মেহেদী হাসান, ১/১০/২০১৩
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক রায় ঘোষনার পর তার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম এবং স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাইব্যুনালে আজ যে রায় ঘোষনা করা হয়েছে তা আগেই ইন্টারনেটে ফাঁস হয়ে গেছে। রায় ঘোষনার আগেই সোমবার মধ্য রাত থেকে ইন্টারনেট এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে রায়ের কপি প্রকাশিত হয়ে যায়। তারা অভিযোগ করেন যে, আইন মন্ত্রণালয় থেকে লেখা রায় পড়ে শোনানো হয়েছে ট্রাইব্যুনালে । ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক রায় ঘোষনার পর দেখা যায় আগেই ফাঁস হওয়া রায়ের কপির সাথে হুবহু মিল রয়েছে।
তারা ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোডকৃত ফাঁস হওয়া রায়ের একটি কপি সাংবাদিকদের দেখান এসময়।
তারা জানান, সোমবার মধ্যরাতের পর বেলজিয়ামের িি.িঃৎরনঁহধষষবধশং.নব, নামক একটি ওয়েবসাইট, বিদেশী আরেকটি ওয়েবসাইট িি.িলঁংঃরপবপড়হপবৎহ.পড়স এবং নফঃড়ফধু.হবঃ এর ব্লগে রায় প্রকাশিত হয়। এরপর এর সূত্র ধরে ফেসবুক, বিভিন্ন ব্লগ এবং ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন অনলাইন গনমাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হতে থাকে। ফলে ইন্টারনেট, মোবাইল এবং অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তির বরাতে অতি দ্রুত এ খবর ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষনা উপলক্ষে সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন ভিড় করতে থাকেন। এসময় হাইকোর্ট এবং ট্রাইব্যুনাল অঙ্গনে রায় ফাঁস হওয়ার ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। যারা এ বিষয়ে অনবহিত ছিল তাদের কাছেও এ খবর ছড়িয়ে পড়ে।
রায় ঘোষনার পরপরই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী, তার ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরী এবং আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম একই সুরে অভিযোগ করে বলেন, ট্রাইব্যুনালে একটু আগে যে রায় পড়ে শোনানো হল সেটি আসলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে লিখে পাঠানো হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা আইন মন্ত্রণালয়ের লেখা রায় পড়ে শুনিয়েছেন মাত্র। এটি তাদের রায় নয়। এ রায় আগেই ফাঁস হয়ে গেছে। ফাঁস হওয়া রায় বিষয়ক প্রতিবেদনে আরো যে চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে তা হল বিচার শেষ হবার অনেক আ্েগই চলতি বছর ২৩ মে আইন মন্ত্রনালয়ে এ রায় লেখা শুরু হয় যখন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। আমরা ইন্টারনেট এবং অনলাইন গনমাধ্যম থেকে রায়ের কপি ডাউন লোড করে নিয়ে এসেছি। এ কপির সাথে ট্রাইব্যুনালের পাঠ করা রায়ের হুবহু মিল রয়েছে দেখা যাচ্ছে। তারা দাবি করেন যেসব অনলাইনে রায়টি ঘোষনার আগেই ফাঁস হয়েছে তাতে আইনমন্ত্রণালয়ের কম্পিউটারে এ রায় লেখা মর্মে প্রমান রয়েছে।
রায় ঘোষনার পর ফাহাত কাদের চৌধুরী বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী রায় ঘোষনার সময় ট্রাইব্যুনালে বলেছেন এটা আইনমন্ত্রণালয় থেকে তৈরি করা রায়। আদালতে রায় ঘোষণার সময় আমি আইনমন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রায়ের কপি মিলিয়ে দেখেছি। আমি দেখেছি বিচারপতিরা যে রায় পাঠ করেছেন তা প্রকাশিত কপির সাথে হুবহু মিলে গেছে। রায়ের ভারডিক্ট অংশ ছাড়া বাকী অংশটুকু আইনমন্ত্রণালয়ের লেখা কপির সাথে হুবহু মিলে গেছে। আমি বিস্মিত আইনমন্ত্রণালয়ের লেখা রায় কিভাবে বিচারপতিরা পড়ে শোনাতে পারলেন। তাদের এ রায় ঘোষনা থেকে বিরত থাকা উচিত ছিল।
তিনি এসময় ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা ফাঁস হওয়া রায়ের একটি কপি সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন আপনারা দেখেন এই রায় আমন্ত্রণালয় থেকে লেখা হয়েছে। গতকাল রাতে বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে এ রায়।
ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেন, আমরা দেশবাসী ও দুনিয়াকে দেখাতে চাই এখানে জুডিশিয়াল কিলিং হচ্ছে। এখানে কেউ বিচার পাবে না। আমরা বুঝতে পারছি না কোথায় যাব, কোথায় বিচার পাব। আমরা আগে থেকেই জানতাম এখানে বিচার পাব না।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, এই রায় আইনমন্ত্রণালয় থেকে লেখা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা তা আজ পাঠ করেছেন মাত্র। রায়টি গতকাল রাত থেকে ইন্টারনে এবং অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাইব্যুনালের তিনজন বিচারপতির এই রায় পাঠ না করে পদত্যাগ করা উচিৎ ছিল।
সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, বাবা ট্রাইব্যুনালে বলেছেন রায় আইনমন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়েছে। ফাঁস হওয়া রায়ের কপিতে তার প্রমান রয়েছে।
আজ সকালে হাইকোর্ট অঙ্গনে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ফাঁস হওয়া রায় বিষয়ে একটি বুলেটিন প্রচারিত হয় আসামী পক্ষ থেকে। বুলেটিনের এ প্রতিবেদনে ফাঁস হওয়া রায়ের সারমর্ম এবং কোথা থেকে এটি ফাঁস হয়েছে তার সূত্র তুলে ধরা হয় । বুলেটিনের প্রতিবেদন এবং অন্যান্য গনমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যে রায় ঘোষনা করা হয়েছে তার অনুলিপি আইন মন্ত্রনালয়েল আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হকের অফিসের কম্পিউটারে রতি ছিল। আইন মন্ত্রণালয়ের ষষ্ঠ তলার একটি কম্পিউটারে ‘ডি ড্রাইভে’ এ রায়ের কপি পাওয়া যায়। কম্পিউটারের প্রত্যেকটি ফাইল বা ডকুমেন্টের উৎস নির্ণয়ক তথ্য ওই ফাইল বা ডকুমেন্টে সংরক্ষিত থাকে। এই তথ্য ওই ফাইল বা ডকুমেন্টের প্রপারটিস অপশনে গেলে পাওয়া যায়। এই রায়ের কপিটি যে ফাইলে পাওয়া গেছে তার প্রাপারটিস অপশনে গিয়ে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাহলো- ‘ডি ড্রাইভ’র ‘আলম’ নামে ফোল্ডারের সাব ফোল্ডার ‘ডিফারেন্ট কোর্টস অ্যান্ড পোস্ট ক্রিয়েশন’ এর মধ্যে আরেকটি সাব ফোল্ডার ‘ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল’। এই ‘ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল’ এর মধ্যে আরেকটি ফোল্ডার ‘চিফ প্রসিকিউটর-ওয়ার ট্রাইব্যুনাল’ এর মধ্যে রাখা রায়ের খসড়া কপিটির নাম ছিলো ‘সাকা ফাইনাল-১’। রায় লেখা চূড়ান্ত করার পর খসড়া কপিটির নাম ‘সাকা-১’ পরিবর্তন করে রাখা হয়, ‘আইসিটি বিডি কেস নং ০২ অব ২০১১ (ডেলিভারি অব জাজমেন্ট)(ফাইনাল)’।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়ছে আলম নামের যে ব্যক্তির কম্পিউটারে ফাইলটি পাওয়া গেছে সেই আলম হলেন আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো : জহিরুল হক এর কম্পিউটার অপারেটর।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে কম্পিউটারের তথ্যে দেখা যায় আইন মন্ত্রণালয়ে উক্ত ফাইলটি তৈরি করা হয়েছে চলতি বছর ২৩ মে ১২টা ১ মিনিটের সময় যখন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ চলছিলো। ফাইলের সাইজ ১৬৭ কেবি। ফাইলটি এডিট করা হয়েছে ২৫৮৭ মিনিট পর্যন্ত।
এ তথ্য থেকে আসামী পক্ষ দাবি করেছে বিচার শেষ হওয়ার আগেই ২৩ মে থেকে রায় লেখা শুরু হয়েছিল। গত ১৪ জুলাই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শেষে রায় অপেক্ষমান ঘোষনা করা হয়।
রায় প্রকাশের আগেই বিভিন্ন অনলাইন এবং অন্যান্য গনমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রায় নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী মোট ২৩টি অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। সেখান থেকে মোট ১৭টি অভিযোগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী হাজির করে। যেহেতু রাষ্ট্রপক্ষ ১৭টি অভিযোগের পক্ষে সাক্ষী হাজির করেছে, তাই এ ১৭টি অভিযোগের বিষয়ে রায় লেখা হয়েছে মর্মে তথ্য দেখা যায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া রায়ের কপিতে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া রায়ে দেখা যায়, ১৭টি অভিযোগের মধ্যে মোট ৯টি অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আটটি অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া যে ছয়টি অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করেনি সেগুলো থেকেও তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আজ ট্রাইব্যুনাল কতৃক প্রকাশিত রায়েও হুবহু একই ফলাফল দেখা যায় বলে আসামীর পরিবার এবং আইনজীবীরা দাবি করেছেন।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক রায় ঘোষনার পর তার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম এবং স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, ট্রাইব্যুনালে আজ যে রায় ঘোষনা করা হয়েছে তা আগেই ইন্টারনেটে ফাঁস হয়ে গেছে। রায় ঘোষনার আগেই সোমবার মধ্য রাত থেকে ইন্টারনেট এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে রায়ের কপি প্রকাশিত হয়ে যায়। তারা অভিযোগ করেন যে, আইন মন্ত্রণালয় থেকে লেখা রায় পড়ে শোনানো হয়েছে ট্রাইব্যুনালে । ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক রায় ঘোষনার পর দেখা যায় আগেই ফাঁস হওয়া রায়ের কপির সাথে হুবহু মিল রয়েছে।
তারা ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোডকৃত ফাঁস হওয়া রায়ের একটি কপি সাংবাদিকদের দেখান এসময়।
তারা জানান, সোমবার মধ্যরাতের পর বেলজিয়ামের িি.িঃৎরনঁহধষষবধশং.নব, নামক একটি ওয়েবসাইট, বিদেশী আরেকটি ওয়েবসাইট িি.িলঁংঃরপবপড়হপবৎহ.পড়স এবং নফঃড়ফধু.হবঃ এর ব্লগে রায় প্রকাশিত হয়। এরপর এর সূত্র ধরে ফেসবুক, বিভিন্ন ব্লগ এবং ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন অনলাইন গনমাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হতে থাকে। ফলে ইন্টারনেট, মোবাইল এবং অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তির বরাতে অতি দ্রুত এ খবর ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রায় ঘোষনা উপলক্ষে সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন ভিড় করতে থাকেন। এসময় হাইকোর্ট এবং ট্রাইব্যুনাল অঙ্গনে রায় ফাঁস হওয়ার ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। যারা এ বিষয়ে অনবহিত ছিল তাদের কাছেও এ খবর ছড়িয়ে পড়ে।
রায় ঘোষনার পরপরই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী, তার ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরী এবং আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম একই সুরে অভিযোগ করে বলেন, ট্রাইব্যুনালে একটু আগে যে রায় পড়ে শোনানো হল সেটি আসলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে লিখে পাঠানো হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা আইন মন্ত্রণালয়ের লেখা রায় পড়ে শুনিয়েছেন মাত্র। এটি তাদের রায় নয়। এ রায় আগেই ফাঁস হয়ে গেছে। ফাঁস হওয়া রায় বিষয়ক প্রতিবেদনে আরো যে চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে তা হল বিচার শেষ হবার অনেক আ্েগই চলতি বছর ২৩ মে আইন মন্ত্রনালয়ে এ রায় লেখা শুরু হয় যখন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। আমরা ইন্টারনেট এবং অনলাইন গনমাধ্যম থেকে রায়ের কপি ডাউন লোড করে নিয়ে এসেছি। এ কপির সাথে ট্রাইব্যুনালের পাঠ করা রায়ের হুবহু মিল রয়েছে দেখা যাচ্ছে। তারা দাবি করেন যেসব অনলাইনে রায়টি ঘোষনার আগেই ফাঁস হয়েছে তাতে আইনমন্ত্রণালয়ের কম্পিউটারে এ রায় লেখা মর্মে প্রমান রয়েছে।
রায় ঘোষনার পর ফাহাত কাদের চৌধুরী বলেন, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী রায় ঘোষনার সময় ট্রাইব্যুনালে বলেছেন এটা আইনমন্ত্রণালয় থেকে তৈরি করা রায়। আদালতে রায় ঘোষণার সময় আমি আইনমন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রায়ের কপি মিলিয়ে দেখেছি। আমি দেখেছি বিচারপতিরা যে রায় পাঠ করেছেন তা প্রকাশিত কপির সাথে হুবহু মিলে গেছে। রায়ের ভারডিক্ট অংশ ছাড়া বাকী অংশটুকু আইনমন্ত্রণালয়ের লেখা কপির সাথে হুবহু মিলে গেছে। আমি বিস্মিত আইনমন্ত্রণালয়ের লেখা রায় কিভাবে বিচারপতিরা পড়ে শোনাতে পারলেন। তাদের এ রায় ঘোষনা থেকে বিরত থাকা উচিত ছিল।
তিনি এসময় ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা ফাঁস হওয়া রায়ের একটি কপি সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন আপনারা দেখেন এই রায় আমন্ত্রণালয় থেকে লেখা হয়েছে। গতকাল রাতে বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে এ রায়।
ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেন, আমরা দেশবাসী ও দুনিয়াকে দেখাতে চাই এখানে জুডিশিয়াল কিলিং হচ্ছে। এখানে কেউ বিচার পাবে না। আমরা বুঝতে পারছি না কোথায় যাব, কোথায় বিচার পাব। আমরা আগে থেকেই জানতাম এখানে বিচার পাব না।
সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, এই রায় আইনমন্ত্রণালয় থেকে লেখা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা তা আজ পাঠ করেছেন মাত্র। রায়টি গতকাল রাত থেকে ইন্টারনে এবং অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। ট্রাইব্যুনালের তিনজন বিচারপতির এই রায় পাঠ না করে পদত্যাগ করা উচিৎ ছিল।
সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বড় ছেলে ফাইয়াজ কাদের চৌধুরী রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, বাবা ট্রাইব্যুনালে বলেছেন রায় আইনমন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়েছে। ফাঁস হওয়া রায়ের কপিতে তার প্রমান রয়েছে।
আজ সকালে হাইকোর্ট অঙ্গনে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ফাঁস হওয়া রায় বিষয়ে একটি বুলেটিন প্রচারিত হয় আসামী পক্ষ থেকে। বুলেটিনের এ প্রতিবেদনে ফাঁস হওয়া রায়ের সারমর্ম এবং কোথা থেকে এটি ফাঁস হয়েছে তার সূত্র তুলে ধরা হয় । বুলেটিনের প্রতিবেদন এবং অন্যান্য গনমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যে রায় ঘোষনা করা হয়েছে তার অনুলিপি আইন মন্ত্রনালয়েল আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মোহাম্মদ জহিরুল হকের অফিসের কম্পিউটারে রতি ছিল। আইন মন্ত্রণালয়ের ষষ্ঠ তলার একটি কম্পিউটারে ‘ডি ড্রাইভে’ এ রায়ের কপি পাওয়া যায়। কম্পিউটারের প্রত্যেকটি ফাইল বা ডকুমেন্টের উৎস নির্ণয়ক তথ্য ওই ফাইল বা ডকুমেন্টে সংরক্ষিত থাকে। এই তথ্য ওই ফাইল বা ডকুমেন্টের প্রপারটিস অপশনে গেলে পাওয়া যায়। এই রায়ের কপিটি যে ফাইলে পাওয়া গেছে তার প্রাপারটিস অপশনে গিয়ে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাহলো- ‘ডি ড্রাইভ’র ‘আলম’ নামে ফোল্ডারের সাব ফোল্ডার ‘ডিফারেন্ট কোর্টস অ্যান্ড পোস্ট ক্রিয়েশন’ এর মধ্যে আরেকটি সাব ফোল্ডার ‘ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল’। এই ‘ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল’ এর মধ্যে আরেকটি ফোল্ডার ‘চিফ প্রসিকিউটর-ওয়ার ট্রাইব্যুনাল’ এর মধ্যে রাখা রায়ের খসড়া কপিটির নাম ছিলো ‘সাকা ফাইনাল-১’। রায় লেখা চূড়ান্ত করার পর খসড়া কপিটির নাম ‘সাকা-১’ পরিবর্তন করে রাখা হয়, ‘আইসিটি বিডি কেস নং ০২ অব ২০১১ (ডেলিভারি অব জাজমেন্ট)(ফাইনাল)’।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়ছে আলম নামের যে ব্যক্তির কম্পিউটারে ফাইলটি পাওয়া গেছে সেই আলম হলেন আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো : জহিরুল হক এর কম্পিউটার অপারেটর।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে কম্পিউটারের তথ্যে দেখা যায় আইন মন্ত্রণালয়ে উক্ত ফাইলটি তৈরি করা হয়েছে চলতি বছর ২৩ মে ১২টা ১ মিনিটের সময় যখন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ চলছিলো। ফাইলের সাইজ ১৬৭ কেবি। ফাইলটি এডিট করা হয়েছে ২৫৮৭ মিনিট পর্যন্ত।
এ তথ্য থেকে আসামী পক্ষ দাবি করেছে বিচার শেষ হওয়ার আগেই ২৩ মে থেকে রায় লেখা শুরু হয়েছিল। গত ১৪ জুলাই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শেষে রায় অপেক্ষমান ঘোষনা করা হয়।
রায় প্রকাশের আগেই বিভিন্ন অনলাইন এবং অন্যান্য গনমাধ্যমে ফাঁস হওয়া রায় নিয়ে তৈরি করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী মোট ২৩টি অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। সেখান থেকে মোট ১৭টি অভিযোগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী হাজির করে। যেহেতু রাষ্ট্রপক্ষ ১৭টি অভিযোগের পক্ষে সাক্ষী হাজির করেছে, তাই এ ১৭টি অভিযোগের বিষয়ে রায় লেখা হয়েছে মর্মে তথ্য দেখা যায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া রায়ের কপিতে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া রায়ে দেখা যায়, ১৭টি অভিযোগের মধ্যে মোট ৯টি অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আটটি অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া যে ছয়টি অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করেনি সেগুলো থেকেও তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আজ ট্রাইব্যুনাল কতৃক প্রকাশিত রায়েও হুবহু একই ফলাফল দেখা যায় বলে আসামীর পরিবার এবং আইনজীবীরা দাবি করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন