মেহেদী হাসান, ৩০/৪/২০১৩
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে ষষ্ঠ সাক্ষী শাহজাহান আলীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে আজ। । আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে জেরা শুরু হয়েছে।
সাক্ষী তার জবানবন্দীতে অভিযোগ করেন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর উপস্থিতিতে রাজাকাররা তাকে বেয়নেট চার্জ করে এবং ছুরি দিয়ে গলা কাটে। এসময় তার সাথে অন্যতিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়।
অপর দিকে জেরায় সাক্ষী স্বীকার করেন ব্যাংক লুটে ম্যানেজারের সাথে যোগসাজসের অভিযোগে ১৯৮৪ সালে সোনালী ব্যাংক থেকে তার এবং শাখা ম্যানেজারকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
জবানবন্দী : সাক্ষী বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার সাথিয়া থানায়। আমি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং বর্তমানে অসুস্থ। ১৯৭১ সালে আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। ২৮ নভেম্বর আমি ধুলাউড়ি গ্রামে যাই। সেখানে পাকিস্তান বাহিনীর সাথে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে আমিসহ আটজন মুক্তিযোদ্ধা ধরা পড়ি শেষ রাতে। ধরার পর আমাকে পেটানো হয়। মতিউর রহমান নিজামীর কথামত সাতটা রাজাকার আমিসহ চারজনকে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে মতিউর রহমান নিজামী উপস্থিত ছিল। আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে বেয়নেট চার্জ করার পর ছুরি দিয়ে গলা কাটে। আমার সাথে নিয়ে আসা অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের মেরে ফেলা হয়। আমার গলাকাটার পর পাবলিক এসে আমাকে নিয়ে গেল ফুলবাড়ি গ্রামের রঞ্জিতের বাড়ি। পাবনা হাসপাতালে একমাস রাখার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানে চার বছর আমার চিকিৎসা চলে।
সাক্ষী বলেন, ওইদিনের যুদ্ধে ধুলাউড়ি গ্রামের চার/পাঁচশ লোক মারা যায়। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি বর্তমানে মাসে পৌনে দশহাজার টাকা ভাতা পান বলে জবানবন্দীতে উল্লেখ করেন।
সাক্ষীর গলায় সমস্যার কারনে জোরে কথা বলতে পারেননা। তিনি ফিস ফিস করে কথা বলছিলেন। সেজন্য ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে বলেন খুব সংক্ষেপে যেন আসল কথা বলে সাক্ষী জবানবন্দী প্রদান করেন।
জবানবন্দী শেষে সাক্ষীকে জেরা করেন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমেদ আনসারী, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন প্রমুখ।
জেরা :
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে আপনি ভোটার ছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে আপনি কোথায় পড়ালেখা করতেন?
উত্তর : মিয়াপুর হাজি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে কোন কাসে পড়তেন?
উত্তর : এইটে না নাইনে মনে নেই।
প্রশ্ন : এসএসসি পাশ করেন কোন সালে?
উত্তর : ১৯৭২ সালে।
প্রশ্ন : কোন ব্যাসে?
উত্তর : দ্বিতীয় ব্যাসে।
প্রশ্ন : এরপর আর পড়ালেখা করেছেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : স্বাধীনতার পর কি করতেন আপনি?
উত্তর : ব্যাংকে চাকরি করতাম।
প্রশ্ন : কোন সালে চাকরিতে যোগদেন?
উত্তর : ১৯৭৩ সালে।
প্রশ্ন : প্রথম কর্মস্থল কোথায় ছিল?
উত্তর : সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিস ঢাকায়।
প্রশ্ন : ঢাকায় কতদিন ছিলেন?
উত্তর : প্রায় দুই বছর।
প্রশ্ন : তারপর পাবনা বদলী হন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : সর্বশেষ কর্মস্থল কোথায় ছিল?
উত্তর : বেড়া, পাবনা।
প্রশ্ন : আপনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেননি?
উত্তর : না। আমার চাকরি চলে গেছে।
প্রশ্ন : আপনার চাকরি চলে যাবার সময় বেড়া শাখার ম্যানেজার ছিলেন মকবুল এবং তারও চাকরি চলে গেছে আপনার সাথে।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আপনি তখন ক্যাশিয়ার পদে ছিলেন।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : অভিযোগ ছিল আপনি এবং ম্যানেজারের যোগসাজসে ব্যাংক লুট হয়।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : চাকরিচ্যুতির বিরুদ্ধে আপনি কোন বিভাগীয় আপিল করেননি।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : চাকরিচ্যুতি আদেশের বিরুদ্ধে আপনি কোন আদালতেরও আশ্রয় নেননি।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটে ১৯৮৩ সালে এবং আপনার চাকরি চলে যায় ১৯৮৪ সালে।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত আপনি কোথায় থাকতেন?
উত্তর : নজি বাড়িতে।
প্রশ্ন : আপনি ওই সময় কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আপনি জড়িত ছিলেন?
উত্তর : হ্যা। আওয়ামী লীগ।
প্রশ্ন : এখনো এ দলের সাথে যুক্ত আছেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের নির্বাচনের সময় বয়স না হওয়ায় আপনি ভোটার হননি।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : নাজিব উদ্দিন খাত্তাবকে চেনেন?
উত্তর : চিনি।
প্রশ্ন : স্বাধীনতার আগে থেকেই তাকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ওনার সাথে কতদিনের পরিচয়?
উত্তর : চার/পাঁচ বছর।
প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে কবে গেলেন?
উত্তর : ১৪ জুন ১৯৭১।
প্রশ্ন : ১৪ জুন পর্যন্ত নিজ বাড়িতেই ছিলেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এখন যে ঠিকানায় থাকেন ১৯৭১ সালেও কি সেই ঠিকানায় থাকতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে আপনি পদ্মভিলায় থাকতেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ১৪ জুন যুদ্ধে যাবার আগে অধ্যাপক আবু সাঈদের সাথে আপনার নিয়মিত দেখা সাক্ষাত হত?
উত্তর : হত।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অধ্যাপক আবু সাঈদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নেজামে ইসলামের মাওলানা ইসহাক।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ওই সময় আপনার এলাকায় জামায়াতের তেমন প্রভাব ছিলনা।
প্রশ্ন : ছিল ছিল।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের আগে মতিউর রহমান নিজামীকে কোনদিন দেখেননি।
উত্তর : দেখিনি।
প্রশ্ন : নামও শোনেননি।
উত্তর : নাম শুনেছি।
প্রশ্ন : তার বাড়ি কোনদিন দেখেছেন?
উত্তর : না। তবে শুনেছি তার বাড়ি মনমথপুর।
প্রশ্ন : স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পূর্বে কোনদিন সাথিয়া সদরে গেছেন?
উত্তর : গেছি।
প্রশ্ন : আপনি এএসসি রেজিস্ট্রেশন কবে করেছেন?
উত্তর : দেশ স্বাধীনের পরে।
প্রশ্ন : সেখানে জন্ম তারিখ কত উল্লেখ করেছিলেন ?
উত্তর : মনে নেই। রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এএসসি সার্টিফিকেট হারিয়ে গেছে।
প্রশ্ন : কিভাবে হারিয়ে গেছে তাও মনে নেই।
প্রশ্ন : মনে নেই।
প্রশ্ন : সাথিয়া থানা পিস কমিটির সভাপতি কে ছিল বলতে পারবেন?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : আপনাদের ইউনিয়ন কোনটি?
উত্তর : আর আতাইকুলা।
প্রশ্ন : ইউনিয়ন পিস কমিটির সভাপতির নাম মনে আছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে আপনাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কে ছিলেন?
উত্তর : মোহাম্মদ আলী শেখ।
প্রশ্ন : তিনি কি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : তিনি আওয়ামী লীগ করতেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আপনাদের গ্রামে কোন রাজাকার ছিলনা?
উত্তর : মনে পড়েনা।
প্রশ্ন : আল বদর, পিস কমিটির কোন লোক ছিল কি-না তাও মনে পড়েনা?
উত্তর : মনে পড়েনা।
প্রশ্ন : যুদ্ধ শুরুর আগে সাথিয়া থানায় স্থানীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের ওপর কোন প্রশিক্ষন হয়েছিল?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : আপনাদের এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ কে সংগঠিত করত?
উত্তর : অধ্যাপক আবু সাঈদ।
প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের আগে সাথিয়া থানায় মুক্তিযোদ্ধা এবং পাকিস্তান আর্মির কোন যুদ্ধের কথা শুনেছেন?
উত্তর : একটি যুদ্ধের কথা শুনেছি। ডাববাগান যুদ্ধ।
প্রশ্ন : ১৯ এপ্রিল হয়েছিল এ যুদ্ধ।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এখানে কতজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছিল বলতে পারবেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : এখানে শহীদ কোন মুক্তিযোদ্ধার নামও আপনার মনে নেই।
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : ১৯ এপ্রিলের আগে সাথিয়ার কোন এলাকায় রাজাকার ক্যাম্প ছিল?
উত্তর : মহালবাড়িয়ায় ছিল।
প্রশ্ন : মহালবাড়িয়া আপনার বাড়ি থেকে কতদূর?
উত্তর : এক মাইল।
প্রশ্ন : ওটা কি বাড়ি ছিল?
উত্তর : না, মক্তব।
প্রশ্ন : আপনি বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অন্য কেউ ওই বাড়ি আক্রমনের জন্য যাননি।
উত্তর : যাইনি।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে সাথিয়ায় ইপিআর ক্যাম্প ছিল?
উত্তর : ডাববাগানে ছিল।
প্রশ্ন : ওই ক্যাম্পটি ১৯ এপ্রিলের কতদিন আগে হয়?
উত্তর : তিন/চারদিন আগে।
প্রশ্ন : ওই ক্যাম্পের দায়িত্বে কে ছিল?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : হাবিলদার আকবর নামে কাউকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : সাথিয়ার গোলাম মোস্তফা নামের কাউকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের আগে আপনাদের গ্রামে বাইরের কোন রাজাকার বা পাকিস্তান আর্মি প্রবেশ করেনি।
উত্তর : করেনি।
এ পর্যন্ত জেরার পর জেরা বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে ষষ্ঠ সাক্ষী শাহজাহান আলীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে আজ। । আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে জেরা শুরু হয়েছে।
সাক্ষী তার জবানবন্দীতে অভিযোগ করেন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর উপস্থিতিতে রাজাকাররা তাকে বেয়নেট চার্জ করে এবং ছুরি দিয়ে গলা কাটে। এসময় তার সাথে অন্যতিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়।
অপর দিকে জেরায় সাক্ষী স্বীকার করেন ব্যাংক লুটে ম্যানেজারের সাথে যোগসাজসের অভিযোগে ১৯৮৪ সালে সোনালী ব্যাংক থেকে তার এবং শাখা ম্যানেজারকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
জবানবন্দী : সাক্ষী বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার সাথিয়া থানায়। আমি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং বর্তমানে অসুস্থ। ১৯৭১ সালে আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। ২৮ নভেম্বর আমি ধুলাউড়ি গ্রামে যাই। সেখানে পাকিস্তান বাহিনীর সাথে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে আমিসহ আটজন মুক্তিযোদ্ধা ধরা পড়ি শেষ রাতে। ধরার পর আমাকে পেটানো হয়। মতিউর রহমান নিজামীর কথামত সাতটা রাজাকার আমিসহ চারজনকে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে মতিউর রহমান নিজামী উপস্থিত ছিল। আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে বেয়নেট চার্জ করার পর ছুরি দিয়ে গলা কাটে। আমার সাথে নিয়ে আসা অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের মেরে ফেলা হয়। আমার গলাকাটার পর পাবলিক এসে আমাকে নিয়ে গেল ফুলবাড়ি গ্রামের রঞ্জিতের বাড়ি। পাবনা হাসপাতালে একমাস রাখার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানে চার বছর আমার চিকিৎসা চলে।
সাক্ষী বলেন, ওইদিনের যুদ্ধে ধুলাউড়ি গ্রামের চার/পাঁচশ লোক মারা যায়। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি বর্তমানে মাসে পৌনে দশহাজার টাকা ভাতা পান বলে জবানবন্দীতে উল্লেখ করেন।
সাক্ষীর গলায় সমস্যার কারনে জোরে কথা বলতে পারেননা। তিনি ফিস ফিস করে কথা বলছিলেন। সেজন্য ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে বলেন খুব সংক্ষেপে যেন আসল কথা বলে সাক্ষী জবানবন্দী প্রদান করেন।
জবানবন্দী শেষে সাক্ষীকে জেরা করেন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মনজুর আহমেদ আনসারী, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন প্রমুখ।
জেরা :
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে আপনি ভোটার ছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে আপনি কোথায় পড়ালেখা করতেন?
উত্তর : মিয়াপুর হাজি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালে কোন কাসে পড়তেন?
উত্তর : এইটে না নাইনে মনে নেই।
প্রশ্ন : এসএসসি পাশ করেন কোন সালে?
উত্তর : ১৯৭২ সালে।
প্রশ্ন : কোন ব্যাসে?
উত্তর : দ্বিতীয় ব্যাসে।
প্রশ্ন : এরপর আর পড়ালেখা করেছেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : স্বাধীনতার পর কি করতেন আপনি?
উত্তর : ব্যাংকে চাকরি করতাম।
প্রশ্ন : কোন সালে চাকরিতে যোগদেন?
উত্তর : ১৯৭৩ সালে।
প্রশ্ন : প্রথম কর্মস্থল কোথায় ছিল?
উত্তর : সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিস ঢাকায়।
প্রশ্ন : ঢাকায় কতদিন ছিলেন?
উত্তর : প্রায় দুই বছর।
প্রশ্ন : তারপর পাবনা বদলী হন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : সর্বশেষ কর্মস্থল কোথায় ছিল?
উত্তর : বেড়া, পাবনা।
প্রশ্ন : আপনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেননি?
উত্তর : না। আমার চাকরি চলে গেছে।
প্রশ্ন : আপনার চাকরি চলে যাবার সময় বেড়া শাখার ম্যানেজার ছিলেন মকবুল এবং তারও চাকরি চলে গেছে আপনার সাথে।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আপনি তখন ক্যাশিয়ার পদে ছিলেন।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : অভিযোগ ছিল আপনি এবং ম্যানেজারের যোগসাজসে ব্যাংক লুট হয়।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : চাকরিচ্যুতির বিরুদ্ধে আপনি কোন বিভাগীয় আপিল করেননি।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : চাকরিচ্যুতি আদেশের বিরুদ্ধে আপনি কোন আদালতেরও আশ্রয় নেননি।
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ব্যাংক লুটের ঘটনা ঘটে ১৯৮৩ সালে এবং আপনার চাকরি চলে যায় ১৯৮৪ সালে।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত আপনি কোথায় থাকতেন?
উত্তর : নজি বাড়িতে।
প্রশ্ন : আপনি ওই সময় কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আপনি জড়িত ছিলেন?
উত্তর : হ্যা। আওয়ামী লীগ।
প্রশ্ন : এখনো এ দলের সাথে যুক্ত আছেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের নির্বাচনের সময় বয়স না হওয়ায় আপনি ভোটার হননি।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : নাজিব উদ্দিন খাত্তাবকে চেনেন?
উত্তর : চিনি।
প্রশ্ন : স্বাধীনতার আগে থেকেই তাকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ওনার সাথে কতদিনের পরিচয়?
উত্তর : চার/পাঁচ বছর।
প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে কবে গেলেন?
উত্তর : ১৪ জুন ১৯৭১।
প্রশ্ন : ১৪ জুন পর্যন্ত নিজ বাড়িতেই ছিলেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এখন যে ঠিকানায় থাকেন ১৯৭১ সালেও কি সেই ঠিকানায় থাকতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে আপনি পদ্মভিলায় থাকতেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ১৪ জুন যুদ্ধে যাবার আগে অধ্যাপক আবু সাঈদের সাথে আপনার নিয়মিত দেখা সাক্ষাত হত?
উত্তর : হত।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অধ্যাপক আবু সাঈদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নেজামে ইসলামের মাওলানা ইসহাক।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : ওই সময় আপনার এলাকায় জামায়াতের তেমন প্রভাব ছিলনা।
প্রশ্ন : ছিল ছিল।
প্রশ্ন : ১৯৭০ সালের আগে মতিউর রহমান নিজামীকে কোনদিন দেখেননি।
উত্তর : দেখিনি।
প্রশ্ন : নামও শোনেননি।
উত্তর : নাম শুনেছি।
প্রশ্ন : তার বাড়ি কোনদিন দেখেছেন?
উত্তর : না। তবে শুনেছি তার বাড়ি মনমথপুর।
প্রশ্ন : স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পূর্বে কোনদিন সাথিয়া সদরে গেছেন?
উত্তর : গেছি।
প্রশ্ন : আপনি এএসসি রেজিস্ট্রেশন কবে করেছেন?
উত্তর : দেশ স্বাধীনের পরে।
প্রশ্ন : সেখানে জন্ম তারিখ কত উল্লেখ করেছিলেন ?
উত্তর : মনে নেই। রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এএসসি সার্টিফিকেট হারিয়ে গেছে।
প্রশ্ন : কিভাবে হারিয়ে গেছে তাও মনে নেই।
প্রশ্ন : মনে নেই।
প্রশ্ন : সাথিয়া থানা পিস কমিটির সভাপতি কে ছিল বলতে পারবেন?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : আপনাদের ইউনিয়ন কোনটি?
উত্তর : আর আতাইকুলা।
প্রশ্ন : ইউনিয়ন পিস কমিটির সভাপতির নাম মনে আছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে আপনাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কে ছিলেন?
উত্তর : মোহাম্মদ আলী শেখ।
প্রশ্ন : তিনি কি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : তিনি আওয়ামী লীগ করতেন?
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : আপনাদের গ্রামে কোন রাজাকার ছিলনা?
উত্তর : মনে পড়েনা।
প্রশ্ন : আল বদর, পিস কমিটির কোন লোক ছিল কি-না তাও মনে পড়েনা?
উত্তর : মনে পড়েনা।
প্রশ্ন : যুদ্ধ শুরুর আগে সাথিয়া থানায় স্থানীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের ওপর কোন প্রশিক্ষন হয়েছিল?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : আপনাদের এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ কে সংগঠিত করত?
উত্তর : অধ্যাপক আবু সাঈদ।
প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের আগে সাথিয়া থানায় মুক্তিযোদ্ধা এবং পাকিস্তান আর্মির কোন যুদ্ধের কথা শুনেছেন?
উত্তর : একটি যুদ্ধের কথা শুনেছি। ডাববাগান যুদ্ধ।
প্রশ্ন : ১৯ এপ্রিল হয়েছিল এ যুদ্ধ।
উত্তর : হ্যা।
প্রশ্ন : এখানে কতজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছিল বলতে পারবেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : এখানে শহীদ কোন মুক্তিযোদ্ধার নামও আপনার মনে নেই।
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : ১৯ এপ্রিলের আগে সাথিয়ার কোন এলাকায় রাজাকার ক্যাম্প ছিল?
উত্তর : মহালবাড়িয়ায় ছিল।
প্রশ্ন : মহালবাড়িয়া আপনার বাড়ি থেকে কতদূর?
উত্তর : এক মাইল।
প্রশ্ন : ওটা কি বাড়ি ছিল?
উত্তর : না, মক্তব।
প্রশ্ন : আপনি বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অন্য কেউ ওই বাড়ি আক্রমনের জন্য যাননি।
উত্তর : যাইনি।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে সাথিয়ায় ইপিআর ক্যাম্প ছিল?
উত্তর : ডাববাগানে ছিল।
প্রশ্ন : ওই ক্যাম্পটি ১৯ এপ্রিলের কতদিন আগে হয়?
উত্তর : তিন/চারদিন আগে।
প্রশ্ন : ওই ক্যাম্পের দায়িত্বে কে ছিল?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : হাবিলদার আকবর নামে কাউকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : সাথিয়ার গোলাম মোস্তফা নামের কাউকে চিনতেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের আগে আপনাদের গ্রামে বাইরের কোন রাজাকার বা পাকিস্তান আর্মি প্রবেশ করেনি।
উত্তর : করেনি।
এ পর্যন্ত জেরার পর জেরা বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবির, সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন