিনিট পার হয়ে গেছে তার কোন খবর নেই। তিনি কোন তালিকা পাঠাননি।
একঘন্টা অবধি অবস্থান কর্মসূচী পালন শেষে অ্যাডভোটেক জয়নুল আবেদিন সাংবাদিকদের ঘটনার বিষয়ে বলেন, আপনারা সব দেখলেন নিজের চোখে। আজ খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলার তারিখ ধার্য্য ছিল। আমাকে তিনি তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করেছেন। আমরা এ মামলায় চার সপ্তাহ সময় চেয়ে গতকাল একটি দরখাস্ত দিয়েছি। আজ আমি আমার কাউন্সিলরদের নিয়ে ট্রাইব্যুনালে এসেছি। কিন্তু আমাদের ভেতরে যেতে দেয়া হলনা। যে ট্রাইব্যুনালে আইনজীবীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়না সে ট্রাইব্যুনালের বিচার সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক।
আইনজীবীদের ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে বাঁধা বিষয়ে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জয়নুল আবেদিনসহ আমরা এখানে আসার পর রেজিস্ট্রার আমাদের জানিয়েছেন, টাইম প্রেয়ারের দরখাস্ত মুভ করতে আমাদের যাবার দরকার নেই। ভেতরে নাকি চার পাঁচজন আইনজীবী আছেন তারাই যথেষ্ট। ভেতরে যে আইনজীবীদের কথা উনি বলেছেন তারা কেউই খন্দকার মাহবুব হোসেন এর পক্ষের আইনজীবী নন। তারা মাওলানা নিজামীর মামলার আইনজীবী। খন্দকার মাহবুব হোসেন এর পক্ষে কোন আইনজীবী ভেতরে যায়নি। আমাদের প্রশ্ন হল খন্দকার মাহবুব হোসেন এর পক্ষে কে কোর্টে কথা বলবে তা কি রেজিস্ট্রার সাহেব ঠিক করে দেবেন? তাজুল ইসলাম বলেন, আধাঘন্টা পর রেজিস্ট্রার এখানে লোক পাঠিয়ে কারা কারা উপস্থিত আছি তাদের তালিকা চেয়েছেন। আমরা তালিকা দিয়েছি কিন্তু কোন খবর নেই। ৪০ মিনিটরে মাথায় এসে তিনি বললেন যাচাই বাছাই করে তালিকা ঠিক করে ভেতরে প্রবেশের ব্যবস্থা করবেন। সুপ্রীম কোর্ট বারের একজন সভাপতি, সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীদের তিনি এক ঘন্টা পর্যন্ত দাড় করিয়ে রেখেছেন এখানে। ৫ মিনিটের মধ্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হবে বলে চলে গেলেন তিনি। ১৫ মিনিটের মাথায়ও তিনি কোন খবর দিলেননা। এই হল এখানকার অবস্থা।
অবস্থান কর্মসূচী শেষে প্রহসনের বিচার বন্ধ কর করতে হবে স্লোগান দিতে দিতে চলে যান সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবীরা।
এদিকে ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজকের কার্যতালিকায় খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলাটি ছিল এক নং ক্রমিকে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে এ মামলায় কোন আইনজীবী না থাকায় মাওলানা নিজামীর মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। মাওলানা নিজামীর পক্ষের সাক্ষীর নাম নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ১২টায় কোর্ট মুলতবি করা হয় এবং দুইটায় খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলার বিষয়ে জানানো হবে বলে আদেশ দেন কোর্ট।
দুইটার বিরতির পরও এ মামলায় কোন আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামকে তলব করে আনা হয় ট্রাইব্যুনাল। তাজুল ইসলাম যখন উপস্থিত হন তখন মাওলানা নিজামীর মমালা চলছিল। মাওলানা নিজামীর মামলা শেষ হলে খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। ট্রাইব্যুনাল তাজুল ইসলামকে বলেন, টাইম প্রেয়ার দরখাস্তে আপনার স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু আপনি কোর্টে উপস্থিত নেই কেন ? আপনাকে কেন ডেকে আনতে হল?
তখন তাজুল ইসলামক সকালের ঘটনার বিবরন দিয়ে বলেন, যেহেতু এ মামলার সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদিনসহ অন্যান্যদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়ন এবং তারা চলে গেছেন তাই তাদের ডিঙ্গিয়ে এবং কায়েন্টের পরামর্শ ব্যতীত আমি কিছু করতে পারিনা। তারা যেহেতু আসেননি তাই আমার একার এখানে আসাটা শোভনীয় নয়।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি কোর্টে এসে শুরুতেই এ বিষয়টি তুলতে পারতেন । আপনার তো কোর্টে আসতে বাঁধা নেই। তাজুল ইসলাম বলেন, আমি অন্য মামলার আইনজীবী হিসেবে কোর্টে আসি। কিন্তু খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলায় আইনজীবীদের প্রবেশ নিয়ে যা হয়েছে তাতে আমি সে মামলায় একা এখানে আসতে পারিনা। এটা আমার জন্য বিব্রতকর অবস্থা। রেজিস্ট্রার সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এবং সিনিয়র আইনজীবীদের সাথে অশোভন আচরন করেছেন। তারা সবাই মিলে এর প্রতিবাদে চলে গেছেন কোর্টে না এসে। এ অবস্থায় আমি এখানে অন্য মামলার আইনজীবী হিসেবে এখানে আসতে পারলেও ওই মামলার হয়ে কোন কথা বলতে পারিনা। এটা আমার জন্য শোভনীয় নয়।
এরপর আগামীকাল আবার এ মামলার তারিখ ধার্য্য করা হয়। কোর্ট উঠে যাবার পূর্বে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম কিছু একটা বলেন। এসময় তাজুল ইসলাম বলেন, সাবমিশনেরও একটা সীমা থাকা উচিত। কোর্টে কিভাবে কথা বলতে হয় তা শিখে আসেন। এসময় কোর্টের বিচারপতিরা কোর্টরুম ত্যাগ করার জন্য উঠে দাড়িয়েছেন। তারা বের হয়ে যাচ্ছেন। এমনসময় তাজুল ইসলাম এবং জেয়াদ আল মালুমের মধ্যে উচ্চস্বরে বাক্য বিনিময় শুরু হয়ে যায়। দুই পক্ষ পরষ্পরের প্রতি তেড়ে যাবার উপক্রম হয়। জেয়াদ আল মালুম তাজুল ইসলামকে উচ্চস্বরে বলেন, বেয়াদপ। তাজুল ইসলাম বলেন, সারাজীবন যা করে এসেছেন তা এখানে এসেও করতে চান। জেয়াদ আল মালুম বলেন, কি করেছি সারা জীবন? তাজুল ইসলাম বলেন, গুন্ডা। কোর্টে এসেও গুন্ডামি করতে চান? স্কাইপে আপনার নাম আসেনি? বিচার ব্যবস্থাকে আপনারা ধ্বংস করেননি? বেহায়া, নির্লজ্জ কোথাকার। এসময় তাজুল ইসলামের এক জুনিয়র বলেন, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার একদিন হবেই। এ পরিস্থিতিতে দুইপক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে পুলিশ এসে হস্তক্ষেপ করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
অবস্থান কর্মসূচীতে জয়নুল আবেদিনের সাথে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া, হুমায়ুন কবির মঞ্জু, আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, জাহানারা সরকার, মাসুদ রানা, শেখ মো : আলী, মাসুদুল হক, কামরুন্নাহার, রাফিয়া আখতার, নাসরিন খন্দকার, নাজমুল হক, রেজবাউল কবির, তাহা মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদিনসহ আরো বেশ কয়েকজন আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি করায় আজ ট্রাইব্যুনালের সামনে গেট আটকে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছেন তারা । একঘন্টা পর্যন্ত চলা অবস্থান কর্মসূচীর সময় ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারকও মেইন গেট দিয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে সমস্যায় পড়েন এবং তাকে গাড়ি ঘুরিয়ে ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রাইব্যুনালে।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক দুইবার নির্বাচিত সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জারি করা আদালত অবমাননা বিষয়ক মামলার তারিখ ধার্য্য ছিল আজ । তার পক্ষে এ্যাডভোকে জয়নুল আবেদিন সুপ্রীম কোর্ট বারের এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামসহ ১০/১২ জন আইনজীবী নিয়ে সকাল সোয়া দশটার দিকে ট্রাইব্যুনালের সামনে আসেন। কিন্তু তখন তাদের ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে বাঁধা দেয়া হলে এর প্রতিবাদে তারা গেটের সামনে দাড়িয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন শুরু করেন।
কর্মসূচীর ৪০ মিনিটের মাথায় ট্রাইব্যুনালের গেটে একজন বিচারকের গাড়ি আসে। বিচারকের গাড়ির সামনে থাকা পুলিশের গাড়ি থেকে পুলিশ সদস্যরা নেমে আসেন। পুলিশ তাদের অনুরোধ করেন গেট থেকে সরে যাবার জন্য। কিন্ত জয়নুল আবেদিন তাদের বলেন, আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে না দিলে আমরা এখান থেকে সরবনা। আমাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হোক আমরা সরে যাব। এসময় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ সেখানে আসেন এবং তাদের সরে যেতে অনুরোধ করেন। জয়নুল আবেদিন বলেন, আমরা ৪০ মিনিট পর্যন্ত এখানে দাড়িয়ে আছি। আপনি আমাদের ঢকুতে দিচ্ছেননা কেন? ট্রাইব্যুনালের কোন আইনে আছে যে, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবীরা ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করতে পারবেনা আমাদের দেখান। আপনি নাকি বলেছেন আমাদের ভেতরে যাবার দরকার নেই। নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, আপনাদের টাইম প্রেয়ারের দরখাস্ত গতকাল আমি পেয়েছি। আমি একটু আগে আপনাদের এখানে যারা এসেছেন তাদের তালিকা নিয়েছি। সেখান থেকে যাচাই বাছাই করে প্রবেশের ব্যবস্থা করব। কিন্তু তার আগে আপনারা গেটটা একটু ছেড়ে দেন। জাজ সাহেবকে ভেতরে যেতে দিন। জয়নুল আবেদিন বলেন, আমাদের ভেতরে যেতে দিন। আমরা এুনি সরে যাব। এরপর নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, অন্তত পাঁচ মিনিটের জন্য গেটটা ছাড়েন। জজ সাহেব যাক তারপর আপনাদের ব্যবস্থা করব। এসময় জয়নুল আবেদন তাকে পাঁচ মিনিট সময় দেন। কিন্তু ততক্ষনে বিচারক চলে গেছেন গাড়ি ঘুরিয়ে। এরপর রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসির উদ্দিন মাহমুদ ভেতরে চলে যান। কিন্তু ১৫ মিনিট পার হয়ে গেলেও কারা প্রবেশ করতে পারবে সে বিষয়ে কোন তালিকা না আসায় জয়নুল আবেদিন বলেন, আমরা আর ভেতরে প্রবেশ করবনা আজ। ৫ মিনিটের কথা বলে রেজিস্ট্রার চলে গেছেন কিন্তু এখন ১৫ মিনিট পার হয়ে গেছে তার কোন খবর নেই। তিনি কোন তালিকা পাঠাননি।
একঘন্টা অবধি অবস্থান কর্মসূচী পালন শেষে অ্যাডভোটেক জয়নুল আবেদিন সাংবাদিকদের ঘটনার বিষয়ে বলেন, আপনারা সব দেখলেন নিজের চোখে। আজ খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলার তারিখ ধার্য্য ছিল। আমাকে তিনি তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করেছেন। আমরা এ মামলায় চার সপ্তাহ সময় চেয়ে গতকাল একটি দরখাস্ত দিয়েছি। আজ আমি আমার কাউন্সিলরদের নিয়ে ট্রাইব্যুনালে এসেছি। কিন্তু আমাদের ভেতরে যেতে দেয়া হলনা। যে ট্রাইব্যুনালে আইনজীবীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়না সে ট্রাইব্যুনালের বিচার সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক।
আইনজীবীদের ট্রাইব্যুনালে প্রবেশে বাঁধা বিষয়ে অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জয়নুল আবেদিনসহ আমরা এখানে আসার পর রেজিস্ট্রার আমাদের জানিয়েছেন, টাইম প্রেয়ারের দরখাস্ত মুভ করতে আমাদের যাবার দরকার নেই। ভেতরে নাকি চার পাঁচজন আইনজীবী আছেন তারাই যথেষ্ট। ভেতরে যে আইনজীবীদের কথা উনি বলেছেন তারা কেউই খন্দকার মাহবুব হোসেন এর পক্ষের আইনজীবী নন। তারা মাওলানা নিজামীর মামলার আইনজীবী। খন্দকার মাহবুব হোসেন এর পক্ষে কোন আইনজীবী ভেতরে যায়নি। আমাদের প্রশ্ন হল খন্দকার মাহবুব হোসেন এর পক্ষে কে কোর্টে কথা বলবে তা কি রেজিস্ট্রার সাহেব ঠিক করে দেবেন? তাজুল ইসলাম বলেন, আধাঘন্টা পর রেজিস্ট্রার এখানে লোক পাঠিয়ে কারা কারা উপস্থিত আছি তাদের তালিকা চেয়েছেন। আমরা তালিকা দিয়েছি কিন্তু কোন খবর নেই। ৪০ মিনিটরে মাথায় এসে তিনি বললেন যাচাই বাছাই করে তালিকা ঠিক করে ভেতরে প্রবেশের ব্যবস্থা করবেন। সুপ্রীম কোর্ট বারের একজন সভাপতি, সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবীদের তিনি এক ঘন্টা পর্যন্ত দাড় করিয়ে রেখেছেন এখানে। ৫ মিনিটের মধ্যে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হবে বলে চলে গেলেন তিনি। ১৫ মিনিটের মাথায়ও তিনি কোন খবর দিলেননা। এই হল এখানকার অবস্থা।
অবস্থান কর্মসূচী শেষে প্রহসনের বিচার বন্ধ কর করতে হবে স্লোগান দিতে দিতে চলে যান সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবীরা।
এদিকে ট্রাইব্যুনাল-১ এ আজকের কার্যতালিকায় খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলাটি ছিল এক নং ক্রমিকে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালে এ মামলায় কোন আইনজীবী না থাকায় মাওলানা নিজামীর মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। মাওলানা নিজামীর পক্ষের সাক্ষীর নাম নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ১২টায় কোর্ট মুলতবি করা হয় এবং দুইটায় খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলার বিষয়ে জানানো হবে বলে আদেশ দেন কোর্ট।
দুইটার বিরতির পরও এ মামলায় কোন আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামকে তলব করে আনা হয় ট্রাইব্যুনাল। তাজুল ইসলাম যখন উপস্থিত হন তখন মাওলানা নিজামীর মমালা চলছিল। মাওলানা নিজামীর মামলা শেষ হলে খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। ট্রাইব্যুনাল তাজুল ইসলামকে বলেন, টাইম প্রেয়ার দরখাস্তে আপনার স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু আপনি কোর্টে উপস্থিত নেই কেন ? আপনাকে কেন ডেকে আনতে হল?
তখন তাজুল ইসলামক সকালের ঘটনার বিবরন দিয়ে বলেন, যেহেতু এ মামলার সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদিনসহ অন্যান্যদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়ন এবং তারা চলে গেছেন তাই তাদের ডিঙ্গিয়ে এবং কায়েন্টের পরামর্শ ব্যতীত আমি কিছু করতে পারিনা। তারা যেহেতু আসেননি তাই আমার একার এখানে আসাটা শোভনীয় নয়।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, আপনি কোর্টে এসে শুরুতেই এ বিষয়টি তুলতে পারতেন । আপনার তো কোর্টে আসতে বাঁধা নেই। তাজুল ইসলাম বলেন, আমি অন্য মামলার আইনজীবী হিসেবে কোর্টে আসি। কিন্তু খন্দকার মাহবুব হোসেন এর মামলায় আইনজীবীদের প্রবেশ নিয়ে যা হয়েছে তাতে আমি সে মামলায় একা এখানে আসতে পারিনা। এটা আমার জন্য বিব্রতকর অবস্থা। রেজিস্ট্রার সুপ্রীম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি এবং সিনিয়র আইনজীবীদের সাথে অশোভন আচরন করেছেন। তারা সবাই মিলে এর প্রতিবাদে চলে গেছেন কোর্টে না এসে। এ অবস্থায় আমি এখানে অন্য মামলার আইনজীবী হিসেবে এখানে আসতে পারলেও ওই মামলার হয়ে কোন কথা বলতে পারিনা। এটা আমার জন্য শোভনীয় নয়।
এরপর আগামীকাল আবার এ মামলার তারিখ ধার্য্য করা হয়। কোর্ট উঠে যাবার পূর্বে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুম কিছু একটা বলেন। এসময় তাজুল ইসলাম বলেন, সাবমিশনেরও একটা সীমা থাকা উচিত। কোর্টে কিভাবে কথা বলতে হয় তা শিখে আসেন। এসময় কোর্টের বিচারপতিরা কোর্টরুম ত্যাগ করার জন্য উঠে দাড়িয়েছেন। তারা বের হয়ে যাচ্ছেন। এমনসময় তাজুল ইসলাম এবং জেয়াদ আল মালুমের মধ্যে উচ্চস্বরে বাক্য বিনিময় শুরু হয়ে যায়। দুই পক্ষ পরষ্পরের প্রতি তেড়ে যাবার উপক্রম হয়। জেয়াদ আল মালুম তাজুল ইসলামকে উচ্চস্বরে বলেন, বেয়াদপ। তাজুল ইসলাম বলেন, সারাজীবন যা করে এসেছেন তা এখানে এসেও করতে চান। জেয়াদ আল মালুম বলেন, কি করেছি সারা জীবন? তাজুল ইসলাম বলেন, গুন্ডা। কোর্টে এসেও গুন্ডামি করতে চান? স্কাইপে আপনার নাম আসেনি? বিচার ব্যবস্থাকে আপনারা ধ্বংস করেননি? বেহায়া, নির্লজ্জ কোথাকার। এসময় তাজুল ইসলামের এক জুনিয়র বলেন, বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী তাদের বিচার একদিন হবেই। এ পরিস্থিতিতে দুইপক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে পুলিশ এসে হস্তক্ষেপ করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
অবস্থান কর্মসূচীতে জয়নুল আবেদিনের সাথে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া, হুমায়ুন কবির মঞ্জু, আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, জাহানারা সরকার, মাসুদ রানা, শেখ মো : আলী, মাসুদুল হক, কামরুন্নাহার, রাফিয়া আখতার, নাসরিন খন্দকার, নাজমুল হক, রেজবাউল কবির, তাহা মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন