১৯/২/২০১৪
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান (এমসি) মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ ষষ্ঠ সাক্ষী মৃদুল কুমার দে ও সপ্তম সাক্ষী প্রদীপ তালুকদারের জবানবন্দী গ্রহণ করার পর আসামীপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম তাদের জেরা করেন। এরপর আগামী রোববার পরবর্তী সাক্ষীর জবনবন্দী গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মীর কাসেম আলী ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় বসে তা দেখেন। তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিজানুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক ও অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ও সাইফুল ইসলাম।
ষষ্ঠ সাক্ষী মৃদুল কুমার দের জবানবন্দী: আমার নাম মৃদুল কুমার দে। আমার বর্তমান ঠিকানা, ৬৫ হাজারী লেন। কোতয়ালী থানা, চট্টগ্রাম। ১৯৭১ সালে বয়স ছিল ১৬ বছর। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আস-শামস চট্টগ্রামের হাজারী লেনে নানাবিধ অত্যাচার নির্যাতন চালায়। তখন হাজারী লেনে দুই থেকে তিন শত পরিবার বসবাস করত। ওই ধ্বংসযজ্ঞের কারণে অধিকাংশ লোকজন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। ’৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে আল-বদররা ধরে নিয়ে যায়। তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার একদিন পর জানতে পারি মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে আল-বদররা এসে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে বদর বাহিনীর ক্যাম্পে নির্যাতন করে।
’৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল বেলা দেশমুক্ত হওয়ার অবস্থায় ডালিম হোটেলের আশপাশে লোক দেখতে পাই। সেখানে আমি রনজিত দাশের স্ত্রী প্রভা রানি দাশকে দেখতে পাই। তিনি কেঁদে কেঁদে আমাকে বলে তার স্বামী ও টুনটু সেনকে এখনও খুজে পায়নি। তখন আমি সেখানে দাঁড়ানো অবস্থায় যারা বন্দি ছিলেন তাদের কাছ থেকে শুনতে পাই সম্ভবত টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে মীর কাসেম আলীর লোকেরা মেরে ফেলেছে। টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে খ্্ুঁজে পাওয়া যায়নি।
জেরা:
প্রশ্ন : আপনি কতদিন থেকে হাজারী লেনে বাস করছেন?
উত্তর : জ্ঞান হওয়ার পর থেকে ’৭১ সাল পর্যন্ত এবং এখনো সেখানে আছি।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে হাজারী লেনে আপনার বয়সী ৪০ বা ৫০ জন বেঁচে আছে।
উত্তর : সত্য নয়। আমার জানা মতে দুইজন বেঁচে আছে।
প্রশ্ন : আপনার এলাকায় ’৭১ সালে যে টিএন্ডটি ভবন ছিলে তা চিনতেন?
উত্তর : হ্যা, চিনতাম।
প্রশ্ন : সেখানে আর্মি ক্যাম্প ছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার কতদিন পর আর্মি ক্যাম্প হয়েছিল?
উত্তর : তা আমি বলতে পারব না।
প্রশ্ন : আপনাদের এলাকার শান্তি কমিটির কেউ ছিল কি?
উত্তর : ছিল না।
প্রশ্ন : আপনাদের এলাকায় ’৭১ সালে ১৪টি স্থায়ী হিন্দু পরিবার ছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেল কখন থেকে চেনেন?
উত্তর : ’৭১ সালের আগের বছর থেকে দেখেছি।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেলের মালিক বা তার পরিবারের কাউকে চেনেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনি ’৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে ডালিম হোটেলে গিয়েছেন?
উত্তর : যায়নি।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনাদের এলাকার অজিত বনিক নামে কেউ ছিলেন?
উত্তর : এই নামে কেউ ছিলেন কিনা স্মরণ নেই।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনাদের এলাকার রনজন নাথ, বাবুল কান্তি নাথ ও চন্দ্র মোহন নামে কাউকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : মীর কাসেম আলীর বাড়ি কোথায় বা কি করতেন তা আপনি জানেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে কখন, কে এবং কিভাবে ধরে নিয়ে য়ায় তা কেউ আপনাকে বলেছে?
উত্তর : কেউ বলেনি।
প্রশ্ন : আপনি ৬৫ হাজারী লেনে থাকেন না?
উত্তর : ৬৫ হাজারী লেনে থাকি না। আমার বর্নিত হাজারী লেন ১৫৮/১৬৭ তে রূপান্ত্রিত হয়েছে।
প্রশ্ন : ১৬ ডিসেম্বর সকালে আপনি ডালিম হোটেলে গিয়েছিলেন এই কথাটি আপনি প্রথম এই ট্রাইব্যুনালে বলছেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : মীর কাসেম আলীর নির্দেশে টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে ধরে নিয়ে যায়নি।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি শেখানো মতে অসত্য জবানবন্দী দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
সপ্তম সাক্ষীর জবানবন্দী ও জেরা:
মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ষষ্ঠ সাক্ষীর জেরা শেষে সপ্তম সাক্ষী প্রদীপ তালুকদারের জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়। জবানবন্দীতে প্রদীপ তালুকদার বলেন, ’৭১ সালে আমার আনুমানিক বয়স ছিল ৬ বা ৭ বছর। আমি লেখা পড়া জানি না। ’৭১ সালে আমার মামা টুনটু সেনের বাড়িতে থাকতাম। ’৭১ সালে একদিন মামা টুনটু সেনের সঙ্গে শিব মন্দির মোড়ে গিয়েছিলাম। সেখানে ঘোরাফেরারত আল-বদররা আমার মামাকে ডালিম হোটেলে ধরে নিয়ে যায়। তখন আমার দিদা (নানী) রসবালা ডালিম হোটেলে যান এবং মামাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। আল-বদররা বলে কমান্ডার না আসা পর্যন্ত ছাড়া যাবে না। আমার দিদা কমান্ডারের নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে তার নাম মীর কাসেম আলী। আমার মামার সঙ্গে রনজিত দাশ ও আরো একজন মুসলমানকে আল-বদররা ধরে নিয়ে যায়। আমার দিদা একদিন ডালিম হোটেলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মামা জানালা দিয়ে দেখে তাকে ডাকে এবং এক পর্যায়ে ডালিম হোটেলের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পাশের টিনের চালের উপর পড়ে। আমার দিদা তখন তাকে একটি চাটাই দিয়ে জড়িয়ে লুকিয়ে রাখে। কাসেম আলী তখন বলে ওকে ধর। এক পর্যায়ে মামাকে ধরে আবার ডালিম হোটেলে নিয়ে যায় এবং অত্যাচার করে মেরে ফেলে। এই ঘটনাগুলো আমি দিদার কাছ থেকে শুনেছি।
জবানবন্দী শেষে আসামীপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাক্ষীকে জেরা করেন।
প্রশ্ন : আপনার মামা টুনটু সেন ’৭১ সালে কি বিবাহিত ছিল?
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : আপনার মামীর নাম কি?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : আপকি কি ’৭১ সালে আপনার মামা ও মামীর সাথে এক বাড়িতে ছিলেন?
উত্তর : এক বাড়িতে ছিলাম না।
প্রশ্ন : আপনার মামা-মামী কি এক বাড়িতে থাকতেন?
উত্তর : হ্যাঁ, এক বাড়িতে থাকতেন।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনি আপনার পিতা মাতার সঙ্গে এক বাড়িতে থাকতেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনার মা কোথায় থাকতেন?
উত্তর : পটিয়ায় গ্রামের বাড়িতে।
প্রশ্ন : আপনার নানার নাম কি?
উত্তর : ভীম বালি সেন।
প্রশ্ন : আপনার নানার বাড়ি কোথায় ছিল?
উত্তর :ডালিম হোটেলের পাশে একেবারে লাগোয়া।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেলের বর্তমান মালিক কে?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে আপনার সাথে খেলা করত এমন কারো নাম বলতে পারবেন?
উত্তর : এমন কারো নাম মনে নেই।
প্রশ্ন : আপনার মামাকে ধরে নেয়ার সময় ওই এলাকায় অনেক লোকজন ছিল।
উত্তর : উল্লেখযোগ্য লোক ছিল না।
প্রশ্ন : আপনার মামা টুনটু সেনকে আটকের আগেই ওই এলাকার অনেক দোকানপাট ও বাড়িঘর পাকিস্তান আর্মিরা পুড়িয়ে দিয়েছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : আপনি যে আল-বদর রাজাকারদের দেখেছেন তাদের কারো নাম বলতে পারবেন?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেলে যে রাজাকার ও আল-বদররা থাকত তাদেরকে আপনি নিজ চোখে দেখেছেন?
উত্তর : আমি নিজ চোখে দেখিনি।
প্রশ্ন : যে আল-বদরা আপনার মামাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তাদের আগে দেখেছেন বা নাম জানেন?
উত্তর : আগে দেখিনি এবং নামও জানি না।
প্রশ্ন : আপনি হাজারী লেন এলাকায় বাস করেন না এবং আপনি ওই এলাকার ভোটার না।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি শেখানো মতে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান (এমসি) মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ ষষ্ঠ সাক্ষী মৃদুল কুমার দে ও সপ্তম সাক্ষী প্রদীপ তালুকদারের জবানবন্দী গ্রহণ করার পর আসামীপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম তাদের জেরা করেন। এরপর আগামী রোববার পরবর্তী সাক্ষীর জবনবন্দী গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মীর কাসেম আলী ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় বসে তা দেখেন। তার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিজানুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক ও অ্যাডভোকেট আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম ও সাইফুল ইসলাম।
ষষ্ঠ সাক্ষী মৃদুল কুমার দের জবানবন্দী: আমার নাম মৃদুল কুমার দে। আমার বর্তমান ঠিকানা, ৬৫ হাজারী লেন। কোতয়ালী থানা, চট্টগ্রাম। ১৯৭১ সালে বয়স ছিল ১৬ বছর। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আল-বদর ও আস-শামস চট্টগ্রামের হাজারী লেনে নানাবিধ অত্যাচার নির্যাতন চালায়। তখন হাজারী লেনে দুই থেকে তিন শত পরিবার বসবাস করত। ওই ধ্বংসযজ্ঞের কারণে অধিকাংশ লোকজন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। ’৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে আল-বদররা ধরে নিয়ে যায়। তাদের ধরে নিয়ে যাওয়ার একদিন পর জানতে পারি মীর কাসেম আলীর নেতৃত্বে আল-বদররা এসে ধরে নিয়ে ডালিম হোটেলে বদর বাহিনীর ক্যাম্পে নির্যাতন করে।
’৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল বেলা দেশমুক্ত হওয়ার অবস্থায় ডালিম হোটেলের আশপাশে লোক দেখতে পাই। সেখানে আমি রনজিত দাশের স্ত্রী প্রভা রানি দাশকে দেখতে পাই। তিনি কেঁদে কেঁদে আমাকে বলে তার স্বামী ও টুনটু সেনকে এখনও খুজে পায়নি। তখন আমি সেখানে দাঁড়ানো অবস্থায় যারা বন্দি ছিলেন তাদের কাছ থেকে শুনতে পাই সম্ভবত টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে মীর কাসেম আলীর লোকেরা মেরে ফেলেছে। টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে খ্্ুঁজে পাওয়া যায়নি।
জেরা:
প্রশ্ন : আপনি কতদিন থেকে হাজারী লেনে বাস করছেন?
উত্তর : জ্ঞান হওয়ার পর থেকে ’৭১ সাল পর্যন্ত এবং এখনো সেখানে আছি।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে হাজারী লেনে আপনার বয়সী ৪০ বা ৫০ জন বেঁচে আছে।
উত্তর : সত্য নয়। আমার জানা মতে দুইজন বেঁচে আছে।
প্রশ্ন : আপনার এলাকায় ’৭১ সালে যে টিএন্ডটি ভবন ছিলে তা চিনতেন?
উত্তর : হ্যা, চিনতাম।
প্রশ্ন : সেখানে আর্মি ক্যাম্প ছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার কতদিন পর আর্মি ক্যাম্প হয়েছিল?
উত্তর : তা আমি বলতে পারব না।
প্রশ্ন : আপনাদের এলাকার শান্তি কমিটির কেউ ছিল কি?
উত্তর : ছিল না।
প্রশ্ন : আপনাদের এলাকায় ’৭১ সালে ১৪টি স্থায়ী হিন্দু পরিবার ছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেল কখন থেকে চেনেন?
উত্তর : ’৭১ সালের আগের বছর থেকে দেখেছি।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেলের মালিক বা তার পরিবারের কাউকে চেনেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনি ’৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পূর্বে ডালিম হোটেলে গিয়েছেন?
উত্তর : যায়নি।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনাদের এলাকার অজিত বনিক নামে কেউ ছিলেন?
উত্তর : এই নামে কেউ ছিলেন কিনা স্মরণ নেই।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনাদের এলাকার রনজন নাথ, বাবুল কান্তি নাথ ও চন্দ্র মোহন নামে কাউকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : মীর কাসেম আলীর বাড়ি কোথায় বা কি করতেন তা আপনি জানেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে কখন, কে এবং কিভাবে ধরে নিয়ে য়ায় তা কেউ আপনাকে বলেছে?
উত্তর : কেউ বলেনি।
প্রশ্ন : আপনি ৬৫ হাজারী লেনে থাকেন না?
উত্তর : ৬৫ হাজারী লেনে থাকি না। আমার বর্নিত হাজারী লেন ১৫৮/১৬৭ তে রূপান্ত্রিত হয়েছে।
প্রশ্ন : ১৬ ডিসেম্বর সকালে আপনি ডালিম হোটেলে গিয়েছিলেন এই কথাটি আপনি প্রথম এই ট্রাইব্যুনালে বলছেন।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : মীর কাসেম আলীর নির্দেশে টুনটু সেন ও রনজিত দাশকে ধরে নিয়ে যায়নি।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি শেখানো মতে অসত্য জবানবন্দী দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
সপ্তম সাক্ষীর জবানবন্দী ও জেরা:
মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ষষ্ঠ সাক্ষীর জেরা শেষে সপ্তম সাক্ষী প্রদীপ তালুকদারের জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়। জবানবন্দীতে প্রদীপ তালুকদার বলেন, ’৭১ সালে আমার আনুমানিক বয়স ছিল ৬ বা ৭ বছর। আমি লেখা পড়া জানি না। ’৭১ সালে আমার মামা টুনটু সেনের বাড়িতে থাকতাম। ’৭১ সালে একদিন মামা টুনটু সেনের সঙ্গে শিব মন্দির মোড়ে গিয়েছিলাম। সেখানে ঘোরাফেরারত আল-বদররা আমার মামাকে ডালিম হোটেলে ধরে নিয়ে যায়। তখন আমার দিদা (নানী) রসবালা ডালিম হোটেলে যান এবং মামাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। আল-বদররা বলে কমান্ডার না আসা পর্যন্ত ছাড়া যাবে না। আমার দিদা কমান্ডারের নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে তার নাম মীর কাসেম আলী। আমার মামার সঙ্গে রনজিত দাশ ও আরো একজন মুসলমানকে আল-বদররা ধরে নিয়ে যায়। আমার দিদা একদিন ডালিম হোটেলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মামা জানালা দিয়ে দেখে তাকে ডাকে এবং এক পর্যায়ে ডালিম হোটেলের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দিয়ে পাশের টিনের চালের উপর পড়ে। আমার দিদা তখন তাকে একটি চাটাই দিয়ে জড়িয়ে লুকিয়ে রাখে। কাসেম আলী তখন বলে ওকে ধর। এক পর্যায়ে মামাকে ধরে আবার ডালিম হোটেলে নিয়ে যায় এবং অত্যাচার করে মেরে ফেলে। এই ঘটনাগুলো আমি দিদার কাছ থেকে শুনেছি।
জবানবন্দী শেষে আসামীপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাক্ষীকে জেরা করেন।
প্রশ্ন : আপনার মামা টুনটু সেন ’৭১ সালে কি বিবাহিত ছিল?
উত্তর : হ্যাঁ।
প্রশ্ন : আপনার মামীর নাম কি?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : আপকি কি ’৭১ সালে আপনার মামা ও মামীর সাথে এক বাড়িতে ছিলেন?
উত্তর : এক বাড়িতে ছিলাম না।
প্রশ্ন : আপনার মামা-মামী কি এক বাড়িতে থাকতেন?
উত্তর : হ্যাঁ, এক বাড়িতে থাকতেন।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনি আপনার পিতা মাতার সঙ্গে এক বাড়িতে থাকতেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ’৭১ সালে আপনার মা কোথায় থাকতেন?
উত্তর : পটিয়ায় গ্রামের বাড়িতে।
প্রশ্ন : আপনার নানার নাম কি?
উত্তর : ভীম বালি সেন।
প্রশ্ন : আপনার নানার বাড়ি কোথায় ছিল?
উত্তর :ডালিম হোটেলের পাশে একেবারে লাগোয়া।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেলের বর্তমান মালিক কে?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে আপনার সাথে খেলা করত এমন কারো নাম বলতে পারবেন?
উত্তর : এমন কারো নাম মনে নেই।
প্রশ্ন : আপনার মামাকে ধরে নেয়ার সময় ওই এলাকায় অনেক লোকজন ছিল।
উত্তর : উল্লেখযোগ্য লোক ছিল না।
প্রশ্ন : আপনার মামা টুনটু সেনকে আটকের আগেই ওই এলাকার অনেক দোকানপাট ও বাড়িঘর পাকিস্তান আর্মিরা পুড়িয়ে দিয়েছিল।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : আপনি যে আল-বদর রাজাকারদের দেখেছেন তাদের কারো নাম বলতে পারবেন?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ডালিম হোটেলে যে রাজাকার ও আল-বদররা থাকত তাদেরকে আপনি নিজ চোখে দেখেছেন?
উত্তর : আমি নিজ চোখে দেখিনি।
প্রশ্ন : যে আল-বদরা আপনার মামাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তাদের আগে দেখেছেন বা নাম জানেন?
উত্তর : আগে দেখিনি এবং নামও জানি না।
প্রশ্ন : আপনি হাজারী লেন এলাকায় বাস করেন না এবং আপনি ওই এলাকার ভোটার না।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি শেখানো মতে অসত্য সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন