মেহেদী হাসান, ৩/১০/২০১২
বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৪ তম সাক্ষীর জেরা আজ শেষ হয়েছে। ১৪ তম সাক্ষী গোপাল চন্দ্র দাস গত মঙ্গলবার জবানবন্দী প্রদান করেন এবং ওই দিনই তার জেরা শুরু হয়।
তাকে জেরা করেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী আহসানুল হক হেনা। তাকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, রেজাউল করিম প্রমুখ।
১৪ তম সাক্ষী তার জবানবন্দীতে ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের গহিরায় আলোচিত নূতনচন্দ্র সিংহ হত্যাকান্ডের বর্ননা দেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে।
জেরা :
প্রশ্ন : আপনি ব্রজহরি কর্মকারের রুম থেকে ঘটনা (নূতনচন্দ্র সিংহ হত্যাকান্ড) দেখেছিলেন একথা প্রফুল্ল বাবুকে (নূতন চন্দ্রের ছেলে) বলেছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনি কবে ভারতে রওয়ান দেন এবং কবে পৌছান?
উত্তর : আমি ২৭শে এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে ২৮শে এপ্রিল তারিখে ভারতে পৌঁিছ।
প্রশ্ন : ১৩ এপ্রিল ঘটনার পর ভারতে যাবার আগে কুন্ডেশ্বরী ভবনে গিয়েছিলেন?
উত্তর : ১৩ই এপ্রিল থেকে ২৭শে এপ্রিল তারিখে ভারতে যাওয়ার পথে কুন্ডেশ্বরী ভবনের সামনে আসা ব্যতীত অন্য কোন সময় আমি কুন্ডেশ্বরী ভবনের সামনে আসিনাই।
প্রশ্ন : আপনি ১৯৭১ সালে কোন সময় ভারতে যাননাই।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : স্বাধীনতার পর কুন্ডেশ্বরী বালিকা মহা বিদ্যালয়ের দেয়ালে কোন গুলির দাগ দেখেছিলেন?
উত্তর : দেশ স্বাধীনের পর আমি যখন প্রথম কুন্ডেশ্বরী কমপ্লেক্স যাই তখন কুন্ডেশ্বরী বালিকা মহাবিদ্যালয়ে কোন গুলির দাগ আমি দেখিনাই।
প্রশ্ন : ৪১ (১) ৭২ নম্বরে নতুন চন্দ্র হত্যার ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছিল তা জানেন?
উত্তর : জানি। এই মামালা দায়েরের সময় আমি গিয়েছিলাম।
প্রশ্ন : উক্ত মামলায় ফজলুল কাদের চৌধুরীকে আসামী করা হয়েছিল।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : উক্ত মামলায় ২রা মে ১৯৮০ তারিখে সরকারের নির্দেশে পাবলিক প্রসিবিউটর মামলাটি উথড্রো করার আবেদন করিলে আসামীদেরকে খালাস দেয় হয় জানেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : সেই মামলাটি দায়ের করেছিলেন সত্য রঞ্জন সিংহ।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : সে মামলার এজাহার পড়েছিলেন?
উত্তর : পড়েছিলাম তবে মনে নাই।
প্রশ্ন : সত্য বাবুদের বাড়ি লুটপাট এবং গাড়ি লুটপাটের ব্যাপারে ৪২(১)৭২ নম্বরে অন্য কোন মামলা হয়েছিল তা জানেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : উনাদের বাড়ি গাড়ি লুটপাট হয়েছিল তা জানেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ঐসকল মামলায় যে গোপাল চন্দ্র দাস সাী হয়েছিল আপনি সেই গোপাল চন্দ্র দাস নহেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : প্রশ্ন : পাকিস্তানি আর্মি প্রথমবার চলে যাওয়ার পর এবং পুনরায় ফিরে আসার মাঝে যে সময় সে সময়ের মধ্যে আপনি নূতন চন্দ্র বাবুর সাথে কথা বলেছিলেন?
উত্তর : কথা বলার কোন সুযোগ পাইনাই। কারণ আমি ঐ সময় দোতলাতেই ছিলাম।
প্রশ্ন : ঐ সময় দোতলার সমস্ত ক বন্ধ ছিল এবং সেই সব কে আমার ঢোকার কোন উপায় ছিলনা।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ওই বিল্ডিংয়ের দোতলার যে রুমে আপনি ছিলেন বলছেন সেই রুম থেকে মন্দিরের সামনের অংশ দেখা যায়না।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : “ওই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, ওই মাবুদ” এই কথাগুলি তখন কে বলেছিল ?
উত্তর : তা আমি এখন মনে করতে পারছিনা।
প্রশ্ন : এই কথাগুলি তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার স্বার্থে আপনাকে শিখিয়ে দিয়েছে।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৩ই এপ্রিল তারিখে কুন্ডেশ্বরী কমপ্লেক্স বা তার আশে পাশে কোথাও আপনি ছিলেননা।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : একটি কুচক্রী মহল আপনাকে ভারত থেকে ঢাকায় এনে একমাস রেখে শিখিয়ে এই ট্রাইব্যুনালে নিয়ে এসেছে অসত্য বক্তব্য প্রদানের জন্য।
উত্তর : সঠিক নয়।
প্রশ্ন : ঘটনার দিন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সাহেবের পাকিস্তানি আর্মির সংগে ঘটনাস্থলে যাওয়া এবং পিস্তল বা রিভলভার দিয়ে দুই/তিন রাউন্ড গুলি করা অসত্য
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : কথিত সময়ে, কথিত দিনে, কথিত স্থানে, কথিত প্রকারে আপনি কোন ঘটনা দেখেননাই এবং কোন ঘটনা ঘটে নাই
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : “১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমার বয়স ৩৪/৩৫ বৎসর ছিল। আমি ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম,এ, পাশ করেছি। এর আগে সংস্কৃত শাস্ত্রে কাব্য ব্যাকরণতীর্থ ও বিধ্যানীধি উপাধি লাভ করি। আমি বর্তমানে চিটাগং এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক যাহা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৭৫ সনে। ১৯৭১ সালে আমি কুন্ডেশ্বরী বালিকা মহাবিদ্যালয়ের অধ্য হিসাবে কর্মরত ছিলাম বা ঐ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন অধ্য নতুন চন্দ্র সিংহ এবং আমি ছিলাম প্রতিষ্ঠাতা অধ্য। ১৯৭১ সাল ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সকলের নিকট একটি স্মরণীয় বছর। ১৯৭১ সালে কুন্ডেশ্বরী ভবনে একটি স্মরণীয় ঘটনা যা এ যুগের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম ঘটনা বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছে বলে চট্টগ্রাম বাসী এবং বাংলাদেশের জনগণ জ্ঞাত আছেন বা ঐ দিনে কুন্ডেশ্বরী আয়ুর্বেদীয় ঔষধালয়, কুন্ডেশ্বরী বালিকা বিদ্যা মন্দির এবং কুন্ডেশ্বরী বালিকা মহাবিদ্যালয়ের মহান প্রতিষ্ঠানা দানবীর নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়কে হত্যা করা হয় এবং এই ঘটনাটি আমি চাুস প্রত্য করেছি। দেশ যখন পাকিস্তানিদের দ্বারা আক্রান্ত সেই সময়ে তাদের কিছু সহযোগী পাকিস্তানি মিলিটারীদের সাথে একত্র হয়ে লুন্ঠন, হত্যাকান্ড, অগ্নি সংযোগ এবং ধর্ষণ ইত্যাদি জঘন্যতম ঘটনা ঘটতে থাকে এবং এ খবর কুন্ডেশ্বরীতে আমাদের কাছে আসছে। সেখানে আশ্রিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩০টি অধ্যাপক পরিবারও এ ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞাত হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্রিত অধ্যাপকদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ আলী আহসান, ডঃ আনিসুজ্জামান, ডঃ রশিদুল হক, ডঃ মাহমুদ শাহ কোরায়েশী প্রমুখ। বিষয়টি অবহিত হয়ে আমরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকবৃন্দ একটি জরুরী আলোচনায় মিলিত হই। অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান সাহেব অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন। যুদ্ধের ভয়াবহতা বিষয়ে আলী আহসান সাহেবের জ্ঞান ছিল গভীর। তিনি সেদিন বলেছিলেন যুদ্ধ আসন্ন এবং আমরাও আক্রান্ত হতে পারি। আমরা সেদিন সিদ্ধান্ত নিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দ সহ কুন্ডেশ্বরী ভবনের সকলেই ১০ই এপ্রিল তারিখের মধ্যেই আবাসস্থল ত্যাগ করে ভারতে চলে যাবো। পরবর্তীতে ১০ তারিখের মধ্যেই কুন্ডেশ্বরী ভবন এবং আশ্রিত অধ্যাপকবৃন্দ তাদের আবাসস্থল ত্যাগ করেন, একমাত্র প্রতিষ্ঠাতা অধ্য নতুন চন্দ্র সিংহ ছাড়া। তাকে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান সাহেব সহ আমরা সকলেই অনুরোধ করি। কিন্তু নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয় সংকল্পে দৃঢ় ছিলেন। তিনি বলেছিলেন এ আমার জন্মভূমি এবং আমার প্রাণ প্রিয় প্রতিষ্ঠান সমূহ আমি স্থাপন করেছি এখানে মা কুন্ডেশ্বরী মুর্তি স্থাপিত আছে এগুলোকে ত্যাগ করে আমি কোথাও যেতে পারি না। পরের দিন থেকে সকলেই কুন্ডেশ্বরীর আবাসন ত্যাগ করতে থাকে এবং আমিও স্বস্ত্রীক আমার একমাত্র কন্যাটিকে নিয়ে আমাদের গ্রামের বাড়ীতে চলে যাই। গ্রামের বাড়ীতে একরাত্রি অবস্থানের পর আমি পরের দিন কুন্ডেশ্বরী ভবনে ফিলে আসি। আমি যখন কুন্ডেশ্বরী ভবনে প্রবেশ করলাম তখন দেখলাম যে, নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয় একান্ত একা। তিনি আমাকে দেখে আবেগে আপ্লুত হলেন এবং আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। প্রায় কাঁদ কাঁদ স্বরে তিনি বললেন বাবা সবাই চলে গেছে তুমিও যাবে নাকি? তুমি যেও না, তুমি থাক। আমিও আবেগে তাড়িত হয়েছিলাম এবং বলেছিলাম যে, কাকাবাবু যাবনা, আপনাকে নিয়েই আমি থাকবো। সেইদিন কিছুণ পরে আমি গৌরাঙ্গ সিংহকে দেখেছিলাম। তিনি অবস্থান করছিলেন নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়কে রান্না বান্না করে দেওয়ার জন্য। সেইদিন বেলা বারোটা/একটা পর্যন্ত আমি কুন্ডেশ্বরী ভবনে ছিলাম। তারপর দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে বিকাল ৪/৫ টার সময় আমি আবার কুন্ডেশ্বরী ভবনে ফিরে আসি। নতুন সিংহ মহাশয় আমাকে পুনরায় দেখে স্বস্তি পেয়েছিলেন। আমি প্রায় রাত্রি ৯/১০ টা পর্যন্ত কুন্ডেশ্বরী ভবনে ছিলাম এবং নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়কে সংগ এবং স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। পুনরায় রাত্রিতে আমি আবার জগৎমল্লপাড়ায় আমার বড় শ্যালিকার বাড়িতে ফিরে আসি এবং সেখানে রাত্রি যাপন করি বা পরের দিন আবার সকাল ৯/১০ টার দিকে আবার কুন্ডেশ্বরী ভবনে যাই এবং নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়ের সংগে দেখা করি। সেইদিন আরও কিছু সংখ্যক লোক একজনের পর একজন করে প্রায় ৬/৭ জন লোক কুন্ডেশ্বরী ভবনে এসে নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়ের সংগে সাাত করে। তাদের মধ্যে ছিলে শ্রী ব্রজহরি কর্মকার, শমাংক মোহন পালিত, হিমাংশু বৈদ্য, মনোরঞ্জন সিংহ এবং গৌরাঙ্গ সিংহ। আমরা বসে বেশ কিছুণ নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়ের সংগে আলোচনা করেছি এবং আমাদের সকলের নিরাপত্তার জন্য কুন্ডেশ্বরী ভবন ত্যাগ করে অন্য কোন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়ের সংগে কথাবার্তা বলে আমরা যে যার বাড়িতে চলে যাই। আমি জগৎমল্লপাড়ায় চলে যাই। বিকালে আমি আবার কুন্ডেশ্বরী ভবনে আসি এবং নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়কে সংগ দিয়ে আবার বিকালে আমার সেই শ্যালিকার বাড়িতে জগৎমল্লপাড়ায় চলে যাই। পরের দিন অর্থাৎ ১৩ই এপ্রিল, ১৯৭১ তারিখে সকাল ৯টা/ সাড়ে নয়টার সময় আমি আবার কুন্ডেশ্বরীতে ফিরে আসার সময় আমি রাস্তায় গোলাগুলির শব্দ শুনছিলাম। খুব তাড়াহুড়া করে কুন্ডেশ্বরী ভবনে এসে দেখলাম যে, ব্রজহরি বাবু, হিমাংশু বৈদ্য, মনোরঞ্জন সিংহ এবং গৌরাঙ্গ সিংহ কুন্ডেশ্বরী মন্দিরের উঠানে দাঁড়িয়ে নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়ের সাথে আলাপ আলোচনা করছেন। আমি এসেই বললাম যে, আর দেরী নয়, আমাদের এখনই চলে যেতে হবে। আমি গোলাগুলির আওয়াজ শুনেছি। পাকিস্তানি আর্মি এবং তাদের সহযোগীরা কুন্ডেশ্বরীতেও আসতে পারে। কথাটা বলেছিলাম শুধু নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়কে সরিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু বেশী সময় লাগল না। অল্প সময়ের মধ্যেই পাকিস্তানি আর্মি বহর সামনে একখানা জীপ গাড়ি হন হন করে কুন্ডেশ্বরী ভবনে ঢুকে পড়ে, বাইরের উঠানে থেমে যায়। তখন আমরা দেখলাম সঙ্গিন উঁচিয়ে পাকিস্তানি আর্মি নামছে এবং জীপ থেকে একজন পাকিস্তানি আর্মি অফিসার সহ কয়েকজন সিভিলিয়ান যারা বাঙ্গালী গাড়ি থেকে নেমে পড়ে। তাদেরকে দেখেই সকলে বলে উঠলেন, ওই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, ওই মাবুদ। আমরা তাদেরকে দেখেই অত্যন্ত তড়িঘড়ি করে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আমি এবং ব্রজ হরি বাবু নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়ের দ্বিতল ভবনের দোতলায় উঠে পড়ি এবং সেখানে আত্মগোপন করে। অন্যারা বাড়ির পেছনের দিকে অর্থাৎ বাড়ির দণি-পশ্চিম দিকে বাঁশঝাড়ে এবং ঝোপের আড়ালে আত্মগোপন করে। আমি এবং ব্রজ হরি বাবু দোতলায় যে ছোট কামরাটিতে ব্রজ হরি বাবু থাকতেন সেই কামরায় নিজেকে আড়ালে রেখে জানালা দিয়ে সেদিনকার ঘটনা অবলোকন করতে থাকি। দেখলাম যে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সাহেব এবং পাকিস্তানি আর্মি অফিসার এবং দু/একজন আর্মি সিপাই এবং আরও দুই/একজন বাঙ্গালী নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়ের সাথে কথাবার্তা বলছেন এবং কিছুণ পরেই তারা নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়কে ছেড়ে আবার চলে যায়। তারা গাড়িতে উঠেন, আমরা গাড়ির আওয়াজ শুনেছি। আমরা ভেবেছিলাম বিপদমুক্ত হলাম। আনুমানিক আট/দশ মিনিট পরে আবার গাড়ির আওয়াজ শোনা গেল। আমরা দোতলার ঐ ঘরটিতে আবার আত্মগোপন করি। কিছুণ পরে আমরা আবার দেখতে পাই সেই সেনাবাহিনী এবং তাদের সংগের লোকেরা আবার ফিরে আসে এবং মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করে নতুন চন্দ্র সিংহ মহাশয়কে টেনে হিচড়ে বাহির করে উঠানে নিয়ে আসে। তাকে উদ্দেশ্য করে ব্রাশ ফায়ার করে।”
এই যে কথাগুলো আপনি এই ট্রাইব্যুালে এসে সাক্ষ্য দেয়ার সময় বললেন এই কথাগুলো আপনি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রদত্ত জবনবন্দীতে বলেননি।
উত্তর : সত্য নয়। বলেছি।
প্রশ্ন : “আমি নিজে দেখেছি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীও তার পিস্তল বা রিভলবার দিয়ে নতুন চন্দ্র সিংহের উপর দুই/তিন রাউন্ড গুলি বর্ষন করে” একথাও আপনি তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট বলেননি।
উত্তর : বলেছি।
প্রশ্ন : উপরোক্ত বক্তব্যসমূহ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আপনাকে শিখিয়ে দিয়েছে বলার জন্য।
প্রশ্ন : সত্য নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন