মেহেদী হাসান, ২৬/২/২০১৪
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজো ৬ নং অভিযোগ পাড়েরহাটে হিন্দুদের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
আজ প্রথমে তিনি এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ১ নং সাক্ষী মাহবুব আলম হাওলাদারের জবানবন্দী থেকে পড়ে শোনান। ৬ নং অভিযোগ বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেছেন, ৭ মে সকাল বেলা আমি নিজ বাড়িতেই ছিলাম। এবং লোকমুখে শুনতে পাই পাক হানাদার বাহিনী পাড়েরহাট আসিতেছে এবং পারের হাটের শান্তি কমিটির লোকেরা পাড়েরহাট রিক্সা স্ট্যান্ডে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছে। আমি পাড়েরহাটে যাইয়া রিক্সা স্ট্যান্ডের আড়ালে থেকে গোপনে লক্ষ্য করিতেছি পাড়েরহাটের শান্তি কমিটির লোকের দাড়িয়ে আছে। কিছু পরে একেকটি রিক্সা করে ২৬টি রিক্সায় ৫২
জন পাক হানাদার বাহিনী রিক্সা স্ট্যান্ডে নামে। শান্তি কমিটির লোকেরা তাদের অভ্যর্থনা জানায়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী উর্দুভাষা ভাল জানতেন বিধায় ক্যাপ্টেন ইজাজের সাথে কথা বলেন। পরে বাজারের দিকে পাক হানাদার বাহিনী যেতে থাকে। শান্তি কমিটির লোকেরা বাজারের ভেতরের দিকে যায়। মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের আওয়ামী লীগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের দোকানঘর, বসতঘর ক্যাপ্টেন ইজাজকে দেখিয়ে দেয়। ক্যাপ্টেন ইজাজ লুটের নির্দেশ দেয়। লুটপাট শুরু হয়ে যায়। আমি অকুস্থল থেকে কিছু দূরে সরে যাই। পরে জানতে পারি ৩০ থেকে ৩১টি দোকান ঘরের মামামাল, বসতবাড়ি লুটপাট করে সাঈদী সাহেবের নেতৃত্বে ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়। পাড়েহাটের বড় ব্যবসায়ী মাখন সাহার দোকান ঘরের মাটির নিচে একটি লোহার সিন্ধুক থেকে ২২ কোজি সোনা রূপা লুট করে। ক্যাপ্টেন ইজাজ তা নিজেই নিয়ে নেয়। এক ঘরে এত সোনা পাওয়ায় ক্যাপ্টেন ইজাজ পারের হাটের নাম রাখেন সোনার পারেরর হাট। পারের হাটের উত্তর দিকে পুলের নিকট মদন সাহার দোকান ঘর, বসত ঘর দেলাওয়ার হোসাইন বর্তমান সাঈদী নিজের নেতৃত্বে লুটপাট করে। দোকান ও বসত ঘর ভেঙ্গে খালের পূর্ব পাশে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যায়। পারের হাটের লোকেররা লুটপাটের মালামাল, সোনাসহ ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি পাসতহবিল গঠন করে। নগরবাসী সাহা, তারকাচন্দ্র সাহা, বেনীমাধব সাহা প্রানের ভয়ে ভারতে চলে গেলে তাদের ঘরের মালামাল লুটপাট করে। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে নগরবাসী সাহার ও পারের হাটের লুটের মালামাল নিয়ে গঠিত পাসতহবিলের মালালা নিজেই বেচাকেনা করে। এবং আরো লুটের অর্থ এর সাথে যোগ করে বাড়াতে থাকে। এই টাকা দিয়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী খুলনা, ঢাকায় অট্টালিকা ও বহু সম্পদ গড়ে তোলে।
এরপর তিনি ২ নং সাক্ষী রুহুল আমিন নবিনের জবানবন্দী থেকে প্রসঙ্গক্রমে পড়ে শোনান। ২ নং সাক্ষী বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রসদ কিনতে জুন মাসে বৃহষ্পতিবার হাটের দিন পারের হাট বাজারে যাই। এসময় লুঙ্গি ও পাঞ্জাবী পরিহিত তৎকালীন দেলাওয়ার হোসাইন শিকদার (বর্তমানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) বা হাতের বগলের নিচে একখানা ঢেউটিন, মাথায় একটি ঝাকায় কাসা পিতলের বাটি, জগ ও একটি কলস নিয়ে পাসতহবিলের দোকানের দিকে যাচ্ছে। আমি বাজারের উত্তর দিকে গিয়ে শফিজউদ্দিন মৌলভীর দোকানের সামনে যাবার পর উপস্থিত লোকদের কাছে জানতে পারি মদন সাহার দোকান লুট হয়েছে। কিছুক্ষন পর মদন সাহার দোকান ঘরটি ভেঙ্গে নৌকাযোগে তার (মাওলানা সাঈদী) শশুর ইউনুসল আলী মুুিন্স সাহেবের বাড়িতে নিয়ে তোলে।
স্বাধীনতাকমী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার লক্ষ্যে কতিপর স্বাধীনতা বিরোধী লোকদের নিয়ে সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেশ মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে পারের হাট এলাকায় রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। অন্যান্য এলাকার ন্যায় পিরোজপুর এলাকার স্বাধীনতাকামীদের চিরতরে নিংশেষ করার জন্য ১৯৭১ সালের ৩ মে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী আগমন করে। ৭ মে পারের হাটের শান্তি কমিটির সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেস মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব সহ আরো কয়েকন পারের হাটে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য রিক্সা স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে থাকে। ২৬টি রিক্সাযোগে প্রায় ৫২ জন পাক হানাদার বাহিনী পারের হাটে প্রবশে করে। শান্তি কমিটির লোকজন পাক হানাদারদের নিয়ে পারেরহাট বাজারে প্রবেশ করে এবং আওয়ামী লীগ ও হিন্দুদের বাড়িঘর দোকানপাট দেখিয়ে দেয়। ক্যাপ্টেন এজাজ অন্যান্যদের সাথে পরামর্শ করে উর্দুতে বলেন ‘লে লও”। শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের দেখিয়ে দেওয়া ঘরগুলোতে শুরু হয় লুটপাট। পারের হাট বাজারের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মাখন সাহার দোকানের মাটির নিচের লোহার সিন্দুক থেকে ২২ শের স্বর্ণ ও রূপা লুট করে। ৩০/৩৫টি দোকান ঘর লুটাপাট চালায়। পরের দিন ৮ মার্চ বাদুরা চিথলিয়া গ্রামে সাত আটটি ঘরে লুটাপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
৩ নং সাক্ষী মিজানুর রহমান তালকদার বলেছেন, দেলোয়ার হোসেন শিকদার কথিত সাঈদী পারের হাট বাজারে সেনাবাহিনী এবং রাজাকার ক্যম্প স্থাপনের পর যেসব কুকর্ম সংঘটিত হয়েছে যেমন অগ্নি সংযোগ, হত্যা লুটপাট, নারী নির্যাতন, হিন্দুদের ধর্মান্তরকরণ, রেপের উদ্দেশে গ্রামের সাধারণ মহিলাদের ধরে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর এসব কাজের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দেলোয়ার হোসেন শিকদার জড়িত ।
চার নং সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদার বলেছেন, ১৯৭১ সালে তিনি পিরোজপুর সোহরাওয়াদী কলেজের ছাত্র ছিলেন। পিরোজপুরে পাক বাহিনী আসার খবর পেয়ে তিনি গ্রামে চলে যান। গ্রামে গিয়ে জানতে পারেন জামায়াত নেতা সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী, মোসলেম মাওওলানা এদের নেতৃত্বে পিস কমিটি গঠিত হয়। দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদীর নেতৃত্বে বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র এবং স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠনের লোকদের নিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়।
সুলতান আহমদ বলেন, বাজারে এবং আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করে পাক বাহিনী, পিস কমিটি এবং রাজাকারদের কর্মকান্ড প্রত্যক্ষ করি। পাক বাহিনী পাড়েরহাটে আসার পর উপরে বর্নিত পিস কমিটির নেতৃবৃন্দ পাক পাহিনীকে স্বাগত জানায় এবং বাজারে নিয়ে যায় লুটপাটের জন্য। দেলোয়ার হোসেন বর্তমান সাঈদী হাত উচু করে তাদেরকে হিন্দু সম্প্রদায় এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির দোকান ও বসতঘর দেখিয়ে দেয়। বাজারে লুটপাট এবং মানুষের ছোটাছুটি শুরু হলে আত্মীয়ের বাসায় চলে যাই। পরে আবার বাজারে এসে জানতে পারি ৩০/৩৫টি ঘর লুট হয়েছে। দেলোয়ার হোসেন বর্তমান সাঈদীর নেতৃত্বে লুটের মাল খেয়াঘাটের সামনে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। আরো শুনতে পেলাম মাখন সাহার ঘর থেকে ২২ শের সোনা রূপা উদ্ধার করা হয়েছে যা ক্যাপ্টেন এজাজ নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি এবং গিয়ে দেখি খেয়াঘাটে অবস্থিত নগরবাসী সাহার ঘর দখল করে লুটের মালামাল এর সাহায্যে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে যার পরিচালক ছিলেন দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অষ্টম সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদার তখন বাজারে ছোলা মুরি বিক্রি করত। সে খুবই ন্যাচারাল সাক্ষী । তিনি বলেছেন, আমি ১৯৭১ সালে পারেরহাট বাজারে বুটমুড়ি ফেরি করে বিক্রি করতাম। মে মাসের সাত তারিখ শান্তি কমিটির দেলোয়ার শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, মোসলেম মাওলানা এরা বাজারের উত্তর মাথায় রিক্সা স্ট্যান্ডের কাছে যায়। কিছুক্ষন পর ২৬টি রিক্সায় ৫২ জন পাক আর্মি আসে। পাক আর্মি নামার পর তারা দেলোয়ার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার এদের জিজ্ঞসা করে বাজারের অবস্থা কি । তারপর শান্তি কমিটির লোকজন পাক আর্মিদের হিন্দু এবং নৌকা মার্কার লোকজনের দোকান, ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়। এরপর তারা বাজারে ঢোকে। দেলোয়ার শিকাদর পাক আর্মিদের ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়। আর লুটপাটের নির্দেশ দেয়। অর্মির অর্ডারে শুরু হয় লুটপাট। ৩০/৩৫ টি ঘরে তারা লুটপাট করে। দেলোয়ার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, সেকেন্দার শিকদার, খলিল মৌলভীসহ শান্তি কমিটির অন্যান্যরা লুটপাট করে। ঘন্টা দেড়েক লুটপাট করে চলে যায় পাক আর্মি। এরপর পুরাদমে লুটপাট করে শান্তি কমিটির লোকেরা।
নবম সাক্ষী আলতাফ বলেন, মে মাসের সাত তারিখ পাক আর্মি পারেরহাট বাজারে আসে। পাক আর্মি আসার ছয়/সাত দিন আগে সেকেন্দার শিকদার, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মোসলেম মাওলানা, দানেশ আলী মোল্লার নেতৃত্বে শান্তি কমিটি গঠন হয়। তারপর রেজাকার বাহিনী গঠন হয় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতত্বে। শান্তি কমিটির লোকজনই রেজাকার বাহিনী গঠন করে।
এ বাহিনী গঠনের পর পারেরহাট বন্দরে ৩০/৩৫টি দোকান ঘর এবং ববাসা বাড়ি লুটপাট করে । পারেরহাট এবং তার আশপাশে যা কিছুই ঘটে যেমন অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ধর্ষন সবই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।
এভাবে অ্যাটর্নি জেনারেল ১২, ১৩ নং সাক্ষীর জবানবন্দী পড়ে শোনান। এরপর ১৯ (২) ধারায় গৃহীত ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে যে ৩ জন সাক্ষীর সাক্ষীর ওপর ৬ নং অভিযোগ বিষয়ে নির্ভর করা হয়েছে সে বিষয়ে উল্লেখ করেন। এসময় তিনি ট্রাইব্যুনালের আদেশ পড়ে শোনান ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দী সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করন প্রসঙ্গে।
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল ৬ নং অভিযোগ বিষয়ে আসামী পক্ষের উপস্থাপিত যুক্তির জবাব দেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা ট্রাইব্যুনালে যে জবানবন্দী দিয়েছেন জেরায় তা আনশেকেন রয়ে গেছে। এসময় আদালত বলেন, আপনার এ দাবি ঠিক নয়। আসামী পক্ষ তাদের চ্যালেঞ্জ করেছে। আপনি তার জবাব দেন। আপনি দেখান যে, সাক্ষীদের জবানবন্দী আনশেকেন রয়ে গেছে। আসামী পক্ষ আরো বলেছেন আপনাদের সাক্ষীরা নির্দিষ্ট করে কোন দোকানদার এবং বাড়ির মালিকের নাম বলতে পারেনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সব হিন্দুদের নাম বলতে হবে বিষয়টি এমন নয়। রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন সাক্ষী মাখন সাহা, মদন সাহার নাম বলেছেন। আসামী পক্ষের ৩ নং সাক্ষী বলেছেন পাড়েটহাট বাজারে লুটপাট হয়েছে। তিনি মাখন সাহা, মদন সাহা, বিজয় মাস্টার এবং গৌরাঙ্গসাহার দোকান লুটোর কথা বলেছেন। এ থেকে এটা প্রমানিত যে ঘটনা সত্য। কাজেই সবার নাম বলতে হবে তার দরকার নেই। ঘটনা ঘটেছে কি-না সেটাই আসল।
রাষ্ট্রপক্ষের ১ নং সাক্ষী এবং মামলার বাদী মাহবুবুল আলমের বয়স চ্যালেঞ্জ করে আসামী পক্ষ বলেছে সে তখন ১২/১৩ বছরের বালক ছিল।
এর জবাবে অ্যটর্নি জেনারেল বলেন, সনদে তার জন্ম তারিখ ১৯৬৯। লেখাপড়ার বেলায় এটি হতে পারে বলে সাক্ষী জানিয়েছে। কিন্তু সাক্ষী বলেছেন সে ১৯৭৩ সালে বিয়ে করেছেন। কাজেই ১৯৭৩ সালে বিয়ে করলে ১৯৭১ সালে বালক থাকার কথা নয়।
তখন একজন বিচারপতি বলেন, মহাত্মাগান্ধী কত বছর বয়সে বিয়ে করেছেন জানেন? ১৩ বছরে। তখন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সেই যুগে আর্লি বিয়ে হত।
২ নংসাক্ষী রুহুল আমিন নবিন বিষয়ে আসামী পক্ষ দাবি করেছে সে ঘটনার সময় এলাকায় ছিলনা। সে কোন ঘটনা দেখেনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সাক্ষী নিজেই বলেছেন ২১ জুন সে এলাকা ত্যাগ করে। সে একজন মুক্তিযোদ্ধা। কাজেই সেতো পাড়েরহাট বাজারে ঘোরাফেরা করবেনা। এটাই স্বাভাবিক।
চার নং সাক্ষী সুলতান আহমেদ ট্রাইব্যুনালে এসে বলেছেন তিনি দেখেছেন মাওলানা সাঈদী লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের সময় হাত উচিয়ে হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট দেখিয়ে দেয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তার কাছে একথা তিনি বলেননি।
এ বিষয়ে আদালত বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা কি তদন্ত করেছে? এত সুযোগসুবিধা নিয়ে তারা কি করেছে? তারা কি বনভোজন করেছে। সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে এসে বলছে সে দেখেছে সাঈদী হাত উচু করে ঘরবাড়ি দেখিয়ে দিয়েছে আর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ কথাটি বলেনি?
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজো ৬ নং অভিযোগ পাড়েরহাটে হিন্দুদের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
আজ প্রথমে তিনি এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ১ নং সাক্ষী মাহবুব আলম হাওলাদারের জবানবন্দী থেকে পড়ে শোনান। ৬ নং অভিযোগ বিষয়ে মাহবুবে আলম বলেছেন, ৭ মে সকাল বেলা আমি নিজ বাড়িতেই ছিলাম। এবং লোকমুখে শুনতে পাই পাক হানাদার বাহিনী পাড়েরহাট আসিতেছে এবং পারের হাটের শান্তি কমিটির লোকেরা পাড়েরহাট রিক্সা স্ট্যান্ডে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষা করছে। আমি পাড়েরহাটে যাইয়া রিক্সা স্ট্যান্ডের আড়ালে থেকে গোপনে লক্ষ্য করিতেছি পাড়েরহাটের শান্তি কমিটির লোকের দাড়িয়ে আছে। কিছু পরে একেকটি রিক্সা করে ২৬টি রিক্সায় ৫২
জন পাক হানাদার বাহিনী রিক্সা স্ট্যান্ডে নামে। শান্তি কমিটির লোকেরা তাদের অভ্যর্থনা জানায়। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী উর্দুভাষা ভাল জানতেন বিধায় ক্যাপ্টেন ইজাজের সাথে কথা বলেন। পরে বাজারের দিকে পাক হানাদার বাহিনী যেতে থাকে। শান্তি কমিটির লোকেরা বাজারের ভেতরের দিকে যায়। মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের আওয়ামী লীগ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের দোকানঘর, বসতঘর ক্যাপ্টেন ইজাজকে দেখিয়ে দেয়। ক্যাপ্টেন ইজাজ লুটের নির্দেশ দেয়। লুটপাট শুরু হয়ে যায়। আমি অকুস্থল থেকে কিছু দূরে সরে যাই। পরে জানতে পারি ৩০ থেকে ৩১টি দোকান ঘরের মামামাল, বসতবাড়ি লুটপাট করে সাঈদী সাহেবের নেতৃত্বে ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়। পাড়েহাটের বড় ব্যবসায়ী মাখন সাহার দোকান ঘরের মাটির নিচে একটি লোহার সিন্ধুক থেকে ২২ কোজি সোনা রূপা লুট করে। ক্যাপ্টেন ইজাজ তা নিজেই নিয়ে নেয়। এক ঘরে এত সোনা পাওয়ায় ক্যাপ্টেন ইজাজ পারের হাটের নাম রাখেন সোনার পারেরর হাট। পারের হাটের উত্তর দিকে পুলের নিকট মদন সাহার দোকান ঘর, বসত ঘর দেলাওয়ার হোসাইন বর্তমান সাঈদী নিজের নেতৃত্বে লুটপাট করে। দোকান ও বসত ঘর ভেঙ্গে খালের পূর্ব পাশে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যায়। পারের হাটের লোকেররা লুটপাটের মালামাল, সোনাসহ ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি পাসতহবিল গঠন করে। নগরবাসী সাহা, তারকাচন্দ্র সাহা, বেনীমাধব সাহা প্রানের ভয়ে ভারতে চলে গেলে তাদের ঘরের মালামাল লুটপাট করে। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে নগরবাসী সাহার ও পারের হাটের লুটের মালামাল নিয়ে গঠিত পাসতহবিলের মালালা নিজেই বেচাকেনা করে। এবং আরো লুটের অর্থ এর সাথে যোগ করে বাড়াতে থাকে। এই টাকা দিয়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী খুলনা, ঢাকায় অট্টালিকা ও বহু সম্পদ গড়ে তোলে।
এরপর তিনি ২ নং সাক্ষী রুহুল আমিন নবিনের জবানবন্দী থেকে প্রসঙ্গক্রমে পড়ে শোনান। ২ নং সাক্ষী বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রসদ কিনতে জুন মাসে বৃহষ্পতিবার হাটের দিন পারের হাট বাজারে যাই। এসময় লুঙ্গি ও পাঞ্জাবী পরিহিত তৎকালীন দেলাওয়ার হোসাইন শিকদার (বর্তমানে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) বা হাতের বগলের নিচে একখানা ঢেউটিন, মাথায় একটি ঝাকায় কাসা পিতলের বাটি, জগ ও একটি কলস নিয়ে পাসতহবিলের দোকানের দিকে যাচ্ছে। আমি বাজারের উত্তর দিকে গিয়ে শফিজউদ্দিন মৌলভীর দোকানের সামনে যাবার পর উপস্থিত লোকদের কাছে জানতে পারি মদন সাহার দোকান লুট হয়েছে। কিছুক্ষন পর মদন সাহার দোকান ঘরটি ভেঙ্গে নৌকাযোগে তার (মাওলানা সাঈদী) শশুর ইউনুসল আলী মুুিন্স সাহেবের বাড়িতে নিয়ে তোলে।
স্বাধীনতাকমী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার লক্ষ্যে কতিপর স্বাধীনতা বিরোধী লোকদের নিয়ে সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেশ মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে পারের হাট এলাকায় রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়। অন্যান্য এলাকার ন্যায় পিরোজপুর এলাকার স্বাধীনতাকামীদের চিরতরে নিংশেষ করার জন্য ১৯৭১ সালের ৩ মে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী আগমন করে। ৭ মে পারের হাটের শান্তি কমিটির সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেস মোল্লা, মাওলানা মোসলেহউদ্দিন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেব সহ আরো কয়েকন পারের হাটে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য রিক্সা স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে থাকে। ২৬টি রিক্সাযোগে প্রায় ৫২ জন পাক হানাদার বাহিনী পারের হাটে প্রবশে করে। শান্তি কমিটির লোকজন পাক হানাদারদের নিয়ে পারেরহাট বাজারে প্রবেশ করে এবং আওয়ামী লীগ ও হিন্দুদের বাড়িঘর দোকানপাট দেখিয়ে দেয়। ক্যাপ্টেন এজাজ অন্যান্যদের সাথে পরামর্শ করে উর্দুতে বলেন ‘লে লও”। শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের দেখিয়ে দেওয়া ঘরগুলোতে শুরু হয় লুটপাট। পারের হাট বাজারের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মাখন সাহার দোকানের মাটির নিচের লোহার সিন্দুক থেকে ২২ শের স্বর্ণ ও রূপা লুট করে। ৩০/৩৫টি দোকান ঘর লুটাপাট চালায়। পরের দিন ৮ মার্চ বাদুরা চিথলিয়া গ্রামে সাত আটটি ঘরে লুটাপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
৩ নং সাক্ষী মিজানুর রহমান তালকদার বলেছেন, দেলোয়ার হোসেন শিকদার কথিত সাঈদী পারের হাট বাজারে সেনাবাহিনী এবং রাজাকার ক্যম্প স্থাপনের পর যেসব কুকর্ম সংঘটিত হয়েছে যেমন অগ্নি সংযোগ, হত্যা লুটপাট, নারী নির্যাতন, হিন্দুদের ধর্মান্তরকরণ, রেপের উদ্দেশে গ্রামের সাধারণ মহিলাদের ধরে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর এসব কাজের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দেলোয়ার হোসেন শিকদার জড়িত ।
চার নং সাক্ষী সুলতান আহমেদ হাওলাদার বলেছেন, ১৯৭১ সালে তিনি পিরোজপুর সোহরাওয়াদী কলেজের ছাত্র ছিলেন। পিরোজপুরে পাক বাহিনী আসার খবর পেয়ে তিনি গ্রামে চলে যান। গ্রামে গিয়ে জানতে পারেন জামায়াত নেতা সেকেন্দার আলী শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী, মোসলেম মাওওলানা এদের নেতৃত্বে পিস কমিটি গঠিত হয়। দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদীর নেতৃত্বে বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র এবং স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠনের লোকদের নিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়।
সুলতান আহমদ বলেন, বাজারে এবং আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করে পাক বাহিনী, পিস কমিটি এবং রাজাকারদের কর্মকান্ড প্রত্যক্ষ করি। পাক বাহিনী পাড়েরহাটে আসার পর উপরে বর্নিত পিস কমিটির নেতৃবৃন্দ পাক পাহিনীকে স্বাগত জানায় এবং বাজারে নিয়ে যায় লুটপাটের জন্য। দেলোয়ার হোসেন বর্তমান সাঈদী হাত উচু করে তাদেরকে হিন্দু সম্প্রদায় এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির দোকান ও বসতঘর দেখিয়ে দেয়। বাজারে লুটপাট এবং মানুষের ছোটাছুটি শুরু হলে আত্মীয়ের বাসায় চলে যাই। পরে আবার বাজারে এসে জানতে পারি ৩০/৩৫টি ঘর লুট হয়েছে। দেলোয়ার হোসেন বর্তমান সাঈদীর নেতৃত্বে লুটের মাল খেয়াঘাটের সামনে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। আরো শুনতে পেলাম মাখন সাহার ঘর থেকে ২২ শের সোনা রূপা উদ্ধার করা হয়েছে যা ক্যাপ্টেন এজাজ নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি এবং গিয়ে দেখি খেয়াঘাটে অবস্থিত নগরবাসী সাহার ঘর দখল করে লুটের মালামাল এর সাহায্যে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে যার পরিচালক ছিলেন দেলোয়ার হোসেন শিকদার বর্তমানে সাঈদী।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অষ্টম সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদার তখন বাজারে ছোলা মুরি বিক্রি করত। সে খুবই ন্যাচারাল সাক্ষী । তিনি বলেছেন, আমি ১৯৭১ সালে পারেরহাট বাজারে বুটমুড়ি ফেরি করে বিক্রি করতাম। মে মাসের সাত তারিখ শান্তি কমিটির দেলোয়ার শিকদার, দানেশ আলী মোল্লা, মোসলেম মাওলানা এরা বাজারের উত্তর মাথায় রিক্সা স্ট্যান্ডের কাছে যায়। কিছুক্ষন পর ২৬টি রিক্সায় ৫২ জন পাক আর্মি আসে। পাক আর্মি নামার পর তারা দেলোয়ার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, দানেশ মোল্লা, সেকেন্দার শিকদার এদের জিজ্ঞসা করে বাজারের অবস্থা কি । তারপর শান্তি কমিটির লোকজন পাক আর্মিদের হিন্দু এবং নৌকা মার্কার লোকজনের দোকান, ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়। এরপর তারা বাজারে ঢোকে। দেলোয়ার শিকাদর পাক আর্মিদের ঘরবাড়ি দেখিয়ে দেয়। আর লুটপাটের নির্দেশ দেয়। অর্মির অর্ডারে শুরু হয় লুটপাট। ৩০/৩৫ টি ঘরে তারা লুটপাট করে। দেলোয়ার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, সেকেন্দার শিকদার, খলিল মৌলভীসহ শান্তি কমিটির অন্যান্যরা লুটপাট করে। ঘন্টা দেড়েক লুটপাট করে চলে যায় পাক আর্মি। এরপর পুরাদমে লুটপাট করে শান্তি কমিটির লোকেরা।
নবম সাক্ষী আলতাফ বলেন, মে মাসের সাত তারিখ পাক আর্মি পারেরহাট বাজারে আসে। পাক আর্মি আসার ছয়/সাত দিন আগে সেকেন্দার শিকদার, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মোসলেম মাওলানা, দানেশ আলী মোল্লার নেতৃত্বে শান্তি কমিটি গঠন হয়। তারপর রেজাকার বাহিনী গঠন হয় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতত্বে। শান্তি কমিটির লোকজনই রেজাকার বাহিনী গঠন করে।
এ বাহিনী গঠনের পর পারেরহাট বন্দরে ৩০/৩৫টি দোকান ঘর এবং ববাসা বাড়ি লুটপাট করে । পারেরহাট এবং তার আশপাশে যা কিছুই ঘটে যেমন অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ধর্ষন সবই দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।
এভাবে অ্যাটর্নি জেনারেল ১২, ১৩ নং সাক্ষীর জবানবন্দী পড়ে শোনান। এরপর ১৯ (২) ধারায় গৃহীত ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে যে ৩ জন সাক্ষীর সাক্ষীর ওপর ৬ নং অভিযোগ বিষয়ে নির্ভর করা হয়েছে সে বিষয়ে উল্লেখ করেন। এসময় তিনি ট্রাইব্যুনালের আদেশ পড়ে শোনান ১৫ সাক্ষীর জবানবন্দী সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করন প্রসঙ্গে।
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল ৬ নং অভিযোগ বিষয়ে আসামী পক্ষের উপস্থাপিত যুক্তির জবাব দেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীরা ট্রাইব্যুনালে যে জবানবন্দী দিয়েছেন জেরায় তা আনশেকেন রয়ে গেছে। এসময় আদালত বলেন, আপনার এ দাবি ঠিক নয়। আসামী পক্ষ তাদের চ্যালেঞ্জ করেছে। আপনি তার জবাব দেন। আপনি দেখান যে, সাক্ষীদের জবানবন্দী আনশেকেন রয়ে গেছে। আসামী পক্ষ আরো বলেছেন আপনাদের সাক্ষীরা নির্দিষ্ট করে কোন দোকানদার এবং বাড়ির মালিকের নাম বলতে পারেনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সব হিন্দুদের নাম বলতে হবে বিষয়টি এমন নয়। রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন সাক্ষী মাখন সাহা, মদন সাহার নাম বলেছেন। আসামী পক্ষের ৩ নং সাক্ষী বলেছেন পাড়েটহাট বাজারে লুটপাট হয়েছে। তিনি মাখন সাহা, মদন সাহা, বিজয় মাস্টার এবং গৌরাঙ্গসাহার দোকান লুটোর কথা বলেছেন। এ থেকে এটা প্রমানিত যে ঘটনা সত্য। কাজেই সবার নাম বলতে হবে তার দরকার নেই। ঘটনা ঘটেছে কি-না সেটাই আসল।
রাষ্ট্রপক্ষের ১ নং সাক্ষী এবং মামলার বাদী মাহবুবুল আলমের বয়স চ্যালেঞ্জ করে আসামী পক্ষ বলেছে সে তখন ১২/১৩ বছরের বালক ছিল।
এর জবাবে অ্যটর্নি জেনারেল বলেন, সনদে তার জন্ম তারিখ ১৯৬৯। লেখাপড়ার বেলায় এটি হতে পারে বলে সাক্ষী জানিয়েছে। কিন্তু সাক্ষী বলেছেন সে ১৯৭৩ সালে বিয়ে করেছেন। কাজেই ১৯৭৩ সালে বিয়ে করলে ১৯৭১ সালে বালক থাকার কথা নয়।
তখন একজন বিচারপতি বলেন, মহাত্মাগান্ধী কত বছর বয়সে বিয়ে করেছেন জানেন? ১৩ বছরে। তখন প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সেই যুগে আর্লি বিয়ে হত।
২ নংসাক্ষী রুহুল আমিন নবিন বিষয়ে আসামী পক্ষ দাবি করেছে সে ঘটনার সময় এলাকায় ছিলনা। সে কোন ঘটনা দেখেনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সাক্ষী নিজেই বলেছেন ২১ জুন সে এলাকা ত্যাগ করে। সে একজন মুক্তিযোদ্ধা। কাজেই সেতো পাড়েরহাট বাজারে ঘোরাফেরা করবেনা। এটাই স্বাভাবিক।
চার নং সাক্ষী সুলতান আহমেদ ট্রাইব্যুনালে এসে বলেছেন তিনি দেখেছেন মাওলানা সাঈদী লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের সময় হাত উচিয়ে হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট দেখিয়ে দেয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তার কাছে একথা তিনি বলেননি।
এ বিষয়ে আদালত বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা কি তদন্ত করেছে? এত সুযোগসুবিধা নিয়ে তারা কি করেছে? তারা কি বনভোজন করেছে। সাক্ষী ট্রাইব্যুনালে এসে বলছে সে দেখেছে সাঈদী হাত উচু করে ঘরবাড়ি দেখিয়ে দিয়েছে আর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ কথাটি বলেনি?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন