বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৩

বিচারপতি নিজামুল হককে হাইকোর্ট থেকে অপসারন করতে হবে

৩০/১২/২০১২
স্কাইপ কেলেঙ্কারির দায় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগকারী বিচারপতি নিজামুল হককে  সুপ্রীম কোর্ট থেকেও পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন  আইনজীবী নেতৃবৃন্দ। তিনি নিজে পদত্যাগ না করলে তাকে হাইকোর্ট থেকে অবিলম্বে অপসারনের দাবি জানিছেন নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল এবং সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ  আজ  এ দাবিতে সুপ্রীম কোর্ট বার ভবন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যে কারনে তিনি ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করেছেন সেই কারনে হাইকোর্ট বিভাগ থেকেও তাকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তিনি  বিচারপতি হিসেবে  সে শপথ ভঙ্গ করেছেন, সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন,  বিচারপতিদের আচরনবিধিও লঙ্ঘন করেছেন। তার কারনে বিচার বিভাগের মর্যাদা নষ্ট হয়েছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা আজ তার কারনে  সুনাম হারিয়েছে। তিনি যদি পদ্যতাগ না করেন  এবং কোর্টে বিচারকি কাজে বসেন তাহলে তাকে আমাদের পক্ষে মাই লর্ড বলে সম্বোধন করা সম্ভব হবেনা। তিনি নিজ থেকে চলে না গেলে বা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিলে  তার বিরুদ্ধে সুপ্রীম জুড়িশিয়াল কাউন্সিলে অভিযোগ দায়ের করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য বিষয়ে সার সংক্ষেপ তুলে ধরেন বাংলাদেশ বার  কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট খন্দকার মাহবুব হোসেন। লিখিত বক্তব্যের সাথে একমত পোশন করে  আরো  কথা বলেন,

সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের  প্রেসিডেন্ট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এমপি। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এমপি, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার ফকরুল ইসলাম প্রমুখ। প্রেসকনফারেন্স পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয় যে আদালত মানুষের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির শেষ আশ্রয়স্থল এবং যে বিচারক সংবিধান ও আইন অনুযায়ী স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে ন্যায়বিচার করতে শপথবদ্ধ, সেই বিচারক যখন শপথ ভঙ্গ করে মামলার কোন একটি পক্ষের সাথে গোপন বৈঠক করেন এবং সেই পক্ষের সাথে ষড়যন্ত্র ও আঁতাতের মাধ্যমে তাদের ডিকটেশন অনুযায়ী মামলার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা এমনকি রায় পর্যন্ত তৈরি করেনÑ সেই বিচারক আর বিচারক থাকেন না। এই অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ডের পর বিচারপতি নিজামুল হক যখন পিঠ বাঁচানোর জন্য ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করলেনÑ আমরা ভেবেছিলাম স্বাভাবিকভাবেই হয়তো তিনি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের পদ থেকেও পদত্যাগ করবেন। কিন্তু সমস্ত লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে আসীন রয়েছেন। তার চেয়েও অবাক করা বিষয় হলো এরূপ ভয়ানক ঘটনা ও মারাত্মক অসদাচরণের দায়ে বিচারপতি নিজামুল হকের বিরুদ্ধে যেখানে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্তপূর্বক তাকে ইমপিচ করা প্রয়োজনÑ সেটি না করে মাননীয় প্রধান বিচারপতি তাকে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের দায়িত্ব প্রদান করতে যাচ্ছেন বলে আমরা বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানতে পারছি।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় স্কাইপি সংলাপ কেলেঙ্কারী ও ই-মেইল কেলেঙ্কারীর পর বিচারপতি নিজামুল হকের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে বহাল থাকার আর কোন নৈতিক অধিকার নেই। যে অপকর্মের দায়ভার কাঁধে নিয়ে তিনি ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেনÑ সেই একই কারণে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের পদ থেকে তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
বিচারপতি নিজামুল হক শপথ ভঙ্গ করে যে ধরনের প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন আসামীদের বিরুদ্ধে একটি চক্রান্তমূলক ও প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে সাজা প্রদান করতে যাচ্ছিলেন তার জন্য তাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে হবে।
দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে যেসব ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের সাথে ষড়যন্ত্র ও যোগসাজসের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াকে একটি প্রহসনে পরিণত করেছে তাদের খুঁজে বের করার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন