মেহেদী হাসান
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সহায়তার অভিযোগে এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের জন্য দালাল আইন প্রণয়ন করা হয়। স্বাধীনতা লাভের দেড় মাসের মধ্যে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার নামে এ দালাল আইন প্রণয়ন করা হয়।
দালাল আইন প্রণয়নের সাথে সাথে সারা দেশে তখন ব্যাপক ধরপাকড় এবং গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়ে যায়। ১৯৭২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৪১ হাজার দালাল গ্রেফতার হবার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মান্নান (৪ অক্টোবর, দৈনিক বাংলা) । তখনকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মালেক উকিল কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায় দালাল আইনে লক্ষাধিক লোক গ্রেফতার হয়। তার মধ্যে ৩৭ হাজার ৪৭১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অভিযুক্ত এ ৩৭ হাজারের মধ্য থেকে ৩৪ হাজার ৬২৩ জনের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী প্রমান না থাকায় কোন মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। ২ হাজার ৮৪৮ জনকে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়। বিচারে ৭৫২ জনের শাস্তি হয় এবং বাকী এক লাখ বন্দীদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
সারা দেশে ব্যাপকভাবে দালাল আইনে ধরপাকড়ের ফলে সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে একটা অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ধরপাকড়দের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোক থাকায় সরকারি কাজকর্মেও বিশৃংখলা এবং নৈরাজ্য দেখা দেয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীতা করছে কিন্তু কোন অপরাধমূলক কাজে অংশ নেয়নি এমন লোকদেরও বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাপকভাবে গ্রেফতার চলতে থাকে। অসংখ্য লোক গ্রেফতার এড়াতে আত্মপোগন করে। সব মিলিয়ে দেশে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যা একটি সদ্য স্বাধীন দেশ গড়ার পক্ষে বিরাট অন্তরায় হয়ে দেখা দেয়। নতুন করে হানাহানি, বিভক্তি, অনৈক্য এবং প্রতিহিংসা মাথচাড়া দিয়ে ওঠে। বিভিন্ন মহল থেকে দালাল আইনের বিরুদ্ধে কথা ওঠে এবং এ আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়। এমনি পরিস্থিতিতে আসে সাধারণ ক্ষমার বিষয়। দেশের সকল অনৈক্য বিভক্তি, সন্দেহ মুছে ফেলে সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেন।
১৯৭৩ সালের পয়লা ডিসেম্বর দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় এ বিষয়ে পরিবেশিত খবরে বলা হয় “সরকার দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত এবং বিচারাধীন সকল আটক ব্যক্তির প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেছেন। তবে ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে যারা সাজা ভোগ করছে কিংবা বিচারাধীন রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ ক্ষমা প্রদর্শণ কার্যকর হবেনা। তৃতীয় বিজয় দিবস উৎসবে যাতে তারা শরীক হতে পারে সেজন্য ১৬ ডিসেম্বরের আগেই শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মুক্তির ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। যারা পলাতক তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেই এ ক্ষমার আওতায় পড়বে।”
”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের নেতৃবৃন্দ বলছেন, বঙ্গবন্ধু সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করলেও হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সাথে জড়িতদের ক্ষমা করা হয়নি। একথা সত্য। সাধারণ ক্ষমা ঘোষনায় বলা হয়েছে “ ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে যারা সাজা ভোগ করছে কিংবা বিচারাধীন রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ ক্ষমা প্রদর্শণ কার্যকর হবেনা।” তার মানে এসব অপরাধে অভিযুক্তদের তখন বিচার হয়েছে। বিচারে কেউ সাজা ভোগ করেছ আর কেউ অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছে। তাহলে নতুন করে কি আবার তাদের বিচার করা হবে যারা এসব অভিযোগে একবার বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন এবং সাজা ভোগ করেছেন অথবা অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন? যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের কোন প্রমান পাওয়া যায়নি অর্থাৎ শুধুমাত্র পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করা হয়েছে। কাউকে সাধারণ ক্ষমা এবং গুরুতর অভিযুক্তদের বিচারের মাধ্যমে বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে ১৯৭৩ সালেই। এরপর ৯১৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর দালাল আইন বাতিলও করে দেয়া হয়। কারণ সাধারন ক্ষমা ঘোষনা এবং বাকী অভিযুক্তদের বিচার নিষ্পত্তি এবং সাজাভোগের পর এ আইনের আর কোন প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়নি।
বর্তমানে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হচ্ছে এদের কারো বিরুদ্ধে স্বাধনীতা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের কোন অভিযোগ করা হয়েছে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়না। এমনকি দুয়েক জন ছাড়া দালাল আইনেও কারো বিরুদ্ধে কোথাও কোন মামলা হয়নি এমনকি কারো বিরুদ্ধে জিডিরও কোন রেকর্ড নেই। মালেক সরকারের মন্ত্রী সভায় যোগ দেয়ার অভিযোগে বর্তমানে অভিযুক্তদের দুয়েকজনের সাজা হয়েছিল। অথচ সাজাভোগকারী এসব ব্যক্তিদেরও যুদ্ধাপারধীদের তালিকায় রাখা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের জন্য। প্রশ্ন হচ্ছে যেখানে একজন লোক বিচারের মাধ্যমে সাজা ভোগ করেছেন এবং আদালতের মাধ্যমে অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন তাকে কি করে আবার একই অভিযোগে অভিযুক্ত করে পুনরায় বিচারের আয়োজন চলতে পারে।
মুক্তিযুদ্ধে এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের জন্য হয়েছিল দালাল আইন। আর পাকিস্তানী সেনাকর্মকর্তাদের যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারের জন্য হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) এ্যাক্ট। দুটি আইনের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন । দালাল আইনে এদেশীয় সহযোগীদের বিচার ফয়সালা হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধী আইনে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়নি । তাদের সবাইকে ক্ষমা করা হয়। এখন পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের জন্য যে আইন হয়েছিল সেই আইনে এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একজনের বিচারের জন্য তৈরি আইনের মাধ্যমে অন্য আরেকজনের বিচারের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে ।
১৯৭৩ সালের যে আইনে এদেশীয় সহযোগীদের বিচার চলছে সে আইন নিয়ে দেশে এবং বিদেশে চলছে তীব্র সমালোচনার ঝড়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন এবং মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ সকলেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন ১৯৭৩ সালের ঐ আইন দিয়ে ন্যায় বিচার সম্ভব নয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সহায়তার অভিযোগে এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের জন্য দালাল আইন প্রণয়ন করা হয়। স্বাধীনতা লাভের দেড় মাসের মধ্যে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার নামে এ দালাল আইন প্রণয়ন করা হয়।
দালাল আইন প্রণয়নের সাথে সাথে সারা দেশে তখন ব্যাপক ধরপাকড় এবং গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়ে যায়। ১৯৭২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৪১ হাজার দালাল গ্রেফতার হবার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মান্নান (৪ অক্টোবর, দৈনিক বাংলা) । তখনকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মালেক উকিল কর্তৃক প্রদত্ত তথ্য এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা যায় দালাল আইনে লক্ষাধিক লোক গ্রেফতার হয়। তার মধ্যে ৩৭ হাজার ৪৭১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অভিযুক্ত এ ৩৭ হাজারের মধ্য থেকে ৩৪ হাজার ৬২৩ জনের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী প্রমান না থাকায় কোন মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। ২ হাজার ৮৪৮ জনকে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়। বিচারে ৭৫২ জনের শাস্তি হয় এবং বাকী এক লাখ বন্দীদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
সারা দেশে ব্যাপকভাবে দালাল আইনে ধরপাকড়ের ফলে সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে একটা অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ধরপাকড়দের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোক থাকায় সরকারি কাজকর্মেও বিশৃংখলা এবং নৈরাজ্য দেখা দেয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীতা করছে কিন্তু কোন অপরাধমূলক কাজে অংশ নেয়নি এমন লোকদেরও বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাপকভাবে গ্রেফতার চলতে থাকে। অসংখ্য লোক গ্রেফতার এড়াতে আত্মপোগন করে। সব মিলিয়ে দেশে এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যা একটি সদ্য স্বাধীন দেশ গড়ার পক্ষে বিরাট অন্তরায় হয়ে দেখা দেয়। নতুন করে হানাহানি, বিভক্তি, অনৈক্য এবং প্রতিহিংসা মাথচাড়া দিয়ে ওঠে। বিভিন্ন মহল থেকে দালাল আইনের বিরুদ্ধে কথা ওঠে এবং এ আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়। এমনি পরিস্থিতিতে আসে সাধারণ ক্ষমার বিষয়। দেশের সকল অনৈক্য বিভক্তি, সন্দেহ মুছে ফেলে সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেন।
১৯৭৩ সালের পয়লা ডিসেম্বর দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় এ বিষয়ে পরিবেশিত খবরে বলা হয় “সরকার দালাল আইনে সাজাপ্রাপ্ত এবং বিচারাধীন সকল আটক ব্যক্তির প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেছেন। তবে ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে যারা সাজা ভোগ করছে কিংবা বিচারাধীন রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ ক্ষমা প্রদর্শণ কার্যকর হবেনা। তৃতীয় বিজয় দিবস উৎসবে যাতে তারা শরীক হতে পারে সেজন্য ১৬ ডিসেম্বরের আগেই শেখ মুজিবুর রহমান তাদের মুক্তির ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। যারা পলাতক তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেই এ ক্ষমার আওতায় পড়বে।”
”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের নেতৃবৃন্দ বলছেন, বঙ্গবন্ধু সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করলেও হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সাথে জড়িতদের ক্ষমা করা হয়নি। একথা সত্য। সাধারণ ক্ষমা ঘোষনায় বলা হয়েছে “ ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে যারা সাজা ভোগ করছে কিংবা বিচারাধীন রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ ক্ষমা প্রদর্শণ কার্যকর হবেনা।” তার মানে এসব অপরাধে অভিযুক্তদের তখন বিচার হয়েছে। বিচারে কেউ সাজা ভোগ করেছ আর কেউ অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছে। তাহলে নতুন করে কি আবার তাদের বিচার করা হবে যারা এসব অভিযোগে একবার বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন এবং সাজা ভোগ করেছেন অথবা অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন? যাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের কোন প্রমান পাওয়া যায়নি অর্থাৎ শুধুমাত্র পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করা হয়েছে। কাউকে সাধারণ ক্ষমা এবং গুরুতর অভিযুক্তদের বিচারের মাধ্যমে বিষয়টি পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়ে গেছে ১৯৭৩ সালেই। এরপর ৯১৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর দালাল আইন বাতিলও করে দেয়া হয়। কারণ সাধারন ক্ষমা ঘোষনা এবং বাকী অভিযুক্তদের বিচার নিষ্পত্তি এবং সাজাভোগের পর এ আইনের আর কোন প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়নি।
বর্তমানে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হচ্ছে এদের কারো বিরুদ্ধে স্বাধনীতা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের কোন অভিযোগ করা হয়েছে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়না। এমনকি দুয়েক জন ছাড়া দালাল আইনেও কারো বিরুদ্ধে কোথাও কোন মামলা হয়নি এমনকি কারো বিরুদ্ধে জিডিরও কোন রেকর্ড নেই। মালেক সরকারের মন্ত্রী সভায় যোগ দেয়ার অভিযোগে বর্তমানে অভিযুক্তদের দুয়েকজনের সাজা হয়েছিল। অথচ সাজাভোগকারী এসব ব্যক্তিদেরও যুদ্ধাপারধীদের তালিকায় রাখা হয়েছে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারের জন্য। প্রশ্ন হচ্ছে যেখানে একজন লোক বিচারের মাধ্যমে সাজা ভোগ করেছেন এবং আদালতের মাধ্যমে অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন তাকে কি করে আবার একই অভিযোগে অভিযুক্ত করে পুনরায় বিচারের আয়োজন চলতে পারে।
মুক্তিযুদ্ধে এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের জন্য হয়েছিল দালাল আইন। আর পাকিস্তানী সেনাকর্মকর্তাদের যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারের জন্য হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) এ্যাক্ট। দুটি আইনের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন । দালাল আইনে এদেশীয় সহযোগীদের বিচার ফয়সালা হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধী আইনে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়নি । তাদের সবাইকে ক্ষমা করা হয়। এখন পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের জন্য যে আইন হয়েছিল সেই আইনে এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একজনের বিচারের জন্য তৈরি আইনের মাধ্যমে অন্য আরেকজনের বিচারের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে ।
১৯৭৩ সালের যে আইনে এদেশীয় সহযোগীদের বিচার চলছে সে আইন নিয়ে দেশে এবং বিদেশে চলছে তীব্র সমালোচনার ঝড়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আইন এবং মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ সকলেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন ১৯৭৩ সালের ঐ আইন দিয়ে ন্যায় বিচার সম্ভব নয়।
এই সাইটের যেকোন লেখা, তথ্য উপাত্তা যেকেউ ব্যবহার, পুনমুদ্রন, পুন প্রচার, প্রকাশ করা যাবে; তবে শর্ত হল সূত্র হিসেবে Mehedy Hasan ও https//www.bangladeshwarcrimestrial.blogspot.com
উল্লেখ/লিঙ্ক
করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন