mehedy hasan, 7/10/2012
আজ মাওলানা সাঈদীর পক্ষে নবম সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়। জবানবন্দীতে সাক্ষী বলেন, আমারনাম হেমায়েত উদ্দিন। বয়স ৬৪ বছর। আমার গ্রাম টেংরাখালী, থানা-জিয়ানগর, জেলা-পিরোজপুর। আমি মুদি মালের দোকানদারী করি। ১৯৭১ সালেও আমি মুদি মালের দোকানদারী করতাম। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১১ বৎসর আগে আমার মা মারা যায়। তখন আমার বয়স ছিল ১২ বৎসর। মা মারা যাওয়ার পরের দিন আমার ১০ বছর বয়স্ক ছোট বোন মারা যায়। মা মারা যাওয়ার সময় আমার তিন চার মাস বয়সের এক ছোট ভাই রেখে যায়। আমার বাড়ির উপরে এক চাচী আমাদের লালন পালন করে।
স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে জৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি কি শেষের দিকে হবে আমার পার্শ্ববর্তী উমেদপুর গ্রামে আমার চাচীর বাবার বাড়ি সেখানে সে বেড়াতে যাওয়ার পর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই খবর পেয়ে আমি একদিন বিকালে চাচীকে সেই বাড়িতে দেখতে যাই। ঐ দিন বিকালে চাচী আর আমাকে আসতে দেয়নি। পরের দিন সকাল সাড়ে নয়টা কি পৌনে দশটা বাঁজে মানুষ চেচামেচি করতেছে পাক সেনারা আসতেছে পাক সেনারা আসতেছে বলে। আমি তখন ঐ ঘর থেকে বের হয়ে আমার সঙ্গে থাকা আফজাল, লতিফ, নুরুল ইসলাম ও অন্যান্য কয়েকজনসহ বাড়িরপূর্ব পার্শ্বে বাগানে গিয়ে দাড়াই। সেখান থেকে দেখতে পাই ১৫/১৬ জন পাক সেনা সাথে মুসলেম মাওলানা, দানেশ মোল্লা, সেকান্দার সিকদার, আসমত আলী মুন্সী, গণিগাজী, রাজ্জাক, মহসিন, মমিন এরা সবাই উমেদপুর হিন্দু পাড়ায় ঢুকে। কিছু পরেই ঐ বাড়ি থেকে আগুন দেখতে পাই। ১৫/১৬ মিনিট পরে পাক সেনা ও তাদের সাথের লোকজন একজন লোককে ধরে নিয়ে পশ্চিমদিকে বের হয়। আমার সাথে থাকা আফজাল বলে বিশাবালীকে ধরে নিয়ে গেছে। বিশাবালীকে নিয়ে তারা মাঠের উত্তর দিকে হোগলাবুনিয়া হিন্দু পাড়ায় যায়। কিছুক্ষণপরে ঐ হিন্দু পাড়ায় আগুন দেখতে পাই। ঐ খানে কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে আমি বাড়ি চলে আসি। বিকালে দোকানে গেলে সংবাদ শুনি ১০/১২ টি ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। বিশাবালীসহ হোগলাবুনিয়া গ্রাম থেকে আরো ৪/৫ জন হিন্দুকে ধরে নিয়ে গেছে। এর পরের দিন বিকালে দোকানে বসে শুনি হোগলাবুনিয়া গ্রাম থেকে যে ৪/৫ জনকে ধরে নিয়েগিয়ে ছিলতাদেরকে পিরোজপুর বলেশ্বর নদীর পাড়ে নিয়ে হত্যা করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন