মেহেদী হাসান, ২/১২/২০১৩
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে আজ ১৪ তম সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তার নাম বাবুল কুমার মিস্ত্রি। ১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ৭/৮ বছর। সাক্ষী মাওলানা ইউসুফের বিরুদ্ধে ডাকরা গনহত্যা বিষয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা তিনি ভারতে বসে তার পিতার কাছ থেকে শুনেছেন বলে জানান। তার পিতাও তখন ভারতে ছিল এবং সেও এ ঘটনা অন্যদের কাছ থেকে শুনেছে বলে জানান সাক্ষী।
এদিকে অবরোধে আসামী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ায় ১৩ তম সাক্ষীর জেরা বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। গতকাল ১৩ তম সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে উপস্থিত জুনিয়র আইনজীবী কয়েকটি প্রশ্নের মাধ্যমে তার জেরা শুরু করেন। এরপর তিনি মঙ্গলবার পর্যন্ত জেরা মুলতবি করার আবেদন করেন । ট্রাইব্যুনাল বলেন, সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করা হল। সোমবারও সিনিয়র আইনজীবী না আসলে জেরা বন্ধ করে দেয়া হবে। সকালে ১৩ তম সাক্ষী শুধাংশু মন্ডল কাঠগড়ায় আনা হয় জেরার জন্য। আসামী পক্ষে উপস্থিত জুনিয়র আইনজীবী গাজি এম এইচ তামিম জেরা মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবির আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল এসময় জানতে চান মঙ্গলবারও যদি কর্মসূচী থাকে তাহলে কি করবেন। গাজি তামিম বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ওনারা আসবেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল মৌখিক এ আবেদন আমলে না নিয়ে গতকালের আদেশ অনুযায়ী সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ায় জেরা বন্ধ করে আজ নতুন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহনের নির্দেশ দেন।
জবানবন্দী : সাক্ষী তার নিজের পরিচয় সম্পর্কে শুরুতে বলেন, আমার নাম বাবুল কুমার মিস্ত্রি। বয়স অনুমান ৪৯/৫০ বছর। পিতা অনিল কৃষ্ণ মিস্ত্রি (মৃত)। গ্রাম ও থানা রামপাল। জেলা বাগেরহাট।
এরপর সাক্ষী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল সোমবার সকাল অনুমান ১০টা বা সাড়ে দশটার দিকে রামপাল কলেজ অডিটোরিয়াম এর মাইক থেকে বলা হয় বিকাল তিনটার দিকে শান্তি কমিটির মিটিং হবে। এ অবস্থায় আমাদের বাড়ির সামনে অনেক লোকজন বলাবলি করছিল যে, তিনটার সময় মিটিং আছে। মিটিং শুনতে যেতে হবে। আমি অনুমান সাড়ে তিনটা বা চারটার দিকে আমার কাকা কালীপদ মিস্ত্রির সাথে মিটিংয়ে যাই। মিটিংয়ে গিয়ে দেখি সেখানে অনুমান ৩০০/৪০০ লোক উপস্থিত আছে। গিয়ে দেখি বাগেরহাটগামী একটি লঞ্চ রামপাল ঘাটে আসে। ওখান থেকে অনুমান ৩০/৪০ জন লোক নেমে আসে। তারাআসলেই ওই মিটিংয়ের অনেকে নারায়ে তাকবির বলে মাইকে উল্লাস করতে থাকে। প্রথমে রজব আলী ফকির পরে মোসলেম ডাক্তার বক্তব্য রাখে। মোসলেম ডাক্তার তোতলা ছিল। উনি বললেন, মালায়নকো মাল লোতোপাতো খাও। এদেশ পাকিস্তান, এদেশ মালায়ানদের না। মালায়ানদের মালামাল মহিলাসহ যে যা লুট করে নিতে পার নিয়ে যাও। একথা বলার পর নারায়ে তাকবির বলে স্লোগান দিতে থাকে। এতে আমি ভীত হয়ে কাকার হাত ধরে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি এসে কাকা সবাইকে চিৎকার করে ডাকতে থাকে। বাড়ির সবাইকে একত্র করে । এরই এক পর্যায়ে আমরা বাড়ির লোকজন বাড়ির পাশের পুকুরেরর পাকা সিড়ির নিচে কুঠুরিতে আত্মগোপন করি। এসময় আমাদের বাড়ির ছয়টি টিনের ঘর এবং চারটি লোহার সিন্দুক লুটপাট করে নিয়ে যায়। লোহার সিন্দুক ভেঙ্গে টাকা সোনাদানা সব নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় আমরা আকবর চেয়ারম্যানের বাড়ি চলে যাই। ওই বাড়িতে ২/৩ তিন মাচা ওচকির নিচে আত্মগোপনে থাকি। পরে আকবর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমরা অনেক লোক ভারতের দিকে রওয়ানা হই।
সাক্ষী বলেন, সম্ভবত ১৯/৫/১৯৭১ তারিখ ডাকরায় একটি গনহত্যা হয়। সেখানে আমার মামা কার্তিক হালদার সহ ৫/৭ হাজার লোক সমাগত হয়েছিল। রাজাকাররা চারদিক থেকে ঘেরাও করে এলোপতাড়ি গুলি করে প্রায় ৫০০/৬০০ লোক হত্যা করে। ভারতে থাকা অবস্থায় বাবার কাছে এ ঘটনার কথা শুনেছি। বাবার কাছে শুনেছি ইউসুফ সাহেবের নেতৃত্বে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
এ পর্যন্ত বলে জবানবন্দী শেষ করার পর ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান প্রশ্ন করেন ১৯৭১ সালে আপনার বয়স কত ছিল। সাক্ষী বলেন, অনুমান সাত/আট বছর। দেশে ফিরলেন কবে জানতে চাইলে সাক্ষী বলেন, ছয়/সাত মাস পরে। আরেক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, সেসময়কার কিছু কিছু ঘটনা আমার মনে আছে। বাকী ঘটনা আমার শোনা।
জবানবন্দী শেষে গাজি এম এইচ তামিম তাকে একটি প্রশ্নের মাধ্যমে জেরা করেন। এরপর জেরা আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে আজ ১৪ তম সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তার নাম বাবুল কুমার মিস্ত্রি। ১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ৭/৮ বছর। সাক্ষী মাওলানা ইউসুফের বিরুদ্ধে ডাকরা গনহত্যা বিষয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা তিনি ভারতে বসে তার পিতার কাছ থেকে শুনেছেন বলে জানান। তার পিতাও তখন ভারতে ছিল এবং সেও এ ঘটনা অন্যদের কাছ থেকে শুনেছে বলে জানান সাক্ষী।
এদিকে অবরোধে আসামী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ায় ১৩ তম সাক্ষীর জেরা বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। গতকাল ১৩ তম সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে উপস্থিত জুনিয়র আইনজীবী কয়েকটি প্রশ্নের মাধ্যমে তার জেরা শুরু করেন। এরপর তিনি মঙ্গলবার পর্যন্ত জেরা মুলতবি করার আবেদন করেন । ট্রাইব্যুনাল বলেন, সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করা হল। সোমবারও সিনিয়র আইনজীবী না আসলে জেরা বন্ধ করে দেয়া হবে। সকালে ১৩ তম সাক্ষী শুধাংশু মন্ডল কাঠগড়ায় আনা হয় জেরার জন্য। আসামী পক্ষে উপস্থিত জুনিয়র আইনজীবী গাজি এম এইচ তামিম জেরা মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবির আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল এসময় জানতে চান মঙ্গলবারও যদি কর্মসূচী থাকে তাহলে কি করবেন। গাজি তামিম বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ওনারা আসবেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল মৌখিক এ আবেদন আমলে না নিয়ে গতকালের আদেশ অনুযায়ী সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ায় জেরা বন্ধ করে আজ নতুন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহনের নির্দেশ দেন।
জবানবন্দী : সাক্ষী তার নিজের পরিচয় সম্পর্কে শুরুতে বলেন, আমার নাম বাবুল কুমার মিস্ত্রি। বয়স অনুমান ৪৯/৫০ বছর। পিতা অনিল কৃষ্ণ মিস্ত্রি (মৃত)। গ্রাম ও থানা রামপাল। জেলা বাগেরহাট।
এরপর সাক্ষী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল সোমবার সকাল অনুমান ১০টা বা সাড়ে দশটার দিকে রামপাল কলেজ অডিটোরিয়াম এর মাইক থেকে বলা হয় বিকাল তিনটার দিকে শান্তি কমিটির মিটিং হবে। এ অবস্থায় আমাদের বাড়ির সামনে অনেক লোকজন বলাবলি করছিল যে, তিনটার সময় মিটিং আছে। মিটিং শুনতে যেতে হবে। আমি অনুমান সাড়ে তিনটা বা চারটার দিকে আমার কাকা কালীপদ মিস্ত্রির সাথে মিটিংয়ে যাই। মিটিংয়ে গিয়ে দেখি সেখানে অনুমান ৩০০/৪০০ লোক উপস্থিত আছে। গিয়ে দেখি বাগেরহাটগামী একটি লঞ্চ রামপাল ঘাটে আসে। ওখান থেকে অনুমান ৩০/৪০ জন লোক নেমে আসে। তারাআসলেই ওই মিটিংয়ের অনেকে নারায়ে তাকবির বলে মাইকে উল্লাস করতে থাকে। প্রথমে রজব আলী ফকির পরে মোসলেম ডাক্তার বক্তব্য রাখে। মোসলেম ডাক্তার তোতলা ছিল। উনি বললেন, মালায়নকো মাল লোতোপাতো খাও। এদেশ পাকিস্তান, এদেশ মালায়ানদের না। মালায়ানদের মালামাল মহিলাসহ যে যা লুট করে নিতে পার নিয়ে যাও। একথা বলার পর নারায়ে তাকবির বলে স্লোগান দিতে থাকে। এতে আমি ভীত হয়ে কাকার হাত ধরে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়ি এসে কাকা সবাইকে চিৎকার করে ডাকতে থাকে। বাড়ির সবাইকে একত্র করে । এরই এক পর্যায়ে আমরা বাড়ির লোকজন বাড়ির পাশের পুকুরেরর পাকা সিড়ির নিচে কুঠুরিতে আত্মগোপন করি। এসময় আমাদের বাড়ির ছয়টি টিনের ঘর এবং চারটি লোহার সিন্দুক লুটপাট করে নিয়ে যায়। লোহার সিন্দুক ভেঙ্গে টাকা সোনাদানা সব নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় আমরা আকবর চেয়ারম্যানের বাড়ি চলে যাই। ওই বাড়িতে ২/৩ তিন মাচা ওচকির নিচে আত্মগোপনে থাকি। পরে আকবর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমরা অনেক লোক ভারতের দিকে রওয়ানা হই।
সাক্ষী বলেন, সম্ভবত ১৯/৫/১৯৭১ তারিখ ডাকরায় একটি গনহত্যা হয়। সেখানে আমার মামা কার্তিক হালদার সহ ৫/৭ হাজার লোক সমাগত হয়েছিল। রাজাকাররা চারদিক থেকে ঘেরাও করে এলোপতাড়ি গুলি করে প্রায় ৫০০/৬০০ লোক হত্যা করে। ভারতে থাকা অবস্থায় বাবার কাছে এ ঘটনার কথা শুনেছি। বাবার কাছে শুনেছি ইউসুফ সাহেবের নেতৃত্বে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
এ পর্যন্ত বলে জবানবন্দী শেষ করার পর ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান প্রশ্ন করেন ১৯৭১ সালে আপনার বয়স কত ছিল। সাক্ষী বলেন, অনুমান সাত/আট বছর। দেশে ফিরলেন কবে জানতে চাইলে সাক্ষী বলেন, ছয়/সাত মাস পরে। আরেক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, সেসময়কার কিছু কিছু ঘটনা আমার মনে আছে। বাকী ঘটনা আমার শোনা।
জবানবন্দী শেষে গাজি এম এইচ তামিম তাকে একটি প্রশ্নের মাধ্যমে জেরা করেন। এরপর জেরা আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন