শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

পিডব্লিউ ৮


সোমবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১২
আমার নাম ডঃ স্বপন কুমার বিশ্বাস, আমার বয়স ৫৩ বৎসর।
আমি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে কীপারের চলতি দায়িত্বে কর্মরত আছি। বিগত ২০-০৪-২০১১ ইং তারিখ বিকাল ৩.০০ ঘটিকার সময় অত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক সাহেব তা সংগীয় অন্যান্য কর্মকর্তাসহ আমাদের অফিসে যান এবং আমাদের কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে তারা আমাদের যাদুঘরের গ্যালারী পরিদর্শন করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত বিভিন্ন ডকুমেন্টস যেগুলো গ্যারারীতে প্রদর্শীত ছিল সেখান থেকে বাছাই করে কিছু ডকুমেন্টের ফটোকপি করেন, স্ক্যান করেন এবং আলোকচিত্র গ্রহন করেন। তৎপর ঐ সকল বাছাইকৃত ডকুমেন্ট ও আলোকচিত্র আমি আরেকজন স্বাক্ষীর সম্মুখে জব্দনামা মূলে জব্দ বরেন এবং আমরা সাক্ষী হিসাবে উখানে দস্তখত প্রদান করি। আমি নিজে ঐ জব্দকৃত ডকুমেন্ট ও ছবিগুলো সত্যায়িত করি এবং মূল ডকুমেন্টগুলি জনবা মোঃ মুনিরুল হক, সহকারী কীপার ইতিহাস ও ধ্রুপদী শিল্পকলা বিভাগ, জাতীয় যাদুঘর, নিকট জিম্মা প্রদান করা হয় এবং তিনি জিম্মা গ্রহন করেন। সেখানে মোট ৮৫টি ডকুমেন্ট ও ছবি ছিল। এই সেই জব্দতালিকা প্রদর্শনী- ৪৯৮ এবং উহাতে আমার একটি দস্তখত প্রদর্শনী ৪৯৮/১ হিসাবে চিহ্নিত হইল। তৎকালীন শান্তি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করেছেন লেঃ জেঃ কে, এ, কে নিয়াজী এবং তার পাশে আলবদর নেতা আব্দুল মান্নানের ছবি প্রদর্শনী- ৪৯৯ হিসেবে চিহ্নিত হইল। ১৪-০৪-১৯৭১ ইং তারিখে কমান্ডার ফিরোজ মিয়ার নেতৃত্বে ফকিরাপুল রাজাকার বাহিনীর প্রশিক্ষন সংক্রান্ত ছবি প্রদর্শনী ৫০০ হিসেবে চিহ্নিত হইল। ২৯-১১-১৯৭১ ইং তারিখের ঢাকার জিন্নাহ এভিনিউতে (যাহা বর্তমান বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে দালালদের অর্থাৎ রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের মিছিল প্রদর্শনী- ৫০১ হিসেবে চিহ্নিত হইল। ১৪-১২-১৯৭১ ইং তারিখ বুদ্ধিজীবি হত্যার প্রস্তুতি হিসেবে আলবদর বাহিনীর সদস্যরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে আয়োজিত পথসভার ছবি প্রদর্শনী- ৫০২ হিসেবে চিহ্নিত হইল। আলবদর দিবস উপলক্ষে বায়তুল মোকারমে ইসলামী ছাত্র সংঘের মিছিলের ছবি প্রদর্শনী ৫০৩ হিসেবে চিহ্নিত হইল। ইষ্টার্ন কমান্ডার রাজাকার ব্যাটেল ট্রেনিং স্কুল এর প্রফিসিরেন্সি সার্টিফিকেট প্রদর্শনী - ৫০৪ হিসাবে চিহ্নিত হল। পাকিস্তান আদর্শ রক্ষার জন্য গোলাম আযমের স্বাক্ষরযুক্ত চাঁদা আদায়ের কুপন প্রদর্শনী - ৫০৫ হিসাবে চিহ্নিত হল। ঝালকাঠি শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের লেখা একটি পত্র প্রদর্শনী - ৫০৬ হিসাবে চিহ্নিত হল। মোঃ গোলম মোস্তফা, মোঃ আকরাম আলী, মোঃ আব্দুর রহমান, মোঃ মকবুল হোসেন এবং মোঃ আমীর আলীদের নামে ইস্যুকৃত আল-বদর বাহিনীর সদস্যের পরিচয়পত্র যথাক্রমে প্রদর্শনী - ৫০৭ হিসাবে চিহ্নিত হল। যথাক্রমে ৫০৭/১, ৫০৭/২, ৫০৭/৩ ও ৫০৭/৪ হিসেবে চিহ্নিত হইল। আইডেনটিটি কার্ড, ডেথ, এ সিম্বল অব সাহাদাৎ, সারভাইবাল, এ মার্ক অব গাজী, আল-বদর ফোর্স প্রদর্শনী - ৫০৮ হিসাবে চিহ্নিত হল। হাসান মোহাম্মাদ, এম. এ কুদ্দুস, মোঃ মঞ্জুর রহমানের নামে ইস্যুকৃত আলবদর বাহিনীর সদস্যের পরিচয় পত্র যথাক্রমে প্রদর্শনী -৫০৯, ৫০৯/১ ও ৫০৯/২ হিসাবে চিহ্নিত হইল। মোঃ সোলায়মানের নামে ইস্যুকৃত একটি আইডেনটিটি কার্ড প্রদর্শনী ৫১০ হিসেবে চিহ্নিত হইল।

জেরাঃ
তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক সাহেব ০২-০৪-২০১১ ইং তারিখে সর্বপ্রথম আমাদের যাদুঘর হতে কিছু কাগজপত্র জব্দ করেন। ২০-০৪-২০১১ ইং তারিখে বেলা আনুমানিক ৩.০০ ঘটিকার সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার নিকট আসেন। ঐদিন তিনি সন্ধার আগে যাদুঘর ত্যাগ করেন তবে কয়টার সময় তা স্মরণ নাই। প্রদর্শিত আলামত সমূহের মূলকপি অদ্য ট্রাইব্যুনালে নাই। জাতীয় যাদুঘরে যারা কোন ছবি বা কোন ডকুমেন্ট জমা দেন তাদের নাম ঠিকানা লেখা থাকে। প্রদর্শিত ছবি ও ডকুমেন্ট সমূহ কাহারা জমা দিয়েছেন তা আমার মনে নাই। অনেক ছবি আমাদের যাদুঘরে প্রদর্শ করা হয় যেগুলি জার্নাল ও বই থেকে নেয়া, সেগুলি কেহ আমাদের যাদুঘরে জমা দেন না, উহা সংরক্ষণ করা হয়।
প্রদর্শনী - ৫০৪, প্রফিসিয়েন্সি সার্টিফিকেট পাকিস্তান আর্মির জনৈক মেজর কর্তৃক ইস্যুকৃত। প্রদর্শনী -৫০৭-৫০৭/৪ প্রদর্শিত আল-বদর সদস্যদের পরিচয় পত্র ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ কে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না এবং কাউন্টার সাইন কাহারা করেছেন তাও বোঝা যাচ্ছে না। মূল ডকুমেন্ট সমূহ যেভাবে যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে তারই ফটোকপি আমি সত্যয়িত করেছি যাহা তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার নিকট থেকে নিয়েছেন।
প্রদর্শনী - ৫১০ পরিচয় পত্রের ইস্যুকৃত কর্তৃপক্ষ কে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না। ইহা সত্য নহে যে, আমি মূল ডকুমেন্টগুলি যেভাবে আছে সেভাবে ফটোকপি করে সত্যায়িত করি নাই। আমার পরিচয়পত্র আছে। উক্ত পরিচয় পত্রের ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ জাতীয় যাদুঘরের মহা পরিচালক। ইহা সত্য নহে যে, যে সকল পরিচয়পত্র প্রদর্শনী  চিহ্নিত করলাম তার প্রত্যেকটি পরিচয়পত্রের ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ হচ্ছে পাকিস্তান আর্মির কোন না কোন অফিসার এবং তার প্রতিসাক্ষর পাকিস্তান আর্মির অফিসাররাই করেছেন, কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা রাজ্জাক সাহেব এগুলো বাদ দিয়ে আমার থেকে সত্যায়িত করেছেন। (সমাপ্ত)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন